ঢাকার নতুন জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

ঢাকার জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তারই স্থলাভিষিক্ত হলেন মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনিই ঢাকার নতুন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।

গত ২৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের ২৩ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক- ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ঢাকা জেলার নতুন ডিসি করা হয়েছে মমিনুর রহমানকে। তিনি এতদিন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন।

মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মোহাম্মদ কামালুর রহমান গফরগাঁও খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং মাতা রওশন আরা একই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন।

মমিনুর রহমান ঢাকা বিশ্ববদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ১৯৯৫ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৯৬ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের ২২তম ব্যাচে প্রথম স্থান অধিকার করেন।

তিনি ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর সহকারী কমিশনার (শিক্ষানবিশ) হিসেবে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, রাজশাহীতে ন্যস্ত হন। পরে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, রাজশাহীতে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারের যাত্রা শুরু করেন।

২০০৭ সালের ২৭ মে মমিনুর রহমান মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন। একই বছরের ৯ অক্টোবর তিনি বিসিএস প্রশাসন একাডেমি, শাহবাগ, ঢাকায় সহকারী পরিচালক হিসেবে পদায়িত হন।

২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারি উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তিনি মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশে ফিরে ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের ৩ জুলাই পর্যন্ত উপপরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১২ সালের ১৯ মার্চ থাইল্যান্ডে লিডারশিপ ইন দ্য সিভিল সার্ভিস কোর্স এবং ২০১৪ সালের ২৫ আগস্ট ভারতে অনুষ্ঠিত মিড ক্যারিয়ার ট্রেইনিং কোর ফিল্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোর্সে অংশগ্রহণ করেন মমিনুর রহমান। ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর এবং ২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২১ এপ্রিল ২০১৭ পর্যন্ত গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন মমিনুর রহমান। পরে তিনি ২৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে উপসচিব হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে যোগদান করে ১০ মে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

১১ মে ২০১৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

মমিনুর রহমান জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় পদায়িত হয়ে ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন।

চট্টগ্রামে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ঈর্ষণীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করে এসেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এবং স্ত্রী মোসা. রাবেয়া নাহার চেরী তিন ছেলের জনক-জননী। বৃহস্পতিবার থেকে তার নতুন পথচলা শুরু হলো ঢাকার ডিসি হিসেবে।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতির অভিযোগে পল্টনে ২ ট্রাভেল ব্যাবসায়ী গ্রেফতার!

স্টাফ রিপোর্টার:

গত ২৪ জুন সমবার বিকেলে বিজয়নগর মাহতাব সেন্টারের ১৭ তলায় অবস্থিত কেএমএম ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ও পরিচালককে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, করোনা ভ্যাকসিন ও মেডিকেল সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগে পল্টন থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেন। প্রতিষ্ঠানটির রিক্রুটিং লাইসেন্স নাম্বার ২২৭০।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, কেএমএম ইন্টারন্যাশনালের মালিক শাহজাহান কামাল ও পরিচালক মাহফুজুর রহমান ওরফে নাসিম ‘উত্তরা ইন্টারন্যাশনাল ক্যারিয়ার কাউন্সিল’ নামক আরেকটি ট্রাভেল প্রতিষ্ঠান থেকে মালোশিয়া, ইতালি, রোমানিয়া ও পর্তুগালে শ্রমিক ভিসায় লোক পাঠানোর জন্য ৮৪ টি পাসপোর্টের মেডিকেল ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করেন। এর মধ্যে ৭২টি মালোশিয়ার মেডিকেল সার্টিফিকেট ও ৫টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স । এসব মেডিকেল সার্টিফিকেট ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বাবদ প্রতিষ্ঠানটি থেকে কামাল ও নাসিম ৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকা নেন।
এসব পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও মেডিকেল সার্টিফিকেট ভিসার জন্য বিভিন্ন এ্যাম্বাসিতে জমা দিলে তারা জানতে পারেন যে, এগুলো ভূয়া, জালিয়াতি করে করা হয়েছে। তারা পুলিশের ওয়েবসাইটের আদলে ওয়েবসাইট তৈরি করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতি করেছে বলে জানা যায়।
এ নিয়ে উত্তরা ইন্টারন্যাশনাল ক্যারিয়ার কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান লাকি আক্তার বাদি হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০২, তারিখ ০২/ ০৬/২০২৪।
এ বিষয়ে লাকি আক্তার প্রতিবেদককে জানান, কেএমএম ইন্টারন্যাশনাল এর মালিক ও পরিচালক তারা প্রতারক চক্র। অফিসে রিক্রুটিং লাইসেন্স ঝুলিয়ে মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করে প্রতারণা করেন।

এবিষয়ে পল্টন থানার অফিসার ইনচার্জ মনির হোসেন মোল্লা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও মেডিকেল সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো। তারা পল্টন থানায় ২ দিনের রিমান্ডে রয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম