আগাম শীতকালীন সবজি চাষে বাম্পার ফলনের আশাবাদী কৃষক !

আগাম শীতকালীন সবজি চাষে বাম্পার ফলনের আশাবাদী কৃষক !

মিজানুর রহমান, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি:

শেরপুরের ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে মৌসুমের আগেই বাজারে উঠতে শুরু করেছে নানা রকম শীতকালীন সবজি। ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় বেশ কয়েক বছর ধরেই আগাম সবজি উৎপাদন হচ্ছে, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও এখানকার কৃষকরা আগাম সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। গারো কোনা ও হলদিগ্রাম এলাকার কৃষক মো. আনোয়ার হোসেন ও মো. আব্দুল কাদের জানান, ধানের আবাদে লোকসান হওয়ায় তাঁরা এখন সবজি চাষে ঝুঁকছেন। আগাম জাতের বিভিন্ন সবজি চাষ করে কৃষকরা ভালো লাভবান হচ্ছেন। ফলে দিন দিন বাড়ছে সবজি চাষের পরিমাণ ও কৃষকের আগ্রহ।

সরেজমিনে ঝিনাইগাতীর সন্ধাকুড়া, গারোকোনা, হলদিগ্রাম, জারুলতলা ও মানিককুড়া গ্রামে দেখা গেছে— মাঠে মাঠে বেগুন, লাউ, সিম, বরবটি, মূলাসহ নানা শীতকালীন সবজির চাষ হচ্ছে। কৃষক-কৃষাণীরা দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্ষেত পরিচর্যায়। অনেকেই ক্ষেত থেকেই পাইকারদের কাছে চড়া দামে সবজি বিক্রি করছেন। রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকাররা আগাম সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, গারো পাহাড়ি এলাকায় এ বছর ব্যাপক হারে আগাম সবজির আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টমসে ফুলমিয়া নাজমুল সিন্ডিকেটের ডিএম ফাইলে অবাধ ঘুষ বাণিজ্য

শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি ::

বেনাপোল কাস্টমসে একটা প্রবাদ চালু হয়েছে ডি এম শাখায় কর্মরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ফুল মিয়াকে তার বেঁধে দেওয়া রেট ফাইল প্রতি ১৫০০ টাকা না দিলে ডি এমের মাল ছাড় করিয়ে নিতে পারেনা কেউ। আর তার এই ঘুষের টাকা আদায়ে সহায়তার জন্য রয়েছেন সিপাই নাজমুল, যে কিনা তার বসের সব ইশারা বোঝে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমসে ডিএম কৃত পণ্য ভ্যাট দিয়ে বেনাপোল কাস্টমস থেকে ছাড় করাতে হলে আপনাকে অনেক কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। তার ভিতরে সবচেয়ে বেশি যে ধাপটিতে আপনাকে ভোগান্তি পোহাতে হবে তার নাম ফুলমিয়া-নাজমুল সিন্ডিকেট। ডিএম পণ্য ছাড় করানোর বিষয়ে পুরাতন যারা কাজ করেন তাদের সকলের সিন্ডিকেটের কার্যক্রম মুখস্ত। কিন্তু নতুন কোন ব্যাক্তি কিংবা ডিএম পণ্যের প্রকৃত মালিক মাল ছাড় করতে গেলে পরেন বিপাকে।

ডিএম শাখার ফুলমিয়া-নাজমুল সিন্ডিকেট সম্পর্কে একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পর এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে জানার জন্য এই ভুক্তভোগীর সাথে সরাসরি হাজির হয় ফুলমিয়ার দপ্তরে। নানা টালবাহানায় এই সিন্ডিকেট দিনের পরদিন তাকে ঘুরাতে থাকে কিন্তু অবলীলায় কিছু ব্যাক্তির কাজ সহজে ছাড় হয়ে যাচ্ছে। এই জাদুর রহস্য হিসাবে জানা যায় ফাইল প্রতি ১৫০০ টাকা দিলে ডিম ফাইলের সকল মুসকিল আঁচান হয়ে যায়, জি আর নাম্বার পেতে তখন আর কোন বেগ পেতে হয়না। আর যদি আপনি টাকা না দিয়েও সব কাজ শেষ করে মাল নিতে চলে আসেন তখন মাল নিতে গেলে শুরু হয় নানা টালবাহানা ভ্যাট কম দিছেন, কাগজ সব ঠিক নেই, মাল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সহ নানা অসুবিধা।

ফুলমিয়ার রুমে অবস্থান কালে এক সিএন্ডএফ কর্মী তার একটি ডিএম পণ্য ছাড়িয়ে নিতে আসলে তার ফাইল অনেক ঘাটাঘাটি করে নিঃসংকোচে সেই ব্যাক্তিকে বলেন এটা ছাড়াতে গেলে এখানে ১৫০০ টাকা জমা দিতে হবে। এটা কোন সরকারি রেট কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এখানের নিয়ম এটা, এই মাল ছাড়াতে গেলে এটা আপনাকে দিতেই হবে। তারপর অনেক জোরাজুরির পর মাল কম থাকায় দেনাপাওনা ১০০০ টাকায় গিয়ে মিট হয়। এই ঘুষের টাকা সিপাহি নাজমুল গ্রহণ করার সময় আলামত হিসাবে সেটি ভিডিও রেকর্ড করা হয়।

পরবর্তীতে সেই মাল গুদাম থেকে বের করে দিতে হলে কর্মরত লেবারদের দিতে হবে বকশিস। না হলে তারা মাল খুঁজে দেবেনা। মাল বের করে দেবার পর ২জনকে ২০০ টাকা বকশিস দিতে গেলে তারা সে টাকা নেবে না, তাদের নাকি রেট বাঁধা ৫০০ টাকা। তাদের কাছে প্রশ্ন করা হয় এই মালটি পাশেই ছিলো খুজতে কষ্ট হয়নি তাছাড়া তোমারা কাস্টমস থেকে কাজের জন্য টাকা পাও তাহলে কেনো বকশিস এত বেশি। তখন তারা (রেকর্ড কৃত) বক্তব্যে বলেন আমাদের কাস্টমস থেকে একটি টাকাও দেয়না, আমরা অফিসারদের সামনেই বলছি, আমরা কাজ করে টাকা নেই। কোন ফাও টাকা নেই না এজন্য ৫০০ টাকা দিতেই হবে। সেখান থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে মাল নিয়ে বের হতে গেলে কাস্টমসের সিপাহিকে মাল ছাড়ানোর কাগজ দেখাতে হয় এবং গেট থেকে মাল বের করতে গেলে দিতে হয় বকশিস। এছাড়াও এই ডিএম ফাইল তৈরি করতে গেলে আরো যে কয়েকটি ধাপ আছে সেখানেও চলে ঘুষ বাণিজ্য যেটা পরিবর্তেতে প্রকাশ করা হবে।

ডিএমের মাল ছাড়াতে এসে রাসেল নামের এক ভুক্তভোগী পাসপোর্ট যাত্রী বলেন, আমার কিছু বেবি আইটেমের মাল ডিএম হয়েছে। কিন্তু আমি মালের জি আর নাম্বার নেওয়ার জন্য আজ ১ মাসের সময় ধরে এই ফুলমিয়া আর নাজমুলের পিছনে ঘুরছি। সকাল ১১ টাই আসলে শুনি ফুলমিয়া আসেনি দুপুরে এসে তার নিজের কাজ করতে করতে চলে যান লাঞ্চে বিকালে আসতে আসতে অফিস শেষ। সর্বশেষ তিনি বলেন কত ঘোরাতে পারে দেখি এই অফিসার, আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো এবং মাল আমি ছাড়াবোই।

এবিষয়ে সিপাহি নাজমুল ইসলাম বলেন, কি বলেন এসব আমাদের এখানে এমন কিছু হয়না। ভিডিও রেকর্ডের কথা বললে তিনি সাথে সাথে তিনি ফোনটা কেটে দেন।

ঘুষ বাণিজ্য সম্পর্কে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ফুলমিয়াকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে তার অফিসে দেখা করতে বলেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম