ফ্যাসিজমের দোসর হামিদুল এখনো রাজউক জোন-৫ পরিচালকের দায়িত্বে

ফ্যাসিজমের দোসর হামিদুল এখনো রাজউক জোন-৫ পরিচালকের দায়িত্বে

এম, আলতাফ মাহমুদঃ

ঘুষ বানিজ্য ক্ষমতার অপব্যহারসহ একাধিক অভিযোগ থাকা সত্বে ও ফ্যাসিজমের দোসর রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (রাজউক) জোন-৫ এর পরিচালক হামিদুল ইসলাম এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। দর্শনে এম.এ ডিগ্রীধারি হামিদুল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার খুব কাছের হওয়ায় পরপর দুটি পদোন্নতির মাধ্যমে রাজউক এর পরিচালক হয়েছে।

২০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে কয়েকটি ভবনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন তিনি। এরমধ্যে রয়েছে নিউ এ্যালিফ্যান্ট রোডে হোল্ডিং-১১০,১১১,১১২ মালিক কামরুল হাসান। জানাগেছে ২০ লক্ষ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে সেই ভবনকে পুনরায় কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন হামিদুল ইসলাম ও তার অথরাইড অফিসার। নিউ এ্যালিফ্যান্ট রোডে হোল্ডিং-৮২, মালিক মিসেস রহিমা সাহাবুদ্দিন এর ভবনটি আবাসিক অনুমোদন নিয়ে বানিজ্যিক হিসেবে ব্যবহার করায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার পরে ১৫ লক্ষ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে পরিচালক হামিদ ও তার অথরাইজড অফিসার এই বিষয়ে কাঠের চশমা পরেন। বর্তমানে ভবনটি আবাসিক হয়েও বানিজ্যিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন হাউজিং, বসিলা, চাদ উদ্যান, তেজতুড়ি বাজারসহ একাধিক ভবন মালিকের সাথে রফা করার মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ হাতাচ্ছেন এই জোন-৫ পরিচালক হামিদুল ইসলাম। তিনি তার এই অপকর্মকে চালিয়ে যেতে অভিজ্ঞ ইমারত পরিদর্শকদের এরিয়া যথাযথভাবে না দিয়ে নতুন ইমারত পরিদর্শক ও দুর্নীতিপরায়ন অথরাইজড অফিসারদের নিয়ে কাজ করেন। রাজউক আইন ও দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন পরিচালক হামিদুল ইসলাম।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাজউক চেয়ারম্যান বরাবরে একাধিক অভিযোগ হওয়ার পরেও  তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন হয়নি, বহাল তবিয়তেই আছেন জোন-৫ এর পরিচালকের দায়িত্বে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বললেও এখনও কোন তদন্ত শুরু হয়নি পরিচালক হামিদুল ইসলামকে নিয়ে। এই বিষয়ে রাজউক এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি দৈনিক সবুজ বাংলাদেশর প্রতিনিধির সামনেই বিষয়টি পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) মোঃ মনিরুল হক কে গুরুত্বের সহিত দেখতে বলেন। রাজউক নিয়ে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ এর বেশকিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর  ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে এ. বি. এম. এহছানুল মামুন, পরিচালক (প্রশাসন) (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এর স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ জারি করে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ।

অফিস আদেশে বলা হয়েছে এতদ্বারা সংশ্লিস্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গাঠিত তদন্ত কমিটি/তদন্ত কর্মকর্তা প্রায়শই যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবদন দাখিল করছেন না। যে সকল তদন্ত কমিটি/তদন্ত কর্মকর্তা অনুমোদিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের শেষবারের মতো আগামী ১০(দশ) কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তপূর্বক সুষ্পষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। উল্লিখিত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ কমিটি/তদন্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকুরি বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৪১(৪) লঙ্ঘণের অভিযোগে অদক্ষতার জন্য বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভে জাহাজে খুন

স্টাফ রিপোর্টার: 

এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাতজনকে হত্যার ঘটনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিল র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন—র‌্যাব। বাহিনীটি জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে ওই সাতজনকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কুপিয়ে হত্যা করে জাহাজেরই আরেক স্টাফ।

গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

সাত খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে হাইমচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ। এদিন রাতেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আকাশ মন্ডল ইরফান নামে একজনকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

গ্রেপ্তারকৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে র‌্যাব দাবি করে, জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কোনো প্রকার বেতন-ভাতা দিতেন না। এমনকি তিনি দুর্ব্যবহারও করতেন। এসবের ক্ষোভ থেকে আকাশ মন্ডল ইরফান মাস্টারসহ সবাইকে হত্যা করেন।

খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন– মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী। এ ছাড়া আহত ব্যক্তি হলেন সুকানি জুয়েল।

গ্রেপ্তারকৃত ইরফানের দেওয়া তথ্য মতে র‌্যাব আরও দাবি করে, জাহাজের বাজার করতে ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে তিনি তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, সেটি জাহাজেই ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল।

র‌্যাবের দাবি, হত্যার দিন রাতের খাবার রান্নার সময় ইরফান জাহাজের বাবুর্চির অগোচরে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। সেই খাবার খেয়ে সবাই অচেতন হয়ে পড়লে হাতে গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি।

ইরফানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে র‌্যাবের দাবি, ইরফান যখন সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন তখন জাহাজ মাঝ নদীতে নোঙর করা ছিল। পরে সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজে ট্রলার চালিয়ে হাইমচর এলাকায় এসে অন্য ট্রলার দিয়ে পালিয়ে যান।

র‌্যাবের ভাষ্য, মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার সময় অন্যরা দেখে ফেলায় ইরফান জাহাজের সবাইকে হত্যা করেন।

এর আগে গত সোমবার বিকালে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে লাইটার জাহাজ আল বাখেরা থেকে পাঁচজনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে নিলে আরও দুজন মারা যান।

 

সবা:স:জু-৪৮৫/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম