তারিখ লোড হচ্ছে...

উত্তরখানে যুব মহিলা দলের নেত্রী কাজল রেখার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার॥
ঢাকার উত্তরখানে যুব মহিলা দলের নেত্রী কাজল রেখার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ অক্টোবর দুপুরে উত্তরখান থানার পুলারটেক এলাকায় বাদল ভূইয়া নামে এক ব্যক্তি কাজল রেখা ও স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মারামারির অভিযোগে মামলা রেকর্ড করেন।

তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বাদী নিজেই বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত টাইলস দিয়ে নিজের মাথায় আঘাত করে পরে সরকারি টঙ্গী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডাক্তারি সনদ সংগ্রহ করেন। এরপর তিনি উত্তরখান থানায় উপস্থিত হয়ে বিএনপি ঘরানার কয়েকজন নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী রেজাউল করিম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বাদল ভূইয়া ও তার ছেলে সিফাত ভূইয়া জমির মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছে।প্রতিবেশীরা টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা নানা হয়রানিমূলক পরিস্থিতি তৈরি করে।” তিনি আরও জানান, বাদল ভূইয়া সম্প্রতি প্রতিবেশীদের চলাচলের পথে দেয়াল তুলে বাধা সৃষ্টি করে এবং নিজের আঙিনার সীমানা বাড়িয়ে নেয়।

ঘটনাটি মীমাংসার জন্য যুব মহিলা দলের নেত্রী কাজল রেখা স্থানীয়দের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গেলে বাদল ভূইয়ার স্ত্রী ও ছেলে লাঠি হাতে তাদের ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধিক ভিডিও ফুটেজে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বাদল ভূইয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রথমে আক্রমণাত্মক আচরণ করছে এবং কাজল রেখাসহ উপস্থিত অন্যদের দিকে তেড়ে যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় বাদল ভূইয়া ৯৯৯-এ ফোন করে জরুরি সহায়তা চান। খবর পেয়ে উত্তরখান থানার একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিবাদমান জমির কাগজপত্র ও জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগপত্র, সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং টেক্স পর্যালোচনা করে চলে যান। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, বাদল ভূইয়া পরিকল্পিতভাবে নিজের আঘাতকে ব্যবহার করে রাজনৈতিকভাবে প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা সাজিয়েছেন।

এ বিষয়ে কাজল রেখা বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই আমাকে এবং আমার সহকর্মীদের টার্গেট করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৭ বছর বাদল ভূইয়া ও তার লোকজন প্রকৃত মালিকদের জমিতে প্রবেশ করতে দেয়নি। সরকার পরিবর্তনের পরও স্থানীয় অস্ত্রধারী আ.লীগ নেতাদের দাপটে জমিতে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাদল ভূইয়ার বিরুদ্ধে পূর্বেও চাঁদাবাজি, দখল ও সামাজিক অশান্তি সৃষ্টির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও মিথ্যা মামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। উত্তরখান এলাকার শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, “বাদল গংদের বিরুদ্ধে আমি ২০১৬ সালে উত্তরখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম (জিডি নং–২২৫)। পরিবারটি সন্ত্রাসী প্রকৃতির। তাদের অত্যাচারে ২০২৫ সালে আমাদের জমিটা বিক্রি করে এলাকা ছাড়তে হয়েছে।”

অন্য ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার বলেন, “আমি স্থানীয় হয়েও বাদল গংদের অত্যাচারে জমি বিক্রি করে চলে যেতে চাই। কিন্তু যখনই বিক্রির চেষ্টা করি, তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে, ফলে জমি বিক্রি করা সম্ভব হয় না। বাদল একজন মাদকাসক্ত ও সন্ত্রাসী, ওর ভয়ে আশপাশের প্রতিবেশীরা সবসময় আতঙ্কে থাকে।”

ঘটনাস্থলের পাশেই সদ্য নির্মিত একাধিক বাড়ির মালিক ভয়ে ভয়ে প্রতিবেদককে জানান, এই জমিসহ বাড়ির রেকর্ডিও মালিক মাইদুল ইসলাম ও মারুফুল ইসলাম। অথচ বছরের পর বাদলগং দখল করে রেখেছেন আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে।

ঘটনাস্থলের পাশেই সদ্য নির্মিত একাধিক বাড়ির মালিক ভয়ে ভয়ে প্রতিবেদককে জানান, “এই জমিসহ বাড়িগুলোর রেকর্ডীয় মালিক মাইদুল ইসলাম ও মারুফুল ইসলাম। অথচ বছরের পর বছর বাদলগণ মিথ্যা মামলা দিয়ে জায়গাটি দখল করে রেখেছেন।

ঢাকা ইলেকট্রিক কোম্পানি (ডেসকো)-এর এক ফিল্ড অফিসার পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, আশপাশের প্রতিবেশীদের আবেদনের পরেও বাদল গংদের কারণে ঐ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, “সাধারণত সংযোগ জমির সীমানা ব্যবহার করেই দেওয়া হয়, কিন্তু এই পরিবারটি বিদ্যুৎ খুঁটি থেকেও সংযোগ দিতে বাধা প্রদান করেছে।”

এ ঘটনায় উত্তরখান থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.জিয়াউর রহমান জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে, প্রাথমিকভাবে অভিযোগপত্র যাচাই করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি বলেন, “৯৯৯-এ অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, তবে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে ফিরে আসি। পরে অভিযোগকারী মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে থানায় এসে মামলা দায়ের করেন।”

স্থানীয়দের মতে, এ ঘটনা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িত এক পরিকল্পিত মিথ্যা মামলার উদাহরণ, যা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

আওয়ামী সুবিধাভুগি ৪ কারা কর্মকর্তার কাছে জিম্মি কারা অধিদপ্তর!

বিশেষ প্রতিনিধি:

আওয়ামীলীগ আমলে সবচেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে এখন বোল পাল্টিয়ে জুলাই আগষ্ট আন্দোলন পরবর্তী সময়ে ভাল ভাল পোস্টিং ভাগিয়ে নিয়েছে ৪ কারা কর্মকর্তা ।
এদের সবারই রয়েছে নানা দুর্নীতির ইতিহাস। কেউ কেউ দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবেও পরিচিত।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স মোঃ জাহাঙ্গীর কবির। তিনি আওয়ামীলীগ আমলে কারা অধিদপ্তরের সবচেয়ে লোভনীয় পোস্টিং গুলো বাগিয়ে নেন।
২০০৯ সালে জাহাঙ্গীর কবির ছিলেন সহকারী কারা মহাপরিদর্শক(এআইজি)। সেখান থেকে ২০১০/১১ সালে সিনিয়র জেল সুপার এর দায়িত্ব পান। তখন তার চাকরির বয়স মাত্র ২/৩ বছর।
সিনিয়র জেল সুপার (চলতি দায়িত্ব) জাহাঙ্গীর কবির এর যাত্রা শুরু কাশিমপুর কারাগার ১ দিয়ে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নাই তাকে।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২,
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার,
কাশিমপুর কারাগার ২,
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার,
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলী হন তিনি।
সকল সিনিয়র জেল সুপারদের ডিঙিয়ে জাহাঙ্গীরকে দেশের সবচেয়ে বড় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার করা হয়। নিজেকে জাহাঙ্গীর গোপালগঞ্জের জামাই পরিচয় দিতেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহমুদ হাসান বাবুল, এপিএস সাইফুজ্জামান শিখরের মাধ্যমে পোস্টিং বাগিয়ে নিতেন জাহাঙ্গীর।
এ কাজে সহযোগিতা করতেন তৎকালীন আইজি প্রিজন্স আশরাফুল ইসলাম খান ও সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। মোটা অংকের মাসোয়ারা দিতেন জাহাঙ্গীর।
যে কারণে তাকে ৩ বছর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার পদে রাখা হয়।
সকল নিয়োগ কমিটিতেও জায়গা করে নিতেন তিনি। তারপর ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার সিনিয়র জেল সুপার ও নবসৃষ্ট ময়মনসিংহ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি প্রিজন্স করা হয় তাকে।
প্রায় ৫ বছর দুটি পদে আসীন থেকে দাবড়িয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। কারাগারে তাকে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে ডাকা হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানিগঞ্জে) জেলার মাহবুব এর পর কারা বিভাগের সবচেয়ে দুর্নীতিবাজ কারা কর্মকর্তা হিসেবে দেখা হয় এই জাহাঙ্গীর কবিরকে।
তার আমলে কাশিমপুর কারাগার ২ থেকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করা হয় টপটেরর বিকাশকে।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মখা আলমগীরের খুব কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই জাহাঙ্গীর কবির ও জেলার সুভাষ কুমার ঘোষ।
সুভাষ ঘোষকে ৫ আগষ্টের পর বাধ্যতামুলক অবসর দেয়া হলেও জাহাঙ্গীর কবির থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
সাবেক বিতর্কিত সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ এর ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফকে সাজা মওকুফ করার জন্য প্রতিদিন ফাইল নিয়ে কারা অধিদপ্তরে আসা যাওয়া করতেন জাহাঙ্গীর কবির। জাহাঙ্গীর কবির, জেলার মাহবুব ও তৎকালীন আইজি প্রিজন্স সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন মিলে জোসেফকে কারাগার থেকে বের করে দেয়ার বিষয়ে সকল কাজ সমাধা করেন।
তারপর ২০২০/২১ সালে পুরুষ্কার স্বরুপ জাহাঙ্গীর কবিরকে ডিআইজি প্রিজন্স পদে পদোন্নতি দিয়ে স্থায়ী করা হয়।
তারপর বরিশাল বিভাগ থেকে হঠাৎ ৫ আগষ্টের পর ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স পদে বদলি হয়ে আসেন। নিজেকে বিএনপি পন্থী উল্লেখ করে কৌশলে সে এই পদ দখল করে নেন। তার রয়েছে অঢেল সম্পদ ও নগদ টাকা। টাকার কাছে সবকিছু হারমানে।
এখন শোনা যায় তিনি ছায়া আইজি প্রিজন্স হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।
আইজি প্রিজন্সকে জিম্মি করে পছন্দের কর্মকর্তাদের ভাল ভাল জায়গায় পোস্টিং করিয়ে নিচ্ছেন। আর অপছন্দের অফিসারদের নানাভাবে হয়রানি করা ও চাকুরিচ্যুতির চেষ্টা করছেন।
টাকা না দিলে জাহাঙ্গীর কবির এর হাত থেকে কেউ বাঁচতে পারেন না। শুধু তাই নয়,ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, (কেরানীগঞ্জে) আটক আওয়ামী লীগের বড়বড় নেতাদের কারাগারে জামাই আদরে রাখতে ও বাহির হাসপাতালে ভর্তি করে এবং অবৈধ মোবাইল সরবরাহ করার জন্য রয়েছে জাহাঙ্গীরের একটি সিন্ডিকেট।
তাকে সহযোগিতা করে কারা অধিদপ্তরের এআইজি আবু তালেব ও এআইজি জান্নাতুল ফরহাদ।
তার হয়ে কাজ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার একে এম মাসুম। তারা নিজেদেরকে বিএনপিপন্থী জেল অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে কারা মহাপরিদর্শককে জিম্মি করে রেখেছেন।

জাহাঙ্গীর কবির ঢাকা জেলের সিনিয়র জেল সুপার হিসেবে যোগদান করেন পুরাতন ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা জেলে। সেখানে তার জেলার হিসেবে দায়িত্ব পালন আরেক কুখ্যাত আওয়ামীপান্ডা জেলার নেছার আলম। গত ৫ আগষ্টের পর তাকেও বর্তমান সরকার বাধ্যতামূলক অবসর দিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছেন। ২০১৫/১৬ সালে ঢাকা জেলের ইটপাথরও টাকা দাবি করতো গরীব অসহায় অভাবী বন্দীদের কাছে। জন প্রতি ২৫০০ থেকে ২৫০০০ এমন কি লাখ টাকাও দিতে হতো জাহাঙ্গীর কবির ও নেছার আলমকে। তারা দুজন মিলে চিফ রাইটার মেশকাত চৌধুরী ও চিফ রাইটার ফারুক ওরফে সাদাচুল ওয়ালা ফারুক এর কাছে ২ কোটি টাকা দিয়ে গরুর হাট কেনাবেচার মতো কারাগার বিক্রি করে দিতো।
গরীব অসহায় অভাবী বন্দীদের মা বোনের চোখের জলে বুক ভেসে যেতো কিন্তু জাহাঙ্গীর কবির এর ও নেছার আলমের অন্তর কাপতো না। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ঢাকা জেল পুরাতন ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলে কসাই খ্যাত মাহবুব জেলার হিসেবে পুনরায় চট্টগ্রাম কারাগার থেকে এসে ঢাকা কারাগারে যোগদান করেন। এ ভাবে ৩ বছর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন জেল অফিসার হিসেবে জাহাঙ্গীর কবির সাকা চৌধুরী ও জামাতে ইসলামীর বড়বড় নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করে তা দম্ভ অহমিকা ভরে প্রচার করতেন।
গণভবনে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল।ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ আমলে সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী এই জাহাঙ্গীর কবির এখন বিএনপির বড় নেতা পরিচয় দিয়ে বিএনপির বড়বড় নেতাদের বাসায় দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তার অপকর্ম ঢাকার জন্য। একাধিক সুত্রে জানা যায়, অত্যন্ত গরীব ঘরের সন্তান জাহাঙ্গীর কবির এর রয়েছে সম্পদের পাহাড়।
দুদকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে।কথিত আছে বেগম খালেদা জিয়া সাব জেল হিসেবে ঢাকা জেলের মহিলা ওয়ার্ডে থাকাকালীন কিছু দিন দায়িত্ব পালন করার সময় তিনি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এখন তিনি বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচয় দেন।
অথচ সে কখনও ছাত্রদল করেন নাই। বরং ছাত্রলীগ সভাপতি রিপনকে বন্ধু ও সহযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করেন এই আওয়ামী দালাল। এখন তিনি ছায়া আইজি প্রিজন্স!

৫ আগষ্টের পরপর আরো দুজন জেল সুপার সুকৌশলে কারা অধিদপ্তরের ঢুকে পড়েন। একজন আবু তালেব ও অপরজন জান্নাতুল ফরহাদ। আর একজন জুনিয়র জেলার ঠাকুরগাঁও পরিচয় দিয়ে ঢাকা জেলের জেলার পদে বদলি হয়ে এসে যোগদান করেন। তার নাম এ কে এম মাসুম।

আবু তালেব তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ২০০০ সালে ডেপুটি জেলার হিসেবে যোগদান করেন। তার বাড়ি নড়াইল জেলায়। সেই সময় শেখ হেলালের সুপারিশে তিনি ডেপুটি জেলার পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে লালবাগের আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক এমপি হাজী সেলিমকে কারাগারের ভিতরে মোবাইল সরবরাহের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হয়ে দিনাজপুর কারাগারে সংযুক্ত হন। হাজী সেলিমকে ঢাকা জেলে অবৈধ মোবাইল ফোন সরবরাহের ঘটনায় রুজু করা বিভাগীয় মামলায় তার বেতন বৃদ্ধি তিন বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।
তার এই রেকর্ড চাকরি বহিতে লিপিবদ্ধ থাকার কথা। যদি তিনি তা গায়েব করে না দিয়ে থাকেন।
তিনি একজন চরম বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। আওয়ামী লীগ আমলে তিনি সাতক্ষীরা কারাগারে ৪ বছর, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ৫ বছর জেলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাড়ি নড়াইল হওয়া সত্তেও আবু তালেব শেখ হেলাল ও গোপালগঞ্জ আওয়ামীলীগ নেতাদের সহযোগিতায় দশ বছর যাবত যশোর ও সাতক্ষীরায় চাকরি করেন।
পরে আওয়ামী লীগের আমলেই জেল সুপার পদে পদোন্নতি পান।

আবু তালেব একজন ধুরন্ধর মিথ্যাশ্রয়ী ও চরম লোভী কারা কর্মকর্তা। গত ৫ আগষ্টের পর কারা অধিদপ্তরে এআইজি এডমিন হিসেবে দায়িত্ব ভাগিয়ে নিয়েছেন। যোগদানের পরপরই ঢাকা জেল, (কেরানীগঞ্জ) থেকে শুরু করে কাশিমপুর কারাগার, নারায়ণগঞ্জ গাজীপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের বড় কারাগারে তার পছন্দের সুবেদার, সার্জেন্ট, ডেপুটি জেলার, জেলার ও জেল সুপার পদায়ন শুরু করেন।
কারা মহাপরিদর্শক নবাগত হওয়ায় সেই সময় যা ইচ্ছে তা করে গেছেন বদলির ক্ষেত্রে। কারারক্ষী থেকে সিনিয়র জেল সুপার পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে বদলি করেন এই আবু তালেব।

কারা অধিদপ্তরে কর্মরত সকল কারারক্ষী বদলি করে তার আশেপাশে তার পছন্দের কারারক্ষী ও কর্মকর্তা কর্মচারী বদলি করে নিয়ে আসেন। যেন তার দুর্নীতি ও অপকর্ম নিয়ে কেউ মুখ না খুলে। পুরনো সবাইকে ঢাকার বাহিরে বদলি করে দেন আবু তালেব ও জান্নাতুল ফরহাদ মিলে।
আইজি প্রিজন্স কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা মাঠ গুছিয়ে ফেলেন।

কারারক্ষীদের বিভাগ পরিবর্তন প্রতিটি বদলি থেকে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে দুর্নীতিবাজ তালেব। সুবেদারদের কাছ থেকে নিয়েছেন ৪/ ৫ লাখ টাকা করে। এর মধ্যে যারা পরিবার পরিজন রেখে কারা অধিদপ্তর থেকে বাহিরে চলে গিয়েছিলেন তালেবের কারণেই।
তাদেরকে আবারও টাকার বিনিময়ে কারা অধিদপ্তরে ফিরিয়ে এনেছেন। এভাবে কারা অধিদপ্তরের সকল ক্ষমতা ভোগ করছেন আবু তালেব, ফরহাদ ও ডিআইজি প্রিজন্স জাহাঙ্গীর কবির।

কারা বিভাগের সিনিয়র জেল সুপার পদোন্নতি নিয়ে ৩ টি গ্রুপের মধ্যে সিনিয়রিটি নিয়ে আদালতে মামলা মোকদ্দমা চলমান ছিল।নুরুন্নবী ভার্সেস আঃ জলিল গ্রুপ।
আঃ জলিল ভার্সেস আমিরুল গ্রুপ। গত কিছু দিন আগে সবার মামলা মোকদ্দমা উঠিয়ে নিয়ে আবু তালেব ও জাহাঙ্গীর কবির এর গভীর ষড়যন্ত্রে সিনিয়র জেল সুপার পদোন্নতি দিয়ে অনেককেই বঞ্চিত করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার ভেরিফিকেশনের জাল পেতে তাদের বাদ দিয়ে দেয়া হয়। এদের মধ্যে রয়েছে প্রশান্ত কুমার বণিক, রত্না রায় ও জাহানারা বেগম। তবে এই পদোন্নতি দিয়ে কাশিমপুর কারাগার ও চট্টগ্রাম কারাগার, রাজশাহী কারাগারে পদায়ন করে আবু তালেব কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন যা কারা মহাপরিদর্শক ধরতে পারে নাই।
এই তিনজনকে ২ দফা পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে।

কিছু দিন আগে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োগ দিয়ে আবু তালেব হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা। সেই জন্য কমিটিতে তাকে রাখা নাহলেও তার পছন্দের ডিআইজি ও সিনিয়র জেল সুপারকে কৌশলে কমিটির সদস্য করেন আবু তালেব।
গোয়েন্দা ইউনিট এর সদস্য হওয়ার জন্য সবাই আবু তালেবকে টাকা দিয়েছেন। আর আবু তালেব তা গোপনে কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছেন।

সবাই জানে আবু তালেব এর সাথে কৌশল করে কারা মহাপরিদর্শক ও অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক পেরে উঠছেন না। তালেব অফিস টাইম এর পর রাত ১২ টা ১ টা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রভাবশালীদের বাসায় বাসায় ঘুরে বেড়ান। (চলব)

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম