মাগুরায় এসব হচ্ছে কী? পরপর ৪ সাংবাদিকের ওপর বর্বর হামলা!

 

মাগুরা প্রতিনিধি:

সাংবাদিক ও ভিন্নমত প্রকাশকারীদের জন্য এক ভয়ংকর জনপদ হয়ে উঠছে মাগুরা। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা একের পর এক সাংবাদিকদের রক্তাক্ত করছে কিন্তু তাদের বিচার হচ্ছে না। রাজনৈতিক গডফাদার একটি ফোন করেই প্রশাসনকে অকার্যকর করে দিচ্ছে। এমন কি আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে আসামীদের জামিন করিয়ে নিচ্ছে।
গত এক বছরে এই সব রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের হাতে কমপক্ষে ৪ জন সাংবাদিক বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদেরকে মেরে হাত,পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাদের মামলাগুলো রক্তশুন্য অবস্থায় পড়ে আছে। তারা একই স্টাইলে হামলাগুলো চালিয়ে প্রমাণ করেছে যে এগুলো একইসুত্রে গাথা।
দুর্বৃত্তরা প্রথম আঘাত করে মুভি বাংলা টিভি ও দৈনিক সোনালী খবর পত্রিকার মাগুরা জেলা প্রতিনিধি কৌসিক আহমেদ সোহাগের ওপর। তাকে হকিস্টিক, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে নির্মম ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখন করে হাত ভেঙে দেওয়া হয়।
তারা দ্বিতীয় আঘাত করে সাংবাদিক ও গীতিকার লিটন ঘোষ জয়ের ওপর। তাকেও হকিস্টিক ও লোহার রড এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়।
তৃতীয় আঘাত করা হয় দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার মাগুরা জেলা প্রতিনিধি, সাহসী সাংবাদিক মোঃ মিরাজ আহমেদকে। তাকেও হকিস্টিক, লোহার রড ও বাশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখন করা হয়।
সর্বশেষ আঘাত করা হয় মাগুরার কৃতি সন্তান দুঃসাহসিক সাংবাদিক, সাহিত্যিক,নাট্যকার,গীতিকার ও কলামিস্ট রোস্তম মল্লিককে।
তিনি ঊদ উল ফিতরের ছুঁটিতে স্বপরিবারে মাগুরায় গেলে গত ২৫ এপ্রিল ২০২৩ রাত ১০ টার সময় মাগুরা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের পাশে তার ওপর হামলা চালিয়ে প্রান নাশের চেষ্টা করা হয়। আঘাতে তার একটি হাত ভেঙে যায় এবং মাথায় গুরুতর জখম হয়। তার কন্যার একটি হাত ভেঙে দেওয়া হয়। তারা এখনো ডাক্তারের চিকিৎসাধীন।

ধারাবাহিকভাবে এই যে সাংবাদিক নির্যাতন তার সব কটার স্টাইল কিন্তু একই। আর ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছে এক রাজনৈতিক গডফাদারের নির্দেশে। মাগুরাবাসী এবং সাংবাদিক সমাজের প্রশ্ন মাগুরায় কেন বেছে বেছে সাংবাদিকদের আঘাত করা হচ্ছে? কেন তাদের মামলাগুলো হিমঘরে চলে যাচ্ছে? কেন গ্রেফতার কার হচ্ছে না নেপথ্য নায়ক গডফাদারকে? কার হাত রয়েছে সাংবাদিক নিধনের এই মিশনের নেপথ্যে? কার ইশারায় চলছে মাগুরার প্রশাসন ও আইন আদালত? কতদিন আর এক গডফাদারের হাতে জিম্মি থাকবে মাগুরাবাসী?

হাসপাতালের তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি

স্টাফ রিপোর্টারঃ

জাহাঙ্গীর আলম শাহীন : রয়েল কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দৈনিক সকালের সময়ের নিজস্ব প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম শাহীনকে প্রাণনাশের হুমকি দেন । এ ঘটনায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে চকবাজার মডেল থানায় সাধারন ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

গত (২১ ডিসেম্বর ২০২২ইং) দুপুর ২টার দিকে চকবাজার মডেল থানায় সাধারন ডায়েরি (জিডি) করেন সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন তথ্যদাতা দৈনিক সকালের সময়ের নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শাহিনকে জানান, রয়েল কেয়ার হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার সিজার করে বাচ্চা বিক্রয় করে দিয়েছে। যে অন্তঃসত্তা মহিলার সিজার করা হয়েছে, তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে মহিলা দালাল জুলেখা এবং আকলিমা রয়েল কেয়ার হাসপাতাল ৮৫ হোসেনী দালান রোড চানখাঁরপুল, চকবাজার ঠিকানায় নিয়ে যান। রয়েল কেয়ার হাসপাতালে সিজার করে বাচ্চা বিক্রয় করে দেওয়ার দায়ে জুলেখা পলাতক এবং তার মেয়ে ও নাতনি ডিবি পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত কল্পে চকবাজার থানার ওসি আব্দুল কাইম কে মুঠোফোনের মাধ্যমে বিষয়টা জানতে চাইলে তিনি দৈনিক সকালের সময়কে বলেন আমার লোক এ বিষয়টা নিয়ে কাজ করছে।

সরেজমিনে ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নিতে রয়েল কেয়ার হাসপাতালে যাওয়ার প্রাক্কালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অপজিটে একটিভ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর সামনে প্রথমে বাবলুর সাথে সাক্ষাৎ এবং কিছু কথোপকথনের একপর্যায়ে সেখানে এসে উপস্থিত হন মোবারক এবং টুটুল। আর মোবারক উপস্থিত হয়েই দৈনিক সকালের সময়ের প্রতিনিধির হাত ধরে টেনে গাড়িতে উঠানোর চেষ্টা সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দেন। একজন সাংবাদিককে হেনস্থা এবং প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়ার কারণে গত রবিবার(২১ ডিসেম্বর ) চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সেই সাংবাদিক (জাহাঙ্গীর আলম শাহীন)। জানা যায়, গত ১৯শে ডিসেম্বর দুপুর ২:৫০ ঘটিকায় চানখাঁরপুল রয়েল কেয়ার হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য জানতে সরেজমিনে যান সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন।
পরে সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মোবারক হোসেন, টুটুল ও বাবলু বিভিন্নভাবে সাংবাদিককে হুমকি দেন। জানা যায়, মোবারক হোসেন গং সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীনকে বলেন, আমাদের সাথে বিভিন্ন ইয়াবা ব্যবসায়ীর ভালো সম্পর্ক আছে, তোর মতো সাংবাদিককে ১০০ পিস ইয়াবা দিয়ে চালান করে দেবো তখন তুই কি করবি? পরে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন মোবারক। সেই সময় মোবারক হোসেন উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিককে প্রশ্ন করেন, তোর বাড়ি কই তোর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তোকে মারার ক্ষমতা রাখি। মোবারক হোসেন আরও বলেন, তোমাকে(সাংবাদিক) প্রেসক্লাবে খুঁজে এসেছি লোকজন দিয়ে সেখানে তোমাকে পাইনি পেলেই সেখানো তোর খবর করে আসতাম। তোকে ঢাকা ছাড়া করবো। আর তোকে নিয়ে ওসির রুমে বসবো তোর পত্রিকা অফিসে যাবো। চাকু দিয়ে তোর পেট কেটে ফেলবো ইত্যাদি ইত্যাদি।

এব্যাপারে দৈনিক সকালের সময়ের নিজস্ব প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম শাহীন বলেন, রয়েল কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে কিছু তথ্য জানতে পারি তাই বিষয়টি জানার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তোপের মুখে পড়তে হয়। আমাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ ইয়াবা দিয়ে চালান করে দেওয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন মোবারক গং যা আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।

এব্যাপারে চকবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ভুক্তভোগী সাংবাদিক একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম