স্ত্রীর অপরাধে স্বামী ও শিশুকে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

রায়হান চৌধুরী, মুরাদনগর থেকে:

স্ত্রীর অপরাধে নিরপরাধ স্বামী ও তার ৪ মাসের শিশু তোহাকে থানার হাজতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিলের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর, ২০২৩) দিবাগত রাতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদরের উত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেব’,র স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬) তার ভাই দেলোয়ার হোসেনের এনজিওর ঋণের টাকার জিম্মাদার হয়। পরে সেই ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় জিম্মাদার সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয় সেই এনজিও কোম্পানি। এরই ধারাবাহিকতায় সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আসে মুরাদনগর থানায়। শুক্রবার বিকেলে মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী সুমি আক্তারকে বাড়িতে না পেয়ে তার অসুস্থ স্বামীকে থানায় নিয়ে এসে ৪ ঘন্টা হাজতে আটকে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে সুমি আক্তার কোলের শিশু তোহাকে নিয়ে থানায় হাজির হলে ছেড়ে দেয়া হয় তার স্বামীকে।

স্বামী আব্দুল মোতালেব অভিযোগ করে বলেন, যদি কোন ধরনের অপরাধ করে থাকে সেটি আমার স্ত্রী করেছে। তার অপরাধে তো আর আমাকে অসুস্থ অবস্থায় ৪ ঘন্টা থানার হাজতে আটকে রাখতে পারেনা! আমার শিশু কন্যা তোহা কি অপরাধ করেছে? যে তাকেও সারা রাত থানার হাজতের ভিতরে আটকে রাখতে হলো! পুলিশ চাইলে কি আমার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে থানার ভীকটিমদের রুমে রাখতে পারতো না? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এদিকে আইনজীবী ব্লাস্ট (কুমিল্লা শাখা) প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ নুরু বলেন, একজনের অপরাধে অন্যজনকে সাজা দিতে পারে না, শিশুদের জন্য আলাদা সেল থাকে, যদি পুলিশ হাজতে শিশুটিকে রাখে তাহলে এটা ঠিক হয়নি।

মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর বলেন, ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য সুমি আক্তারের বাড়ীতে গেলে সে পালিয়ে যায়। এসময় তার স্বামীকে দেখে নেশাগ্রস্ত মনে হওয়ায় ওসি সাহেবকে জানালে তিনি তাকে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। পরে তার স্ত্রী থানায় আসলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তাকে হাজতে রাখা হয়নি, একটি রুমে রাখা হয়েছিলো।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল বারী ইবনে জলিল বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি সুমি আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে থানার হাজতের ভিতরে রাখার বিষয়টি মিথ্যা। কারণ আমার থানায় কোন নারী সেল নেই। তাকে থানার নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়েছে। অপরদিকে স্বামীকে তুলে এনে চার ঘন্টা আটকে রাখার বিষয়টিও মিথ্যা। এ ধরনের কোন ঘটনাই মুরাদনগর থানায় ঘটেনি।

মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে, যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মেঘনায় নৌ-পুলিশের অভিযানে অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার:

কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলায় চাঁদপুর রিজিওনের অধীনস্থ চালিভাঙ্গা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির দ্বিতীয় দিনের বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে মেঘনা নদীতে। জব্দ করা হয়েছে প্রায় এক হাজার মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল।

শুক্রবার (১৩ অক্টোবর, ২০২৩) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ছাইফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এএসআই ফকরুল ইসলাম’ সঙ্গীয় ফোর্স সহ এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ সময় উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের নলচর গ্রামের উত্তর পাশে মেঘনা নদীতে কয়েকজন জেলে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল নদীতে পাততে দেখা যায়। পথিমধ্যে নৌ-পুলিশের নজরে আসলে তারা পুলিশ দেখে নদীতে জাল পেতে পালিয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জেলেদের হিসাবে জব্দ করা হয় আনুমানিক বিশ হাজার টাকার কারেন্ট জাল। অন্যদিকে আশেপাশের জেলেরাও নৌ-পুলিশের উপস্থিতি দেখে আগে থেকেই পালিয়ে যায়। পরে জব্দকৃত জাল রামপুর বাজারের ঘাটে নিয়ে এসে পুড়ে ফেলা হয়।

জানা যায়, এই চৌকস পুলিশ অফিসার মো. ছাইফুল ইসলাম এ ফাঁড়িতে যোগদানের পর থেকে বিগত দুই মাসের মধ্যে নদী পথের চাঁদাবাজি, অবৈধ ঝোপ সহ বিভিন্ন অনিয়ম বন্ধ করতে সক্ষম হয়।

এ ব্যাপারে চালিভাঙ্গ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ছাইফুল ইসলাম দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ’কে বলেন, ‘কারেন্ট জালগুলো নদীতে পাতানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। আমাদের দেখে তারা তড়িঘড়ি করে পালিয়ে যায়। তবে কারেন্ট জাল ও নদীতে বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। প্রতিদিন আমাদের একটি টিম ভিন্ন ভিন্ন সময় নদীতে দায়িত্ব পালনে অব্যাহত থাকবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম