খাদ্যের অপচয় যাতে না হয়: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের খাদ্যের অপচয়টা কমাতে হবে। অপচয় যেন না হয়। সারাবিশ্বে কিন্তু একদিকে খাদ্যাভাব, অপরদিকে প্রচুর খাদ্য অপচয় হয়। এই অপচয় যেন না হয়। বরং যে খাদ্যগুলো অতিরিক্ত থাকে, সেটাকে আবার ব্যবহার করা যায় কীভাবে, সেই বিষয়টা আমাদের চিন্তা করতে হবে। সেই ধরনের ব্যবস্থাও আমাদের নিতে হবে। উদ্বৃত্ত খাদ্য পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে অন্য কোনো চাহিদা পূরণ করা যায় কি না, সেদিকে দৃষ্টি দিতে গবেষকদের পরামর্শ দেন তিনি।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে মানুষের খাদ্য চাহিদা নিশ্চিতে দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে, সেই নির্দেশনা দেয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ শনিবার সকালে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২১’ এর সরকারি অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এখন খাদ্যের অভাব। অনেক দেশ দুর্ভিক্ষ অবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে জাতির পিতার ভাষায় বলতে হয় যে বাংলাদেশের মাটি আছে, মানুষ আছে। আমরা যেন কখনো খাদ্যের অভাবে আর না ভুগি।”
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গ ‘মঙ্গামুক্তই থাকবে’। বাংলাদেশে আর যেন কখনও দুর্ভিক্ষ না হতে পারে আর কেউ যেন চক্রান্ত করেই দুর্ভিক্ষ করতে না পারে, সেদিকে বিশেষভাবে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় কাজ করে যাওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। যার জন্য আমি মনে করি, খাবারে বাংলাদেশের আর কোনোদিন আল্লাহর রহমতে কোনো অভাব থাকবে না। এজন্য গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, একটি বীজ যখন আপনি আবিষ্কার করেন, উদ্ভাবন করেন, সেটার যখন উৎপাদনটা হয়, ধীরে ধীরে কিন্তু উৎপাদনের পরিমাণটা কমতে থাকে। এজন্য সব সময় গবেষণাটা অব্যাহত রাখতেই হবে।
স্বাধীনতার পর দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেওয়া নানা পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি।
২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দেইনি বলেই আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হলো না। বৃহৎ দুটি দেশ আর প্রতিবেশি দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারিনি।
সেসময় ক্ষমতায় না আসার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আমার কথা ছিল- আগে আমার দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ হবে, অন্তত ৫০ বছরের মজুত থাকবে। তারপর যেটা অতিরিক্ত থাকবে সেটা আমি বেচতে পারি। তাছাড়া এই দেশের সম্পদ আমি বেচতে পারি না। এই কথা আসলে একটা বিশাল দেশ আমেরিকা আর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পছন্দ হয়নি। কাজেই আমি ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি।

এই অনুষ্ঠানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্রান্তে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নারী ও শিশু নির্যাতনে ঘটনায় দ্রুত, দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে বিপিসির উদ্বেগ

নারী ও শিশু নির্যাতনে ঘটনায় দ্রুত, দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে বিপিসির উদ্বেগ

ডেস্ক রিপোর্টঃ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পাবলিক কোয়ালিশন (বিপিসি)। একই সাথে জরুরি রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও নাগরিক পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানিয়েছে বিপিসি।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সংঘটিত হচ্ছে ধর্ষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন ও হত্যার মতো নৃশংস অপরাধ। বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হলো, কিছু ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে, যা কেবল ভুক্তভোগী নারীর নয়- তার পুরো পরিবার ও সমাজের মর্যাদাকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ অবস্থা একটি সভ্য সমাজের জন্য চরম লজ্জা ও অনুতাপের বিষয়।

এতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ পাবলিক কোয়ালিশন ও উদ্বিগ্ন নাগরিকরা- এ ধরনের সহিংসতা ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নারীর সম্মান, সম্ভ্রম ও নিরাপত্তা রক্ষায় রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি স্তরে একযোগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।আমরা নিম্নলিখিত দাবি ও করণীয়গুলো উত্থাপন করছি :

১. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ : নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দ্রুত, নিরপেক্ষ ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কার্যকর করতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ধর্ষণ বা নিপীড়নের ভিডিও দ্রুত সরিয়ে ফেলা, অপরাধীদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনতে সাইবার গোয়েন্দা ইউনিট শক্তিশালী করা জরুরি। ভুক্তভোগী নারী, শিশু ও তাদের পরিবারের সম্মান, গোপনীয়তা, নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের বিষয়গুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে একটি মানবিক সহায়তা ও সুরক্ষা কাঠামো গড়ে তোলা হোক। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা, আইনি সহায়তা ও নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসন, সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

২. সামাজিক-সাংস্কৃতিক পদক্ষেপ : পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমে নারী-পুরুষ সমতা, সম্মান, সহমর্মিতা ও মানবিকতার চর্চা জোরদার করতে হবে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও ধর্মীয় প্ল্যাটফর্মগুলোতে মানবিক ও নৈতিক শিক্ষার বয়ান নিয়মিত প্রচার করার আহ্বান জানাচ্ছি।

৩. নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের করণীয়: সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের প্রতি আমাদের অনুরোধ- ভিকটিমের পরিচয় ও সম্মান রক্ষা করুন; তাদের ব্যক্তিগত দুর্ভোগ যেন আরেকবার গণমাধ্যমের মাধ্যমে যেন পুনঃনিপীড়নে পরিণত না হয়। সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে স্কুল-কলেজে আলোচনা, নাটক, ক্যাম্পেইন ও কাউন্সেলিং চালু করতে হবে। যুবসমাজকে এ বিষয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ পাবলিক কোয়ালিশন মনে করে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে রাষ্ট্র, সমাজ ও নাগরিকদের সম্মিলিত প্রতিরোধই একমাত্র পথ। এই দায়িত্ব এড়ানো আমাদের কারো পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা আবারও বলছি- ভুক্তভোগী নারীর সম্মান রক্ষা হোক, অপরাধীর বিচার হোক।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম