বাংলাদেশের গনতন্ত্র ও মানবাধিকারের দাবিতে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

লন্ডন প্রতিনিধি:

বাংলাদেশের গনতন্ত্র ও মানবাধিকার ফিরে না আসা পর্যন্ত বৃটেনের সাথে বাংলাদেশের অভিবাসন চুক্তি বাতিলের দাবিতে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকে’র উদ্দোগে গত ৩রা জুন রোজ সোমবার দুপুর ২:৩০ মিনিটের সময় ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি মুসলিম খানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী তাহমিদ হোসেন খান ও সহ সেক্রেটারী আরিফ আহমদ এর সহ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট মাহফুজ আহমদ চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় শুরুতে পবিত্র আল কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আবদুল হামিদ শিমুল। উক্ত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি সহ সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক অলি উল্লাহ নোমান, ছাতক উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা বেগম ন্যান্সি, এনবিসি ইউকের উপদেষ্টা শামীমুল হক। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, এনবিসি ইউকের সহ সভাপতি আসয়াদুল হক, আলী হোসাইন,জুবায়ের আহমদ সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ আহমদ খান।
বক্তারা বলেন, বিগত ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে বাংলাদেশে গনতন্ত্র নেই, নেই ভোটের অধিকার। বিরোধী মতের মানুষের উপর মিথ্যা মামলা-হামলা করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। মতের বিরুদ্ধে কথা বল্লে গুম-খুন করা হয়। বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা নিজের জীবন বাচাতে যুক্তরাজ্য সহ ইউরোপে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। বৃটিশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের গনতন্ত্র ও মানবাধিকার ফিরিয়ে না আসলে যুক্তরাজ্য সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসন আশ্রয় প্রার্থীরা ভির করবে।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন এনবিসি ইউকের সহকারী সেক্রেটারী রায়হান আহমদ,মো: ইকবাল হুসেন,সহ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সম্পাদক মোস্তফা আহমদ,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুন নূর, মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ লতিফ আহমদ, আব্দুল ওয়ালী শামীম,মো:মিফতা উদ্দীন,আব্দুর রহমান,মো: হাসনাত আল হাবীব,শেখ আবুল ফাত্তাহ,মোহাম্মদ মাজেদ হোসেন,
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম,ওলিউর রহমান,
মো: তফুর আহমদ,মো: আলা উদ্দীন খান,
মো: আলম আহমদ,মাহফুজুর রহমান খান,মো: মিনহাজ উদ্দীন খান,মো: হেলাল উদ্দীন,হুমায়ুন আহমদ,মো: আব্দুল হালীম,ফেরদৌস হাসান,আব্দুল্লাহ মো: তাহের,জাহিদ আহমদ,রানু মিয়া,আইমান আহমদ,সাবের আহমদ,নো: রমজান হায়দার (রাজা),মো: রাহিদ আলী,মো: আশরাফ আহমেদ,আবু তালহা,রানা মিয়া প্রমুখ । উক্ত মানববন্ধনে উপস্হিত ছিলেন এনবিসি ইউকের সহ-সভাপতি করিম মিয়া, অর্থ সম্পাদক মোঃ অহিদুল ইসলাম,আমিনুর রহমান,সহ-প্রচার সম্পাদক মো: ছাবিদ মিয়া ও নাসির হুসাইন অপু,এবাদুর রহমান,ছাদি আহমদ চৌধুরী, মোছা: নিপা বেগম,সুমেনা বেগম,সাথী আক্তার,গোলাম ফারিবা আহমদ আলিফ, মো: ফজল আহমদ,জুলফু আহমদ, সুবেজান বেগম, মো:মাসুম আহমদ,মো: মাহফুজুর রহমান,মোমেনা বেগম,আব্দুল হামিদ,ইসলাম উদ্দিন,
কিবরিয়া আহমদ চৌধুরী,আমিরুল মোমিন রেজা,মির্জা এনামুল হক,কাওছার আহমেদ চৌধুরী,মির্জা শাওন আল মামুন,হোসাইন খান,মোঃ হাদিসুর রহমান,হাবিবুর রহমান,জামিল আহমদ,শাহীন মিয়া,নাঈম,রুমেল,মাজিদ মিয়া,মাসুদুল মজিদ চৌধুরী,মো: মারুফ আহমেদ,মো: সাইফুর রহমান,মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম কবির,মামুন মিয়া,ইমরান আহমদ,এমদাদুল হক,মো: শরীফ আহমদ,মো: সাইদুল ইসলাম,আব্দুল আলী,মো: আবুল ,ফয়জুল হক,খন্দকার মোতাহের হোসাইন,রেদওয়ান আহমদ রোমেল,শাহনুর আলম রাহাত,জুনেদ আহমদ কবিরী,আবু সুফিয়ান,রাহেল আহমদ,ইমরান ইকবাল,ফরহাদ হোসেন ফাহমিদ,তারেক আহমেদ,মো: এমদাদুর রহমান,মো: রুমান আহমদ,আব্দুল্লাহ আল নাহিদ,রেজাউল করিম রাব্বি,সোহেল আহমদ, মো: এবাদুর রহমান,মো: আহসান হাবীব চৌ:,মো: আশরাফুল আলম,মো: সাকিব হাসান,মো: শিপন উদ্দীন,মেহেদী হাসান সোহান,ইব্রাহিম আহমদ অপু,একে এম তারেক,এহসানুল হক,সৈয়দ মাহবুবুল আলম,মো: ইমন আলী,মো: ফারুক,শাকির ইহসান মো: ইরাক,আলীম উদ্দীন,মো: আহসান আহমদ,মো: কামাল হোসেন, কামরুল ইসলাম,রাব্বুল মিয়া,মো: নাজমুল হোসেন,নাজমুল কবির,জুনেদ মিয়া,জুয়েল রানা,জাকওয়ান আহমদ,মো: সোহেল মিয়া,রাসেল,মো: আদনান হোসেন তারেক,
জাকির আহমদ,সাইফুর রহমান,আজহারুল ইসলাম,মো: মইনুল ইসলাম,মীর ইমরান,
আব্দুল হান্নান,আমিনুল ইসলাম,মো: জামাল হুসাইন,তারেক আহমদ,আব্দুল হাকিম সানিয়াক,নাইমুর রহমান,মাজেদুল ইসলাম,
জাবের হাসান,মো: জাকারিয়া,সাদেকুর রহমান,মো: সাহাদাত আল রজব,মিজানুর রহমান,নজরুল ইসলাম,মুজিবুর রহমান,
মনসুর মাহমুদ,কামরুল ইসলাম,ফরহাদ হোসেন ফাহমিদ,মুহিন আহমদ,তুফায়েল আহমদ,মো: জামিল উদ্দীন,উজ্জল চৌধুরী,
জাহাংগীর আহমদ,রেদওয়ান আহমদ রোমেল,মো: শহিদুল করিম,আল আমিন মিয়া,জাহেদ আহমদ,ইকবাল হোসাইন,
আবুল মহসিন,মো; আলী আহমদ,সানজিদা ইসলাম তমা,ইফতেখার হোসেন চৌধুরী,মো: নাহিদ ইসলাম,রেজাউল ইসলাম যাদু,ফাহিম আহমদ,আব্দুল বাছির রাজু,মো: শাহাব ফারহান চৌধুরী,আহসান হাবীব,মো: শামীম হোসেন,মো: আবুল কালাম,আব্দুল্লাহ আল মামুন,মো: সাবাজ মিয়া,জাবের হোসাইন,এম এ শামীম,ফয়জুল হক,মাহমুদুল হাসান, সামছুল আহমদ,রাশেদ জিসান, মোক্তাদির হোসেন,আকবর আলী,কবির আহমদ, জুনেদ আহমদ,এনামুল হক,মো: তানভীর হোসেন সিদ্দীকী,শেরওয়ান আলী,মারুফ আহমদ,মো: শাহজাহান মিয়া,কাজী ইমদাদ,কামরুল হাসান,রাহেল আহমদ,মো: আব্দুল আহাদ,অলিউর রহমান,আবুল কালাম আজাদ,মুহিবুর রহমান,মো: আব্দুল কাইয়ুম মাহদী,হামিদ মিয়া,রুমান আহমদ,সালেহ আকরাম, মো:শাকির,শামিম আহমদ,এম আশরাফ উদ্দীন,সৈয়দ গজনফর আলী,দেলওয়ার হোসেন,সাহেদ আহমদ,জুনের আহমদ, আব্দুস সামাদ, শাহরিয়া মাহমুদ রাজেল, তোফায়েল আহমদ,জামিলা খানম,মাহিয়া চৌধুরী সীমা,নার্গিস ইসলাম,ইব্রাহিম আহমেদ অপু,মারিয়া বেগম,আব্দুল রফিক,শরিফা বেগম,মো: সাইদুর রহমান,রাহিনা বেগম,আব্দুল হামিদ,মো: শাহজাহান আহমদ,মো: জাকিরুল ইসলাম,লিটন মিয়া,শামীম হোসাইন,আলী আহমদ,
আব্দুল হামিদ তাজুল,রাসেল আহমদ,
খোরশেদ আলম,রেজাউল ইসলাম,ফাহিম আহমেদ,বদরুল ইসলাম,মো: জুয়েল রানা,আশরাফুল ইসলাম নোবেল,আছাদ আহমদ,মেহেদী হাসান সোহান,কায়েছ মাহমুদ,জাহেদ হোসেন,আব্দুল্লাহ আল নোমান,ওমর সানি,সোহাগ শেখ,সাঈদ হোসাইন,শাহিন আহমদ,কাজী মোজাম্মেল হোসাইন, মোহাম্মদ উল্লাহ শাকিল, আখতারুজ্জামান, নিজামুদ্দীন,মো: সুরাইম,আবুল বাশার মহসিন,আইমান আহমদ,মামুনুর রশিদ,ছাইম উদ্দীন,
আশরাফুল আলম,কামাল হুসাইন,আব্দুল্লাহ আল জাবির,মাহমুদ হোসাইন,আবুল মনসুর,মো: আশিকুর রহমান,মো: শাহিন আলম,সাজু আহমদ,মিজানুর রহমান,মো: শুয়াইবুল ইসলাম,জামিল আহমদ,সুবেন্দ বেগম, আব্দুল মমিন,মো: মাসুদুর রহমান, মো: হাফিজ আহমদ, মোক্তাদির হোসাইন,
আদিল আহমেদ, কাওছার আহমদ,শামছুল আলম জাবেদ, মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান,
আসাদুল ইসলাম, শাহ মো: ওহিদুর রহমান,
মো: আব্দুর রহিম, মিজানুর রহমান,
মুজাম্মেল আহমেদ,মো: বুরহান উদ্দীন,মো: শামীম আহমদ, রাকিব আহমেদ ঘোরী,মো: সাহেল আলী, আহসান হাবীব,নাজমুল কবির,এম এম ইয়াজদীন, সাহজাহান আহমদ ছানি, শিমুল ইসলাম, নাসির উদ্দীন,আমিনুল ইসলাম আনহার, ইউসুফ নিজামী,মো: শাহবাজ মিয়া,সাইফুর রহমান ইমন,মো: মহসিন মিয়া,শাহান আহমদ,
আজিজুর রহমান,মিনহাজ,লিমন আহমদ সুমন, মো: সাবাজ মিয়া,নাহিম আহমদ,কামাল হুসেন,হাফিজুর রহমান,
মুক্তাদির আহমদ,বদরুল কামাল,নন্দন দে,কামরুল ইসলাম,রায়হান উদ্দীন সাজু,মারুফ চৌধুরী,মো: নাহিদুল ইসলাম,হাসিবুর রহমান,মইনুদ্দিন মিয়া,
দুলাল আহমদ,মো: নাইমুর রহমান,সৈয়দ আশফাক হাবীব ফাইয়াজ, মো: তারেক আহমদ,এবাদুর রহমান,আরাফাত রহমান,হারুন মিয়া,মো: আবুল কালাম,সৈয়দ ফায়েজ আলী,ইব্রাহিম আহমদ অপু,কামরুল হাসান নাসিম,শফি আহমদ,সুয়েব আহমদ,ইশহাক আহমদ,মো: আব্দুল মুহিত,মো: শহিদুর রহমান,মাজিদ মিয়া,আরিফুজ্জামান উকিল,আশরাফুল আলম শামীম,খায়রুল আলম,আদিল আহমেদ,জামিল আহমেদ,নাঈম,হাবিবুর রহমান,মো: আজিজুল হক,আহমদ সাত,
তারেক আহমদ,আলতাবুর রহমান,সাইফুল আলম,জাফর ইমরান,মো: মিজানুর রহমান, মো: আশরাফ আহমদ,মো: আশরাফুল আলম,মো: জাহিদুল ইসলাম,মো: ছাদিকুর রহমান তারেক,হাদিসুর রহমান,সাকিব চৌ:,হামীম আক্তার আলো,ইরফানুল হক রাব্বী,রিপন আহমদ,তানজিব আহমদ বিপুল,ইসরাত জান্নাত নাজমিন,মুক্তাদির আহমদ,শাহ আহমদ জাকির,মেরাজুল ইসলাম,তানভির হোসেন,মো: তাহের আহমদ,তামজিদুর রহমান মুরাদ,মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান,মো: মোজাক্কির আলী, মাজেদুল ইসলাম,মো: ছাব্বির আহমদ অপু,জুবায়ের আহমদ,সাজ্জাদ হোসেন, মাহান,হাবিবুর রহমান,মো: সাগর আহমেদ, সৈয়দ তারেক আহসান,মো: ফাহাদুজ্জামান, মো: ফান্টু,আব্দুল মুমিন রাহী,সোহেল আহমদ, তামান্না সুলতানা পান্না,ফাটিন রাহিম নাবিল, শাহ মোহাম্মদ সাহিদুর রহমান প্রমুখ ।

বই না কিনেও যে দোকানে বই পড়া যায়

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক: 

রমজান আলীর বাবা ছিলেন দিনমজুর। টাকা দিতে না পারায় একবার তাঁর হাত থেকে ছেলের জন্য কেনা বই কেড়ে নিয়েছিলেন দোকানি। সেই রমজানই এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে অন্য ব্যবসার পাশাপাশি বিনা মূল্যে বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। ওঙ্কার নামের এই বইয়ের দোকানে বই না কিনেও পড়া যায়। শুধু তা–ই নয়, নিয়মিত পড়লে মেলে পুরস্কার। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই যেমন পুরস্কার পাবেন ১২ জন পাঠক।

ওঙ্কারের স্লোগান ‘বইয়ের সঙ্গে সন্ধি’। ওঙ্কার চত্বরে বসে কেউ যদি মাসে অন্তত ২০ দিন কমপক্ষে এক ঘণ্টা বই পড়েন, তাঁর জন্য থাকে উপহার—একটি সৃজনশীল ও একটি মননশীল বই। রমজান আলীর এমন আহ্বানে সাড়া দিয়ে সত্যিই শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এসে বসেন গাছের ছায়ায়। রাজশাহী বেড়াতে এসেও অনেকে ঘুরে যান। ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় যেমন এসেছিলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। পরিদর্শন বইয়ে লিখেছেন, ‘ওঙ্কার নামটিই প্রবল শক্তির ডাক দেয়। এই বইয়ের সম্ভার প্রাণশক্তি দিক। অনেক শুভেচ্ছা।’ রমজান আলীর এই প্রাণশক্তির উৎস জানতেই গত ৪ নভেম্বর দুপুরে ওঙ্কার চত্বরে গিয়েছিলাম, নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক রহমান রাজু।

রমজান বলেন, ‘আব্বা দিনমজুর, কোনোমতে সংসার চলে, আমরা তিন ভাই। আমি সবার বড়। মনে আছে স্কুল থেকে এসে ইটভাটায় কাজ করেছি, কয়লা ভাঙার কাজ করেছি। এলাকার বুধপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় ক্লাস সিক্সে ভর্তি করে দিলেন মা। এক বছর কোনোমতে পার হলেও ক্লাস সেভেনে ওঠার পর মূল সমস্যা শুরু—বইখাতা কেনার টাকা নেই। একদিন আব্বার সঙ্গে স্টেশনবাজারে বাংলা বই কিনতে গিয়েছি। বইয়ের দাম ১৭ টাকা। দোকানিকে ১০ টাকা দিয়ে আব্বা বলেছিলেন, বাকি টাকা পরে দেবেন। কিন্তু দোকানি শুনলেন না। আব্বার হাত থেকে বই কেড়ে নিলেন। আরেকবার খাতা–কলম না নিলে ক্লাসে স্যার মারবে, এই ভয়ে স্কুলে যাচ্ছি না। এদিকে মা মারছে, আমি কান্নাকাটি করছি—এই অবস্থা দেখে সেই ইটভাটার ম্যানেজার গোলাপ ভাই আমাকে দোকানে নিয়ে গিয়ে খাতা–কলম কিনে দিলে পরে স্কুলে গেলাম। এ রকম অনেক গল্প আছে।’

‘এলাকার এক ভাই একদিন বলল, শোন রঞ্জু, এভাবে পড়ালেখা হবে না। আমার সঙ্গে চল। ক্যাম্পাসে একটা দোকানে কাজে লাগিয়ে দিই। ১৪ বছর বয়সে ১৯৯৭ সালের জুন মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের উল্টো দিকে স্টেডিয়াম মার্কেটে স্টুডিও লিবার্টিতে কাজ আরম্ভ করলাম। প্রায় সাত বছর কাজ করেছি। এরপর নিজে সেখানে একটি দোকান করলাম, ছবি বাঁধাইয়ের কাজ। ২০০৩ সালে আব্বা মারা গেলে সংসারের দায়িত্ব আমার ঘাড়ে পড়ল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের পেছনে পরিবহন মার্কেটে দোকান করে আসলাম ২০০৬–এর শেষের দিকে। শুরু করলাম উপহারসামগ্রীর সঙ্গে বই বিক্রি, যে বইগুলো একটু কম দামে পাওয়া যায়। এই মার্কেট ক্যাম্পাসের প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় অনেকের সঙ্গেই খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠল।’

২০১০ সালের কথা, বাংলা বিভাগের তখনকার ছাত্র, বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আবুল ফজলের সঙ্গে আমার বেশ ভালো সম্পর্ক। একদিন দুজন মিলে চায়ের দোকানে গল্প করছি। একপর্যায়ে ফজল ভাইয়ের পরামর্শে সিদ্ধান্ত হলো দোকানে ভালো বই বিক্রি করব। লোহার বেঞ্চে বসে ফজল ভাই তখনই ১৭০ থেকে ১৯০টি দেশি-বিদেশি লেখকের বইয়ের নাম লিখে দিল। একসঙ্গে এত বইয়ের নাম দেখে অবাক হয়েছিলাম, এখন নিজেই ৫০০ বইয়ের নাম লিখতে পারি। ঢাকায় বাংলাবাজারে একদিন গেলাম, উত্তরণ প্রকাশনীর ম্যানেজার অরূপ দত্ত ও ছোট ভাই সুজন সিকদারের সঙ্গে পরিচয় হলো। এই দুজন পথপ্রদর্শক, আমার বইয়ের জোগানদাতা। দেখতে দেখতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা আড়াই যুগ হতে যাচ্ছে, একটা কুরিয়ার সার্ভিসের আমতলা এজেন্সি পরিচালনা করছি প্রায় ৯ বছর, তা থেকে সংসার চলে।

‘অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল সুন্দর একটি বইয়ের দোকান করব। সহজলভ্য ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, হলে হলে ওয়াই–ফাই ফ্রি—এসব কারণে ছেলেমেয়েরা বর্তমানে বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শুভাকাঙ্ক্ষী বড় ভাই, শিক্ষক, বন্ধু—যাঁদের সঙ্গে আমার নিত্য চলাচল, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। সবাই সাহস জোগাল। আহমদ ছফার উপন্যাস অবলম্বনে দোকানের নাম ঠিক করলাম  “ওঙ্কার”। স্বপ্ন দেখি, ক্যাম্পাস চত্বরে যেমন চা–সিগারেটের দোকানে একশ্রেণির শিক্ষার্থীরা সময় কাটান, এই ওঙ্কার চত্বরে শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে আলোচনা করবেন, আড্ডা দেবেন। হবে সৃজনশীল আলোচনা, নিজেকে সুগঠিত করার আলোচনা। অনেক ছেলেমেয়ে আবার সেজেগুজে বইয়ের সঙ্গে ছবি তুলতে আসেন। আমি বলি আসুক, আসতে আসতেই বইয়ের সঙ্গে ওদের সন্ধি হবে।’

সেদিন রাত সাড়ে ৯টায় ওঙ্কারে গিয়ে ৭-৮ জন ছেলেমেয়েকে পাওয়া গেল, যাঁরা পড়ছেন। দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া মুহিব বললেন, যদি জিজ্ঞাসা করেন, ক্যাম্পাসে আমার সব থেকে পছন্দের জায়গা কোনটি, এককথায় বলব, ওঙ্কার চত্বর। সিলেবাসের বাইরে সাহিত্য, দর্শন, কবিতা, ইতিহাস পড়তে ভালো লাগে, আবার এদিকে লাইব্রেরিতে আপডেট বই পাওয়া যায় না। রাজশাহীতে ভালো মানের বইয়ের দোকান হাতে গোনা। না কিনে যদি বই পড়া যায়, মন্দ তো হয় না। এর মধ্যে রঞ্জু ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়। তিনি শিক্ষার্থীদের না কিনে বই পড়ার শুধু অনুমতিই দিলেন না, ঘোষণা দিলেন বই পড়লে পুরস্কার দেবেন। প্রতিদিন আমার মতো অনেক শিক্ষার্থী এখানে বই নিয়ে তর্ক করে, আড্ডা দেয়, কবিতা পড়ে আর ভালোবাসতে শেখে। ওঙ্কারের এই বই পড়া হয়ে উঠেছে আমার অর্ধেক ক্যাম্পাস। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা বলেন, ‘ওঙ্কার–এ অনেক নতুন বইয়ের সংগ্রহ আছে, আর এখানে এত এত দামি বই আছে, যেগুলো অন্য কোনো দোকানে গেলে কিনতে অনেক টাকা লাগবে। সেই বইগুলো আমি এখানে খুব সহজেই শেলফ থেকে নামিয়ে পড়ে ফেলতে পারি। এই উচ্চমূল্যের বাজারে মাস পার করতেই যেখানে কষ্ট হয়ে যায়, সেখানে সাধারণ একজন ছাত্র হিসেবে নতুন নতুন বই কেনা কতটা কঠিন, যাঁরা বই কেনেন, তাঁরা বুঝতে পারবেন। আমি ২০২৩ সাল থেকে নিয়মিত আসি।’

 

সবা:স:জু- ৫৫৬/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম