নয়াটোলা মাদরাসায় শিক্ষকদের উদাসীনতায় বন্ধ ফাযিল ও কামিলের ক্লাস

আকাশমনি :

ঢাকার প্রাণকেন্দ্র রমনা মগবাজারে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়াটোলা এ ইউ এন মডেল কামিল মাদরাসা। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, এই মাদরাসায় বেশ কয়েক বছর বন্ধ রয়েছে ফাযিল ও কামিলের (সমমান স্নাতক ও স্নাতকোত্তর) নিয়মিত ক্লাস। এমনকি সরেজমিনে খোঁজ করলেও ক্লাস রুটিন ও হাজিরা খাতা তারা দেখাতে সক্ষম হয়নি। মাঝে মাঝে ছাত্রদেরকে লোক দেখানো অনুষ্ঠানে উপস্থিত করানো হয়। শুধুমাত্র সেন্টার পরীক্ষায় তাদের উপস্থিতি পাওয়া যায়। মাদরাসার অফিসসূত্রে জানা যায় ফাযিল ও কামিলের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা দুই শতাধিক। তাদের পাঠ দানের জন্য নিয়োজিত আছেন দশজন নিয়মিত ও অনিয়মিত শিক্ষক। শিক্ষকগণ নিয়মিত বেতন গ্রহণ করলেও উদাসীনতা রয়েছে নিয়মিত ক্লাস নিতে। শিক্ষকদের উদাসীনতায় ছাত্র-ছাত্রীরাও আর ক্লাসে আসতে চান না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রের মাধ্যমে জানা যায়, হোস্টেলেও রয়েছে ফাযিল ও কামিলের বেশ কয়েকজন ছাত্র, অথচ শিক্ষকদের উদাসীনতায় তারাও ক্লাসে আসেন না। শিক্ষকগণ চাইলে তারা অবশ্যই ক্লাস করবেন এবং মাদরাসার আশে পাশে ছাত্রাবাসে বসবাসকারী ছাত্ররাও ক্লাসে অংশ নিবেন বলে জানান। তথ্যসূত্রে এও জানা যায় আবাসিকের অনেক ছাত্ররা কলেজ ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করে। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তারা ব্যক্তিগত টিউশনি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। শিক্ষকদের নিয়মিত অনুপস্থিতি ও ছাত্রদের অনুপস্থিতির বিষয় নিয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো: রেজাউল হকের নিকট টেলিফোনে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমাদের নিয়মিতই ক্লাস হয় এবং শিক্ষকগণও নিয়মিত উপস্থিত থাকেন। ছাত্র উপস্থিতি কম হলেও আমরা ক্লাস বন্ধ রাখি না। তিনি আরও বলেন, যে অভিযোগটি এসেছে তা পুরোপুরি মিথ্যা। আবাসিকের ছাত্ররা নিয়মিত ক্লাস করে। কিন্তু রিপোর্ট তৈরির পূর্বে আজ আমাদের প্রতিনিধি সরেজমিনে উক্ত মাদরাসায় উপস্থিত হলে ফাযিল ও কামিলের কোনো ক্লাসরুমের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, এমনকি ফাযিল ও কামিলের কোনো ছাত্রকেও উপস্থিত পাওয়া যায়নি।

স্ত্রীর অপরাধে স্বামী ও শিশুকে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

রায়হান চৌধুরী, মুরাদনগর থেকে:

স্ত্রীর অপরাধে নিরপরাধ স্বামী ও তার ৪ মাসের শিশু তোহাকে থানার হাজতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিলের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর, ২০২৩) দিবাগত রাতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদরের উত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেব’,র স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬) তার ভাই দেলোয়ার হোসেনের এনজিওর ঋণের টাকার জিম্মাদার হয়। পরে সেই ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় জিম্মাদার সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয় সেই এনজিও কোম্পানি। এরই ধারাবাহিকতায় সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আসে মুরাদনগর থানায়। শুক্রবার বিকেলে মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী সুমি আক্তারকে বাড়িতে না পেয়ে তার অসুস্থ স্বামীকে থানায় নিয়ে এসে ৪ ঘন্টা হাজতে আটকে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে সুমি আক্তার কোলের শিশু তোহাকে নিয়ে থানায় হাজির হলে ছেড়ে দেয়া হয় তার স্বামীকে।

স্বামী আব্দুল মোতালেব অভিযোগ করে বলেন, যদি কোন ধরনের অপরাধ করে থাকে সেটি আমার স্ত্রী করেছে। তার অপরাধে তো আর আমাকে অসুস্থ অবস্থায় ৪ ঘন্টা থানার হাজতে আটকে রাখতে পারেনা! আমার শিশু কন্যা তোহা কি অপরাধ করেছে? যে তাকেও সারা রাত থানার হাজতের ভিতরে আটকে রাখতে হলো! পুলিশ চাইলে কি আমার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে থানার ভীকটিমদের রুমে রাখতে পারতো না? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এদিকে আইনজীবী ব্লাস্ট (কুমিল্লা শাখা) প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ নুরু বলেন, একজনের অপরাধে অন্যজনকে সাজা দিতে পারে না, শিশুদের জন্য আলাদা সেল থাকে, যদি পুলিশ হাজতে শিশুটিকে রাখে তাহলে এটা ঠিক হয়নি।

মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর বলেন, ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য সুমি আক্তারের বাড়ীতে গেলে সে পালিয়ে যায়। এসময় তার স্বামীকে দেখে নেশাগ্রস্ত মনে হওয়ায় ওসি সাহেবকে জানালে তিনি তাকে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। পরে তার স্ত্রী থানায় আসলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তাকে হাজতে রাখা হয়নি, একটি রুমে রাখা হয়েছিলো।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল বারী ইবনে জলিল বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি সুমি আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে থানার হাজতের ভিতরে রাখার বিষয়টি মিথ্যা। কারণ আমার থানায় কোন নারী সেল নেই। তাকে থানার নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়েছে। অপরদিকে স্বামীকে তুলে এনে চার ঘন্টা আটকে রাখার বিষয়টিও মিথ্যা। এ ধরনের কোন ঘটনাই মুরাদনগর থানায় ঘটেনি।

মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে, যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম