ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার:

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাময়িক বরখাস্ত ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর জনাব রেজায়ে রাব্বী ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধেরেছেন। এতে এই সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সে কারণে ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী ২০১৭ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ৪ বছর ৫ মাস ফায়ার সার্ভিসের ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৪৭, ৬১ ও ৭১) কর্মরত ছিলেন। তাকে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালকের অধীনে লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (চট্টগ্রাম-৪৭) বদলি করা হয়। মাত্র ৮ মাসের মাথায় তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ পরিচয় দেয়া রেজায়ে রাব্বী পুনরায় ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৭২) বদলি হন। এর পর থেকে পুনরায় তিনি ২ বছর ১ মাস ফায়ার সার্ভিস ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীনে বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (যথাক্রমে ঢাকা-৭২ ও ৫৭) কর্মরত ছিলেন। গত ১৯-০৮-২০২৪ খ্রিঃ তারিখে তাকে লালমনিরহাট-১ কর্ম অঞ্চলে সংযুক্ত আদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে অদ্যাবধি কর্মস্থলে যোগদান করা থেকে বিরত আছেন।

গত ১৭-০৭-২০২৪ খ্রিঃ দেশে চলমান পরিস্থিতিতে সকল ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরগণকে নিজ নিজ কর্ম অঞ্চলের ফায়ার স্টেশনে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী তৎকালীন কর্ম অঞ্চলের অধীন ফায়ার স্টেশনে গত ১৯-০৭-২০২৪ খ্রিঃ থেকে ২২-০৭-২০২৪ খ্রিঃ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে নতুন সংযুক্ত আদেশকৃত কর্মস্থলে যোগদান থেকেও বিরত থাকেন। এ সময় কিছু গণমাধ্যমে তার বিষয়ে “ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মী রাব্বী লাপাত্তা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তরের ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ-৩০(২৪)’ দ্বারা তাকে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে গত ০৫-০৯-২০২৪ খ্রিঃ ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ১২ নং বিধিমতে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মূলত নিজের অপরাধ আড়াল করার লক্ষ্যে তিনি মিডিয়ায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে বিষোদগারমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

এছাড়া ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ ০৭(২৩)’ দ্বারা গত ২৬ এপ্রিল ২০২৩ খ্রিঃ ফায়ারফাইটার মোঃ আব্দুল হান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ‘বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি আদেশ-১০(৩৪)’ দ্বারা গত ০৫-০৯-২০২৪ খ্রিঃ তাকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়। তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী জনৈক মহিলা তাকে গুম করার যে অভিযোগ তুলেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে ১১-০৯-২০২৪ খ্রিঃ ঢাকা পোস্ট-এর প্রকাশিত ‘ডিজির বিরুদ্ধে আন্দোলনের চেষ্টা, ফায়ারফাইটার গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে ডিবির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট মামলায় আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে’।

জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো ভ্রান্ত ধারণা তৈরি না হয় সেজন্য উল্লিখিত বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য তুলে ধরা হলো। খবর : ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।

জাল নোট ছড়িয়ে গ্রেফতার অসাধু চক্র

স্টাফ রিপোর্টার॥
রফিকুল ইসলাম ছাকির, মো. আবু বক্কর রিয়াজ প্যাদা, মো. মনির হোসেন ও বিউটি- অসাধু চক্রের চার সদস্য। ঈদুল আযহা উদযাপন কেন্দ্র করে বাজারে কোটি টাকার জাল নোট ছড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তারা।

৫০ লাখ টাকার নকল নোট ছড়িয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য পূরণ হয়নি তাদের। ধরা পড়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে করে ডিবি। ওই বাসাটি জাল টাকা তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আটকের সময় বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও তৈরি সরঞ্জাম জব্দ করে ডিবি। এসব সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে- একটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, ৫টি স্ক্রিন প্রিন্ট ফ্রেম, ৪ হাজার পিস জাল নোট তৈরির সাদা কাগজ, ৮ পিস রঙ, একটি সিকিউরিটি থ্রেট পেপার রোল, ৫টি প্লাস্টিকের সাদা কালির কৌটা, দুটি কাটার, দুটি স্টিলের স্কেল।

গ্রেফতার চক্রের কাছ থেকে এ সময় ১ হাজার টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ৪৮ লাখ জাল টাকাও জব্দ করে ডিবি।

ডিবি গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ কর্মকার জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার একটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সেখান থেকে রফিকুল ইসলাম ছাকির, মো. আবু বক্কর রিয়াজ প্যাদা, মো. মনির হোসেন ও বিউটিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে জাল টাকা তৈরি ও বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। তারা পরস্পর যোগসাজশে জালনোট তৈরি ও প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দিতেন।

ডিবি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এক লাখ টাকার জাল তৈরিতে তাদের খরচ হতো ৫ থেকে ছয় হাজার টাকা। বিক্রি করতেন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়। এ জাল টাকার নোটের কাগজ ও প্রিন্টিং কোয়ালিটি যথেষ্ট উন্নত মানের হওয়ায় আসল-নকল শনাক্ত করা কিছুটা কঠিন।

ডিবি জানায়, ফটোশপের মাধ্যমে আসল টাকার আদলে ডিজাইন করতেন তারা। সুকৌশলে কাগজ জোড়া লাগিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে তৈরি করা হতো রুপালি রঙের নিরাপত্তা সুতা। ঈদকে কেন্দ্র করে বাজারে এক কোটি জাল টাকার নোট ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার সম্ভব হলেও জাল টাকার বিস্তার পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে তারা ৫০ লাখ টাকার জাল নোট ছড়িয়ে দিয়েছে।

ডিবি আরও জানায়, চক্রের মূলহোতা ও মেশিনম্যান রফিকুল ইসলাম ছাকির। তিনি এর আগে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন। সে সময় তাকে জামিন পেতে সহায়তা করেন আবু বক্কর রিয়াজ প্যাদা। তিনি আগে আদালতের মুহুরি পেশায় ছিলেন। পরে ছাকিরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জাল টাকার বাণিজ্য শুরু করেন। জাল টাকা তৈরির কারিগরের কাজ করতেন প্যাদা।

মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে চক্রের এ চার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ কর্মকার।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম