নাফ নদী সীমান্তে ইয়াবা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক মাদক কারবারি আটক

স্টাফ রিপোর্টার: 

কক্সবাজারে টেকনাফের নাফ নদী সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে বিজিবি। মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর মধ্যরাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নাফ নদী আনোয়ার প্রজেক্ট এলাকায় এক অভিযানে তাকে আটক করা হয়।

আটক মো. নূর রশিদ (২৫) টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-ব্লকের বাসিন্দা মৃত মো. সলিমুল্লাহ’র ছেলে।

বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নাফ নদীর আনোয়ার প্রজেক্ট এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় একটি চালান পাচারের খবরে বিজিবির একটি দল অভিযান অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে নাফ নদীর জলসীমার শূণ্যরেখা অতিক্রম করে কাঠের নৌকাযোগে সন্দেহজনক তিন ব্যক্তিকে কূলের দিকে আসতে দেখে বিজিবির সদস্যরা থামার নির্দেশ দেন। এতে নৌকায় থাকা দুই ব্যক্তি লাফ দিয়ে সাঁতরিয়ে মিয়ানমার দিকে পালিয়ে যায়।

পরে নৌকায় থাকা এক ব্যক্তিকে বিজিবির সদস্যরা আটক করতে সক্ষম হন। এসময় নৌকাটি তল্লাশী করে পাটাতনের ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় প্লাস্টিকের একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।

ব্যাগটি খুলে পাওয়া যায় ১ লাখ ইয়াবা, দেশিয় তৈরী ১ টি বন্দুক ও ১ টি গুলি।

বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, “আটক ব্যক্তি স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে, টেকনাফে নাফ নদীর সীমান্ত দিয়ে সে দীর্ঘদিন মাদকপাচারের সাথে জড়িত। সে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক সক্রিয় ডাকাতদল আবুল কালাম বাহিনীর সদস্য। তার বিরুদ্ধে মাদকপাচার সহ নানা অভিযোগ রয়েছে।“

আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে টেকনাফ থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানান লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।

সবা:স:জু-১০৭/২৪

অবসরপ্রাপ্ত নৌ কমান্ডারের কোটি টাকার জমি: আয়কর রিটার্নে নেই, প্রশ্ন আয়ের উৎসে

৯০ লাখ টাকায় ২ কাটা জমি ক্রয়, কোনো আয়কর রেকর্ড নেই—অভিযোগ দুদকে, এত টাকা এল কোথা থেকে?

বিশেষ প্রতিবেদক,

ঢাকার অভিজাত এলাকায় ২ কাটা জমি কিনেছেন এক সাবেক নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আদম আলী। জমির বাজারমূল্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা। কিন্তু এই জমি কেনার অর্থের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি তাঁর আয়কর রিটার্ন বা সঞ্চয়ের হিসাব-নিকাশে। বিষয়টি ঘিরে ইতোমধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ জমা পড়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট সাবেক কর্মকর্তা চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। তাঁর সম্মানী, পেনশন ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ সুবিধা হিসাব করে দেখা গেছে, এ ধরনের জমি কিনতে প্রয়োজনীয় অর্থ তাঁর বৈধ আয়ে থাকা কঠিন। অথচ জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে তাঁর নামে এবং দলিল অনুযায়ী লেনদেনও হয়েছে।

২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি – ভূমি মিরপুর সার্কেল, ঢাকার অধীন ক্যান্টনমেন্ট ভূমি অফিস, মৌজা- জোয়ার সাহারা- জে,এল নং- সি,এস ২৭১, এস, এ ১১০, আর, এস ৬, বর্তমান ঢাকা সিটি জরিপে-৩ । খতিয়ান: সি,এস ২৭৮, এস,এ ৬৪৭, আর,এস ৪৩৭ নং মিউটেশন ১৫২৫৪, ঢাকা সিটি জরিপে ১৩৬৭৯ খতিয়ানে লিখিত। দাগ নম্বর- সি,এস ও এস,এ দাগ ৪৩১, আর,এস দাগ ৬৭৮ নং বর্তমান ঢাকা সিটি জরিপে ৩৪৩১৯ নং দাগের কাতে ০.৬৬৯.৯০ ( ছয়শত ঊনসত্তর দশমিক নয় শূন্য) অযুতাংশ বা/ ৪.০৬ ( চার দশমিক শূন্য ছয়) কাঠা জমি। এর মধ্যে আদম আলীর রয়েছে এখানে ২ (দুই) কাঠা জমি ও জমির উপর নির্মিত ২৫০০০ স্কয়ার এর ৪ টি ফ্ল্যাট যা ৩ কোটি টাকার উপরে মূল্য।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনো সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে উৎস ও রিটার্নে ঘোষণা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সর্বশেষ দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে এই জমি বা তার মতো বড় অঙ্কের সম্পদের কোনো হদিস নেই। এমনকি পেনশন বা প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকেও এত টাকা মেলেনি।

রিপোর্টার বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও অভিযুক্ত সাবেক কর্মকর্তার তরফ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা ও প্রতিবেশীরা। অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সরকারি চাকরির বেতন দিয়ে এতো বড় বিনিয়োগ কীভাবে সম্ভব? তার তো কোনো ব্যবসা বা অন্য আয়ের খাতও নেই

বিশ্বস্ত সূত্রমতে, এই জমি ছাড়াও কর্মকর্তার নামে বা স্ত্রীর নামেও আরও জমি, অ্যাপার্টমেন্ট এবং জমাকৃত অর্থের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তার কোনো অংশই এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়নি।

এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মজীবনে থাকা অবস্থায় তিনি একাধিক জায়গায় প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছে এবং অবসরের পরে অবৈধ উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তিনি সম্পদ গড়েছেন, যা সম্পদ বিবরণীতে নেই।

দুদকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তা প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অবসরপ্রাপ্ত হলেও তিনি রাষ্ট্রের আওতায় থাকেন, তাই তদন্তে কোনো ছাড় থাকবে না।

প্রশ্ন থেকে যায়:

জমি কেনার টাকা কোথা থেকে এল?
আয়কর রিটার্নে কেন গোপন?
সম্পদের উৎস বৈধ হলে গোপন করার কারণ কী?

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর একজন দুর্নীতি বিশেষজ্ঞ বলেন, এমন ঘটনা একক কোনো ব্যক্তি নয়, গোটা প্রশাসনিক স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যদি তার সম্পদ বৈধ হয় তবে ঘোষণা দিক, আর যদি অবৈধ হয় তাহলে শাস্তির মুখোমুখি হোক।

জনগণের দাবি:

দ্রুত তদন্ত শুরু করুক দুদক
তার আয়কর রিটার্ন ও জমির উৎস জনসমক্ষে আনা হোক
প্রয়োজনে আদালতের হস্তক্ষেপ
নৌবাহিনীর শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা বজায় রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ

জাতি প্রশ্ন করছে, সরকারি চাকরি শেষে একজন কর্মকর্তা যদি আয়ের বাইরে কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করে অথচ কর্তৃপক্ষ চুপ থাকে—তবে দুর্নীতি কোথায় থামবে?

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম