শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় বাংলাদেশ

সবা স্টাফ রিপোর্টার :

শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সুসম্পর্ক চায় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, সেই সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়া ব্যাপকভাবে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে দাবি করে প্রেস সেক্রেটারি বলেন, এই ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়া আমাদের পুরো জাতিকে কাঠগড়ার দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের প্রতিবাদে আমাদের সিটিজেন গ্রুপ, ডায়াস ফোরা গ্রুপ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটির সোচ্চার হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকদের পাঠিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করানোর অনুরোধ করেন। তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আদৌ ভায়োলেন্সের (নির্যাতন) শিকার হচ্ছে কি না, তা অনুসন্ধান করে দেখে যেতে বলেন।

প্রেস সেক্রেটারি বলেন, আজকের এসব ঘটনার জন্য আমি ভারতীয় মিডিয়াকে দায়ী করবো। তারা মিস ইনফরমেশনের ব্যাপক একটা ক্যাম্পিং চালাচ্ছে। তারা এই ইস্যুতে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। এর ফলে ভারতের জনগণ বা একটা অংশ ভায়োলেন্স করছে। তারই রেজাল্ট সহকারী হাইকমিশনে হামলা।

তিনি বলেন, আমরা বিদেশি মিডিয়াকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাবো, আপনারা এসে প্রকৃত তথ্য দেখে যান। এরই মধ্যে বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স ভালো কিছু রিপোর্ট করেছে। কিন্তু ভারতের মিডিয়াগুলো আগে থেকে ডিটারমাইন্ড (নির্ধারিত করে রেখেছে) কী প্রতিবেদন করবে।

তিনি আরও বলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কাউন্সিলের রিপোর্টে ৯ জন মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে। এই মৃত্যগুলো কোনটিই ধর্মীয় কারণে হয়নি। প্রতিটি মৃত্যুর পেছনে ছিল রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত কারণ। অথচ এই তথ্য দিয়ে ভারতীয় মিডিয়া চোখ বন্ধ করে মিথ্যা প্রোপাগ্রান্ডা চালাচ্ছে।

শফিকুল আলম বলেন, আমরা হিউম্যান রাইট ওয়াচকে এসে দেখে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে আমরা খুব ট্রান্সপারেন্স।

সবা:স:জু -১৬৩/২৪

বাবা, তোমারে ছাড়া জেলের মধ্যে আমি কেমনে থাকমু একলা একলা?

স্টাফ রিপোর্টার:

কোলেপিঠে আদর যত্নে তিল তিল করে গড়ে তোলা ২৫ বছর বয়সের বুকের ধন ছেলে কাউসার বাগমারকে বাবা হয়ে নিজ হাতে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করবেন, এমন চিন্তা কখনো করেননি বাবা রশিদ বাগমার। বাস্তবে এমন ঘটনাটি ঘটেছে আজ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার জামালপুর গ্রামে।

লেখাপড়া শেষে দেশে কোন চাকরি-বাকরি না পেয়ে সৌদি পাড়ি জমায় কাউসার বাগমার। চাকরির মেয়াদ শেষে বছর খানেক আগে দেশে ফিরে আাসে কাউসার। দেশে এসে শুরু হয় বেকার জীবন যাপন। এক পর্যায়ে মাদকসেবীদের পাল্লায় পড়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে কাউসার। বেকার জীবনে মাদকের টাকা জোগাড় করতে না পেরে মা-বাবার শরণাপন্ন হয় কাউসার। মাদক সেবনের কাংখিত পরিমাণ টাকা চেয়ে না পেয়ে মা-বাবার সাথে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি করতো কাউসার। মা বাবার নেশার টাকা জোগাড় করতে অবশিষ্ট আর কিছুই ছিলোনা তাদের হাতে।

মাদকের টাকার জন্য বাড়িতে ভাঙচুর ও বাবা-মাকে অত্যাচার ও নির্যাতন করা শুরু করে দেয় কাউসার। মাদকের টাকার জন্য বাবার নামে থাকা দুই কাঠা জমি বিক্রি করে নেশার জন্য টাকা দিতে বলে ছেলে কাউসার বাগমার। নিহতের বড় ভাই আশরাফুল বলেন, কাউসার সারা রাত নেশার ঘোরে বাড়ির বাইরে থাকতো ও মাদক সেবন করতো। কোন ভাবেই মাদক থেকে ফেরানো যাচ্ছিল না তাকে। মাদকের জন্য সব সময় মা বাবার কাছ টাকা চাইত। টাকা না দিলে বাড়িতে ভাঙচুর ও মা বাবাকে গালিগালাজ করতো। কাউসারের এমন পরিস্থিতিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে পুরো পরিবার। জমি বিক্রি করে নেশার টাকা না দিলে বাবা মাকে হত্যার হুমকি দেয় ছেলে।

এমন পরিস্থিতিতে বাবা রশিদ বাগমার সারা রাত কান্না করেন ছেলের মরণ ছোবল নেশার আসক্তের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে। ভোর রাতে বাবার পাশের রুমে গভীর ঘুমে ছেলে কাউসার। হঠাৎই বাবা রশিদ বাগমার বাড়িতে থাকা কুড়াল নিয়ে ছেলের রুমে ঢুকে কোপাতে শুরু করেন আদরের ধন ছেলে কাউসারকে। বাবার এমন কোপানোতে ছেলে বলতে থাকে, বাবা তুমি আমারে আর মাইরো না, আর কোপ দিওনা, আমি আর নেশার টাকা চাইমু না তোমগো কাছে!

ছেলের আর্তনাদের এমন চিৎকারে ছেলের উপর বাবার কুড়াল দিয়ে কোপানো থেমে যায় মুহূর্তে। রক্তাক্ত ছেলেকে আপন করে কোলে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কান্না করতে থাকেন বাবা নামের মানুষটি। কাঁদতে থাকেন আর বলতে থাকেন, বাবা তুই আমার আদরের ধন, কলিজার মানিক। ততক্ষণে ছেলের নিথর দেহটি বাবার কোলে ঘুমিয়ে পড়েছে চিরদিনের জন্য।

আশপাশ থেকে ছুটে আসা মানুষজন ছেলে হত্যাকারী বাবাকে বলতে থাকেন, আপনি পালিয়ে যান, পুলিশ আসবে আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে, আপনার ফাঁসি হবে, কারোর কথাই শুনছেনা বাবা, বাবা বলছেন, আমার বাবাডারে আমি অনেক ভালোবাসি, আমার বাবাডারে ছাইড়া আমি কই যামু? আমার আর বাইচা থাইকা লাভ নাই! ছেলের লাশের কাছে বসে বাবার এমন কান্নায় আশপাশের মানুষজনের চোখের পানি ছলছল করছে। মহিলারা আঁচল দিয়ে চোখ মুছছেন বারবার।

এমন সময় পুলিশ হাজির,, ছেলের মৃত্যু শোকে বাবা হাউমাউ করে বলতে লাগলেন আমি আমার পোলারে মাইরা ফালাইছি নেশার টাকা জোগাড় কইড়া দিতে না পারায়, আমারে জেল দেন ফাঁসি দেন, আমারে থানায় লইয়া যান! ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা কুড়ালটি জব্দ করে পুলিশ। স্ব-ইচ্ছায় পুলিশের সাথে রওনা দেয়ার সময় বাবা ছেলের শরীর জড়িয়ে ধরে আবারও হাউমাউ করে কান্না করতে করতে বলতে লাগলেন, বাবা তোমারে আমি মারতে চাই নাই ! বাবা তোমারে আমি কথা দিয়া গেলাম, সরকারের আদালতে গিয়া আমি কমু, আমার বাবাডার হত্যাকান্ডের বিনিময়ে হলেও যেন দেশে মাদকের নেশার রাজ্য যেন বন্ধ করে সরকার!

আর দেশের সব বাবাগো কইয়া যাইতাছি, তোমরা মাদকের নেশা কইরো না, মাদকের নেশায় তোমগো মা বাবারা খুব কষ্ট পায়, সংসারের সব কিছু তছনছ হইয়া যায়! বাবা আমার খুব কষ্ট লাগতাছে, বাবা আমার বুকটা ছিড়া যাইতাছে তোমার লেইগা, বাবা তোমারে কই পামু আমি, তোমারে ছাড়া আমি জেলের মধ্যে কেমনে থাকমু একলা একলা? পুলিশের গাড়িতে উঠতে উঠতে বাবার এমনসব সাড়া জাগানো হৃদয় বিদারক কথা আর দুইচোখ ভরা বাবার কান্নায় উপস্থিত সবাইকে কাঁদিয়েছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ, এলাকাবাসী ও স্বজনরা সরকারের কাছে বাবা রশিদ বাগমারের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা