জাল নোট ছড়িয়ে গ্রেফতার অসাধু চক্র

স্টাফ রিপোর্টার॥
রফিকুল ইসলাম ছাকির, মো. আবু বক্কর রিয়াজ প্যাদা, মো. মনির হোসেন ও বিউটি- অসাধু চক্রের চার সদস্য। ঈদুল আযহা উদযাপন কেন্দ্র করে বাজারে কোটি টাকার জাল নোট ছড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তারা।

৫০ লাখ টাকার নকল নোট ছড়িয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য পূরণ হয়নি তাদের। ধরা পড়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে করে ডিবি। ওই বাসাটি জাল টাকা তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আটকের সময় বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও তৈরি সরঞ্জাম জব্দ করে ডিবি। এসব সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে- একটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, ৫টি স্ক্রিন প্রিন্ট ফ্রেম, ৪ হাজার পিস জাল নোট তৈরির সাদা কাগজ, ৮ পিস রঙ, একটি সিকিউরিটি থ্রেট পেপার রোল, ৫টি প্লাস্টিকের সাদা কালির কৌটা, দুটি কাটার, দুটি স্টিলের স্কেল।

গ্রেফতার চক্রের কাছ থেকে এ সময় ১ হাজার টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ৪৮ লাখ জাল টাকাও জব্দ করে ডিবি।

ডিবি গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ কর্মকার জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার একটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সেখান থেকে রফিকুল ইসলাম ছাকির, মো. আবু বক্কর রিয়াজ প্যাদা, মো. মনির হোসেন ও বিউটিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে জাল টাকা তৈরি ও বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। তারা পরস্পর যোগসাজশে জালনোট তৈরি ও প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দিতেন।

ডিবি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এক লাখ টাকার জাল তৈরিতে তাদের খরচ হতো ৫ থেকে ছয় হাজার টাকা। বিক্রি করতেন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়। এ জাল টাকার নোটের কাগজ ও প্রিন্টিং কোয়ালিটি যথেষ্ট উন্নত মানের হওয়ায় আসল-নকল শনাক্ত করা কিছুটা কঠিন।

ডিবি জানায়, ফটোশপের মাধ্যমে আসল টাকার আদলে ডিজাইন করতেন তারা। সুকৌশলে কাগজ জোড়া লাগিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে তৈরি করা হতো রুপালি রঙের নিরাপত্তা সুতা। ঈদকে কেন্দ্র করে বাজারে এক কোটি জাল টাকার নোট ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার সম্ভব হলেও জাল টাকার বিস্তার পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে তারা ৫০ লাখ টাকার জাল নোট ছড়িয়ে দিয়েছে।

ডিবি আরও জানায়, চক্রের মূলহোতা ও মেশিনম্যান রফিকুল ইসলাম ছাকির। তিনি এর আগে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন। সে সময় তাকে জামিন পেতে সহায়তা করেন আবু বক্কর রিয়াজ প্যাদা। তিনি আগে আদালতের মুহুরি পেশায় ছিলেন। পরে ছাকিরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জাল টাকার বাণিজ্য শুরু করেন। জাল টাকা তৈরির কারিগরের কাজ করতেন প্যাদা।

মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে চক্রের এ চার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ কর্মকার।

 

অতিরিক্ত সচিব হলেন ৯২ কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
প্রশাসনে ৯২ জন যুগ্মসচিবকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ৮৯ জনের পদোন্নতির আদেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। লিয়েন ও শিক্ষাছুটিতে থাকা বাকি তিনজন ফিরলে তাদের পদোন্নতির আদেশ জারি করা হবে।

অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে ৮৭ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। তবে তাদের পদায়ন করা হয়নি। বাকি দুজন বিদেশে মিশনে কর্মরত আছেন। পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রশাসনে অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা হলো ৫০৮ জন। যদিও অতিরিক্ত সচিবের স্থায়ী পদের সংখ্যা ১৩০টি।

অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগদানপত্র ই-মেইলে (sa1@mopa.gov.bd) পাঠাতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে, অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিতে ১৩তম ব্যাচকে মূল ব্যাচ হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এর আগের ব্যাচগুলোর বঞ্চিতরাও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

নিয়মিত পদ না থাকায় পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবদের বেশিরভাগকেই পদোন্নতির আগে যেখানে ছিলেন, সেই কর্মস্থলেই থাকবেন অর্থাৎ ইনসিটু রাখা হবে। সাড়ে তিন শতাধিক কর্মকর্তা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্য হলেও ৯২ জনকে পদোন্নতি দেওয়ায় অনেকেই বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

‘সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা, ২০০২’-এ বলা হয়েছে, অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ও ৩০ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডারের যুগ্মসচিব পদে কর্মরতদের বিবেচনায় নিতে হবে।

বিধিমালা অনুযায়ী, মূল্যায়ন নম্বরের অন্তত ৮৫ নম্বর পেতে হবে। যুগ্মসচিব পদে কমপক্ষে তিন বছর চাকরিসহ ২০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা বা যুগ্মসচিব পদে কমপক্ষে দুই বছরের চাকরিসহ ২২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হন।

সর্বশেষ গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ৯৮ জন যুগ্মসচিবকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

 

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম