ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় মামলা

স্টাফ রিপোর্টার:

কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ার রূপালী ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানায় দস্যুতার মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে এ মামলা করে।

কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণ করা তিন ডাকাত লিয়ন মোল্লা, আরাফাত ও সিফাতকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তিন জনকে শুক্রবার বিকেলে আদালতে তুলে ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

এদিকে, ঘটনার পর এখনো থমথমে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকা। এমন ঘটনা কল্পনাও করতে পারছে না এলাকাবাসী। আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে ব্যবস্থার দাবি জানান তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রুপালী ব্যাংকের জিঞ্জিরা শাখায় ডাকাতির চেষ্টা করে তিন জন। ঘটনাটি টের পেয়ে ব্যাংকের প্রধান ফটকে তালা দিলে ভেতরে আটকা পরে ডাকাতরা।

প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে তারা। জানা যায় খেলনা পিস্তল দিয়ে রোমাঞ্চের নেশায় আইফোন কেনার উদ্দেশ্যে ডাকাতি করে তারা।

 

সবা:স:জু- ৪৪২/২৪

 

প্রাণ কোম্পানির গুঁড়া হলুদে ‘ক্ষতিকর মাত্রায়’ সীসা

প্রাণ কোম্পানির গুঁড়া হলুদে ‘ক্ষতিকর মাত্রায়’ সীসা

স্টাফ রিপোর্টার॥
কোম্পানি প্রাণ-আরএফএলের নামে বিষাক্ত পন্য তৈরির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। রাজধানীর গুলশান অবস্থিত নগর উন্নয়ন কতৃপক্ষের বিপণিকেন্দ্রের একাধিক বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানাযায় প্রাণ কোম্পানির পন্য তারা বিক্রি করতে পারছে না। মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী নুরুল আমিন সানু বলছেন তার কাছে এক নারী ক্রেতা প্যাকেটজাত হলুদের গুঁড়া চেয়েছিলেন, তাকে তিনি প্রাণ ব্রান্ডের হলুদের গুঁড়া দেয়ার পরে ওই ক্রেতা তাকে তা ফিরিয়ে দিয়ে মন্তব্য করছেন, প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানির প্রাণের গুঁড়া হলুদ তিনি খান না। কোম্পানির নামে ওই ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন প্রাণ কোম্পানি ভেজাল খাদ্য বাজারজাত করে। দোকানদার বলেন, সেই থেকে আমরা এখানের অনেক দোকানদার বলি- প্রাণ ধ্বংসকারী কোম্পানি প্রাণ। প্রাণের পন্য বেশি রাখিও না।

পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতিবেদককে টেলিফোনে বলেন কয়েকদিন আগে আমার নেতৃত্বে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই -এর পাবনা টিমের সহায়তায় উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ও ছাইকোলা চৌরাস্তায় প্রাণ কোম্পানির দুধ সংগ্রহের হাব ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে ভেজাল দুধ চিহ্নিত করি। সেখানে একাধিক সংস্থা যেমন নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষ এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ও এলাকায় বহু সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে আমরা এই ভেজাল দুধের উৎপাদনকারীদের খুঁজে পাই। এখানে ভেজাল দুধ সংগ্রহ, মজুদ ও সরবরাহের অভিযোগে প্রাণ হাবের তিন কর্মকর্তাকে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। একইসাথে ভেজাল দুধ তৈরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নারীসহ ৫ জনকে আটকের পর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে বেশ কয়েকটি পরিবার পামওয়েল তেল ও বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে নকল দুধ তৈরি করে আসছিল। প্রতিদিনই তৈরিকৃত বিপুল পরিমাণ ভেজাল দুধ ছাইকোলা চৌরাস্তা মোড়ে প্রাণ ডেইরী হাবের দুগ্ধ শীতলীকরণ সেন্টারে বিপুল পরিমাণ ভেজাল দুধ সরবরাহ করে আসছিল। এনএসআই’র সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ( ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী প্রথমে লাঙ্গলমোড়া গ্রামে ভেজাল দুধ তৈরিকারকদের বাড়িতে অভিযান চালান। এ সময় সেখান থেকে আটক করা হয় ৫ জনকে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছাইকোলা চৌরাস্তা মোড়ে প্রাণ ডেইরী হাবের (ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টার) দুগ্ধ শীতলীকরণ সেন্টারে অভিযান চালান। সেখানে মজুদকৃত ৬ হাজার লিটার দুধ পরীক্ষা নিরীক্ষায় দুধের মধ্যে তেল ও ডিটারজেন্টের উপস্থিতি পাওয়ায় জনসম্মুখে ভেজাল দুধ বিনষ্ট করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।

অপরাধ স্বীকার করায় প্রাণ ডেইরী হাবের গুরুদাসপুর অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার পাবনার ফরিদপুর উপজেলার জন্তিহার গ্রামের শহিদুল সরকারের ছেলে শামসুল আলম (৩৬), সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার চক চিথুলয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে জহির রায়হান (২৭) ও পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমচা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নাজমুল হোসাইন (৩৫) কে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, লাঙ্গলমোড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে সাইদুল ইসলাম (৪৫), সাইদুল ইসলামের ছেলে লিটন হোসেন (১৯), হযরত আলীর ছেলে নিজাম উদ্দিন (৫০), খবির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসেন (২০) ও রিফাজ আলীর স্ত্রী মাজেদা খাতুন (৩৫)। এনএসআই পাবনার সহকারী পরিচালক এবিএম লুৎফুল কবিরের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের একটি টিম, পাবনার অতিরিক্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক আসলাম হোসেন ও থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ইউএনও) বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। তিনজনকে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। অন্যদের নামে নিয়মিত মামলা দেওয়া হয়েছে। ভেজাল দুধ তৈরির সাথে অন্য যারা জড়িত তারা পালিয়ে গেছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রাণের গুঁড়া হলুদে ‘ক্ষতিকর মাত্রায়’ সীসা
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মাত্রার সীসা থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে প্রাণ ব্রান্ডের হলুদের গুঁড়া প্রত্যাহার করে নিতে বলেছে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন-এফডিএ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রাণের পণ্য বিক্রি শুরুতে এমন বাঁধার সম্মুখীন হয় কোম্পানিটি। প্রাণের পণ্যগুলোর মধ্যে ম্যাঙ্গো ফ্রুট ড্রিংক, সুগন্ধি চাল, মুড়ি, শর্ষের তেল, নুডলস, মসলা, টোস্ট, বিস্কুট, ড্রাই কেক, ললিপপ, চকলেট, ইত্যাদি পণ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০টি স্টেটে বাজারজাত শুরু করেছিলো। ২০১৩ সালের অক্টোবরে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন-এফডিএ তার দেশের ভোক্তাদের বাংলাদেশি কোম্পানি প্রাণ গুড়া হলুদ ব্যবহার না করার পাশাপাশি প্রয়োজনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতেও পরামর্শ দিয়েছিলো। এফডিএর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিলো, এক ব্যক্তির অসুস্থতার কারণ খুঁজতে গিয়ে প্রাণ মসলায় ক্ষতিকর মাত্রায় সীসা থাকার বিষয়টি তাদের নজরে আসে। রাসায়নিক পরীক্ষায় প্রাণের গুঁড়া হলুদে ৫৩ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) পর্যন্ত সীসা পাওয়া গেছে, যা নবজাতক, শিশু-কিশোর ও গর্ভবতী নারীর জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর পর নিউইয়র্কে প্রাণের ৪০০ গ্রামের প্যাকেটজাত গুঁড়া হলুদের আমদানিকারক ডেট্রয়েটের বেস্ট ভ্যাল্যু নামের প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে পণ্যটি তুলে নিয়েছে। তার আগে প্রাণের ২৫০ গ্রামের প্লাস্টিক জারের গুঁড়া হলুদে ২৮ পিপিএম এবং ৪০০ গ্রামের প্যাকেটে ৪২ পিপিএম সীসা পাওয়া যাওয়ায় নিউ ইয়র্কের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এশিয়া ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি ইনক ও ব্রুকলিনের অন টাইম ডিস্ট্রিবিউশনস পণ্যটি প্রত্যাহার করে নেয়। যেসকল ক্রেতা প্রাণের গুঁড়া হলুদ কিনেছেন, তা দোকানে ফেরত দিয়ে পু্রো দাম ফেরত নিতে বলেছে এফডিএ। সরকারি ওই সংস্থার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সীসা শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। সীসার কারণে শিশুর মানসিক ও দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। গর্ভবর্তী নারী, নবজাতক এবং অল্প বয়সীদের সীসার প্রভাব এড়িয়ে চলা উচিৎ। যারা প্রাণের গুঁড়া হলুদ ব্যবহার করেছেন, তাদের প্রয়োজনে চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে এফডিএ। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ রহমাতুল বারী বলেছেন সীসা হাড় এবং দাঁতের বিপাকের সাথে হস্তক্ষেপ করে এবং রক্তনালী এবং কোলাজেন সংশ্লেষণের ব্যাপ্তিযোগ্যতা পরিবর্তন করে। সীসা বিকাশমান প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে, যার ফলে অতিরিক্ত প্রদাহজনক প্রোটিন তৈরি হয়; এই প্রক্রিয়াটির অর্থ হতে পারে যে সীসার এক্সপোজার শিশুদের মধ্যে হাঁপানির ঝুঁকির কারণ। এতে মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

প্রাণ কোম্পানির মিডিয়া বিভাগের কর্মকর্তা প্রতিবেদকের সাথে কথা বলছেন বিষয়টি নিয়ে। তার কোম্পানিতে ভেজাল দুধ সংগ্রহ করা হওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, সকল কোম্পানিতেই দু-একজন অসৎ লোক থাকে। ঠিক তেমনই ওরা প্রাণ কোম্পানির অসৎ লোক ছিলো। ধরা পরার পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিষয়টি একমাস আগের কথা। আজ ১০ আগষ্ট রবিবার রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় প্রাণ আরএফএল গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে আমাদের কোম্পানি এই বিষয়টি নিয়ে প্রেসকনফারেন্স করে স্পষ্ট করছে। জড়িতদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
হাজির করা হলো ট্রাইব্যুনালে, হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড়