
নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্থানীয় আব্দুল লতিফের নামে রাজউক উত্তরা ১১ নং সেক্টরের অস্থায়ী জায়গাটি বরাদ্ধ দিয়েছে বলে জানাগেছে। রাজউক সুত্র জানায়, আব্দুল লতিফ রাজউকের একজন লীজ গ্রহিতা। আর রাজউকের বোর্ড সভার অনুমতিক্রমেই সাড়ে চার কাটার প্লটটি লতিফের নামে বরাদ্দ দিয়েছে রাজউক, এই বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে কোন অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ার প্রশ্ন নাই।
কারণ ১১ নং সেক্টর কল্যাণ সমিতিকে জায়গাটি অস্থায়ী ব্যবহারের জন্য লিখিতভাবে অনুমতি দিয়েছিল রাজউক। অস্থায়ী ব্যবহারের অনুমতি লিখিতভাবে চাওয়ার বিপরিতে রাজউক ৪টি শর্তে জমিটি কল্যাণ সমিতিকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। অনুমতির স্মারকে দেওয়া শর্ত মতে, ভবিষ্যতে এই জমি নিজেদের বলে দাবি করা যাবে না, কোন স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না, কারোর নিকট হস্তান্তর করা যাবে না। সর্বশেষ শর্তে উল্লেখ আছে, রাজউক চাহিবামাত্র কোন আপত্তি না করেই এই জমি রাজউককে ফেরত দিতে হবে।
রাজউক জানায়, সুস্পষ্ট শর্তের আলোকে জমি ব্যবহার করে এখন মালিক সাজতে বসেছে দখলদার কল্যাণ সমিতি। রাজউক জায়গাটি নিজেদের অনুকুলে নিয়ে একজনকে বরাদ্দ দেয়। সেখানে আরো একটি প্লট বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন। সবকিছু জেনে বুঝে কল্যাণ সমিতির নামে অবৈধভাবে মানববন্ধনের কোন যুক্তি নাই। রাজউক আইন মেনেই সব করেছে।
এদিকে লীজ গ্রহিতার একটি সূত্র জানায়, আব্দুল লতিফকে সামাজিক ভাবে হেয় করতেই মানববন্ধনে তাকে নিয়ে যা ইচ্ছে তা বলা হয়েছে। এগুলোর পিছনে অন্য কারণ আছে বলে জানাগেছে।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, ১১নং সেক্টর কল্যাণ সমিতির স্থাপনার আগে জায়গাটি অবৈধ ভাবে দখল করেছিলেন পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দলীয় কাউন্সিলর শরিফুর রহমান। তার ব্যক্তিগত অফিসটিকে পরে কল্যাণ সমিতির নামে অস্থায়ী ভাবে সমিতির অফিস বানানো হয়। এখানে লিজ গ্রহিতাকে উদ্দের্শ্যমুলক টার্গেট করা হয় কিছু অনৈতিক সুবিধার জন্য। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কল্যাণ সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মিয়া এবং তার স্ত্রী কল্যাণ সমিতির সাবেক নেতা আবেদা খাতুন যুব মহিলা লীগের সক্রিয় রাজনীতি করেন। তিনি দলীয় নমিনেশন এ মহিলা কাউন্সিলর পদে নির্বাচনও করেন। তার স্বামী ফিরোজ এবং সে নিজে উত্তরা ম্যাসাকারের হত্যা মামলার আসামী। মুলত তারা এবং তাদের আপন ভাগিনা বিএনপি নেতা আফাজ উদ্দিনকে সাথে নিয়ে প্লটটি বরাদ্দ নেওয়ার জন্য নানা চেষ্টা তদবির করেও ব্যর্থ হয়। সেই ব্যর্থতা থেকেই কল্যাণ সমিতির নেতা সেজে অবৈধ মানববন্ধন করছে জমিটিতে নিজেদের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য।
এছাড়া লিজ গ্রহিতা তাদের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তাকে চাপে ফেলে প্লট দুটি নিজেদের কব্জায় নিতেই মানববন্ধনে আব্দুল লতিফকে ঘিরে নানা মিথ্যাচার করে, অপমানজনক স্লোগান দেয়, যাতে লতিফ প্লটটি ঠিকমতো ব্যবহার করতে না পারে।
এ বিষয়ে লতিফ বলেন, আমি নিয়ম মেনে রাজউকের একজন লীজ হোল্ডার। রাজউকের জায়গা আমার অনুকুলে আনা কি অপরাধ? আমি যে সঠিক জায়গায় আছি, রাজউকও আইন মেনেই সব করেছে, তা সবাই জানে। এখানে আমি কি। মানববন্ধনে তারা আমাকে যেভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছে যেন আমিই সরকারী সংস্থা। এগুলো ঠিক না। আমি একজন ক্ষুদ্র মানুষ, নিজের বসবাসের জন্য জায়গাটি লিজ নিয়েছি। তাহলে আমি ভিকটিম হতে যাবো কেন?
১১ নং কল্যাণ সমিতির নামে অস্থায়ীভাবে জমিটি ব্যবহারের অনুমতির আবদেনকারী ড.মঈন খানকে অস্থায়ী অনুমতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হ্যা সঠিক। তবে আমরা স্থায়ীভাবে পাওয়ার জন্যও আবেদন দিয়েছিলাম। সেটি বিবেচনায় না নিয়ে জমিটি অন্য একজনকে বরাদ্দ দিয়েছে। এটা ঠিক করেনি।