জলবায়ু কর্মপরিকল্পনায় নতুন গতি

শিমুল হাসান রাফি:
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ে এক নতুন মোড় নিয়েছে। এক দশক আগে যে চুক্তি বিশ্বের পরিবেশগত রাজনৈতিক ধারাকে আমূল পাল্টে দিয়েছিল, সেই প্যারিস চুক্তির পথ ধরে আজকের বিশ্ব পৌঁছেছে নতুন এক সমন্বিত অভিযাত্রায়। এই পরিবর্তনের মধ্যে এসেছে একটি বহুমাত্রিক কাঠামো, যেখানে রাষ্ট্রের পাশাপাশি জনগণ, স্থানীয় প্রশাসন, কৃষক, উদ্যোক্তা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এমনকি আদিবাসী সমাজেরও সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে।
তবে বিগত দশকের অভিজ্ঞতা স্পষ্ট করে দিয়েছে, শুধু স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ বা বিচ্ছিন্ন কর্মসূচি দিয়ে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে জরুরি হয়ে পড়েছে একযোগে পরিকল্পনা, ধারাবাহিক অগ্রগতি যাচাই এবং নীতিনির্ধারকদের মধ্যে দৃঢ় সমন্বয়। এ লক্ষ্যেই গঠিত হয়েছে এক নতুন কর্মসূচি, যা জলবায়ুবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের দূতদের নেতৃত্বে ও মরাকেশ অংশীদারিত্ব কাঠামোর সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। এ কর্মসূচি মূলত ৩০টি অভিন্ন লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যা জাতিসংঘের জলবায়ু উন্নয়নমূল্যায়ন কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই উদ্যোগই এখন ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় কপ৩০ সম্মেলনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
এই কর্মপরিকল্পনার মূল দর্শন হলোÑ ‘সমবেত শ্রম’, যা ব্রাজিলীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী ‘মুতিরাও’ নামে পরিচিত। এই চিন্তাধারা অনুসারে, সকল পক্ষ একযোগে হাত মিলিয়ে, সম্পদ ভাগ করে ও অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে এগিয়ে যাবে। এটি কেবল আগামী সম্মেলনের প্রস্তুতির জন্য নয়, বরং পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ব জলবায়ু কর্মপন্থা নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই নতুন পরিকল্পনায় ছয়টি মূল স্তম্ভ রয়েছে :
* বিদ্যুৎ, শিল্প ও পরিবহন খাতে রূপান্তর;
* বন, নদী, সমুদ্র ও জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ;
* কৃষি ও খাদ্যব্যবস্থার পরিবর্ধন;
* শহর, অবকাঠামো ও পানি ব্যবস্থায় সহনশীলতা সৃষ্টি;
* মানবিক ও সামাজিক উন্নয়ন;
এবং সর্বশেষ, প্রযুক্তি, অর্থায়ন ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সহায়ক ব্যবস্থার বিকাশ।
প্রতিটি লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য গঠন করা হয়েছে ‘সক্রিয়তা দল’। এসব দলে রয়েছে সংশ্লিষ্ট খাতে ইতিমধ্যেই কাজ করে যাওয়া বিভিন্ন সংগঠন ও উদ্যোক্তারা। তারা প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা, অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি, সমন্বিত উদ্যোগ পরিচালনা এবং অগ্রগতি মূল্যায়নের কাজ করবে।
এইসব দল একটি ‘সমাধান ভাণ্ডার’ গঠনের জন্যও কাজ করবে, যেখানে সঞ্চিত থাকবে বাস্তবে পরীক্ষিত এবং কার্যকর পন্থাসমূহ-যা অন্যরাও প্রয়োগ করতে পারবে নিজের প্রেক্ষাপটে।
জাতীয় পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে-যাতে স্বতঃস্ফূর্ত কর্মসূচি ও রাষ্ট্রীয় নীতির মধ্যে একটি সেতুবন্ধ তৈরি হয়। এর ফলে শুধুমাত্র বৃহৎ অঙ্গীকার নয়, বরং বাস্তবভিত্তিক, নিরীক্ষাযোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু উদ্যোগ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
কপ৩০ সম্মেলনে এই কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরা হবে এবং সেখানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে উপস্থাপিত হবে একটি সুসংহত, স্বচ্ছ এবং দীর্ঘস্থায়ী পরিবেশ পরিকল্পনার রূপরেখা। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যারা ইতিমধ্যে জলবায়ু বিষয়ক কার্যক্রমে যুক্ত আছেন, তারা এই কর্মসূচির অংশ হতে পারেন, নিবন্ধন করতে পারেন আন্তর্জাতিক জলবায়ু কর্মপোর্টালে এবং যুক্ত হতে পারেন নিজ নিজ ক্ষেত্রের সক্রিয়তা দলে।
পরিবেশ রক্ষার এই সংগ্রামে নতুন করে প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে বিশ্ব। বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নয়-সমন্বিত প্রয়াসই হতে চলেছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার একমাত্র পথ।

জীবনসঙ্গীর যে বিষয়গুলো কখনোই বলবেন না কাউকে

স্টাফ রিপোর্টার:

জীবনসঙ্গীর কাছেই মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ থাকা উচিত। তাই আপনার জীবনসঙ্গীর নিজস্ব কিছু কথা অন্য কারও সঙ্গে কখনো না বলাই উত্তম। যে কথাগুলো কোনো এক সময় বিশ্বাস করে সে আপনাকে বলেছে বা আপনি কাছ থেকে দেখেছেন। সেগুলো দু’জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখুন-

তার গোপন দুর্বলতা

আপনার সঙ্গীর গভীরতম ভয়, আঘাত বা নিরাপত্তাহীনতা যা সে আপনি ছাড়া কাউকে বলেনি, সেগুলো আপনার কাছেই গোপন রাখুন। মনোবিজ্ঞান মানসিক ঘনিষ্ঠতাকে একটি পবিত্র বন্ধন হিসাবে জোর দেয়, বিশেষ করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে; সঙ্গীর কাছে নিজের কোনো দুর্বলতা প্রকাশ করার অর্থ হলো তাকে নিজের অংশ বলেই স্বীকার করে নেওয়া। সেই বিশ্বাস ভাঙলে সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি, লজ্জা এবং বিচ্ছেদও হয়ে যেতে পারে।

ঝগড়া সম্পর্কে বিস্তারিত

যদিও প্রথমদিকে অন্যদের কাছে আপনাদের মধ্যকার ঝগড়া সম্পর্কে বলা এবং তাদের পরামর্শ নেওয়া ভালো মনে হতে পারে, এটি একটি পরিণত কাজ নয়। ব্যক্তিগত বিষয় এবং আলোচনায় বন্ধু বা পরিবারকে জড়ালে আপনার স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি তাদের মনোভাব বিরূপ হতে পারে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, দ্বন্দ্ব স্বাভাবিক, কিন্তু মীমাংসা দম্পতির মধ্যেই থাকা উচিত।

তার অতীত সম্পর্ক

নিজের অতীত হয়তো সে বিশ্বাস করে আপনার সঙ্গে ভাগ করে নিতে চেয়েছে। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে- এমনকী পরিবারের সঙ্গেও সেটি নিয়ে আলোচনা করা ঠিক নয়। কেন? কারণ এটি আপনার সঙ্গীকে অপ্রয়োজনীয় জাজমেন্টের মুখোমুখি করতে পারে। তখন সে আপনাকে বিশ্বাস নষ্টকারী হিসেবে ভাবতে পারে। তাই দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক সুন্দর রাখতে এ ধরনের বিষয় গোপন রাখুন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম