ছাত্রলীগ নেত্রীসহ ইবির ৫ ছাত্রী সাময়িক বহিষ্কার

স্টাফ রিপোর্টার॥
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)-এর নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন। শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, আজ বেলা ১২টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত উপাচার্যের দপ্তরে শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শেখ আবদুস সালাম। সভা থেকে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হবে।

বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী ওরফে অন্তরা (সেশন: ২০১৭-১৮), চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার উর্মি (সেশন ২০২০-২১), আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম (সেশন: ২০২০-২১), ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম (সেশন: ২০২০-২১) ও একই বিভাগের একই সেশনের মুয়াবিয়া জাহান। এর মধ্যে সানজিদা চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। বাকিরা ছাত্রলীগের কর্মী। নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচজনকেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি দুই দফায় হলের গণরুমে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর র‌্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ তার সহযোগীরা।

ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৫ই ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগ। এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। গত পহেলা মার্চ জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ইতোমধ্যে তাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার ও হলের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে। ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতরা হলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান। তারা চারজনই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ভারতীয় অর্থনীতিতে মনমোহন সিং-এর অবদান

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক: 

ভারতীয় অর্থনীতিতে মনমোহন সিং-এর অবদান ভোলার নয়। অর্থমন্ত্রী হিসেবে যেসব সংস্কারমূলক কাজ তিনি করে গিয়েছেন, তার সুফল আজ পাচ্ছে বর্তমান ভারত। উদারীকরণের পর ভারতীয় অর্থনীতির যে উত্থান হয়েছে তা কখনওই সম্ভব ছিল না মনমোহনের অবদান না থাকলে। দেশের তেরোতম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগে থেকেই দেশবাসীর জন্য তিনি কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন।

পিভি নরসিংহ রাও-এর জমানায় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। সেসময় ভারতীয় অর্থনীতিতে টালমাটাল দশা। নরসিংহ রাও-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে মনমোহনই অর্থনীতিকে উন্নয়নের রাস্তায় নিয়ে এসেছিলেন। ভারতীয় অর্তনীতির উদারীকরণ করেন তি্নি। লাইসেন্স রাজ কমিয়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণনীতিতে লাগাম পরান মনমোহন। এর ফলে শিল্পক্ষেত্রে সরকারের নাক গলানো অনেকাংশে কমে যায়। সরকারি চোখ রাঙানি হ্রাস পাওয়ায় কোনও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হতে থাকেন শিল্পপতিরা। আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে বামিজ্যিক সংস্কার শুরু করেছিলেন মনমোহন। তার ফলে শুরু হয়েছিল খোলাবাজারের অর্থনীতি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই নীতি শুরু করেন মনমোহন। যার ফলে আজকের ভআরতের এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভবপর হয়েছে।

টাকার অবমূল্যায়নের কথা মাথায় রেখে রফতানিতে জোর দেন মনমোহন। যার ফলে এই ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে ভারতীয় রফতানি শিল্পও। কর কাঠামোয় পরিবর্তন করে সেখানেও সংস্কার করেছিলেন মনমোহন। ১৯৯১ সালে যখন অর্থমন্ত্রী হিসাবে নিজের প্রথম বাজেট পেশ করেছিলেন তিনি, সেখানে আশাপ্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, এবার দেশে অর্থনৈতিক স্তিরতা আসবে বলেই তিনি বিশ্বাসী। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের জিডিপি-র হার সাত শতাংশে তুলে নিয়ে যান মনমোহন। ২০০৮-এ যখন সারা দেশে অর্থনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছিল, সেসময় মনমোহনের ক্ষুরধার বুদ্ধি আর সংস্কারী পদক্ষেপের ফলে ভারতীয় অর্থনীতি সেই ধাক্কা সামলে ওঠে। বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার ফলে ধাক্কা লেগেছিল সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে। কড়া হাতে সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।

আর্থিক নীতি শিথিল করে দেয় আরবিআই। মানুষের চাহিদা বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ গ্যারান্টি নীতি বা মনরেগা মনমোহনেরই শুরু করা সংস্কারমূলক কাজ। এই নীতির ফলে গ্রামে গ্রামে ১০০ দিনের কাজ পেতে থাকেন গরিবরা। যার সুফল মেলে গ্রামীণ অর্তনৈতিক উন্নয়নে। জনকল্যাণমূলক কাজে তছরুপ রুখে সরাসরি টাকা পাইয়ে দিতে ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার শুরু করেছিলেন মনমোহন। এজন্য আধার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। এটাই পরের সরকারকে জনকল্যাণমূলক কাজে বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপের সহায়ক হয়ে ওঠে।

একজন প্রধানমন্ত্রী এবং দক্ষ অর্থনীতিবিদ হিসাবে মনমোহন সিং উপলব্দি করতে পেরেছিলেন যে বিশ্ববাজারে ভারতের আর্থিক উন্নতি তখনই সম্ভব যখন পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রেও সাবলম্বী হবে দেশ। তাঁর আমলেই ভারত-আমেরিকা অসামরিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়। ফলে অসামরিক ক্ষেত্রে পারমাণবিক ব্যবহার শুরু হয় দেশে। ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষেত্র এক সংস্কারমূলক যুগের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল মনমোহন সিং-এর সময়ে। অর্থমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিই আজকের ভারতের অর্তনৈতিক উন্নয়নের কান্ডারি।

সবা:স:জু- ৫৩৫/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম