নির্মাণাধীন ভবনে শ্রমিকের কর্মস্থলে রহৎস্যজনক মৃত্যু

বিশেষ প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম নগরের বায়জিদ থানাধীন কমপ্যাক্ট প্রপার্টিজ লিমিটেডের নির্মাণাধীন ভবন হতে মোঃ রাসেল (১৯)
শ্রমিকের নির্মম রহৎস্যজনক মৃত্যুতে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে শ্রমিকের কর্মস্থল নিরাপত্তাহীনতা,ঝুঁকিপূর্ণ অবহেলাজনিত,
গাফিলতিসহ নানান নীতিবাচক প্রশ্ন অভিযোগ উঠেছে নিহত পরিবার এলাকাবাসী ও সচেতন মহল ও মানুষের মুখে মুখে ।

২৬জুলাই,বুধবার দিবাগত রাত ১১টায়,কমপ্যাক্ট প্রপার্টিজ লিমিটেডের নির্মাণাধীন ভবন “কমপ্যাক্ট রায়হান টাওয়ার” এর নির্মাণাধীন ভবনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।বায়েজিদ আবাসিক এলাকায় ১নং সড়ক এ নির্মাণাধীন ৯তলা ভবনে থেকে পড়ে শ্রমিকের প্রশ্নবিদ্ধ রহৎস্যজনক মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

শ্রমিকের কর্মস্থলে এমন রহৎস্যজনক মৃত্যু কোন মতেই মেনে নেওয়ার নয়।কোন কারণে কিভাবে নির্মাণাধীন ভবন থেকে কেনই বা পড়ে গেল? নাকি না-কি ভিন্ন কোনো কারণ?কেউ জানে না কোন কিছুই? ঘটনার সাথে সাথেই প্রত্যক্ষদর্শী আশপাশের মানুষ,এলাকা,আশপাশ এলাকা,সোশ্যাল মিডিয়াসহ ঘটনাস্থলকর্মস্থল এলাকা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ গ্রামের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তের মধ্যেই। যেই শুনে এবং দেখে সবাইকেই অবাক এবং হতভম্ব করে তুলছে।সে-ই সাথে প্রশ্নবিদ্ধ রহৎস্যজনক মৃত্যু বলেও মনে করছে অনেকেই।

এদিগে নিহত শ্রমিক মোঃ রাসেল (১৯)একমাত্র সন্তানের মর্মান্তিক আকস্মিক মৃত্যুতে প্রাণাধিক প্রিয় সন্তান হারিয়েছে তাদের পরিবার।একদিকে অভাব ও আর্থিক টানাপোড়ে দিনে এনে দিনে খাওয়া মেহনতি খেটে খাওয়া শ্রমিক পরিবারের একমাত্র সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর মর্মাহত শোকাহত হতাশাগ্রস্ত ও দিশেহারা মা-বাবা,পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই।

নিহত শ্রমিক মোঃ রাসেল পরিবারের একমাত্র পুত্র সন্তান।
চার ভাই বোনের মধ্যে সেই ছিল আদরের একমাত্র ছোট ভাই।পরিচয় জানা যায় নিহতের দেশের বাড়ী রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। নিহত মোঃ রাসেলের বাবার নাম মোঃ সিরাজুল ইসলাম,মায়ের নাম- রাশেদা বেগম। গ্রাম- বশিটোলা পাড়া, ১নং ওয়ার্ড বশিটোলা,থানা-গোমস্তাপুর জেলা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন,শুনেছি আমার ছেলে কাজ করতে গিয়ে কর্মস্থলে মারা গেছে।আমরা গরিব অসহায় নিরুপায় সাধারণ খেটে খাওয়া দিনে আনা দিনে খাওয়া মানুষ। এই কোরবানি ঈদের পর ছেলেকে বিবাহ করানো হয়েছে। আমরা গ্রামের সাধারণ মূর্খ-সুর্খ মানুষ আইন আদালত এসব কিছু জানিনা বুঝিনা।

নিহতের বোন-জামাই জাহাঙ্গীর বলেন,দিন কাটে দিন খায় ক্ষতিপূরণ তো দিতেই হবেই। দেখি কি হয়? আমার শ্বশুর শাশুড়ি খুবই অসহায় অসুস্থ এবং নিরুপায় তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিলে তারা কিছুটা হলেও চলতে পারবে।

কিভাবে মরছে তো আমরা জানিনা। তবে তার কর্মস্থলে মৃত্যু হয়েছে।আপনারা যা শুনতেছেন যা দেখতেছেন আমিও তাই শুনতেছি এবং জানতেছি। আর আমিতো ঘটনাস্থলেও ছিলাম না।
সবারই প্রশ্ন বিল্ডিং থেকে কেন পড়বে?একমাত্র পুত্রের উপরে নির্ভর ও আশা ভরসা ছিল তাদের পরিবারের। মানুষ তো আর ফেরত পাওয়া যাবে না। আশা করি তারা খুশি হয়ে আমাদেরকে অবশ্যই আর্থিক সহায়তা করবেন। না হয় বিকল্প কিছু যা যা করার দরকার সবই করতে হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়,বিল্ডিং থেকে পড়ে যুবককে মুমূর্ষ অবস্থায় রাত ১১টায় প্রথম অবস্থায় নিকটস্থ ক্লিনিকে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়।

কমপ্যাক্ট প্রপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারকে একাধিকবার কল করলেও তারা কোন উত্তর দেয়নি। অথচ,সাংবাদিক নাম পরিচয় ঠিকানা পেয়েেও উক্ত বিষয়ে কোন তথ্য বিবরণ বা মন্তব্য করতে রাজি হয় নাই। ঘটনাস্থলে সরজমিনে গিয়ে দেখে আসতে বলেন। নাম পরিচয় না দেওয়া সত্ত্বে কর্মকর্তা বলেন,আপনি ঘটনাস্থলে আসেন তারপর বলবো কি হয়েছে।

বায়জিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস জাহান বলেন,বায়জিদ আবাসিক এলাকা নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহতের মর্মান্তিক ঘটনাটি সত্য।ঘটনাস্থলে খবর পেয়ে পুলিশ সারেজমিনে সকল প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ ও যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ধানমন্ডি থেকে বসিলা: ট্রাফিক পুলিশের ‘মিশন ইম্পসিবল’ সফল হওয়ার গল্প”

মোঃ আসলাম সাগর:

প্রথম প্রজেক্ট: বছিলা কেন্দ্রীক যানজট নিরসনে ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগ, ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত মডেল—-

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনের আওতাধীন বসিলা এলাকার যানজট দীর্ঘদিন ছিল নাগরিক জীবনের দুঃস্বপ্ন। তবে সম্প্রতি ট্রাফিক পুলিশের একগুচ্ছ সুপরিকল্পিত ও সক্রিয় উদ্যোগে এলাকাটিতে এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। বেড়িবাঁধ সিগন্যাল বন্ধ, ইউটার্ন চালু, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং রাস্তা সংস্কারের সমন্বিত প্রয়াসে এখন যানজট প্রায় শূন্যের কোঠায়। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন প্রতিদিন লাখো পথচারী ও যানচালক।

### **কীভাবে এলো এই পরিবর্তন?**
ট্রাফিক পুলিশের মূল কৌশল ছিল **বেড়িবাঁধ সিগন্যাল সম্পূর্ণ বন্ধ** করে দেওয়া। এর পরিবর্তে:
১. **ইউটার্ন ব্যবস্থা:** গাবতলী থেকে বাবুবাজারমুখী যানবাহন ময়ূরভিলা থেকে, আর বাবুবাজার থেকে গাবতলীমুখী যানবাহন লাউতলা থেকে ইউটার্ন নিচ্ছে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ও বসিলার মধ্যে সরাসরি যান চলছে।
২. **অবৈধ দখল উচ্ছেদ:** সিএনজি/অটোরিকশা স্ট্যান্ড, বিভিন্ন বাস পরিবহনের স্ট্যান্ড ও রাস্তা দখলকারী শতাধিক অবৈধ দোকান সরিয়ে ফেলা হয়েছে, ফলে রাস্তা হয়েছে প্রশস্ত।
৩. **অস্থায়ী রাস্তা সংস্কার:** ডিপিডিসির খননকৃত রাস্তা ইটের খোয়া ও রাবিশ দিয়ে ভরাট, উঁচু-নিচু রাস্তা লেভেলিং এবং বেড়িবাঁধ কালভার্ট রোড মেরামত করা হয়েছে।
৪. **মিড আইল্যান্ড নির্মাণ:** বসিলা-গাবতলী-রায়েরবাজার সংযোগ সড়কে সিমেন্ট ব্লক দিয়ে অস্থায়ী মিড আইল্যান্ড তৈরি করা হয়েছে, যা লেন শৃঙ্খলা ফিরিয়েছে।

### **লোকজন কী বলছেন?**
***বসিলা বাসিন্দা):**
১. “আগে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পার হতে আধাঘণ্টা লাগত। এখন গাড়ি একবারও থামে না। যানজট থেকে যে পরিমাণ ভোগান্তি কমেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।”

২. মো: ফেরদৌস বলেন- “আমি এখন বসিলাতে থাকি লাস্ট ৩ মাস ধরে। কী যে একটা পেইন পোহাতে হতো এটার জন্য বলে বুঝাতে পারবো না। আর এখন সময় লাগে না। বসিলার দিকে যেতে ইউটার্ন এর একটু সামনে হাতের বাম পাশে রাস্তা আটকিয়ে ইট বালির ব্যবসা করে। ওদেরকে উঠাতে পারলে আরো ভালো হবে। ওদের কারণে পাশের রাস্তা গুলোর এই অবস্থা।”

৩. মইনুল হোসেন (মোহাম্মদপুর ব্যবসায়ী):** “যানজট কমলেও ইউটার্ন এলাকার ধুলাবালি ও বৃষ্টিতে কাদার সমস্যা এখনো আছে। সড়ক কার্পেটিং দ্রুত করা দরকার।”

### **পুলিশের ভূমিকা ও চ্যালেঞ্জ**

এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে *ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের* নিবেদিত প্রয়াস, বিশেষ করে:
* **মো. রফিকুল ইসলাম (উপ-পুলিশ কমিশনার , তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ) ও তানিয়া সুলতানা (অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার , তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ):** সার্বিক তত্ত্বাবধান ও কৌশল প্রণয়ন।

**মো. আসলাম সাগর (সহকারী পুলিশ কমিশনার, ট্রাফিক মোহাম্মদপুর জোন, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ):** মাঠে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

** জহিরুল ইসলাম (ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, ট্রাফিক মোহাম্মদপুর জোন, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ):** পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে সকল ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা নিয়ে নিরলস কাজ করে গিয়েছেন।

তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়:
* ভ্রাম্যমাণ দোকানদার ও হকারদের বারবার ফিরে আসা।
* ইজিবাইক ও সিএনজি চালকদের সাথে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ।
* ইউটার্ন এলাকায় যত্রতত্র ময়লা ফেলা।
* ধুলাবালি ও বৃষ্টিতে কাদা-গর্তে গাড়ি আটকানো।
* স্থায়ী কার্পেটিং না থাকায় ধুলো ও কাদার সমস্যা।

**মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনকেন্দ্রিক অন্য একটি প্রজেক্ট ধানমন্ডি ২৭**

একই রকম সাফল্য দেখা যাচ্ছে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কেও:
* বাংলাদেশ আই হাসপাতালের সামনে ধানমন্ডি ২৭ এর পশ্চিমে একটি বাম লেন তৈরি করা হয়েছে। ফলে বিরতিহীনভাবে ধানমন্ডি ২৭ এর পূর্ব থেকে আসা যানবাহন বাম লেন ধরে সাত মসজিদ রোড হয়ে ইউটার্ন নিয়ে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে যেতে পারছে, তাদের কোন সিগন্যালে পড়ে থাকতে হচ্ছে না।
* ফলে পূর্বে ৩টি সিগন্যালের প্রয়োজন হতো, এখন মাত্র ২টি সিগন্যালে যান চলাচল সম্পন্ন হচ্ছে।
* মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সাত মসজিদ এবং উল্টোপথে যাতায়াত সহজ হয়েছে, যানজট উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

### **স্থানীয় সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ**
বসিলা ক্লাব ও স্থানীয় ট্যাগ সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই প্রজেক্টকে সফল করতে সাহায্য করেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য জরুরি:

* **সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সিটি করপোরেশনের এর মাধ্যমে স্থায়ী কার্পেটিং ও প্রকৃত মিড আইল্যান্ড/ইউটার্ন নির্মাণ।
* **সিটি করপোরেশনের** নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও দখল রোধে কঠোর নজরদারি।
* ট্রাফিক আইনের প্রতি সকলের সম্মান বৃদ্ধি।

মোহাম্মদপুর-বসিলা ও ধানমন্ডি ২৭-এর এই “যাদুকরী” পরিবর্তন প্রমাণ করে, **সদিচ্ছা, সমন্বিত পরিকল্পনা ও দৃঢ় পদক্ষেপ** থাকলে সীমিত সম্পদেও রাজধানীর যানজট প্রশমন সম্ভব। ট্রাফিক পুলিশের এই স্বতন্ত্র ও সৃজনশীল উদ্যোগ ঢাকার বাসিন্দাদের জন্য স্বস্তি বয়ে এনেছে এবং শহরের অন্যান্য যানজটপ্রবণ এলাকার জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল হয়ে উঠেছে।

লেখক:
সহকারী পুলিশ কমিশনার, মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোন,
ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগ।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি