1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
বেইলি রোড ট্র‍্যাজেডি এবং নিরাপত্তাহীন জীবন ! - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । রাত ১০:২৩ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
ফিলিস্তিনের ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটি মানববন্ধন অবৈধপথে শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক: রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ: তদন্ত কমিটি গঠন! সরকারী দপ্তরে নির্বাচনী প্রচারণা! মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন ক্ষমতাসীন দলের পদ-পদবী ব্যবহার করে হোটেল ব্যবসার আড়ালে বাদলের মাদক,জুয়া ও রমরমা দেহ ব্যবসা বিশ্বনাথে অবশেষে অস্ত্র ও সহযোগী’সহ পুলিশের খাঁচার বন্দি কুখ্যাত ডাকাত আজির টংগী’তে অবস্থিত ‘জাবান হোটেল’ যেনো অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শনী ও মদ সেবনের নিরাপদ আড্ডাখানা বরখাস্তের পরও স্বপদে বহাল বিতর্কিত সেই অধ্যক্ষ প্রতিষেধকের অভাবে সেলিম মাদবরের মৃত্যু মিরপুরে মানব পাচার ও দেহ ব্যবসা চক্রের মূল হোতা মারুফের খুটির জোর কোথায়? হোটেল ক্লিনার থেকে কোটিপতি মারুফ !
বেইলি রোড ট্র‍্যাজেডি এবং নিরাপত্তাহীন জীবন !

বেইলি রোড ট্র‍্যাজেডি এবং নিরাপত্তাহীন জীবন !

 

আজিজুর রহমান বাবু, জেলা সংবাদদাতা, শরীয়তপুর

২৯শে ফেব্রুয়ারির বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে অসংখ্য মানুষের জীবন। স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এতদিনের লালিত সংগ্রাম। যাঁরা মারা গেছেন তাঁদের কথা জাতি স্মরণ না করলেও প্রতিটি পরিবারে একেকটি ক্ষত মনে করিয়ে দেবে স্বজন হারানোর বেদনাদায়ক অনুভূতি।

২০% ডিসকাউন্টের অফারে বিরিয়ানি খেতে কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্টে গিয়েছিলেন আধুনিক সভ্যতার মানুষগুলো রাতের ডিনার করতে। তাঁরা কী জানতেন এটাই তাঁদের শেষ খাবার ?

দ্রব্যমূল্যের এই অসম প্রতিযোগিতায় ক্লান্ত দেহমন নিয়ে কেউ ডিনারে বসেছিলেন – কেউ খাচ্ছিলেন। হঠাৎ চিল্লাচিল্লিতে আগুন আগুন শব্দের অবতারণা হয়, অতঃপর বাঁচার আকুতি। ঘটনার ১ম সূত্রপাত হয় নীচ তলায়। ইচ্ছে করলে তাত্ক্ষণিক ভাবে নেভানো যেতো। স্হানীয়দের উদাসীনতার কারণে আগুনের লেলিহান শিখা তেড়ে ২য়, ৩য়,৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ তলায় ছড়িয়ে পড়ে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

কেউ কেউ দৌড় দিয়ে নীচের তলায় এসে দেখেন আগুনের লেলিহান শিখা তেড়ে আসছে আবার উপরের তলার ছাঁদে জড় হওয়া। কেউ লাফ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা। কেউ হাউমাউ করে কান্নাকাটি শুরু করলেও অবশেষে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ক্রেনে করে নামানোর চেষ্টা। কিন্তু এরি মধ্যে কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্টে অসংখ্য মানুষ পুড়ে কাবাব হয়ে গেছেন। একটু ভাবুনতো ? কেমন দুঃসহ পরিস্থিতি ? কেমন যন্ত্রণাময় উপলব্ধি – ভাবতে পারেন ?

ইতিমধ্যে ৪৩ জন অন স্পটে পুড়ে ডেড। বিকৃত দেহের প্রতিচ্ছবি ভাবলেও শিউরে উঠতে হয়। পাশ্ববর্তী আরো ২০/২৫ জন গুরুতর আহত। তাঁরা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। কারো ডেড বডি মরচুয়ারিতে পড়ে আছে – লাশ নেওয়ার অভিভাবক খুঁজে পাচ্ছেন না।

এসব অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর জন্য আসলে দায়ী কারা ? তাঁদের বিরুদ্ধে কী রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রণীত আইনে কোনরুপ ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে ? নাকি অবৈধ মন্টু মামার প্রয়োগে সব স্হগিত হয়ে পড়বে ?

প্রিন্ট মিডিয়া কতৃক জানা গেলো, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণেই আগুনের সূত্রপাত। এই বিল্ডিংয়ে উঠা নামার জন্য একটাই সিঁড়ি ছিলো। প্রতিটি তালার সিঁড়ি মাঝ বরাবর একাধিক গ্যাস সিলিন্ডার রাখার কারণে যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টি হতো। গ্রাহকরা যেতে আসতে বিরক্তিবোধ – তারপরও যেতেন একটু কমের আশায়। একটু তৃপ্তিদায়ক খাবার খাওয়ার জন্য।

ভার্চুয়াল সূত্রে জানা গেছে,রাজউক কতৃপক্ষ কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্ট পরিচালনা না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। তা বাস্তবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আবার ফায়ার সার্ভিস কতৃপক্ষ পরপর তিনবার নোটিশ জারী করার পর ও কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্ট কতৃপক্ষ নোটিশকে উপেক্ষা করে ব্যবসা পরিচালনা আসছিলেন। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, কোন খুঁটির জোরে অবৈধ ভাবে এতদিন তাঁরা মুনাফা করে আসছিলেন ? রাজউক এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্তা ব্যক্তিরা কেনই বা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলেন ? কত টাকার বিনিময়ে এইসব অলিখিত চুক্তি হয়েছিল ? কার কাছে ফরিয়াদ করবে ক্ষতিগ্রস্হ পরিবার ?

বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ডে আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার প্রবাসী একই পরিবারের ৫ জন, মা- বাবা দুই মেয়ে এক ছেলে। এঁরা এসেছিলেন রাতে খেতে কিন্তু নিয়তির কাছে তারা হেরে গেলেন দগ্ধ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন। বুয়েটের মেধাবী ছাত্রী লামিসা , সংবাদকর্মী অভিস্রুতি, আওয়ামী লীগ নেতা শামীমের মৃত্যু আমাদের বার বার সংশোধন হওয়ার সুযোগ করে দিলেও। নগদ প্রাপ্তির প্রত্যাশায় সকল অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে রাষ্ট্র যন্ত্রকে অকেজো করার জন্য যেসব সরকারি কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন , তাঁদের বিরুদ্ধে কী কোন অভিযোগ তৈরী হবে ? নাকি পর্দার অন্তরালে থেকে যাবেন নেপথ্যের কুশীলবরা ।

আমজনতা ব্যস্ততা পূর্ণ জীবন থেকে একটু প্রশান্তির প্রত্যাশায় জীবনকে উপভোগ করতে গিয়ে দগ্ধ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায় ? কে দেবে এই সহিংস আচরণের জবাব ?

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »