ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজ মার্কেটের দোকান বরাদ্দে অনিয়ম-দূর্নীতি নেপথ্যে প্রভাষক আজিজুল ইসলাম

বিশেষ প্রতিনিধি :

ময়মনসিংহের ত্রিশালের ঐতিহ্যবাহী সরকারি নজরুল কলেজের মার্কেট বরাদ্দের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হরিলুট ও কলেজের বেনসন সিগারেট ও পান সুপারির বদলে
বিল হয় ডিম রুটির। এ ঘটনা জানাজানির পর থেকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির মূলে রয়েছেন স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি ও মার্কেট কমিটির আহবায়ক প্রভাষক আজিজুর রহমান এবং একাডেমিক কমিটির আহবায়ক প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার। তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবতদূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। কেউ প্রতিবাদ করলেও তার উপর নিপীড়ন করা হয়। তাদের আধিপত্য বিস্তার দীর্ঘদিনের। কলেজ মার্কেট এর দোকান বরাদ্দে দূর্নীতি, ভাড়াটিয়া পক্ষের
সাথে চুক্তি না করে মৌখিকভাবে ভাড়া উত্তোলন, পছন্দের ব্যক্তিদের দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়। কলেজ মার্কেট কমিটির আহবায়ক প্রভাষক আজিজুর রহমান তার
পছন্দের কিছু বহিরাগত লোক দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন সরকারি নজরুল
কলেজের গেইটের সামনে প্রায় ৩০০টি অবৈধ দোকানপাট বসিয়ে প্রতিদিন সকাল বিকাল প্রায় ৯০,০০০/- (নব্বই হাজার) টাকা উত্তোলন করছেন। এ টাকা কলেজের সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেরাই ভাগ বাটোয়ারা করে নেন বলে অভিযোগ
রয়েছে।অবৈধ দোকানাপাটগুলো উচ্ছেদের ব্যাপারে মার্কেট কমিটির আহবায়ক প্রভাষক আজিজুর রহমান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর কোন আবেদনপত্র জমা দেননি
বা কোন ধরণের উদ্যোগ নেননি। অনুসন্ধানে জানা গেছে , প্রভাষক আজিজুর রহমান কলেজে আধিপত্য বিস্তার করে দূর্নীতি-অনিয়মের পাহাড় গড়েছেন। প্রভাষক
আজিজুর রহমান ও প্রভাষক দিলীপ কুমারসহ তাদের পছন্দের কয়েকজন শিক্ষকের
স্বাক্ষর ছাড়া কোন বিল/ভাউচার পাশ হয়না। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কয়েকজন কর্মচারি অভিযোগ করেন সরকারি কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে স্টাফ কাউন্সিল এর
সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমান, প্রভাষক (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি)
ও একাডেমিক কমিটির আহবায়ক প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার, প্রভাষক (পদার্থবিজ্ঞান) বেনসন সিগারেট ও পান সুপারি খান কিন্তু বিল উত্তোলন করেন
ডিম ও রুটির ভাউচারে আবার সেই ভাউচার তাদের গ্রুপের কয়েকজনের স্বাক্ষর ও অধ্যক্ষের স্বাক্ষরেই পাশ হয়। অভিযোগ রয়েছে অনেক সময় চাপ সৃষ্টি করে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী শফিকুল ইসলাম দুলাল এর কাছ থেকে ভাউচার ছাড়াই
অগ্রিম টাকা নিয়ে নেন। পরে তা ভাউচারের মাধ্যমে পাশ করিয়ে নেন। প্রভাষক আজিজুর রহমান প্রভাব বিস্তার করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারি আইন অমান্য
করে বার বার কলেজের অভ্যন্তরীণ প্রায় সকল কমিটিতেই থাকেন এবং সস্মানি ভাতাসহ কলেজের বিভিন্ন খাত থেকে নামে বেনামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে
নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কলেজে ৩ জন এমপিওভুক্ত অফিস সহকারী থাকলেও তাদের কেউ কম্পিউটার কম্পোজসহ অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারেন না।
তাদের দায়িত্ব পালনে অক্ষমতার কারণে বিগত অধ্যক্ষ মোঃ ফয়জুর রহমান এর সময় কম্পিউটরে পারদর্শী একজন কম্পিউটার অপারেটর মাস্টাররোলে নিয়োগ দেন। ২০১৪ সাল থেকে কম্পিউটার সংক্রান্ত সকল কাজ কলেজের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট মোঃ
হারুন অর রশিদকে দিয়ে করানো হচ্ছে। যার দরুন কলেজের কম্পিউটার ল্যাব
সবসময় বন্ধ থাকছে। কলেজের কোন শিক্ষার্থী কম্পিউটারের কোন সুফল পাচ্ছেনা
না। কম্পিউটার ল্যাবটিতে থাকা কম্পিউটারগুলো অযত্নে অবহেলায় ধূলো-বালোয় নষ্ট হচ্ছে। কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কলেজে ৪ টি গবেষণাগার
(কম্পিউটার, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান) থাকা সত্ত্বেও বছরের পর বছর কোন ব্যবহারিক ক্লাশ নেওয়া হচ্ছেনা। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, স্টাফ
কাউন্সিলের সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমান এবং একাডেমিক কমিটির আহবায়ক
প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার শিক্ষার্থীদের সাথে প্রায় সময়ই হুমকি ধমকি দিয়ে কথা বলেন এবং মারধর করেন। কলেজে তাদের আস্থাভাজন কয়েকজন কর্মচারি
ছাড়া অন্য কর্মচারিদের সাথে তারা ধমক দিয়ে হুমকির স্বরে কথা বলেন।
সম্প্রতি প্রভাষক আজিজুর রহমান অহেতুক বিষয় নিয়ে কলেজে কর্মচারিদের সাথে অসদাচরণ করেন এবং এক পর্যায়ে বলেন কলেজের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারিগণ
কলেজ লুটপাট করে খাচ্ছে। এ মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারিদের পক্ষে একজন প্রভাষক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ
করেন। অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) উক্ত অভিযোগের বিষয়ে কোন তদন্ত কমিটি গঠন বা পদক্ষেপ নেননি বলে কয়েকজন কর্মচারি এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন। কলেজের
পূর্বপাশ্বের ঢাকা-ময়মনসিং মহাসড়ক সংলগ্ন সরকারি নজরুল কলেজের একটি
দ্বিতল মার্কেট ও কাঁচা বাজার রয়েছে। সেখানে ভিট দোকানসহ প্রায় শতাধিক দোকানপাট আছে। কলেজ মার্কেট পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন
প্রভাষক আজিজুর রহমান। মার্কেটের দোকান বরাদ্দেও তিনি ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নামে বেনামে দোকানপাট বরাদ্দ ও সাবলেট ভাড়া দিয়েছেন যার কোন টাকাই সরকারি কোষাগারে জমা হয়না। সে ব্যক্তিভাবে লাভবান হওয়ায় মার্কেটের বকেয়া টাকা আদায় করছেন না। কলেজ
মার্কেট এর বর্তমান বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে যা সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা ছিলো। বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কারও সাথে
কোনরকম যোগাযোগ করেননি। কলেজ জাতীয়করণের পরিপত্র জারি হওয়ার পর কলেজ গেইটের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত অবৈধ দ্বিতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হয় যা
সম্পূর্ণ সরকারি নীতির পরিপন্থী । কলেজ সরকারিকরণের পরিদর্শনের পত্রে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও ব্যাংকে থাকা অর্থ উত্তোলন এর নিষেধাজ্ঞা থাকা
সত্ত্বেও সরকারি আদেশ অমান্য করে কিভাবে ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় এর তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে
জানতে চাইলে বর্তমান অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) জয়নব রেখা বলেন আমি সে সময় দায়িত্বে ছিলাম না। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কলেজের অভ্যন্তরীণ ও পাবলিক
পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি, ভর্তি কমিটি ও ফরম পূরণ কমিটি গঠন ও ভাতা বন্টনের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালার অনুসরণ করা হয় না। স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমানের পছন্দের শিক্ষক ও কর্মচারিকে টানা
একাধিকবার কমিটিতে রেখে বিভিন্নভাবে সরকারি অর্থের সুবিধা নিচ্ছেন।
একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারি রয়েছেন যাদেরকে গত কয়েক বছর ধরে কোন কমিটিতেই
রাখা হচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ত্রিশালের সরকারি নজরুল কলেজে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত নতুন ভবনে সরকারি বিদ্যুৎ
ও পানি খরচ করে শুক্রবার ও শনিবারসহ পুরো সপ্তাহজুড়ে কলেজের ছাত্র/ছাত্রী ও বহিরাগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং বাণিজ্য করে আসছেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্টাফ কাউন্সিল এর সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমান ও একাডেমিক
কাউন্সিল এর আহবায়ক প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে রসায়নেরপ্রভাষক মোঃ রকিবুল হাসান ও পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক এ.কে.এম. ইয়াহিয়া
দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মকান্ড করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কলেজটি জাতীয়করণের পরিদর্শনের পত্রে ব্যাংকে জমা টাকা উত্তোলন ও উন্নয়নমূলক
কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় । সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষের কক্ষ সংলগ্ন টয়লেট,
একটি কক্ষ ও ওযুখানা নির্মাণ করেছেন এবং কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিট কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমান ও
একাডেমিক কমিটির আহবায়ক প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার তাদের সিন্ডিকেটকে অডিট কমিটিতে রাখেন এবং অডিট কার্য সম্পন্ন করেন। কলেজের অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী শফিকুল ইসলাম (দুলাল) বিগত কয়েক বছর আগে বাসা থেকে কলেজে
আসার পথে সরকারি কোষাগারের ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা হারানো হয়েছে মর্মে
তৎকালীন অধ্যক্ষ মজিবুর রহমানকে মৌখিকভাবে জানান। এ বিষয়ে কোন তদন্ত কমিটি হয়নি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়নি । ওই টাকা
অদ্যাবধি সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ কোনকিছু জানেন না বলে জানান।
প্রভাষক আজিজুর রহমান জানান আমাকে দেড় বছর আগে মার্কেটের আহবায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর থেকেই মার্কেট থেকে ভাড়ার টাকা উত্তোলন করে
কেরানির মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেই। আগে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করতো লোকাল অধিদপ্তর। এখন মন্ত্রণালয় করেন আমার জানা নেই । তবে আমি জেনে নিবো।
আগের ইউএনও আক্তারুজ্জামান স্যার অনেকবার উচ্ছেদ অভিযান করেছেন কোন ফলাফল
পায়নি। কলেজের গেইটের সামনে প্রায় ৩০০ দোকান বসিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়ে বলেন দেখেন আমি আসলেও নেইনা। কে নেয় তা আপনিই ভালো করে জানেন। অযথা আমাকে এ বিষয়ে টানা কি ঠিক হচ্ছে ?
অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত), জয়নব রেখা জানান, কোচিং বাণিজ্য বন্ধ থাকবে কিন্তু প্রাইভেট পড়াতে পারবে। তিনি আরও বলেন কলেজের মার্কেটটি একটি
বিষফোড়া এটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। মার্কেট কমিটির আহবায়ক প্রভাষক আজিজুর রহমান তিনি দায়িত্বে আছেন। আমি খুব শিঘ্রই চিঠির মাধ্যমে ভাড়া উত্তোলনেরকাজ শুরু করবো। কলেজের সামনে প্রায় ৩০০ দোকান থেকে প্রতিদিন টাকা উত্তোলন
করা হয় জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, আমি কয়েকবার স্থানীয় পুলিশকে বলেছিউচ্ছেদ করতে তারা করেনি। আমি একা কি করতে পারবো আপনারাই বলেন । তবে সবাই
আমাকে সহায়তা করলে আমি অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করতে পারবো ইনশাল্লাহ্। তিনি
আরও বলেন আমাদের কলেজের কেউ অনিয়ম-দূর্নীতিতে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে
তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাগরপুর টিটসি’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহানাজ পারভীন গড়েছেন দূর্নীতির সাম্রাজ্য

বিশেষ প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের নাগরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগদানের পর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতিতে নিজের দূর্নীতির সাম্রাজ্য গড়েছেন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী শাহানাজ পারভীন।

গত ২০২৩ সালে জুলাই মাসে শুরু হয় নাগরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ১ম ব্যচের প্রশিক্ষণ। শাহানাজ পারভীন ২০২৩ সালের শেষের দিকে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে দুর্নীতির দায়ে জনগণের ইট-পাটকেলের ঠিল ও ধাওয়া খেয়ে সোজা চলে আসেন নাগরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়ে। ইতিপূর্বে তিনি সিলেট ও টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন।

চিরাচরিতভাবেই ভাবেই নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেই রপ্ত করে নেন বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ আত্মসাৎ এর কৌশল।

এর ধারাবাহিকতায়, অর্থ আত্মসাৎ করতে ২০২৫ সালের মে মাসে চাকুরীচ্যুত করেন অটোম্যাকানিক ট্রেডের নাসির উদ্দীন, আহসান হাবীব ও গ্রাফিকস ডিজাইন ট্রেডের আকিমুন্নাহার নামের ৩ জন সৎ প্রশিক্ষক কে। এরা সবাই আজ চাকুরী হারিয়ে পরিবার, সন্তান নিয়ে দিশেহারা।
এদের পরিবর্তে নিয়োগ দেন এলাকায় কম চাহিদা সম্পন্ন সরকারি নিয়োগপ্রপ্ত গার্মেন্টস ট্রেডের শামীম আল মামুন নামের তার কথিত প্রেমিক কে। জনশ্রুত আছে, দুই স্বামীর সংসার ত্যাগ করে শাহানজ পারভীন এখন সহকর্মী শামীম আল মামুনের প্রেমে অন্ধ। দু’জনে মিলে নিয়মিত ভাবে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিভিন্ন উৎস থেকে টাকাপয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে শাহানাজ পারভীনের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আগত প্রতিটি প্রশিক্ষণ গ্রহীতার কাছ থেকে আবেদনের ফি বদাবদ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা লোক দিয়ে নিয়ে থাকেন। কখনো আবার জামানত হিসেবে নেন হাজার টাক। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর এ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে আনুমানিক ৬২৫ জন প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছে। এসব প্রশিক্ষনার্থীদের কাছ থেকে আনুমানিক ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছেন।

প্রশিক্ষনার্থীদের প্রতি ব্যচের ইন্ডাস্ট্রি ভিজিটের জন্য বরাদ্দ থাকে ৭ হাজার টাকা। এ টাকা কখনোই তিনি প্রশিক্ষনার্থীদের ইন্ডাস্ট্রি ভিজিটের জন্য ব্যয় করেননি। যার আনুমানিক পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
এছাড়াও ৬২৫ জন প্রশিক্ষনার্থীর প্রশিক্ষণ শেষে জন প্রতি ৩৫০ টাকা বরাদ্দের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করার থাকলেও শাহানাজ পারভীন এ কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকেই প্রশিক্ষনার্থীদের খাবার বদাবদ জন প্রতি মাত্র ২০-২৫ টাকা ব্যয় করে আসছেন। এ খাতে থেকে শাহানাজের অর্থ আত্মসাৎ এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ৬ হাজার ২৫০ টাকা।

মোটর ড্রাইভিং ট্রেডের প্রশিক্ষনার্থীদের জন্য প্রতিদিন ২০ লিটার তেল বরাদ্দ থাকলেও কখনোই তিনি ১০ লিটারের বেশী তেল বরাদ্দ করেননি। এবং শিক্ষার্থীদের টিটিসি এর চত্বরের বাইরে গিয়ে ড্রাইভিং এর সুযোগ দেননি কখনোই। এতে করে প্রশ্ন থেকে যায় একজন ড্রাইভিং ট্রেডের শিক্ষার্থী কি তার পূর্ণ বাস্তব শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছে?
এছাড়াও তিনি নিয়মবহির্ভূত ভাবে, একক সিন্ধান্তে সকল ক্রয়, ব্যয় ও বরাদ্দের নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। ক্রয় কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে ইচ্ছেমত বিলি ভাউচার করেন। এভাবেই প্রতিটি অর্থনৈতিক খাত থেকেই তিনি হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। এসব টাকা দিয়ে ঢাকার অদূরে গাজীপুর চৌরাস্তা হতে সালনা বাজারের আগে কালার টেক নামক এলাকায় দুটি বাড়ির জায়গায় কিনেছেন। সেখানে আয়ন ভিলা নামে একটি দোতলা বাড়ি নির্মান করেছেন। পাশেই অপর একটি জায়গায় ক্রয় করে সেমি পাকা বাড়ি নির্মান করেছেন, যা আগামীতে ৫তলা ভবন নির্মান করবে বলে জানায় তার সহকর্মীরা। প্রশ্ন জাগে একজন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কত টাকা বেতন পেলে এমন দুইটি বাড়ির জায়গা ক্রয় করে একটি দোতলা এবং একটি অধা পাকা বাড়ি নির্মান করা সম্ভব?

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার সহকর্মীরা জানায়,সাবেক প্রথম স্বামী কেরানীগঞ্জের সিদ্দিকুর রহমান এবং ২য় স্বামী ময়মনসিংহের কেন্দুয়ার ওমর ফারুক আহাম্মেদ। শাহানাজ পারভীন এখন এদের কারো সাথেই ঘরসংসার করছেন না শামীম আল মামুন সাহেবের প্রেমের জন্য।

প্রশিক্ষনার্থী আবু বকর, আল আমিন, রানা ও সুপ্তি জানায়, তাদের কোন টি শার্ট, এপ্রোন, সুরক্ষা জুতো, ব্যাগ, হাতমোজা, ব্যচ, নিরাপত্তা চশমা এসবের কিছুই দেয়া হয়নি, যাও দেয়া হয় সেগুলো ব্যবহৃত। ট্রেনিং শেষে তা ফেরত নেয়া হয়। তারা আরো বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণ শেষে বিদায় অনুষ্ঠানে আমাদের ১ টি পাঁচ টাকার কেক এবং ১৫-২০ টাকা দামের ১টি সফট ড্রিংক দেয়া হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি আমাদের দুপুরের খাবার জন্য জন প্রতি ৩৫০ টাকা বরাদ্দ ছিলো। আমরা সকল দূর্নীতির প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনে দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ আশা করি।

নাগরপুর টিটিসি’র চাকুরী হারানো অটোমোবাইল ট্রেডের সাবেক প্রশিক্ষক আহসান হাবীব ও নাসির হোসেন জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহানাজ পারভীন প্রতি মাসে বেতনের অর্ধেক টাকা দাবি করেন এবং এ টাকা তখনই বিকাশে পাঠাতে বলেন। শাহানাজ পারভীনকে পরদিন কিছু টাকা দেয়ার জন্য রাজি হলেও চাকরিচ্যুত করা হয় আহসান হাবীবকে। শাহানাজ পারভীনের চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে টাকা না দিতে পারায় ঐ দিনই তাকে বরখাস্ত করা হয়। পরদিন শাহানাজ পারভীনের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানে তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি আহসান হাবীবকে। তালে অপমান করে ঘার ধাক্কা দিয়ে টিটিসি চত্বর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, “আমি ক্রয় কমিটির সদস্য ছিলাম। আমার কাছ থেকে সাদা বিল ভাউচারে শাহানাজ পারভীন জোর করে স্বাক্ষর নিতেন এবং এসব কাগজের ক্রয় দেখানোর কোন কিছুই তিনি ক্রয় করেননি, সমান্য কিছু জিনিস ভাঙ্গারীর দোকান থেকে কিনে আনতেন তিনি। আমি একজন দক্ষ সার্টিফিকেটধারী প্রশিক্ষক, আমার পরিবর্তে এখানে অদক্ষ এবং ব্লক ও বুটিক ট্রেডের সরকারি চাকুরীজীবী শামীম আল মামুন সাহেবকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যা সরকারি চাকুরীর বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্গন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
হাজির করা হলো ট্রাইব্যুনালে, হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড়