১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । রাত ১১:৫৮ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
হাসপাতালের দালাল মিলনের খপ্পরে পড়ে গত ৫ মার্চ নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল থেকে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীর ধোলাইপাড় ‘ডেল্টা হেলথ কেয়ার যাত্রাবাড়ি লিমিটেডে’ যান পোশাক শ্রমিক মো. আল আমিন। ২০ হাজার টাকায় সিজার করিয়ে দিবে বলে চুক্তিতে এনে তিন দিন আগে প্রায় দুই লাখ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। বিল দিতে না পারায় নবজাতককে কেটে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে।
সিজারে জমজ নবজাতকের জন্ম হয়। এরপর তাদেরকে তিন দিনের কথা বলে হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউতে) নেওয়া হয় বলা হয়, এনআইসিইউর বিল হবে ৩০ হাজার টাকা। এরপর পাঁচ দিনের মাথায় জমজ নবজাতকের মধ্যে একজন মারা যায়। এনআইসিইউতে তিন দিন রাখার কথা থাকলেও পরে নবজাতকের অবস্থা খারাপ হচ্ছে বলে আরও কয়েকদিন রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আল আমিনকে চিকিৎসার সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করতে না পারলে নবজাতককে ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানায়।
এ বিষয়ে আল আমিন বলেন, ২০ হাজার টাকা চুক্তি করে আমাকে আনলেও আমার কাছ থেকে ২৯ হাজার টাকা নিছে সিজারে। এরপর প্রিম্যাচিউর জমজ শিশুর জন্ম হয় বলে হাসপাতালের এনআইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে আমাদের এক নবজাতক মারা যায়। এনআইসিইউতে তিন দিন রাখার কথা থাকলেও পরে নবজাতকের অবস্থা খারাপ হচ্ছে বলে আরও কয়েকদিন রাখে তারা।’
আল আমিন বলেন,‘হাসপাতাল থেকে এক ধরনের ইনজেনকশন ধরিয়ে দিছে, যা তাদের নির্দিষ্ট ডিলার পয়েন্ট ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না, যার দাম রাখা হয়েছে আট হাজার টাকা করে। এই ইনজেকশন আমাকে দিয়ে ছয় দিন কেনাইছে। এরপর থেকেই আমি লুজার হয়ে গেছি। আজ থেকে তিন দিন আগে আমাদের রিলিজ দিয়েছে। তখন আমি হাসপাতালে বললাম, এখন কিছু পরিশোধ করব আর বাকি টাকার চেক দেব। তখন থেকে আমার সঙ্গে তারা খারাপ ব্যবহার শুরু করে। আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এমনকি বলা হয় বুড়িগঙ্গায় কেটে ভাসিয়ে দেবে। হাসাপাতালের ভেতরে বিশাল সিন্ডিকেট বাহিনী আছে, তারা এসব বলেছে।’
নবজাতকের বাবা আল আমিন আরও বলেন, ‘আামাদের আটকে রেখেছে তিন দিন আটকে না রাখলে তো তিন দিন আগেই আমাদের ছেড়ে দেওয়া কথা ছিল। টাকার জন্য তারা সময়মতো রিলিজ দেয়নি আমাদের। আমরা ৫ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতালের টোটাল বিল হয়েছিল এক লাখ ৮৭ হাজার। আজকে তারা (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) এক লাখ ২৭ হাজার টাকা রেখে আমাদের ছেড়ে দিয়েছে। আল আমিন বলেন, ‘বাবুকে আটকে রাখছিল। এই সময় বাবুকে আমাদের কাছে দেয়নি। তবে বাবুকে তার মায়ের দুধ খাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে ডেল্টা হেলথ কেয়ার যাত্রাবাড়ি লিমিটেডের ম্যানেজার সুলতান আহমেদ বলেন, ‘মুসলমান হলে এমন মিথ্যা কথা বলতে পারে না। সে (আল আমিন) বিল দেখে বিভিন্নজনকে দিয়ে অনুরোধ করে। এরপর মোট বিল থেকে আমরা কমিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও সে (নব জাতকের বাবা) পরিশোধ করতে পারছিল না। নব জাতকের বাবা গ্রামের জমি বিক্রি করতে পারেনি, তাই টাকা যোগাড় করতে পারেননি বলেও আামাদের জানিয়েছেন। এরপর যা কমানোর আমরা কমিয়ে দিয়েছি।
Leave a Reply