১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ১০:৪৫ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাসা বাড়িতে কাজে জন্য নিয়ে গিয়ে তথাকথিত নারী সাংবাদিকের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয় দশ/এগারো বছর বয়সের এক শিশুকন্যা লীপা আক্তার। লীপা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ডাক্তার জানিয়েছে রোগীর অবস্থা ভালো না।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত সরাইল থানার গুনারা গ্ৰামের হতদরিদ্র রিক্সাওয়ালা সারু মিয়ার মেয়ে লীপা আক্তার এখন ডাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। লীপার মায়ের কান্না চোখে দেখে সহ্য করা যায় না। আর বাবা সারু মিয়া মেয়ের এই অবস্থা দেখে যেনো পাথর হয়ে গেছে। ওদিকে ডাক্তাল বলছে কেস কমপ্লিকেটেড….!
অনুসন্ধানে জানা গেছে, একজন অপরিচিত মহিলার মাধ্যমে ধানমন্ডি ১২ নম্বর রোডের কোন এক বাসায়(ঠিকানা বলতে পারে না) বিগত মাস ছয়েক আগে দশ/এগারো বছরের শিশু লীপা কাজ করতে আসে ভাতের অভাবে। এর মধ্যে বাড়ির সাথে যোগাযোগ বলতে লীপার সাথে তার বাবার কয়েক দফা মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দিয়েছে সেই কথিত সাংবাদিক সাহেলা ম্যাডাম। সারু মিয়া জানিয়েছেন, তার মেয়ের কাজের বেতন বাবদ এপর্যন্ত ম্যাডাম একটি পয়সাও দেননি বরং সবসময় ধমকের উপর রেখেছেন। ভাত দিতে পারেন না তাই হতভাগা পিতা ভাবতেন, যাই হোক তবুও তো মেয়েটা অন্তত দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারবে।
গত ২৩/০৯/২২ সকালে সারু মিয়া তার মেয়ের খোঁজ খবর জানতে ফোন দিলে ম্যাডাম জানান যে লীপা অসুস্থ, তাকে নিয়ে তার খুব অসুবিধা হচ্ছে, তাই সে যেনো অতিসত্বর এসে তার মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যায়। ঘটনা শুনে বিচলিত হয়ে পরেন বাবা সারু মিয়া কিন্তু সে কি করে আসবে, কারণ সে তো ম্যাডামের বাসাবাড়ি চেনেন না। এর প্রতিউত্তরে সাহেলা ম্যাডাম সারু মিয়াকে ঢাকা সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে এসে ফোন দিতে বলেন। সারু মিয়া যথারীতি সায়দাবাদ এসে পুনরায় ফোন দিলে ম্যাডাম তাকে সেখানেই অপেক্ষা করতে বলেন ও জানিয়ে দেন যে তার ড্রাইভার লীপাকে সেখানে পৌঁছে দেবে।
সারু মিয়া জানান, সে সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করতে থাকে, একসময়ে এক পুরুষ কন্ঠ নিজেকে ড্রাইভার বলে পরিচয় দেয় এবং সায়দাবাদ কোথায় আছে তা জেনে নিয়ে লীপাকে নিয়ে তার কাছে গিয়ে হাজির হয় ড্রাইভার। গাড়িতে বসা লীপার করুন অবস্থা দেখে বাবা সারু মিয়া হতভম্ব হয়ে যান! কিন্তু সে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ড্রাইভার তার হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে আর লীপাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে শটকে পরে। কোনো উপায় না পেয়ে মুমুর্ষ শিশু লীপাকে নিয়ে সে আসেন বাড়িতে এবং অবস্থা খারাপ দেখে গত ২৪/০৯/২২ ব্রাম্নবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন।
ওদিক ব্রাম্নবাড়িয়া সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা ২৪ ঘন্টা রাখার পর রোগীর অবস্থার আরও অবনতি দেখে গত ২৬/০৯/২২ একটি বোর্ড মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়ে লীপাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।
লীপা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
ডাক্তারদের সাথে কথা বলে জানা যায় লীপার শরীর বিভিন্ন রকম ক্ষতের চিহ্ন মিলেছে, তাকে হয়তো অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে এবং খাবারেও প্রচুর কষ্ট দেয়া হয়েছে যার ফলে এই দুর্দশা।
ওদিক সারু মিয়া এই খবর কথিত সাংবাদিক সাহেলা ম্যাডামকে জানালে সে কারো সাথে কিছু আলাপ না করে অপেক্ষা করতে বলেন। পরবর্তীতে এক মহিলা মারফত চিকিৎসার খরচ বাবদ কিছু টাকা পাঠিয়ে দেন, তা নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। নিরক্ষর হতদরিদ্র সারু মিয়া জানেন না এমতাবস্থায় তার কি করা উচিৎ।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় লীপা আক্তারের বাবা সারু মিয়া সাথে সংবাদ প্রতিবেদক। ওদিকে লীপার মায়ের কান্নায় যেনো দশদিক একাকার। কে এই সাহেলা ম্যাডাম, কোন স্যাটেলাইট চ্যানেলের সাংবাদিক, ধানমন্ডি ১২ নম্বর রোডের কতো নম্বর বাড়ি কিছুই বলতে পারে না কেউ! অথচ শিশু লীপার অবস্থা ভালো না। সারু মিয়ার কাছে ম্যাডামের যে মোবাইল নাম্বার ছিলো তাতে বারবার ফোন দিলেও সে ফোন রিসিভ করে না, কখনও কখনও বন্ধ করে রাখে। এমতাবস্থায় শিশুটিকে বাঁচাতে কি করা উচিৎ, কার কাছে যাওয়া উচিত কিছুই ঠিক করতে পারছেন না রিক্সাওয়ালা সারু মিয়া। এক চরম হতাশায় নিমজ্জিত পরিস্থিতি। অতঃপর খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় কয়েকবছর আগে বৈশাখী টিভিতে এই নামে এক নারী কাজ করতেন এখন আর করেন না। বর্তমানে সে কোথায় থাকেন, কি করেন সে বিষয়ে তারা কিছুই বলতে পারেন না। বৈশাখী টিভির কাছ থেকে একটি ছবি সংগ্রহ করে লীপাকে দেখালে সে নিশ্চিত করে যে এই তার সেই সাহেলা ম্যাডাম!
ওদিকে সারু মিয়ার কাছে ম্যাডামের যে মোবাইল নাম্বার ছিলো তাতে বারবার ফোন দিলেও সে ফোন রিসিভ করে না, কখনও কখনও বন্ধ করে রাখে। এমতাবস্থায় শিশুটিকে বাঁচাতে কি করা উচিৎ, কার কাছে যাওয়া উচিত, এ এক অমানবিক হতাশ পরিস্থিতি।
প্রতিবেদক জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত সরাইল থানার গুনারা গ্ৰামের লোকজন থেকে শুরু করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত যারাই লীপার করুন অবস্থা দেখেছে তারা প্রত্যেকেই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি জানায় যে যেনো মূল্যে এই সাহেলাকে বের করে এনে শিশু শ্রম ও নির্যাতনের অপরাধে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি অভাগী মা ও হতদরিদ্র রিক্সাওয়ালার শিশুকন্যা লীপার যেনো সুচিকিৎসার সকল প্রকার বন্দোবস্ত নিশ্চিত করা হয়।
Investigation Agency
Leave a Reply