১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ১০:৪৩ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
এস.এ.এম. মুনতাসির:
বিজয়ের মাসে নতুন একটি বিজয় চট্টগ্রাম – কক্সবাজারসহ সারাদেশের মানুষের জন্য।
গত ১১ই নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বহুল প্রতীক্ষিত দোহাজারী – কক্সবাজার স্বপ্নের রেলপথ উদ্বোধন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ পহেলা ডিসেম্বর ২০২৩(শক্রবার) থেকে দুপুর ১২.৩০ মিনিটে ২০টি বগিতে ১০২০জন যাত্রী নিয়ে কক্সবাজার এক্সপ্রেস তার প্রথম যাত্রার মাধ্যমে এর বানিজ্যিক কার্যক্রম চালু করেছে, ট্রেনটি কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন ছেড়ে বানিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি ঢাকায় প্রবেশ করবে। ফিরতে পথে আরো একটি ট্রেন ঢাকা কমলাপুর স্টেশন থেকে ১০.৩০ মিনিটে ছেড়ে বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি পর্যটন নগরী কক্সবাজার প্রবেশ করবে। এই ধারাবাহিকতায় দেশের সকল বিভাগীয় শহর থেকে পর্যায়ক্রমে সরাসরি ট্রেন শীঘ্রই চালু হবে কক্সবাজারের সাথে। একজোড়া টুরিস্ট ট্রেন প্রতিদিন আসা যাওয়া করবে নীল সমুদ্রের দেশে, এর ফলে পর্যটন খাতে ব্যাপক সম্ভবনার ধার উন্মোচিত হলো।
জননেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীকে দোহাজারী – কক্সবাজার রেললাইন সম্পন্ন করার কথা দিয়েছিলেন এবং উনার কথা রাখলেন। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে ইতিমধ্যে। রেল সংযোগের কারনে সারাদেশের রেল যোগাযোগের সাথে অন্তর্ভুক্ত হলো বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজার।এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল দোহাজারী – কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ করা কিন্তু বিভিন্ন কারনে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ মহল এই অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণে কোনো আন্তরিকতা দেখায়নি, আওয়ামী লীগ সরকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারনে এই অঞ্চলের মানুষের বহুদিনের প্রতীক্ষিত স্বপ্ন সত্যিতে পরিণত হয়েছে, ‘স্বপ্ন সত্যি হয়’ এটি আরো একবার প্রমাণ করে দিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা সকল বাঙালী জাতির জন্য গর্বের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
কক্সবাজারের কলাতলী থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে চান্দের পাড়া, ঝিলংজা ইউনিয়নে ২৯ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুটের দৃষ্টিনন্দন ছয়তলা বিশিষ্ট আইকনিক রেলস্টেশন। যেখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল,কনভেনশন সেন্টার, শপিং মল, রেস্টুরেন্ট, এটিএম বুথ শিশুযত্ন কেন্দ্র, পোস্ট অফিস, ইনফরমেশন বুথ,লকার, প্রার্থনার স্থানসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ সুবিধা।
২০১৮ সালে জুলাই মাসে শুরু হয়েছিলো ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি, এছাড়া আইকোনিক রেল স্টেশন প্রকল্পটিতে খরচ হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড দুই ভাগে কাজ করছে। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
দোহাজারী – কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সরাসরি পর্যটন নগরী কক্সবাজারের যোগাযোগ স্থাপন হলো। সকল বিভাগীয় জেলা শহর থেকে সরাসরি ট্রেনে করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে কম খরচে, কম সময়ে ও নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবে।
এছাড়া এই অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্য যেমন: লবন,মৎস্য, শাক-সবজি, পান সুপারি এবং বনজ সম্পদ ইত্যাদি দেশের বিভিন্ন এলাকায় খুব সহজে ও স্বল্প সময়ে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে, এতে এই অঞ্চলের মানুষসহ সারা দেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী নানানভাবে উপকৃত হবে।
Leave a Reply