নিউমার্কেটে তিন ঘন্টা ধরে সংঘর্ষ, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক

 

গতকাল মধ্যরাতে দীর্ঘ তিন ঘন্টা ধরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেট ও আশপাশের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ চলার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। খাবারের বিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত ১১.৪০ মিনিটের দিকে এই ঘটনার সুত্রপাত হয়। এরপর রাত প্রায় আড়াইটা নাগাদ পর্যন্ত থেমে থেমে কয়েক দফা সংঘর্ষ চলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে।

এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে রাত পৌনে ১টার দিকে যোগ দেয় অতিরিক্ত পুলিশ। তারা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ১৫-২০ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। এসময় পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থী।

গতকাল রাত আড়াইটার দিকে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। আহত দুই শিক্ষার্থী হলেন- মোশাররফ হাজারি (২৪) ও রজব রহমান (২৭)। এর মধ্যে মোশাররফের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তার শরীরে অর্ধশতাধিক রাবার বুলেটের চিহ্ন রয়েছে। তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিউতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তার সহপাঠীরা।

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও নিউমার্কেট এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থান করে পুলিশের গুলি ছোঁড়ার প্রতিবাদ করছেন। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা ইস্টার্ন-মল্লিকা মার্কেটের কাছে অবস্থান নিয়েছেন। ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ সদস্যও ঘটনাস্থলে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।

এদিকে সংঘর্ষের সময় রাস্তার দুই পাশে রাখা একাধিক মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেগুলো জ্বলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। কে বা কারা মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে তা জানা যায়নি। এছাড়া পুরো রাস্তাজুড়ে ইটের টুকরা ও কাঁচ ভাঙা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

চাঁদমারীতে মসজিদ নিয়ে ডিসির ভূমিকায় এলাকায় ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করে ফতুল্লার পশ্চিম চাঁনমারী এলাকার পতিত সরকারি জমিতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের বিতর্কিত ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

তাদের ভাষ্য জনাব আব্দুল জব্বার এম এল এস এস জেলা প্রশাসক নারায়ণগঞ্জ ২০০৫ সালের ২০ আগষ্ট হতে, ইসদাইর মৌজায় ৭২ নং দাগের ৭.৭৫ শতাংশ পরিত্যক্ত জমির উপর জরাজীর্ণ টিনের ঘর বরাদ্দ নিয়ে, পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসিতেছে, এবং নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করে আসিতেছে, জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ, অবৈধভাবে তাহাকে অত্র লীজ সম্পত্তি হতে উচ্ছেদের চেষ্টা চালাইয়া যাইতেছে। এতে করে এলাকাবাসীর মধ্যে বিশাল খোভ দেখা দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক হিসেবে জয়েনিং ডেট ছিল ২৪ সালের ২৭ জুলাই।

এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদ সহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। এতো মসজিত থাকার পর সরকার যেখানে এই মসজিদটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে সেখানে এমন নির্দেশের তোয়াক্কা না করে জেলা প্রশাসক সেখানে পুনারায় এলাকার ভিতর মানুষের চলাচলের ব্যাঘাত ঘটে এবং মসজিদ বানানোর অনুপযুক্ত জায়গায়, নামাজ আদায়ের কোনো অনুমতি দিলেন তা রহস্যজনক।

এখানেই শেষ নয়, ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, এ বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি নাসিম ওসমানের পক্ষ নিয়ে ভুক্তভোগিদের ধমক দিয়ে বলেন, ‘এতো জেনেসাইড’ জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকী? তার এমন মন্তব্যে পর এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

এ নিয়ে ইতোমধ্যে জন প্রশাসন মন্ত্রনালয় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকা বাসীর পক্ষে নাহিদ ইসলাম নামক ব্যক্তির করা অভিযোগে বলা হয়, ‘আমাদের এলাকাটি চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডের পার্শ্বে অবস্থিত। এখানে চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডে পূর্বেই মহাসড়কের জায়গা দখল করে জোর পূর্বক নির্মিত “নাসিম উসমান মসজিদটিকে বর্তমান সরকার ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিলে ফকির গার্মেন্টস সড়কের শুরুতে খতিয়ান ১৪৫, সি,এস, এস,এ-৭২, আর,এস-১৩৬ নং দাগের ৩৩ শতাংশ খাস ভূমিতে আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক জুলাই আগস্ট-জেনোসাইডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী নাসিম উসমানের দলীয় লোকজনের সাথে বৈঠক করে এবং প্রকাশ্যে নিরীহ লোকজনকে “এতো জেনেসাইড” জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকী? এ ধরনের মন্তব্য করার পর হইতে এলাকার মধ্যে বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এলাকার ৩/৪টি গ্রুপ তৈরী হয়ে মারমুখি অবস্থানে সকাল বিকাল মিছিল স্লোগান সহ বর্তমান জেলা প্রশাসকের বিগত সরকার দলীয় লোকজনের প্রতি অতিরিক্ত আনুগত্য জনমনে অশান্তির সৃষ্টি করেছে’।

‘এখানে উল্লেখ্য যে, এই এলাকার জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদ সহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। চানমাড়ী ট্যাক্সী ষ্ট্যান্ডেই উক্ত নাসিম উসমান মসজিদ লাগোয়া একটি মডেল মসজিদ নির্মিত হতে যাচ্ছে’।

‘শুধুমাত্র বিগত সরকারের লোকজনের প্রভাব বিস্তারের জন্য নাম পরিবর্তন পূর্বক নতুন নামে মসজিদ নির্মান করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই উদ্দেশ্য’। ‘ফকির পার্মেন্টস সড়কটি রাজউক প্লানে ৬ মিটার ১৮ ফুট প্রস্থে থাকলেও বিগত সরকার দলীয় লোকজন অবৈধভাবে জায়গা দখল করে দোকান নির্মানের কারনে প্রন্থে দশ ফুট অবশিষ্ট রয়েছে’।

‘জায়গাটি মানুষের বাসা বাড়ির মাঝখানে উঠানের মত, যেখানে অগনিত মহিলা ও শিশু যাতায়াত করে। যা পুরুষদের জন্য মসজিদ হওয়ার উপযুক্ত নয়’।

‘বিগত সরকারের দলীয় খাস লোক রহমত উল্লাহ্ বোখারী ও সেলিম উসমানের একান্ত বন্ধু মনির এর নেতৃত্বে তাদের লোকজন কে টুপি পাঞ্জাবী পরিয়ে এলাকার লোকজন বানিয়ে সংকীর্ন প্লেসে উক্ত “নাসিম উসমান মসজিদের পুনঃ স্থাপন চেয়ে সকাল বিকাল স্লোগান, মিটিং মিছিল করে। এলাকার উক্ত মসজিদ নির্মানে বাধাদান কারী নিরীহ লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ নির্যাতন, নিপীড়ন চালাচ্ছে। যাহার ভিডিও ফুটেজ বিদ্যমান আছে’।

‘একজন জেলা প্রশাসক বরাদ্দ ব্যতীত কিভাবে একজন লীজ গ্রহিতা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় আগামী শুক্রবার নিজে উপস্থিত থেকে উক্ত প্লেসে জুম্মার নামাজ আদায় করে ভিত্তি প্রস্থড় স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিতে পারে, যা কখোনই আইন সংগত নয়’।

‘এই ফকির গার্মেন্টস সড়কে গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরী চলমান আছে। যেখানে এমনেতেই সংকীর্ণ রাস্তার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তার উপর রাস্তাটি মসজিদ নির্মানের কারণে আরও সংকীর্ণ হয়ে গেলে ফ্যাক্টরীর উৎপাদন সহ মহিলা শিশুদের চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে যাবে’।

‘এমতাবস্থায় জনাবের নিকট বিনীত অনুরোধ আমরা এলাকার নিরীহ লোকজন কোনভাবেই এই বর্তমান জেলা প্রশাসক সহ এই বিগত সরকারের দলীয় দুস্কৃতিকারীদের সাথে পেরে উঠছিনা। যেখানে এলাকায় আরও ছয়টি মসজিদ রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিদ্যমান, তাই এই ধরনের খাস ভূমি বরাদ্দ ব্যতিত এবং জনৈক ব্যক্তির নামে লীজ থাকাবস্থায় জেলা প্রশাসক নিজে স্ব-শরীরে আগামী শুক্রবার জুম্মার নামাজে উপস্থিত থেকে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবেশ ভারসাম্যহীন না করার জন্য আসু পদক্ষেপ নিতে জনাবের একান্ত মর্জি হয়’।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম