অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে আলোচিত হত্যাকাণ্ড

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক: 

১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন দুই নারী। ‘ইজি স্ট্রিট মার্ডার’ নামে পরিচিত ৪৬ বছর আগের এই ঘটনা দেশটির সবচেয়ে আলোচিত ঠান্ডা মাথার খুন।

আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের একমাত্র সন্দেহভাজনকে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে ইতালি থেকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ঘটনার সময় বর্তমানে ৬৫ বছর বয়সী পেরি কুরুম্বলিসের বয়স ছিল ১৭ বছর। গত সেপ্টেম্বরে ইতালিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে।

জানা যায়, ১৯৭৭ সালে মেলবোর্নের একটি বাড়িতে ২৭ বছরের সুজান আর্মস্ট্রং এবং ২৮ বছর বয়সী সুসান বার্টলেট ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছিলেন। হাইস্কুলে পড়ার সময় থেকেই তাঁরা দুজন বন্ধু ছিলেন। হত্যার তিন দিন পর তাঁদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছিল। ঘটনাটি এখনো পুরো জাতিকে নাড়া দেয়।

অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিএনএ পরীক্ষায় অগ্রগতির ফলে তাদের তদন্তের কেন্দ্রে চলে এসেছেন পেরি। তবে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগও আনা হয়নি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, যদি অভিযোগ গঠন করা হয়, তবে চলতি সপ্তাহেই আদালতের মুখোমুখি হবেন পেরি।

বিবিসি জানিয়েছে, হত্যার তিন দিন পর দুই বান্ধবীর মরদেহ পাওয়া গেলেও সুজানের এক বছরের ছেলেকে অক্ষত অবস্থায় তার শয্যায়ই পাওয়া গিয়েছিল।

পুলিশের তথ্যমতে, সুজান ও সুসানকে একের পর এক ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছিল এবং হত্যার আগে সুজানকে যৌন নিপীড়নও করা হয়েছিল।

সেই সময়ের ১৭ বছর বয়সী পেরি প্রথমবারের মতো পুলিশের নজরে এসেছিলেন হত্যাকাণ্ডটির এক সপ্তাহ পর। কারণ তিনি ঘটনাস্থলের কাছে একটি রক্তমাখা ছুরি পাওয়ার কথা বলেছিলেন।

পেরি একই সঙ্গে গ্রিস ও অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিক। সাত বছর আগে তিনি অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করে গ্রিসে চলে যান। কিন্তু এর মধ্যেই তদন্তে তাঁর নামটি সামনে চলে আসে। পরে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যা এবং একটি ধর্ষণের অভিযোগে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে।

গ্রিসের আইন অনুযায়ী, হত্যার অভিযোগ ২০ বছরের মধ্যে আনতে না পারলে গ্রেপ্তার সম্ভব নয়। ধারণা করা হয়, এ কারণেই গ্রিসে বসবাস করে আসছিলেন পেরি। যদিও পরবর্তীতে কোনো কারণে ইতালিতে পা রেখেছিলেন তিনি।

পেরির গ্রেপ্তারের পর নিহত দুই নারীর পরিবার একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘সুজান এবং সুসানের এই নৃশংস মৃত্যুর সঙ্গে আমরা এখনো মানিয়ে নিতে পারিনি। এ ঘটনা আমাদের জীবনকে চিরতরে বদলে দিয়েছে।’

বিবৃতিতে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘আপনাদের ধৈর্য এবং কখনো হাল না ছাড়ার জন্য আমরা শুধু বলতে পারি, ধন্যবাদ।’

ভিক্টোরিয়া পুলিশের কমিশনার শেন প্যাটন এই হত্যাকাণ্ডকে ‘চরম নিষ্ঠুর এবং ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের সমাজের হৃদয়ে আঘাত করেছিল। কারণ নিজের ঘরে নারীদের নিরাপদ অনুভব করার কথা ছিল।’

আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বহু বই, পডকাস্ট এবং পুলিশের তদন্ত হয়েছে। ২০১৭ সালে এই মামলাটির তথ্যের জন্য ভিক্টোরিয়া পুলিশ ১০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

পেরি কুরুম্বলিসের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন হলে এবং প্রমাণিত হলে এটি হবে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত হত্যার বিচার। পুলিশ এবং নিহতদের পরিবার আশা করছে, এত বছর পর হলেও সুবিচার নিশ্চিত হবে।

সবা:স:জু-১৭৫/২৪

গফরগাঁও থেকে পালাতক আওয়ামী দোষর রাজউক ইমারত পরিদর্শক আল নাইম মুরাদ

মাহতাবুর রহমান:

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক ২০১৫ সালে যে সকল ইমারত পরিদর্শক নিয়োগ প্রদান করেছেন তার মধ্যে অনেকেই ছিলেন ছাত্রলীগের আবার অনেকেই ছিলেন আওয়ামী লীগের সুপারিশ প্রাপ্ত। গত ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সাংবাদিকের উপর হাতুড়ি নিয়ে হামলা করা সোলাইমান হোসেন তাদের অন্যতম। এবার খুঁজে পাওয়া গেছে এই সোলাইমান হোসেনের ঘনিষ্ট বন্ধু ছাত্রলীগ কর্মী ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গফরগাঁও ময়মনসিংহ সংসদীয় আসনের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এর সুপারিশে রাজউকের ইমারত পরিদর্শক হিসেবে যোগদান করা আল নাইম মুরাদকে।

 

আল নাইম মুরাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ এর অনুসন্ধানী দল প্রথমেই পৌঁছায় তার নিজ গ্রাম সালটিয়ায়। ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার একটি ইউনিয়ন এই সালটিয়া। অত্র ইউনিয়নের মোঃ আব্দুল মতিনের ছেলে আল নাইম মুরাদ ১৯৮৭ সালে জন্মগ্রহন করেন। সালটিয়ার আলো বাতাসে বেড়ে ওঠা এই আল নাইম মুরাদ ডিপ্লোমা-ইন-ইনঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) অধ্যায়নের সময় জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ও আল নাইম মুরাদ এর বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় তাদের ভিতরে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ২০১৫ সালে এই সংসদ সদস্য বাবেলের সুপারিশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক এ ইমারত পরিদর্শকের চাকুরি বাগিয়ে নেন আল নাইম মুরাদ। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট ছাত্র-জনতা এই আল নাইম মুরাদের পৈত্রিক বাড়িকে ঘেরাও করলে তিনি কোনোভাবে ঢাকাতে পালিয়ে আসেন বলে তথ্য রয়েছে। এবং তাকে পালাতে সহায়তা করেছেন ছাত্রদলের আব্দুল্লাহ আল বাপ্পি যিনি এই মুরাদের বন্ধু হিসেবেই পরিচিত।

 

আব্দুল্লাহ আল বাপ্পির কাছে এই আল নাইম মুরাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তাকে চিনতেই পারেননি। পরে তার কাছে ছবি পাঠানো হলে তিনি বলেন, আল নাইম মুরাদকে কখনোই আওয়ামী লীগের সাথে আমরা প্রকাশ্যে দেখিনি। তাহলে আল নাইম মুরাদকে কেন পালাতে হলো?

 

আল নাইম মুরাদ ছাত্রলীগের রাজনীতির চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজীর অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়েছেন এই রাজউকের কর্মস্থলে। চাকরি শুরুর কিছুদিন পরে যখন নিজের চেয়ার পাকাপোক্ত মনে করেছেন তখন থেকেই তিনি ত্রুটিপূর্ণ ভাবন মালিকদের নোটিশের মাধ্যমে ডেকে এনে মোটা অংকের চাঁদার বিনিময়ে সেই ফাইল গায়েব করে দিতেন। কিছু ভবন মালিকরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাড়ির কিছুটা অংশ ভাঙ্গার অভিনয় করে ভয় দেখিয়ে তারপরে টাকা আদায় করতেন। তার এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন রাজউকের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা যাদের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।

 

অভিযোগ রয়েছে আল নাইম মুরাদ যখন জোন ৩/১ এ কর্মরত ছিলেন তখন ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক অপরিকল্পিত ভবন যেগুলো সম্পূর্ণরূপে রাজউকের বিধি বহির্ভূত।  এখন প্রশ্ন আসে রাজউকের একজন কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকাকালীন অবস্থায় কিভাবে এই অপরিকল্পিত বিধি বহির্ভূত ভবন নির্মিত হল? তাহলে কী এই অনিয়মের পিছনে জড়িত রয়েছেন এই কর্মকর্তা?

 

অনুসন্ধানে আল নাইম মুরাদ এর বেশকিছু অনিয়মের তথ্য-উপাত্ত দৈনিক সবুজ বাংলাদেশের হাতে এসেছে। এই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লষনের পরে তার দুর্নীতির খতিয়ান নিয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ…

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম