তারিখ লোড হচ্ছে...

তিন ডাকাতের আত্মসমর্পণ

স্টাফ রিপোর্টার: 

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া পাকাপোল এলাকায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখা ঢুকে পড়া তিন ডাকাত আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

দুইটার দিকে ডাকাত দল ব্যাংকটিতে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের অভিযানের একপর্যায়ে আত্মসমর্পণ করেন তিন ডাকাত।

র‍্যাব–১০ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় জানানো হয়, চুনকুটিয়া এলাকায় রূপালী ব্যাংকে ঢুকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন তিন ডাকাত। সেই তিনজন আগ্নেয়াস্ত্রসহ যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।

ঘটনাস্থলে একজন র‍্যাব কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ভেতরে তিনজন ডাকাত ছিলেন। তাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। আলোচনার মাধ্যমে এই নাটকের অবসান ঘটেছে। তিনি বলেন, ভেতরে তিনজন (ডাকাত) ছিলেন। বাইরেও তাঁদের লোক ছিল। এই র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, তিনি যতদূর জানেন, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

এদিকে তিন ডাকাতের আত্মসমর্পণের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যাংক ভবনে প্রবেশ করেছেন। তাঁর সেখানে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন।

এদিকে তিন ডাকাতের আত্মসমর্পণের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যাংক ভবনে প্রবেশ করেছেন। তাঁর সেখানে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন।

এর আগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকের ভেতরে দুই থেকে তিনজন ডাকাত অবস্থান করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ডাকাতদল ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে সেখানে থাকা সবাইকে জিম্মি করে ডাকাতি করার চেষ্টা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা দুইটার দিকে ব্যাংকে ডাকাত দলের ঢুকে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। তখন এলাকাবাসী ওই এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে ব্যাংকে ডাকাত দলের প্রবেশের বিষয়টি স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানানো হয়। এ সময় এলাকাবাসী ব্যাংকটির চারপাশ ঘেরাও করে প্রবেশের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। বিকেল চারটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।

বিসিক এ আইন কর্মকর্তার বেআইনী কাজ!

স্টাফ রিপোর্টার

বিসিকের বিটিআই আবাসিক কোয়ার্টার-এ বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেতন বিল হতে বাসা ভাড়া কর্তন করা হয়না অথচ: কর্মচারীদের নিকট হতে নিয়মিত বাসা ভাড়া কর্তন করা হয়। এটি একটি চরম বৈষম্যমূলক আচরণের উজ্জলতম দৃষ্টান্ত। আবাসন কোয়ার্টার বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক সরকারী অর্থ আত্মসাৎ এবং সরকারী অর্থ তছরূপ এর শামিল। বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ মেরাজ উদ্দিনের নিকট এ খাতে বকেয়া পাওনার পরিমাণ ১২ লক্ষ টাকার অধিক। আরেকজন কর্মকর্তা বিসিক আইন সেলের আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম এর নিকট এ খাতে বকেয়ার পরিমাণ ৬ লক্ষ টাকার অধিক। এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানার জন বিসিক চেয়ারম্যান এবং বিসিকে কর্মরত সকল পরিচালক এবং বিটিআই এর অধ্যক্ষ এর নিকট হোয়াটসএ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে জানতে চাওয়া হলে বিসিক চেয়ারম্যান এবং বিসিকের কোন পরিচালক এর নিকট হতে কোন প্রকার মতামত পাওয়া যায়নি। এমনকি মতামত চাওয়ার ৪ দিনের মাথায় সংবাদ প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত কোন প্রকার প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি –যা একটি প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাপারই বটে। গুরুতর আর্থিক অসদাচারণের সাথে যুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা একটি অশুভ ইংগিত বহন করে।
এ বিষয়ে বিটিআই এর অধ্যক্ষ শফিকুল আলম তার মতামত ব্যক্ত করতে জানান যে, বিটিআই এর আবাসন কোয়ার্টার নকশী ভবন ফ্ল্যাট নং-২ এ কোয়ার্টারটি ১লা অক্টোবর ২০১৮ তারিখ হতে তৎকালীন কর্মীব্য বস্থাপনা কর্মকর্তা (বর্তমানে উপ ব্যবস্থাপক) মোঃ মেরাজ উদ্দিনের নামে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। আবাসিক কোয়ার্টার নকশী ভবন, ফ্ল্যাট নং-২বি কোয়ার্টারটি ১লা জানুয়ারি ২০২২ তারিখ হতে বিসিকের আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম এর নামে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বাসা ভাড়ার টাকা তাদের বেতন বিল হতে কর্তন করার জন্য বিসিকের হিসাব ও অথর্ বিভাগে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। হিসাব ও অর্থ বিভাগের ডিসি এ (বিল) মারুফ হাসান এবং এ সি এ (বিল) মোঃ আরিফ আলমগীর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাগণ মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং মাহবুব আলম এর বেতন বিল হতে আবাসন কোয়ার্টার এর বাসা ভাড়া বাবদ অথর্ কর্তন করেন না। এ ক্ষেত্রে আমি আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছি। বাসা ভাড়ার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে না অবগত হওয়ার পরও কেন তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হয়নি-এ বিষয়ে অধ্যক্ষ কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
বিটিআই এর আবাসিক কোয়ার্টারে অবস্থান করে যথা নিয়মে বেতন বিল হতে বাসা ভাড়া কর্তন না করানো এবং বাসা ভাড়া বাবদ অর্থ পরিশোধ না করার ব্যাপারে বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম এর হোয়াটসএ্যাপ এবং ই-মেইলে মতামত জানতে চাওয়া হলে উপ ব্যবস্থাপক মোঃ মেরাজ উদ্দিন তার মতামতে উল্লেখ করেন যে, বেতন বিল হতে বাসা ভাড়ার টাকা কর্তন করার দায়িত ¡বিসিকের হিসাব ও অথর্ বিভাগের। সাময়িক অসুবিধার কারণে বিটিআইএর কোয়ার্টার এর অথর্ পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি, যা আত্মসাতের পর্যায়ে পড়ে না। আইন কর্মকর্তা মাহবুব আলম হোয়াটসএ্যাপে তার মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে জানান যে, আমি মাত্র ৩ মাস আগে আবাসিক কোয়ার্টার নকশী ভবন, ফ্ল্যাট নং-২বি কোয়ার্টার বরাদ্দ পেয়েছি-আপনি কোথায় ভুয়া তথ্য পেয়েছেন যে, আমি জানুয়ারি ২০২২ হতে এ কোয়ার্টারে বসবাস করছি।
একটি প্রতিষ্ঠানের আইন সেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কর্মরত থেকে নিয়ম নীতি বিরুদ্ধ বে-আইনী কাজে অভ্যস্থ থাকা অবস্থায় আপনি প্রতিষ্ঠানকে কি সেবা প্রদান করবেন? প্রতিবেদকের এ ধরনের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মাহবুব আলম বলেন যে, আমি কোন সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করিনি বা চেষ্টাও করি নি। আমি বাসা ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত অর্থ এখন থেকে নিয়মিত পরিশোধ করে দিবো। তাছাড়া শিল্প উপদেষ্টার অফিসে আমি যাইনা এবং আমি ছাত্রদল করা লোক, আমার নিকট ছাত্রদলের নের্তৃবৃন্দ আসতেই পারে। তবে তাদেরকে সাথে নিয়ে শোডাউন করার বিষয়টি সঠিক নয়।
এ বিষয়ে একজন প্রশাসন বিশেষজ্ঞের মতামত জানতে টাইলে তিনি জানান, বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক মোঃ মেরাজ উদ্দিন এবং বিসিকের আইন কর্মকর্তা তাদের স্বপদে বহাল থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ৪০ নং সংসদীয় আইন অনুযায়ী আর্থিক অসদাচরণের দায়ে একই আইনের ২৩। (১) কোন সরকারি কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে- (ক) ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা অবহেলাজনিত কারণে ব্যথর্ হওয়ার কারণে উপ-ধারা (১) এর অধীন আর্থিক অসদাচরণের জন্য অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য আইন বা প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে। একই আইনের ২৩(১) (খ) ধারার বিধান অনুযায়ী কোন অননুমোদিত বা অপচয়মূলক ব্যয় নির্বাহ বা ব্যয় নির্বাহের আদেশ প্রদান করিলে, অথবা কোন আর্থিক ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে ইহার যথার্থতা (বোনাফাইড) এবং সংশ্লিষ্ট আইন বিধি-বিধান যথাযথ অনুসরণ করা হইয়াছে কিনা তাহ ানিশ্চিত করিতে ব্যর্থ হইলে তিনি আর্থিক অসদাচরণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
বিসিকের হিসাব ও অর্থ বিভাগের ডিসিএ (বিল) মারুফ হাসান এবং এসি এ (বিল) মোঃ আরিফ আলমগীর এর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ এবং আর্থিক অসদাচরণের দায়ে বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। সরকারী অথ আত্মসাৎ কাজে উক্ত দ’ুজন কর্মকর্তা সহযোগিতা প্রদানের পাশাপাশি তাদের দায়িত্ব পালনে বারবার অবহেলা প্রদর্শন করা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট আইন বিধি-বিধান যথাযথ অনুসরণ করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।
বৈষম্যমূলক আচরণ এবং সরকারী অর্থ আত্মসাৎকারী, সরকারী অথর্ আত্মসাৎ/তছরূপ কাজে সহযোগিতাকারীদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন বিসিক এ কর্মরত দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম