সাবেক এমপি তুহিনের বাড়ি এখন মাদকের আখড়া

স্টাফ রিপোর্টার:

ময়মনসিংহের নান্দাইলে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের পৌর বাসভবনটি পৌরনিবাস নামে বিশেষ পরিচিত ছিল।

ক্ষমতায় থাকাকালীন তার সমর্থিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আগমন ও প্রস্থানে মুখরিত ছিল ভবনটি। বর্তমানে সেই পরিত্যক্ত তিনতলা বাসভবনটি এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

নান্দাইল মডেল থানা থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে ভবনটি থাকলেও সেখানে দিন দুপুর ও রাতে চলছে মাদক সেবনকারীদের আড্ডা। এলাকাটি আবাসিক এলাকা হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা মাদক সেবনকারীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।

এছাড়াও ওই পরিত্যক্ত সাবেক এমপি তুহিনের বাসভবনটিকে ঘিরে যেমন মাদকসেবীদের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক তেমনি চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।

জানা গেছে, আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুব স্নেহভাজন এমপি ছিলেন। এই বাসভবনটিতে বসে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সব অবৈধ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। পেশাজীবী সংগঠনগুলোও চলত এ বাড়ির নির্দেশে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও সংগঠনের নেতারা এখানে নিয়মিত হাজিরা দিতেন। এ বাড়ির কথাই ছিল শেষ কথা।

সাবেক এমপি তুহিন নিজেকে গায়েবি এমপি হিসাবে পরিচয় দিতেন, ঠিক তেমনি আলোচনা ও সমালোচনার মুখে পড়ে তিনি ভাইরাল হয়েছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাসভবনটিতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিকাণ্ড ঘটায় বিক্ষুব্ধ জনতা। বর্তমানে ভবনটির মূল কাঠামো ইটের দেওয়াল ও কংক্রিটের ঢালাইকৃত ছাদ, বাউন্ডারী ওয়াল ও ভবনের সামনে তিনটি অগ্নিদগ্ধ গাড়ির কিছু অংশ পড়ে আছে।

ভবনের গেইট, দরজা, জানালা, আসবাবপত্র ও গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর থেকেই ভবনটি মাদকসেবী ও চোরের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে। তাই মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাবেক এমপি তুহিনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে মাদক সেবনের বিষয়টি আমি কথিয়ে দেখছি এবং মাদকসেবনকারী সে যেই হোক না কেন, কাউকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।

 

সবা:স:জু- ৪৯৪/২৪

প্রসূতিকে স্বাভাবিক প্রসব করাতে গিয়ে,নবজাতকের মৃত্যু

প্রসূতিকে স্বাভাবিক প্রসব করাতে গিয়ে,নবজাতকের মৃত্যু

জামালপুর জেলা সংবাদদাতা: জামালপুর শহরে প্রসূতিকে স্বাভাবিক প্রসব করাতে গিয়ে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৫ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পৌর শহরের পশ্চিম ফুলবাড়িয়া এলাকার নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে ওই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নগর মাতৃসদন কেন্দ্রের নার্স ও আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক।

প্রসূতি নওরিন জান্নাত মৌ (২১) সদর উপজেলার নারিকেলি এলাকার সোহেল আনসারীর স্ত্রী।

নবজাতকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় নওরিন জান্নাত মৌয়ের (২১) প্রসববেদনা উঠলে জামালপুর পৌর শহরের নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে ভর্তি করে তার পরিবারের লোকজন। ওই সময় নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে কোনো গাইনি চিকিৎসক ছিলো না। পরে শনিবার ভোররাতে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করেন নার্স শিরিন আক্তার ও আয়া ময়না বেগম। এ সময় ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের পরিচালকসহ অন্যান্যরা গা ঢাকা দিয়েছেন।

নিহত নবজাতকের চাচা সৌরভ বলেন, ‘এখানে এসে দেখি বাচ্চার গলায় ছিলে গিয়েছে, নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচাই চাই।’

নিহত নবজাতকের বাবা সোহেল আনসারী বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। নার্স ও আয়া দুইজন মিলে টেনেহিঁচড়ে বাচ্চা বের করছেন, এজন্য শিশুটি মারা যায়। বাচ্চার শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নেওয়ার জন্য নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইলে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ঘটনায় পরিস্থিতি বিবেচনায় নার্স ও আয়াকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নবজাতকের মৃত্যুর খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম