মামলা চালাতে চান না সুবাহ

স্টাফ রিপোর্টার॥
যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবাহ। এরপর ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান তিনি। তবে এখন আর মামলা চালাতে চাচ্ছেন না এ অভিনেত্রী।

মামলা দায়েরের পর ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ইলিয়াসের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ। এরপর অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এখন ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা চালাতে চান না সুবাহ। মামলাটি প্রত্যাহার করবেন বলে মৌখিকভাবে আদালতকে জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী।

রোববার (২৪ জুলাই) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক আবেরা সুলতানা খানমের আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন সুবাহ আদালতে সাক্ষ্য দেন। এসময় মৌখিকভাবে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা চালাবে না বলে বিচারককে বলেন সুবাহ।

সুবাহ আদালতে বলেন, আমাদের দুজনের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমি আর এ মামলা চালাতে চাই না। আমি মামলা প্রত্যাহার করতে চাই। এরপর বিচারক আসামি ও বাদীর উপস্থিতির জন্য সোমবার (২৫ জুলাই) দিন ধার্য করেন। এদিন আসামি ও বাদীর উপস্থিতিতে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে শুনানি হবে।

এর আগে গত রোববার (১৯ জুন) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক আবেরা সুলতানা খানম আসামি ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলায় ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার জারি রয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের পেশকার ইসতিয়ার আলম জনি  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চলতি বছরের মার্চে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক মাসুমা আফ্রাদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ১১ জনকে।

এদিকে মামলায় উচ্চ আদালতের ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন ইলিয়াস। আত্মসমর্পণ করে জামিন শুনানির দিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ২২ মার্চ ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সুবাহ একজন অভিনয়শিল্পী এবং আসামি ইলিয়াস একজন কণ্ঠশিল্পী। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের পরিচয়। পরিচয়ের সূত্র ধরেই প্রেমের সম্পর্ক। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ইলিয়াসের চাহিদা অনুযায়ী যৌতুক হিসেবে ১২ লাখ টাকা দামের রোলেক্স ব্র্যান্ডের একটি ঘড়ি, ২৫ হাজার টাকা মূল্যের আরেকটি ঘড়ি, এক লাখ টাকার স্বর্ণের আংটি, গলার চেইনের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং বিয়ের কাপড় বাবদ দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়।

এতে সন্তুষ্ট না হয়ে সুবাহর কাছে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৫০ লাখ টাকা ও গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। এছাড়া সুবাহর মায়ের কাছে যৌতুক হিসেবে ইউটিউব চ্যানেল কেনার জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। তখনো ইলিয়াসকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়া হয়।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সুবাহ জানতে পারেন ইলিয়াস একাধিক বিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুবাহকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন তিনি। এরপর একই বছরের (২০২১ সাল) ২৭ ডিসেম্বর ইলিয়াস যৌতুক হিসেবে আরও ৮০ লাখ টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছিলো। এর জেরে ইলিয়াস কাচের গ্লাস ভেঙে তার ভাঙা অংশ দিয়ে সুবাহকে মারতে যান। তখন সুবাহ থামাতে গেলে তার বাম হাত জখম হয়। পরবর্তী সময়ে ইলিয়াস বিষয়টি নিয়ে সুবাহর কাছে ক্ষমা চান এবং এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

এরপরও সুবাহর কাছে ইলিয়াস ফের টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, পরের দিন ২৮ ডিসেম্বর ইলিয়াস আবার সুবাহর কাছে ৮০ লাখ টাকা দাবি করেন। এতে সুবাহ অস্বীকৃতি জানালে ইলিয়াস এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাথি মারেন এবং চুলের মুঠি ধরে দেওয়ালের সঙ্গে ঠুকে জখম করেন। অসুস্থ হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন সুবাহ। মেডিকেল সনদপত্রে সুবাহকে মারপিট করে সাধারণ জখম করার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

তদন্তকালে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) এর ১১(গ) ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

মামলার অভিযোগে যা বলেছেন সুবাহ:
এদিকে চলতি বছরের (২০২২) ৩ জানুয়ারি যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে ইলিয়াসকে আসামি করে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন সুবাহ। এতে ঘড়ি, স্বর্ণের আংটি, গলার চেইন ও কাপড়ের জন্য ইলিয়াসকে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনার জন্য ৮০ লাখ টাকা দিতে সুবাহকে চাপ দেন ইলিয়াস। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই জেরে ওইদিন রাত ৮টার দিকে সুবাহকে শারীরিক নির্যাতন করেন ইলিয়াস। পরদিন আবারও ৮০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।

টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সুবাহকে আবারও শারীরিক নির্যাতন করেন ইলিয়াস। এতে জখম হন সুবাহ। এরপর সুবাহকে ব্যথার ওষুধের নামে অন্য ওষুধ খাইয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পরই অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। এ সুযোগে ইলিয়াস আলমারিতে থাকা ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার এবং ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান।

 

গণঅভ্যুত্থানের বিকল্প নেই: ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার॥

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ১৪ বছর ধরে সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। এবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটি গণঅভ্যুত্থানের কোনো বিকল্প নেই। আমরা সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাস করি না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিজয় অর্জন করতে চাই। গাজী রুহুল আমিন আজ সেই সংগ্রামটাই করছেন, সেই লড়াইটাই করছেন। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদ আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকে সংবিধানের কথা বলছেন। কিসের সংবিধান? সরকার যেটা মুখে বলে সেটাই সংবিধান।

আজ আপনারা কোথায় বিচার চাইবেন? বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা নেই। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতে সাত বছর সাজা দেয়া হয়েছে, আর সেটা হাইকোর্টের যাওয়ার পর ১০ বছর করা হয়েছে। যে মামলার ভিত্তি নেই। যে মামলায় দুই কোটি টাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটি এখন ওই ব্যাংকে আট কোটি টাকা হয়েছে। এই প্রশ্নগুলো এখন করে আর লাভ নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৪ বছর ধরে দেখছি, আমরা প্রেসক্লাবের বাইরে দাঁড়াবো সেটা দিচ্ছে না। পার্টি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলবো সেটাও তারা দিচ্ছ না। অর্থাৎ যখন জনগণ থেকে একটা সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন সে পাওয়ার দিয়ে টিকে থাকার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। সরকার সেটাই করছে। আমরা দাবি করবো পেশিশক্তি ব্যবহার না করে এই মুহূর্তে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পদত্যাগ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গাজী রুহুল আমিনকে বেআইনিভাবে ১০ মাস আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি শুধু একজন সাংবাদিক না, তিনি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। তিনি সর্বদা সত্য কথা বলেন, কাউকে ভয় পান না। যে কারণে আজ তাকে একটি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। যে আইনে তাকে আটক করা হয়েছে সেটি একটি বিবর্তনমূলক গণবিরোধী আইন। এটি মুক্ত সাংবাদিকতা বিরোধী আইন। তিনি বলেন, গাজী সাহেবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলতে কী বোঝায়? একজন মুক্তিযোদ্ধা কখনো রাষ্ট্রদ্রোহী হতে পারে না। এই ডিজিটাল সিকিউরিটি মামলায় সংগ্রামের বয়োবৃদ্ধ সম্পাদককে দীর্ঘ সময় আটক করে কারাগারে রাখা হয়েছে। আমার জানামতে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে সাড়ে চার হাজার মামলা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে আপনারা জানেন এদেশে যারা স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলছে, গণতন্ত্রের জন্য কথা বলছে তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমাদের বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। ওয়ার্ডের একটি কর্মীও বাদ যায়নি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন কয়েকদিন আগে আমাদের ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। তারা নিয়ম অনুযায়ী আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিল। সেখানে ১৫/১৬ হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। তা দেখে সরকার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গেছে। আসলে সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। তাই একসাথে এত লোক দেখে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে এবং ১৮৭ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে। পায়ের নিচে মাটি না থাকলে এই ভয়টা হয়। সেখানে আমাদের আব্দুস সালাম, আমানউল্লাহ আমান, আমিনুল ইসলামসহ অনেক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
নয়া দিগন্তের সম্পাদক মহিউদ্দিন আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, কবি আব্দুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ডিআরইউ’র সভাপতি মোরসালিন নোমানী প্রমুখ।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি