পাকা আম খেলে ডায়াবেটিসের রোগীদের বাড়বেনা সুগার

স্টাফ রিপোর্টার:

আম পুষ্টিকর ফল। এই ফলের মধ্যে ভিটামিন সি, এ, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, পটাশিয়াম প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও ক্যালোরি। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা পাকা আম খাবেন কি না, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে থাকেন।

ভারতের খ্যাতনামা ডায়েটেশিয়ান অনুশ্রী মিত্র বলছেন, ডায়াবেটিসের রোগীরাও পাকা আম খেতে পারেন। কিন্তু কয়েকটি নিয়ম মেনে খেতে হবে। তিনি বলেন, ‘উচ্চ পরিমাণে ফ্রুটোজ থাকলেও আমে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।’

ডায়াবেটিসের রোগীরা যেভাবে আম খাবেন

ডায়াবেটিসের রোগী না হলেও ইচ্ছে মতো পাকা আম খাওয়া চলবে না। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ওজন বৃদ্ধির ভয় থাকে। একটা বড় সাইজের আম গোটা না খেয়ে, তা সকাল-বিকাল ভাগ করে খান। একটা আম সারাদিন ধরে খেলে সুগার লেভেল বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।

গোটা আম খাবেন না। আম ছোট ছোট টুকরো করে খান। এতে মনে হবে, অনেকটা পাকা আম খেয়ে ফেলেছেন।

পাকা আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। তাই ভারি খাবারের সঙ্গে পাকা আম খাওয়া এড়িয়ে চলুন। বিশেষত রাতে খাবার খাওয়ার পর পাকা আম খাবেন না।

ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চের মধ্যবর্তী সময়ে পাকা আম খেতে পারেন। আবার ব্রেকফাস্টে দু’টো রুটির সঙ্গে এক টুকরো আম খেতে পারেন। তবে ভরপেট খাবার খাওয়ার সঙ্গে পাকা আম না খাওয়াই ভালো।

ফল হিসেবেই পাকা আম খান। পাকা আমের জুস, পুডিং বা অন্য কোনো ডেজার্ট বানিয়ে খাবেন না। এতে আমের পরিমাণ বোঝা যায় না এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে।

পাকা আমের সঙ্গে বাদাম, স্প্রাউট বা শসার মতো খাবার রাখতে পারেন। এতে রক্তে গ্লুকোজ নিঃসরণ ধীর গতিতে হবে। এই টোটকায় পাকা আম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা চট করে বাড়বে না।

সুগার লেভেল যাচাই করে নিন-

প্রত্যেকের শরীর সমান নয় এবং শারীরিক জটিলতাও একে-অন্যের থেকে আলাদা। তাই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য পাকা আম উপযুক্ত কি না, কিংবা দিনে কতটা পাকা আম খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম, সে সম্পর্কে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন। পাশাপাশি নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা যাচাই করুন।

প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি ভালো না মন্দ

স্টাফ রিপোর্টার ॥

‘সুপারফুড’ শব্দটা আধুনিক ডায়েটে পরিচিত শব্দ। সুপারফুডের মধ্যে ডিম অন্যতম। ডিমে উচ্চ মানসম্পন্ন আমিষের সঙ্গে বিভিন্ন রকম ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আবার এই ডিমই কখনো কখনো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেরই মনে প্রশ্ন, রোজ কি ডিম খাওয়া যাবে? আসুন জেনে নিই, প্রতিদিন ডিম খাওয়া ভালো, নাকি মন্দ।

ডা. আফলাতুন আকতার জাহান

সুপারফুডের মধ্যে ডিম অন্যতম।

ডিমের পুষ্টি উপাদান: একটি বড় আকারের ডিমে প্রায় ৭৮ ক্যালরি, ৬ গ্রাম প্রোটিন ও ৫ গ্রাম চর্বি থাকে। ভিটামিন এ থাকে ৮ শতাংশ, ৬ শতাংশ ফোলেট, ১৫ শতাংশ বি৫ বা প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, ২৩ শতাংশ বি১২, ২০ শতাংশ বি২। এ ছাড়া পাবেন ফসফরাস, সেলেনিয়াম, ভিটামিন ডি, ই, বি৬, ক্যালসিয়াম ও জিংক। এখন তো ডিমে ওমেগা-৩-ও যুক্ত করা থাকে।

কেন প্রতিদিন খাবেন: ডিমের কুসুমে লুটেইন ও কেরোটিনয়েড থাকায় বয়স্কদের ক্ষেত্রে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা কমে। এ ছাড়া ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী।

ডিমের ফোলেট, বি৬, বি১২ রক্তশূন্যতা হতে দেয় না। ভিটামিন ই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা আমাদের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে ও বিভিন্ন ক্যানসার প্রতিরোধেও উপকারী।

ডিমের ভিটামিন ডি হাড় ও পেশি মজবুত করে।

অনেকের প্রশ্ন থাকে, ডিমে কোলেস্টেরল থাকে, তাই ডিম খাওয়া যাবে কি না? ডিমের কুসুমে প্রায় ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যার মধ্যে বেশির ভাগ এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরল। প্রতিদিন আমাদের এর চেয়ে বেশি কোলেস্টেরল প্রয়োজন হয়। তাই প্রতিদিন একটি বা দুটি ডিমের কুসুম শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়; বরং উপকারী।

ডিমের সাদা অংশে অ্যালবুমিন ও শরীরের জন্য অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা পেশি তৈরি, ওজন ও রক্তাচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয়। প্রতিদিনের প্রোটিনের উৎস হিসেবে ডিম সবচেয়ে সহজলভ্য ও তুলনামূলক সস্তা।

কখন খাওয়া নিষেধ: তবে এত কথার মধ্যে কিছু মন্দ কথাও আছে। এই ডিমে যদি আমরা প্রাণিজ চর্বি যোগ করি (যেমন মাখন ও ঘি), তাহলে এর ক্যালরি অনেক বেড়ে যায় ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে পড়ে। এ কারণে সবচেয়ে ভালো হলো সেদ্ধ এবং অলিভ অয়েল বা উদ্ভিজ্জ তেলে রান্না করা ডিম।

কিডনি রোগীদের প্রোটিন একটু হিসাব করে খেতে হয়। তাই কিডনি রোগীরা দিনে একটির বেশি ডিম খেতে পারবেন না।

অনেকের ডিমে অ্যালার্জি থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে ডিমটা বাদ দিতে হবে।

কাজেই ডিমের মন্দ দিকের চেয়ে ভালো দিকই বেশি, তাই প্রতিদিন নাশতায় একটা ডিম অবশ্যই থাকা উচিত।

সবা:স:সু-২১/২৪

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম