ধানমন্ডি থেকে বসিলা: ট্রাফিক পুলিশের ‘মিশন ইম্পসিবল’ সফল হওয়ার গল্প”

মোঃ আসলাম সাগর:

প্রথম প্রজেক্ট: বছিলা কেন্দ্রীক যানজট নিরসনে ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগ, ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত মডেল—-

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনের আওতাধীন বসিলা এলাকার যানজট দীর্ঘদিন ছিল নাগরিক জীবনের দুঃস্বপ্ন। তবে সম্প্রতি ট্রাফিক পুলিশের একগুচ্ছ সুপরিকল্পিত ও সক্রিয় উদ্যোগে এলাকাটিতে এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। বেড়িবাঁধ সিগন্যাল বন্ধ, ইউটার্ন চালু, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং রাস্তা সংস্কারের সমন্বিত প্রয়াসে এখন যানজট প্রায় শূন্যের কোঠায়। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন প্রতিদিন লাখো পথচারী ও যানচালক।

### **কীভাবে এলো এই পরিবর্তন?**
ট্রাফিক পুলিশের মূল কৌশল ছিল **বেড়িবাঁধ সিগন্যাল সম্পূর্ণ বন্ধ** করে দেওয়া। এর পরিবর্তে:
১. **ইউটার্ন ব্যবস্থা:** গাবতলী থেকে বাবুবাজারমুখী যানবাহন ময়ূরভিলা থেকে, আর বাবুবাজার থেকে গাবতলীমুখী যানবাহন লাউতলা থেকে ইউটার্ন নিচ্ছে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ও বসিলার মধ্যে সরাসরি যান চলছে।
২. **অবৈধ দখল উচ্ছেদ:** সিএনজি/অটোরিকশা স্ট্যান্ড, বিভিন্ন বাস পরিবহনের স্ট্যান্ড ও রাস্তা দখলকারী শতাধিক অবৈধ দোকান সরিয়ে ফেলা হয়েছে, ফলে রাস্তা হয়েছে প্রশস্ত।
৩. **অস্থায়ী রাস্তা সংস্কার:** ডিপিডিসির খননকৃত রাস্তা ইটের খোয়া ও রাবিশ দিয়ে ভরাট, উঁচু-নিচু রাস্তা লেভেলিং এবং বেড়িবাঁধ কালভার্ট রোড মেরামত করা হয়েছে।
৪. **মিড আইল্যান্ড নির্মাণ:** বসিলা-গাবতলী-রায়েরবাজার সংযোগ সড়কে সিমেন্ট ব্লক দিয়ে অস্থায়ী মিড আইল্যান্ড তৈরি করা হয়েছে, যা লেন শৃঙ্খলা ফিরিয়েছে।

### **লোকজন কী বলছেন?**
***বসিলা বাসিন্দা):**
১. “আগে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পার হতে আধাঘণ্টা লাগত। এখন গাড়ি একবারও থামে না। যানজট থেকে যে পরিমাণ ভোগান্তি কমেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।”

২. মো: ফেরদৌস বলেন- “আমি এখন বসিলাতে থাকি লাস্ট ৩ মাস ধরে। কী যে একটা পেইন পোহাতে হতো এটার জন্য বলে বুঝাতে পারবো না। আর এখন সময় লাগে না। বসিলার দিকে যেতে ইউটার্ন এর একটু সামনে হাতের বাম পাশে রাস্তা আটকিয়ে ইট বালির ব্যবসা করে। ওদেরকে উঠাতে পারলে আরো ভালো হবে। ওদের কারণে পাশের রাস্তা গুলোর এই অবস্থা।”

৩. মইনুল হোসেন (মোহাম্মদপুর ব্যবসায়ী):** “যানজট কমলেও ইউটার্ন এলাকার ধুলাবালি ও বৃষ্টিতে কাদার সমস্যা এখনো আছে। সড়ক কার্পেটিং দ্রুত করা দরকার।”

### **পুলিশের ভূমিকা ও চ্যালেঞ্জ**

এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে *ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের* নিবেদিত প্রয়াস, বিশেষ করে:
* **মো. রফিকুল ইসলাম (উপ-পুলিশ কমিশনার , তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ) ও তানিয়া সুলতানা (অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার , তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ):** সার্বিক তত্ত্বাবধান ও কৌশল প্রণয়ন।

**মো. আসলাম সাগর (সহকারী পুলিশ কমিশনার, ট্রাফিক মোহাম্মদপুর জোন, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ):** মাঠে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

** জহিরুল ইসলাম (ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, ট্রাফিক মোহাম্মদপুর জোন, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ):** পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে সকল ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা নিয়ে নিরলস কাজ করে গিয়েছেন।

তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়:
* ভ্রাম্যমাণ দোকানদার ও হকারদের বারবার ফিরে আসা।
* ইজিবাইক ও সিএনজি চালকদের সাথে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ।
* ইউটার্ন এলাকায় যত্রতত্র ময়লা ফেলা।
* ধুলাবালি ও বৃষ্টিতে কাদা-গর্তে গাড়ি আটকানো।
* স্থায়ী কার্পেটিং না থাকায় ধুলো ও কাদার সমস্যা।

**মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনকেন্দ্রিক অন্য একটি প্রজেক্ট ধানমন্ডি ২৭**

একই রকম সাফল্য দেখা যাচ্ছে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কেও:
* বাংলাদেশ আই হাসপাতালের সামনে ধানমন্ডি ২৭ এর পশ্চিমে একটি বাম লেন তৈরি করা হয়েছে। ফলে বিরতিহীনভাবে ধানমন্ডি ২৭ এর পূর্ব থেকে আসা যানবাহন বাম লেন ধরে সাত মসজিদ রোড হয়ে ইউটার্ন নিয়ে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে যেতে পারছে, তাদের কোন সিগন্যালে পড়ে থাকতে হচ্ছে না।
* ফলে পূর্বে ৩টি সিগন্যালের প্রয়োজন হতো, এখন মাত্র ২টি সিগন্যালে যান চলাচল সম্পন্ন হচ্ছে।
* মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সাত মসজিদ এবং উল্টোপথে যাতায়াত সহজ হয়েছে, যানজট উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

### **স্থানীয় সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ**
বসিলা ক্লাব ও স্থানীয় ট্যাগ সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই প্রজেক্টকে সফল করতে সাহায্য করেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য জরুরি:

* **সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সিটি করপোরেশনের এর মাধ্যমে স্থায়ী কার্পেটিং ও প্রকৃত মিড আইল্যান্ড/ইউটার্ন নির্মাণ।
* **সিটি করপোরেশনের** নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও দখল রোধে কঠোর নজরদারি।
* ট্রাফিক আইনের প্রতি সকলের সম্মান বৃদ্ধি।

মোহাম্মদপুর-বসিলা ও ধানমন্ডি ২৭-এর এই “যাদুকরী” পরিবর্তন প্রমাণ করে, **সদিচ্ছা, সমন্বিত পরিকল্পনা ও দৃঢ় পদক্ষেপ** থাকলে সীমিত সম্পদেও রাজধানীর যানজট প্রশমন সম্ভব। ট্রাফিক পুলিশের এই স্বতন্ত্র ও সৃজনশীল উদ্যোগ ঢাকার বাসিন্দাদের জন্য স্বস্তি বয়ে এনেছে এবং শহরের অন্যান্য যানজটপ্রবণ এলাকার জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল হয়ে উঠেছে।

লেখক:
সহকারী পুলিশ কমিশনার, মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোন,
ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগ।

করলার তেতো স্বাদ কমানোর উপায়

স্টাফ রিপোর্টার:

করলা একটি অবিশ্বাস্যরকম পুষ্টিকর সবজি, কিন্তু এর তীব্র তেতো স্বাদের কারণে অনেকেই খেতে পছন্দ করে না। এটি স্বাস্থ্যগত উপকারিতায় ভরপুর। করলায় প্রচুর ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, জিঙ্ক, ফাইবার এবং আয়রন রয়েছে, যা শরীরের ওপর এর অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

করলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী এবং যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্যও এটি দুর্দান্ত। তবে তেতো স্বাদ অনেকেরই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু সহজ কৌশল রয়েছে যা করলার তিক্ত স্বাদ কমাতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ভিনেগার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন

করলাকে ভিনেগার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এক বাটি পানিতে ২ থেকে ৩ চা চামচ ভিনেগার মিশিয়ে নিন, তারপর কাটা করলাকে প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। এই সহজ ধাপটি করলার তেতো স্বাদ দূর করতে সাহায্য করে, এই সবজিকে আরও সুস্বাদু করে তোলে।

লবণ ব্যবহার করুন

করলার তেতো স্বাদ কমানোর এটি সবচেয়ে সহজ পদ্ধতির একটি। করলা কেটে নিয়ে তাতে বেশ খানিকটা লবণ মিশিয়ে নিন এবং কমপক্ষে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর করলা ৩ থেকে ৪ বার ভালো করে ধুয়ে নিন এবং অতিরিক্ত পানি চেপে ফেলে দিন।

বেসন মিশ্রিত করুন

করলার বাইরের খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সবচেয়ে তেতো অংশ। খোসা ছাড়ানোর পরে করলার টুকরোগুলো ভালোভাবে ভাজুন। একবার সেদ্ধ হয়ে গেলে, পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে তৈরি মশলায় যোগ করুন। মিশ্রণের উপর ভাজা বেসন ছিটিয়ে দিলে করলার উপর প্রলেপ পড়বে এবং এর স্বাদ বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি তেতো স্বাদ দূর হবে।

পেঁয়াজ ব্যবহার করুন

করলার তিক্ততা ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পেঁয়াজ একটি দুর্দান্ত উপায়। আপনি যদি আধা কেজি করলা রান্না করেন, তাহলে ৪ থেকে ৫টি বড় পেঁয়াজ ব্যবহার করুন। পেঁয়াজের হালকা মিষ্টি সবজির তিক্ততা ঢাকতে সাহায্য করে। আপনার পছন্দের ওপর ভিত্তি করে পেঁয়াজের সংখ্যা সামঞ্জস্য করতে পারেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম