তারিখ লোড হচ্ছে...

৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ১০ তলা বিল্ডিং নির্মান

স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানী তেজগাও পশ্চিম তেজতুরী বাজার ২৩/৩/২ এর ঠিকানায় ইপিক প্রপার্টিজ কোম্পানি লিমিটেড রাজউক থেকে ৮ তলা পর্যন্ত প্লান পাশ নিয়ে সেখানে অবৈধ ভাবে ১০ তলা ভবন নির্মান করেন। রাজউক জোন-৫ এর অথরাইজড অফিসার নুরুজ্জামান হোসেন জাহির অবৈধ ভবন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লিখিত নোটিশ পাঠিয়ে সর্তকবাণীদেন এবং বলা হয় ১ সপ্তাহের মধ্যে অতিরিক্ত তলা গুলো ভেঙ্গে দিতে এবং আরও বলা হয় উক্ত সময়ের মধ্যে না ভাঙ্গিলে রাজউক ব্যবস্থা নিবে। এই ভাবে ওই অথরাইজড অফিসার আরও পর পর ২টা নোটিশ পাঠায়। কিন্তু কোন নোটিশ রাজউকের কাজে আসে নাই। হঠাৎ করে সব কিছু থমকে গেলো। কি জন্য রাজউক থমকে গেলো সেই তথ্য বের করতে মাঠে নামে “সবুজ বাংলাদেশ” টিম। তথ্য অনুসন্ধানে পাওয়া যায় ভয়াবহ চিত্র, এবং রাজউক কর্মকর্তা কর্মচারীরা জড়িত রয়েছে ওই অবৈধ ভবণ টিকিয়ে রাখতে। রাজউক জোন-৫ এর পরিচালক ও অথরাইজড অফিসার সহ একাধিক ব্যাক্তি জড়িত বলে সুত্রে জানা যায়। সরোজমিনে গিয়ে কথা বললে, রাজউক জোন-৫ এর পরিচালক শাহআলম চৌধুরী বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি বলেন আমরা জানিনা বিষয়টি দেখবো। অর্থরাইজড অফিসার নুরুজ্জামান হোসেন জাহির এর পাঠানো নোটিশে অবৈধ ইমারত নির্মাণ ভেঙ্গে ফেলার জন্য বলা হলেও কোন রহস্য কারণে পরবর্তীতে ইমারত নির্মাণ বৈধ করে দেয়। সরেজমিনে গেলে ইপিক প্রপার্টিজ লিমিটেড এর করা ওই ভবনের গেটের সিকিউরিটি সাংবাদিকদের বলেন এই বিষয়ে ইনঞ্জিনিয়ার নান্টু সাহেবের সাথে যোগাযোগ করেন। দীর্ঘসময় গেটের সামনে দাড়িয়ে থাকার পরেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি। আর সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ইঞ্জিনিয়ার নিখিল দাস নান্টু ভবণের পিছন পাশ দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। অবৈধ ওই ভবণ নির্মাণ এর সাথে রয়েছে রাজউক এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী। রাজউক এর নক্সার অনুমোদন না মেনে ইমারত নির্মাণ করা ইপিক প্রপার্টিজ লিমিটেডের কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার নিখিল দাস ওরফে নান্টুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান কোম্পানি যে ভাবে আমাকে ভবন নির্মাণ করতে বলেছে আমি সেই ভাবে করেছি অনিয়ম ও নক্সার প্লান কেন মানা হয়নি জানতে চাইলে বলেন সেই বিষয়ে যারা মালিক তাদের সাথে কথা বলেন অথবা রাজউকের স্যারদের সাথে কথা বলেন আমি এই বিষয়ে কথা বলতে চাইনা বলে মোবাইলে বলে ফোন কেটে দেন। ইঞ্জিনিয়ার নিখিল দাশ আট তলা ভবনকে দশ তলা বানিয়ে অবৈধকে বৈধ করার জন্য রাজউক সহ বিভিন্ন জায়গা টাকার বিনিময়ে তদবির করে বিল্ডিং টি বৈধ করেছেন বলে জানা যায়। ইপিক প্রপার্টিজ লিঃ এর পরিচালক সেলিম আলমগীর এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদক কে জানান অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণ এবং রাজউক থেকে ভাঙ্গার নোটিশ বিষয়ে তিনি অবগত নন, এবং এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। গত ৩/৭/২০২২ ইং তারিখে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ ঢাকা অথরাইজড অফিসার জোন-৫ মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন (জাহির) অনুমোদিত নক্সার বিচ্যুতি সম্পর্কিত একটি কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠান ইপিক প্রপাটিজ এর মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ একরামুল করিম এর বরাবর। সরেজমিনে ২৩/৩/২/ পশ্চিম তেজতুরি বাজার এই ঠিকানাই গেলে ইপিক প্রপ্রার্টিজ লিঃ এর কর্মকর্তা ও কর্মচারী ভবনের মুল গেটে সিকিউরিটির কে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। বার বার চেষ্টা করেও ইপিক প্রপার্টিজ লিঃ এর কতৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি। তবে এলাকার বাসির অভিযোগ রাজউক এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা রহস্য জনক কারণে অবৈধ ভবণকে বৈধতা দিয়েছে তাদের মধ্য প্রধান রাজউক এর অথরাইজাড কর্মকতা নুরুজ্জামান হোসেন জাহির ও জোন-৫ এর পরিচালক শাহ আলম চৌধুরী। অনিয়ম অবৈধ স্থাপত্য নির্মাণের সহযোগী অথরাইজড জোন-৫ এর কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান এর মোবাইল ফোন ০১৭৩০-০১৩৯২৯ যোগাযোগ করলে মোবাইল নাম্বার টি দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি রাজউক অফিসে গিয়েও অর্থরাইজড অফিসার নুরুজ্জামানের দেখা পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জোন- ৫ এর পরিচালক শাহ আলম চৌধুরীকে বিষয়টি অবগত করা হয় এবং তিনি বলেন আমি যতটুকু জানি ভবনটি ভাঙ্গার বিষয়ে চেয়ারম্যান মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে এবং নুরুজ্জামান সাহেবকে বলবো এই বিষয়টি দেখার জন্য কিন্তু পরবর্তীতে আর কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি। মনে হচ্ছে শস্যর মধ্যই ভুত। নোটিশে বলা হয়েছিল আপনাদের নির্মিত /নির্মাণাধীন ইমারত স্থাপনার অনুমোদিত নক্সার ব্যত্যয়/ব্যতিক্রম অংশ অবৈধ এবং তা ভেঙ্গে ফেলা/অপসারন এবং ০৭(সাত)দিনের মধ্য লিখিত ভাবে নিম্মসাক্ষরকারী বরাবর কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান । উল্লেখ্য ব্যর্থতায় ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২ ধারা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ইপিক প্রপাটিজ কতৃপক্ষ নোটিশের জবাবে ১৮/০৭/২০২২ইং তারিখে অথরাইজড অফিসার বরাবর লিখেছেন ইমারত নির্মাণকাজের অনুমোদিত নক্সার বাইরে যে স্থাপত্য নির্মাণ করা হয়েছে সেটা অপসারণ করা হবে। নির্মাণে যে ব্যত্যয় হয়েছে মর্মে অভিযোগ আছে তা নিরসন কল্পে আমরা রাজউক এর সহযোগিতা নিয়ে বিচ্যুতি অংশ সংশোধন করতে অঙ্গীকার করছি। কিন্তু অপসারণ ও ভেঙ্গে ফেলা তো দুরের কথা ৮তলার অনুমোদন নিয়ে বানিয়েছেন দশ তলা। দক্ষিণ পাশে অনুমোদিত নকশা মোতাবেক সেটব্যক ৪.৬৫/৩.৯১মিটার,সরেজমিনে প্রাপ্ত ১.৯৮/১.২৫মিটার,ব্যত্যয় অংশ ২.৬৭/২.৬৬ মিটার। পূর্ব পাশে অনুমোদিত সেটব্যক ২.৮১/১.৩০মিটার,প্রাপ্ত ১.৮৩/১.৪০মিটার,ব্যত্যয়০.৯৮/০.০ মিটার। তবে অথরাইজড অফিসার জোন-৫/১.৫/২.৫/৩.মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন জাহির ৪/৮/২০২২-ইং তারিখের ফাইনাল নোটিশে লিখেছেন আপনাদের নির্মাণধীন ভবনের অনুমোদিত নক্সার ব্যত্যয়/ব্যতিক্রম অংশ কেন ভাঙ্গা বা অপসারণ এবং কাজ বন্ধ করা হয় নাই,এবং উক্ত নোটিশে কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হওয়াই আপনাদেরকে ০৭ (সাত) দিনের মধ্য নক্সায় ব্যত্যয়/ব্যতিক্রম অংশ ভেঙ্গে অপসারণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। উল্লেখ্য উক্ত অবৈধ অবকাঠামো রাজউক কর্তৃক ভেঙ্গে অপসারণ করা হবে। ভবণ আইন নির্মাণ আইনের সংশিষ্ট ধারা অনুযায়ী ভেঙ্গে অপসারণ বাবদ যাবতীয় খরচ আপনার /আপনাদের নিকট হতে আদায় করা হবে ইহাই চুড়ান্ত নোটিশ বলে গণ্য করা হবে। রাজউক উন্নয়ন কতৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ওই ভবণকে বৈধ বলে গন্য করেছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে। তথ্য অনুসন্ধানে একাধিক ব্যক্তি বলেন অপসারণ ও না ভেঙ্গে ৮তলা অনুমোদিত ভবনকে ১০ তলা বানিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্য নুরুজ্জামান সহ উপরে ও নিচের স্যারদের অবৈধ অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে ভবনটি এখনো দাড়িয়ে রেখেছেন ইপিক প্রপ্রাটিজ কর্তৃপক্ষ । আরও বিস্তারিত আগামী পর্বে চোখ রাখুন।

বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার:

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস আজ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অবিচ্ছেদ্য নাম। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বীর বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। ৯ মাসের মরণপণ যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে যুক্ত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। শুধু দেশ স্বাধীনই নয়, স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে নতুন লড়াই শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
কিন্তু ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এক হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে সপরিবারে নিহত হন জাতির পিতা। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে জাতি হারায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। থমকে দাঁড়ায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার গতিপথ। ইতিহাসের মোড় ঘুরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। টানা চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ।
এমন প্রেক্ষাপটে ভিন্ন এক আবহে এবার উদ্‌যাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া সরকারিভাবেও পালিত হবে নানা কর্মসূচি।

১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুনের ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। চার বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়। পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে মুক্তির প্রভাকর রূপে জন্ম নেয়া ‘খোকা’ নামের সেই শিশুটি শিক্ষা-দীক্ষা, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, মহত্তম জীবনবোধ, সততা, সাহস, দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন-সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গিপাড়ার চিরায়ত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজ জীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজাপীড়ন দেখে চরমভাবে ব্যথিত হতেন। গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সম্প্রীতির সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসামপ্রদায়িক চেতনার। কিশোর বয়সেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা। তিনি সারাজীবন এদেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় ও কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর পাকিস্তানি কারাগারে বন্দি থেকেছেন, দুইবার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু আত্মমর্যাদা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো মাথা নত করেননি, পরাভব মানেননি। দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় বঙ্গবন্ধু তার সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠন করেন। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। বঙ্গবন্ধুর সাহসী, দৃঢ়চেতা, আপোষহীন নেতৃত্ব ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হয়ে জেগে ওঠে শত বছরের নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি।
মুক্তির অদম্য সপৃহায় উদ্বুদ্ধ করে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন। ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ঘোষণার পর দেশ জুড়ে শুরু হয় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্যদিয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিশ্বমানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালরাত্রিতে বিশ্বাসঘাতকদের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাধীন বাংলাদেশে সামরিক স্বৈরাচার প্রায় দুই যুগ ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মিথ্যা ইতিহাস শেখাবার অপচেষ্টা চালায়। খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ  চির অনির্বাণ হয়ে প্রজ্বলিত থেকেছে প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে।
বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতির অবিভাজ্য সম্পর্কের কোনো পরিসমাপ্তি নেই। বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু সাম্য, মৈত্রী, গণতন্ত্রসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির দূত- স্বাধীনতা ও শান্তির প্রতীক। বাংলা ও বাঙালি যতদিন থাকবে, এই পৃথিবী যতদিন থাকবে, পৃথিবীর ইতিহাস যতদিন থাকবে তিনি একইভাবে প্রজ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে, প্রতিটি মুক্তিকামী, শান্তিকামী, মানবতাবাদী হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন চিরকাল বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করবে- পথ দেখাবে। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায় বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণের কালজয়ী এ মহাপুরুষকে চিরকাল স্মরণ করবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম