ছাত্রী হলের কক্ষে পুরুষ কর্মচারী দিয়ে তল্লাশি, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ডেস্ক রিপোর্ট:

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) হজরত বিবি খাদিজা ছাত্রী হলে পুরুষ কর্মচারীদের দিয়ে কক্ষ তল্লাশির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন হলের শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে হলের বিভিন্ন কক্ষে বৈদ্যুতিক চুলাসহ অবৈধ সামগ্রী উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় একাধিক পুরুষ কর্মচারী অতর্কিতভাবে কক্ষে ঢুকে তল্লাশি চালান, যা তাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর ছিল। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা হলের নিচতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। রাত সোয়া ১টার দিকে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম মাসুদ, অধ্যাপক শফিকুর রহমানসহ কয়েকজন সহকারী হল প্রভোস্ট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শোনেন এবং তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে রাত আনুমানিক ২টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কক্ষে ফিরে যান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে হলে থাকা একাধিক ছাত্রী বলেন, আমরা বুঝতেই পারিনি কী হচ্ছে। হঠাৎ কিছু পুরুষ স্টাফ আমাদের ফ্লোরে চলে আসে। আমরা ওড়না পড়ারও সুযোগ পাইনি। এটা খুবই লজ্জাজনক এবং ভীতিকর ছিল।

একই বিষয়ে আরেক শিক্ষার্থী জানান, আমি অসুস্থ থাকায় গ্রাম থেকে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। হঠাৎ দরজায় ধাক্কাধাক্কি ও চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। দরজা খুলতেই এক পুরুষ কর্মচারী কক্ষে ঢুকে পড়ে তল্লাশি শুরু করেন, যা আমাকে আতঙ্কিত করে তোলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল মাহমুদ বলেন, আজ বিবি খাদিজা হলে যা হয়েছে, তা কোনো সচেতন ও দায়িত্বশীল প্রশাসনের কাজ হতে পারে না। ছাত্রীদের হলে পুরুষ স্টাফ দিয়ে তল্লাশি—এটা কোন আইনে বৈধ? হল প্রশাসনের এমন এখতিয়ার আছে? ইলেকট্রিক জিনিসপত্র তল্লাশি মেনে নিলেও, সেটা নারী স্টাফ দিয়ে হওয়া উচিত ছিল। ছাত্রীদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র পুরুষ স্টাফ দিয়ে উল্টেপাল্টে দেখার অধিকার কারো নেই। প্রশ্ন হলো, নারীদের হলে প্রভোস্টও কেন পুরুষ? নোবিপ্রবিতে কি নারী শিক্ষিকার অভাব? মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত না করে এমন তল্লাশি কার্যক্রম চালানো শুধু হাস্যকরই নয়, চরম দায়িত্বহীনতাও।

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম মাসুদ বলেন, শূন্য আসনের তালিকা তৈরি ও অবৈধ বৈদ্যুতিক সামগ্রী উদ্ধারে আমরা অভিযান চালিয়েছি। তবে ছাত্রী হলে কোনো পুরুষ কর্মচারীর কক্ষে ঢোকার সুযোগ নেই। কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে থাকে, তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, অভিযানের সময় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হল প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা হলে অবস্থান করেছিলেন, তবে তখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ আসেনি। বুধবার সকালে হল প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আরেক দফা বৈঠক হয়। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

সাংবাদিক তুহিন হত্যায় গ্রেফতার ৭ জন

সাংবাদিক তুহিন হত্যায় গ্রেফতার ৭ জন

গাজীপুর সংবাদদাতা:

গাজীপুর মহানগরীর চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আল আমিন, মো. স্বাধীন, শাহজালাল, ফয়সাল হাসান ও মো. সুমন। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপকমিশনার রবিউল হাসান। তিনি বলেন, শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে পুলিশের তিনটি ইউনিট পৃথক পৃথক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ওই সাতজনকে গ্রেফতার করে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভিডিও করা নিয়ে প্রকাশ্যে তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। তুহিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে বাসন থানায় একটি মামলা করেছেন। এতে ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে পরিবারসহ সাংবাদিক তুহিন গাজীপুর মহাগরীর চৌরাস্তা এলাকায় থাকতেন। ভিডিও করা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকজন দুর্বৃত্ত চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তাকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। এ সময় তিনি দৌড়ে ঈদগাঁ মার্কেটের একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নেন। পরে দুর্বৃত্তরা তাকে দোকানের ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি মারা গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই স্থানীয় একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়। ওই ফুটেজে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দেখা যায়। ওই ঘটনায় পুলিশ রাতেই মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে।

রবিউল হাসান বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকেই তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশের তিনটি টিম ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এর মধ্যে শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকা থেকে কেটু মিজান ও তার স্ত্রী গোলাপিকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের অপর একটি টিম গাজীপুর শহরের পাশ থেকে স্বাধীনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া তুরাগ থানা এলাকা থেকে আলামিন নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়। আরেক আসামি শাহ জালালকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও এবং সুমন ও ফয়সালকে বাসন এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন গ্রেফতারকৃতরা প্রত্যেকেই সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঠিক কি কারণে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক তথ্য বের করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হবে৷

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে