স্টাফ রিপোর্টারঃ বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্বের সংলাপের আজ ১৮তম বৈঠক শেষে কথা বলেন তিনি গণমাধ্যমের সাথে। এদিন সংবিধানের আওতাভুক্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ন্যায়পাল।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় এক ঐতিহাসিক অগ্রগতির কথা জানিয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, আজকের বৈঠকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে এবং সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি নির্দিষ্ট কমিটি গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আলী রীয়াজ বলেন, আজকের আলোচনা ছিল অত্যন্ত ফলপ্রসূ এবং একটি ঐতিহাসিক মোড় তৈরি করেছে। এই নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইনে নির্ধারিত সংখ্যক নির্বাচন কমিশনারদের সমন্বয়ে। এদের মনোনয়নের জন্য একটি নির্বাচন কমিটি গঠিত হবে—যার নেতৃত্বে থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার। কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত), প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি।
তিনি বলেন, কমিটি বিদায়ী কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে প্রার্থী অনুসন্ধান শুরু করবে। যোগ্যতা-অযোগ্যতা, প্রার্থী আহ্বান এবং অনুসন্ধান পদ্ধতি নির্ধারিত হবে সংসদে প্রণীত আইনের মাধ্যমে।
আলী রীয়াজ বলেন, কমিটি অনুসন্ধানে প্রাপ্ত প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত স্বচ্ছভাবে যাচাই-বাছাই করে সর্বসম্মতিক্রমে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রতিটি কমিশনার পদের জন্য একজন করে নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন পাঁচ বছরের জন্য। স্পিকারের অধীনে সংসদ সচিবালয় এই কমিটিকে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা প্রদান করবে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান ১১৮ অনুচ্ছেদের ২, ৪, ৫(ক), এবং ৬ উপ-অনুচ্ছেদ অপরিবর্তিত থাকবে। তবে ৫ উপ-অনুচ্ছেদে একটি নতুন অংশ যোগ করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যেখানে জাতীয় সংসদের জবাবদিহিতার আওতায় কমিশনের জন্য একটি আইন ও আচরণবিধি প্রণয়নের বিধান যুক্ত হবে।
আলী রীয়াজ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের পূর্বের অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দিয়ে আজ যে ঐক্যমতে পৌঁছেছে, তা একটি স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করবে। আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে এই দায়িত্বশীল অবস্থানের জন্য সব রাজনৈতিক দলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
তিনি আশা করেন, জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে। আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব এবং আশা করছি শিগগিরই আমরা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় সনদে উপনীত হতে পারব।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.