ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট বিএনপির

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট বিএনপির

ডেস্ক রিপোর্ট:

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সোমবারের আলোচনায় বিএনপির ওয়াকআউটের ঘটনা ঘটেছে। পরে দলটি আবার আলোচনায় ফেরে। এর পরপরই ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠায় আধা ঘণ্টার জন্য সংলাপ বন্ধ রাখা হয়। এদিনের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে- সরকারি কর্মকমিশন দুর্নীতি দমন কমিশন মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আলোচনার জন্য এসব বিষয় উপস্থাপন করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান তারা আলোচনায় অংশ নেবেন না। পরে আলী রীয়াজ বলেন বিএনপির পক্ষে বলা হয়েছে, তারা আলোচনায় অনুপস্থিত থাকবে। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে আলোচনা করা যাবে কি না- তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।

তখন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলে একটি বড় দল আলোচনায় অংশ না নিলে ঐকমত্য পৌঁছানো সম্ভব না। আলোচনায় অগ্রসর হওয়া সম্ভব না।পরে সঞ্চালক মনির হায়দার বলে এর আগে এক বা একাধিক দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েও ঐকমত্য হয়েছিল। বাইরে এসে সালাহউদ্দিন আহমদ বলে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় আমরা ওয়াকআউট করেছি। সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারি কর্মকমিশন দুর্নীতি দমন কমিশন মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান আলোচনায় আমরা অংশ নেব না বলেছি।

পরে ১২টার দিকে আলোচনায় আবার যোগ দেওয়ার সময় তিনি বলেন এইসব ইস্যুতে আমরা আলোচনায় অংশ নেব না- সেটা বলেছি। কিন্তু আলোচনায় আবার যোগ দিয়ে আমরা বিস্তারিত তুলে ধরব।

সংলাপ আধা ঘণ্টা বন্ধ
এদিন হঠাৎ করে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠায় আধা ঘণ্টার জন্য সংলাপ স্থগিতের ঘটনা ঘটে। বেলা ১২টা ২০ মিনিটের দিকে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন এখানে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠেছে। তাই আমাদেরকে কিছু সময়ের জন্য বের হতে হবে। এরপর সবাই সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।

ফরেন সার্ভিস একাডেমির শাপলা হলের একজন কর্মচারী বলেন মনে হচ্ছে মূল ভবনের তিন তলায় কেউ ধূমপান করেছেন। সেটার ধোঁয়ার কারণে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠেছে। তখন সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা মূল ভবন ছেড়ে বাইরে বের হন। ১২টা ২৫ মিনিটের দিকে ফায়ার অ্যালার্ম বন্ধ হয়ে যায়। আগুনের কারণ খুঁজতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছোটাছুটি শুরু করেন।

তখন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন ফায়ার অ্যালার্ম বাজার পর আমরা সবাই নিচে নেমে পড়ি এখন কী হয় দেখা যাক। পরে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা ফের শুরু হয়।

হাসিনার নেতৃত্বে আ.লীগ যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় হত্যাযজ্ঞ চলে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তখন যারা ক্ষমতায় ছিলেন, হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে যোগসাজশে যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ঘটনাগুলো করতে দেওয়া হয়। যে কারণে দুদিন ধরে পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে।

জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শায়িত পিলখানায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তা ও সদস্যদের উদ্দেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও সেনাবাহিনীর শত্রুরা চক্রান্ত করে বিডিআরের অভ্যুত্থানের নাম করে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে তছনছ করে দেওয়ার অবস্থা সৃষ্টি করেছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শত্রুদের উদ্দেশ্যই ছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আঘাত হানা। এবং সেনাবাহিনীর মনোবল যাতে নষ্ট হয়, দুর্বল হয়ে যায়, সেজন্যই ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছিল। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়, তখন যারা ক্ষমতায় ছিলেন, হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে যোগসাজশে যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ঘটনাগুলো করতে দেন। দুদিন ধরে পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে।

আজ পর্যন্ত এর পূর্ণাঙ্গ ও সঠিক নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ, অন্তত এটাকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আমরা প্রত্যাশা করবো এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি উদঘাটন করা হোক। যারা জড়িত ও দায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা।

সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগের কথা যেন আমরা ভুলে না যাই সেটি স্মরণ করে দিয়ে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা আমাদের জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক ঘটনা। আজকে আমরা দীর্ঘ বছর পরে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। দেশের রাজনৈতিক একটা বিশাল পরিবর্তন এসেছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করে আমাদেরকে একটি সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।

ফখরুল ইসলাম বলেন, শহীদ সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগ যেন বিফলে না যায়। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে যেন আমরা আপস না করি। আমরা যেন বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে করতে পারি, আজকে এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম