বাংলাদেশ পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার

বাংলাদেশ পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত টু-স্টেট সল্যুশন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে বৈঠকে এ প্রতিশ্রুতি আসে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে এটি দুই দেশের চতুর্থ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক যা বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন গতি পেয়েছে বলে ইঙ্গিত করছে। দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর এমন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয় দুই দেশের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান।

তারা যোগাযোগ ও জনগণের পারস্পরিক বিনিময় বাড়ানোর ওপর জোর দেন এবং শিগগিরই উচ্চপর্যায়ের সফর আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানান। গাজায় মানবিক বিপর্যয় ও ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উভয় দেশ ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। সম্মেলন থেকে ফলপ্রসূ ও বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত আশা করেন তারা। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। অতীতে পাকিস্তানবিরোধী কঠোর অবস্থান থাকলেও বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর দুই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এখন বাস্তবমুখী ও ভবিষ্যতমুখী নীতির দিকে এগোচ্ছে।

গত সপ্তাহে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি ঢাকা সফরে এসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় দুই দেশ কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছায়। এটিকে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে বাণিজ্য ও সরকারি সফরে যাতায়াত সহজ করবে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান  প্রধানমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার॥

জাপানসহ বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ এখন উপযুক্ত স্থান বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ভৌগলিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে। এর সুবিধা নিয়ে বিনিয়োগকারীরা আশপাশের দেশে পণ্য রপ্তানির সুবিধা নিতে পারবেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগে রিটার্ন ধারাবাহিকভাবে বেশি হয়েছে। সরকারের বাস্তববাদী নীতির কারণে বাংলাদেশ বিনিয়োগ, শিল্পায়ন এবং রপ্তানির জন্য একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যবসাবান্ধব রাজস্ব, নীতি ও প্রণোদনা, স্থিতিশীল গণতন্ত্র, বিচক্ষণ শাসন ও নেতৃত্বের নিশ্চয়তা বৈদেশিক বিনিয়োগকে লাভবান করবে।

বৃহস্পতিবার জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জেসিসিআই এবং এফবিসিসিআই অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ ও জাপানের বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে ১১টি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

জাপানের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশের প্লাটফর্মে উচ্চপর্যায়ের ফোরাম আছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিনিময় হওয়া সমঝোতা দুই দেশের সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথে জাপানের বিনিয়োগ সমৃদ্ধি আনবে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ইজেড স্থাপন বড় অগ্রগতি। জাপান চাইলে সারাদেশে আরও ইজেড স্থাপনে জায়গা দেওয়া হবে। এজন্য নিশ্চিত করা হবে সব ধরনের সুবিধা ও নিরাপত্তা।

১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশকে ব্যবসার একটি বড় বাজার হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বাংলাদেশ ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ। এটি নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান বাজার এবং প্রায় তিন বিলিয়ন ভোক্তাদের একটি বৃহৎ বাজারের কেন্দ্রস্থল। ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও জার্মানিকে ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।

‘আইসিটি, ইলেকট্রনিক্স, অবকাঠামো, চামড়া, টেক্সটাইল, আতিথেয়তা ও পর্যটন, ভারী শিল্প, রাসায়নিক ও সার এবং এসএমইর মতো বিভিন্ন খাতে সুযোগ অনেক বেড়েছে। আমাদের সরকার ব্যবসা করার মসৃণ, সহজ ও কার্যকর উপায়গুলো সহজতর করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে—যোগ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক এবং সফটওয়্যার পার্ক নির্মাণ করছি। আমি জাপানি বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, বাংলাদেশ আপনার জন্য প্রস্তুত এবং বাংলাদেশে গেলে আপনার দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হবে। আপনারা ব্যবসার সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সংস্থা এবং কাঠামো সুবিধা পাবেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম