নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নেত্রকোনা সংবাদদাতা:

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে নেত্রকোনা শহরের বড় বাজার শাহী মসজিদের সামনের সড়কে সচেতন আলেম ও সাধারণ ছাত্র জনতার ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করে এনসিপিকে হুঁশিয়ারি প্রদান করে। ঘণ্টাব্যাপী চলা মানবন্ধনে স্থানীয় ব্যবসায়ী জেলা যুবদল খেলাফত আন্দোলনসহ সাধারণ ছাত্র ও পৌর নাগরিকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। গত ২৭ জুলাই এনসিপির পদযাত্রা সমাবেশে উদ্দেশে প্রণোদিতভাবে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যসহ কটূক্তি করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। যে মামলাটির নিষ্পত্তি হয়ে গেছে সেই মামলার কথা উল্লেখ করে আদালতকে অবমাননা করেছে। বাবর ভাই এই অঞ্চলের জনমানুষের নেতা। তিনি যেভাবে ফ্যাসিবাদের জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছেন তা আর কেউ করেনি।

উপস্থিত বক্তারা আরও বলেন দ্রুত সময়ের মধ্যে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে বিএনপি নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনতা দফায় দফায় কর্মসূচি পালন করবেন। তারা আরও বলেন বিগত ১৭ পর বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ লুৎফুজ্জামান বাবরকে নির্যাতন করে যে রক্ত ঝরিয়েছেন সে রক্ত এনসিবির নেতাকর্মীদের শরীরেও নেই। তাই বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে বক্তব্য দেয়ার আগে ভেবে চিন্তে বক্তব্য দেয়ার আহ্বান জানান বিক্ষুব্ধরা। এদিকে খেলাফত আন্দোলনের আলেমরা বলেন লুৎফুজ্জামান বাবর কোন একটি দলের নেতা নয়। তিনি এই অঞ্চলের ভাটি বাংলার মানুষের নেতা। বিরূপ মন্তব্যের জন্য দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে অন্যথায় ময়মনসিংহের আলেমসমাজ এনসিপির বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।

মানববন্ধনে খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী মুহাম্মাদ আবদুর রহীম রুহীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান দুদু জেলা যুব দলের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন খান রনি হেফাজতে ইসলামের সদস্য সচিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা আতাউর রহমান ওলামা দলের নেতা হাফেজ মিসবাহুদ্দিন তালুকদার, খেলাফত যুব আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মুসা শেখ, খেলাফত মজলিস নেতা, মুফতি আব্দুল্লাহ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেহরুল আলম রাজু, খেলাফত আন্দোলন নেতা মাওলানা জাকির হোসেন ছাত্রনেতা মাওলানা বীন ইয়ামিন মাওলানা আবরার ফাহাদ মাওলানা মোতালিব খান হাফেজ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।

স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় স্বামীর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার:

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় অভিমানে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। মৃত শাহ জালাল কুলিয়ারচর ছয়সূতি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে। ভৈরব থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম শফিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্বজনরা জানান, চার বছর আগে কুলিয়ারচরে মধ্য লালপুর এলাকার মনির মিয়ার মেয়ে জান্নাত বেগমের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন শাহ জালাল। তাদের পরিবারে নুসরাত নামে দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মনির মিয়া সম্পর্কে নিহত শাহ জালালের মামা হন।

জানা গেছে, নিহত শাহ জালাল ঢাকা শহরে জুতার কাজ করেন। বিয়ের পর থেকেই শাহ জালাল তার শ্বশুরবাড়ি ও ঢাকায় থাকতেন। তার স্ত্রী জান্নাত বেগমের বাবা ও মা ঢাকায় থাকতেন। সেই সুবাদে মেয়েকেও প্রায় সময় ঢাকায় নিয়ে যেতেন। পরিবারের সচ্ছলতা নিয়ে প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এদিকে ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেন তার মা। কয়েকদিন থেকে স্বামীর বাড়িতে থেকে স্ত্রী অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যায়।

গতকাল শুক্রবার স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে জান্নাতের কাছে গেলে শাহ জালালের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। বিকেল ৫টায় নিজ ঘরে এসে স্ত্রীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে শাহ জালাল। পরিবারের সদস্যরা ফাঁসি থেকে নামিয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের মা শাহানা বেগম বলেন, আমি এই কষ্ট কই রাখব। আমার ছেলেকে বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক নির্যাতন করে আসছে। আমি ও আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন একাধিকবার মারধর করেছে। তারা চাইতো আমার ছেলে যেন তাদের মেয়েকে ছেড়ে দেয়। আমার ছেলে তার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু তার স্ত্রী তাদের বাবা-মায়ের কথায় চলাফেরা করতো। এ নিয়ে আমার ছেলের সঙ্গে প্রায় সময় ঝগড়া হতো। ২৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে আমার ছেলে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে গেলে সে আসতে চায়নি। আমার ছেলে তাকে বলে এসেছে সে যেহেতু আসতে চায় না তাহলে তাকে মুক্ত করে শান্তিতে থাকতে দেবে। বিকেলে নিজ ঘরে এসে শাহ জালাল আত্মহত্যা করেছে।

মা অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার ছেলেকে তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। এখন আমার পরিবারের কী হবে? তার ছোটো মেয়েটাকে নিয়ে কীভাবে চলব? আমি সন্তানহারা মা।

নিহতের চাচাতো ভাই মামুন বলেন, শাহ জালাল তার বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বাড়ির পাশে একটি বাগানে আমার ভাই দেখেন তার স্ত্রী অন্য একটি ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। এতে শাহ জালাল ক্ষিপ্ত হলে স্ত্রীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সে বাড়ি এসে আত্মহত্যা করেছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুহাদ বলেন, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। শনিবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম