পুষ্পধারার ‘স্বপ্নবাজি’: ১০ বছরের প্রতারণা বাণিজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

স্বপ্ন সত্যি হবেই’—এমন লোভনীয় স্লোগানকে হাতিয়ার বানিয়ে গতএক দশক ধরে চলছেপুষ্পধারা প্রপার্টিজ লিমিটেড এর প্রতারণারব্যবসা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাকর্মচারীদেরআঁতাত, চটকদার প্রচার মনোমুগ্ধকর মার্কেটিং কৌশলে সাধারণমানুষকে প্রলুব্ধ করে তারা প্লট, ফ্ল্যাট, ডুপ্লেক্স, ট্রিপ্লেক্স কন্ডোমিনিয়ামের স্বপ্ন দেখায় লক্ষ্য গ্রাহকের পকেট খালি করারাজধানীর মালিবাগের জেমকন টাওয়ারে করপোরেট অফিস এবংবিদেশে শাখা খুলে প্রবাসীদের কাছ থেকেও অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেপ্রতিষ্ঠানটি

* বুকিং বাণিজ্যের ফাঁদ

২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে পুষ্পধারা ঢাকামাওয়া মহাসড়কের পদ্মাসেতুর কাছাকাছি এলাকায়পদ্মা ভ্যালিপদ্মা ইকোসিটিনামে দুটিপ্রকল্প চালু করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেখিয়ে বিক্রিকরে হাজার হাজার প্লট পদ্মা ইকো সিটির প্রচারিত লেআউট অনুযায়ীকয়েক হাজার বিঘা কৃষিজমি, প্রাকৃতিক জলাভূমি খাস জমিকেপ্রকল্পভুক্ত দেখানো হয় গুগল ম্যাপ কাগুজে নকশা দেখিয়ে নেয়া হয়বুকিং মানি বাস্তবে জমির দলিল কোম্পানির নামে না করে কোম্পানিরচেয়ারম্যান, পরিচালক বা এমডির ব্যক্তিগত নামে আমমোক্তার বাবায়না চুক্তি করা হয় ফলে প্রতারণার শিকার গ্রাহক আইনের আশ্রয়নিলেও টাকা আদায়ের আইনি পথ প্রায় বন্ধ

* শর্তের ফাঁদে গ্রাহক

কোম্পানি নিজের মতো করেপ্লট বরাদ্দের নীতিমালাতৈরি করেছে, যাআপাতদৃষ্টিতে গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার কথা বললেও ভেতরে ভেতরে রয়েছেশুভঙ্করের ফাঁকিগ্রাহকের আপত্তি অগ্রাহ্য করার বিধানসহ প্রকল্পডিজাইন লেআউট পরিবর্তনের পূর্ণ ক্ষমতা কোম্পানির হাতেবুকিংবাতিল বা কিস্তি বন্ধ হলে টাকা ফেরতের নিয়ম অস্পষ্ট বুকিং মানি কেটেবাকিটা চার কিস্তিতে ফেরত দেয়ার কথা বলা হলেও সময়সীমা উল্লেখনেই

* আইন ভেঙে বাণিজ্য

রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা আইন২০১০ অনুযায়ী আবাসনপ্রকল্পে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হলেওপুষ্পধারার নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে মাস আগেপদ্মা ইকোসিটিবাপদ্মা ভ্যালি’- কোনোটিই অনুমোদিত প্রকল্প নয় তবুও তারাবাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভলপার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (বিএলডিএ) সদস্যপরিচয়ে প্লট বিক্রি করছে, যদিও বিএলডিএ কোনো অনুমোদন সংস্থানয়

* প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়া

প্রতারণা আড়াল বাজার বাড়াতে পুষ্পধারা প্রভাবশালী অবসরপ্রাপ্তসামরিক কর্মকর্তা, পুলিশ, আমলা, ব্যাংকার, এনবিআরকাস্টমসকর্মকর্তা, সাংবাদিক, এমনকি রাজনীতিকদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেব্যবহার করে কারো সঙ্গে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব, কারো মাসোহারা, কারো অনঅ্যারাইভাল পেমেন্টের ব্যবস্থা করে তারা সাম্প্রতিকরাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিএনপি ঘনিষ্ঠ একাধিক ডিরেক্টরওনিয়োগ দেওয়া হয়েছে

* ভুক্তভোগীদের বক্তব্যঃ

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী আমাদের সাথে কথাবলেছেন, তারা বলেন আমরা আমাদের অভিযোগ নিয়ে প্রশাসন সহবিভিন্ন জনের কাছে একাধিকবার গিয়েছে আর এর ফলে আমরা কোনসমাধান পাইনি পেয়েছি হুমকি আপনারা সংবাদ প্রকাশ করলে তাতেযদি আমাদের নাম থাকে তবে আমরা লাশ হয়ে যেতে পারি, আপনারআমাদের ভালো করতে গিয়ে আমাদের লাশ বানাবেন না তারা আরোবলেন এরা আমাদের সাথে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়েপ্রভাবশালীদের সাথে ভাগাভাগি করে তাই তাদেরকে কেউ কিছু করতেপারবে না, আপনারা শুধু লিখতেই পারবেন কিন্তু তাদের কিছুই হবে না

* পুষ্পধারার দাবি

পুষ্পধারা আইন মেনে ব্যবসা চালিয়ে আসছে কোম্পানির জাতীয়গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন ২০১৫/৬২। নবায়নের পর এটির নম্বর২০২৪/১২। নবায়নকৃত নিবন্ধনের মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বলবআছে

এছাড়া ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে৩১.০০.০০০০.০৪০.৪১.০৫১.২৩.২৬০/() নং স্মারক মূলে ভূমিমন্ত্রণালয় এবং নভেম্বর ২০২৪ তারিখে, ০৫.৩০.৫৯০০.৩০৩.২৪.০২৭.১৭৮৮০ নং স্মারক মূলে মুন্সীগঞ্জ জেলাপ্রশাসন পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর নামে আবাসিক প্রকল্পের ক্রয়কৃতজমি অকৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয় ব্যবসায়িক স্বচ্ছতাবজায় রাখতে পুষ্পধারা ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর রাজধানী উন্নয়নকর্তৃপক্ষের নিবন্ধন পেতে আবেদন করে আবেদনটি এখনপর্যবেক্ষণাধীন

* প্রশাসনের ভূমিকা

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে থানা পুলিশ, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, ভূমি অফিস, রাজউক, এনবিআর, দুদক, পরিবেশ অধিদপ্তরসবখানেই পুষ্পধারার প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছেএই বিষয়েসিরাজদিখানের ভুমি কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তামুন্সীগঞ্জজেলা প্রশাসকের সাথে একাধিকবার এই বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেওকথা বলা যায়নিতারা এই পুষ্পধারার কথা শুনলেই দেখা বা কথাবলতে চাননা

* জাগৃকের অবস্থান

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজধানী আশপাশেঅনুমোদনহীন প্রকল্পের বিরুদ্ধে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে

গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা মেরে আনজাম গ্লোবালের মালিক আরিফ এখন দুবাইতে

স্টাফ রিপোর্টার ঃ

বিনিয়োগের টাকায় অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক হাজার বিনিয়োগকারীর কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে আনজাম গ্লোবাল লিমিটেড নামের একটি ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে জানান নবাবগঞ্জ থানার এসআই মৃত্যুঞ্জয় কুমার কীর্তুনিয়া।বিনিয়োগের মাধ্যমে অনলাইনে আইডি খুলে দিয়ে বিনিয়োগকারীদের রাতারাতি অধিক মুনাফার স্বপ্ন দেখিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানটি এ প্রতারণা করেছেন বলে বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ। এতে নবাবগঞ্জ উপজেলাসহ তার পার্শ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ সহ সারাদেশের হাজার হাজার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অসংখ্য নারী পুরুষ ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ফাঁদে পা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।এক ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারী অভিযোগ করে বলেন, এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও নিজের ও সংগ্রহের বিনিয়োগের টাকা ফেরত না পেয়ে ইতোমধ্যে থানায় দুইবার অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি তার।ভুক্তভোগী কয়েকজন বিনিয়োগকারী আরও জানান, ওই কোম্পানির মাধ্যমে প্রতারণায় যারা জড়িত তাদের সকলকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়াসহ তাদের বিনিয়োগের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করার ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সহযোগীতা চায় তারা।ভুক্তভোগীরা জানান, ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের সিংজোর গ্রামের বাসিন্দা মো. জালাল উদ্দিন আহম্মেদ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নবাবগঞ্জ উপজেলার সভাপতি ও ঢাকা জেলা দক্ষিণ আঞ্চলিক শাখার সহ-সভাপতি। এছাড়াও সে দৈনিক নওরোজ পত্রিকার দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি (সাংবাদিক)। ও মূলত এগুলোর পুঁজি করে অতি সহজে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে প্রতারণা করে আসছে। এক কথায় বলতে গেলে ও একটা প্রতারক।ভুক্তভোগীরা আরও জানান, ওই জালালই নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পাশের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের উল্টো দিকের হামদর্দ বিল্ডিংয়ের ২য় ও ৩য় তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে চীনের ফুড সাপ্লিমেন্ট প্রোডাক্ট দিয়ে ‘তিয়ানশি’ নামে একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) সিস্টেমের প্রতিষ্ঠানের নবাবগঞ্জের প্রধান হয়ে কাজ শুরু প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। পরবর্তীতে সেখানে তার সঙ্গে যুক্ত হয় বাসুদেব চন্দ্র শীল ও তার বোন জুমুরি বিশ্বাসসহ আরও কয়েকজন। এরপর থেকেই এই চক্রটি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অসংখ্য নারী-পুরুষকে সেখানে যুক্ত করে স্বপ্ন দেখিয়ে প্রতারণায় বাধ্য করেন। এভাবে কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর স্থানীয়রা প্রতারণার বিষয়টি বুঝে গেলে চক্রটি তিয়ানশির ওই ভাড়া অফিস কৌশলে ছেড়ে দিয়ে নবাবগঞ্জের কাশিমপুর এলাকায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের বিপরীতের গলির একটু সামনে জাকিরের বাড়ির তিনতলা বিশিষ্ট একটি বিল্ডিংয়ের ১ম তলার পুরোটা ভাড়া নিয়ে আনজাম গ্লোবাল লিমিটেড নামের একটি ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানের অফিস নিয়ে কাজ শুরু করে আরও বড় প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে এরা একজন গ্রাহককে অনলাইনে ২০০ আইডি দেওয়ার প্যাকেজসহ একাধিক প্যাকেজের প্লান দেখিয়ে বিভিন্ন কায়দায় গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ আনজাম ই-কমার্স মেগাশপ প্যাকেজের শেয়ার দেখিয়ে অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে আরও দুই লাখ করে টাকা নেয় ওই চক্রটি। এছাড়াও আনজামের ই-কমার্সের সফটওয়ারের মাধ্যমে প্রতি আইডি ১ হাজার ৬০০ টাকা বিনিয়োগ করে গ্রাহক ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিনিয়োগের অর্ধেক টাকা ফেরত পাবেন প্রলোভন দেখানো হয়। পরবর্তীতে সফটওয়ারে বিজ্ঞাপণ ক্লিক করে প্রত্যেক আইডিতে প্রতিদিন একবার করে ক্লিক করে ১০ টাকা করে আয় করার পদ্ধতিসহ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) সিস্টেম মেনে লভ্যাংশ বন্টনসহ প্রতি লাখে ২৫ হাজার টাকা লাভ দেওয়ার প্রলোভনও দেখানো হয়েছে।মূলত অনলাইনে আইডি খুলে অধিক মুনাফা দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে কয়েক হাজার বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নবাবগঞ্জের প্রধান জালাল উদ্দিনসহ ওই চক্রটির কয়েকজন এখন গাঁ ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা আরও জানান, শুরু থেকেই আনজাম গ্লোবালের ফাউন্ডার ও সিইও মো. আরিফুল ইসলাম দুবাই থেকে জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্স করে লভাংশসহ টাকা ফেরত দিবে বলে প্রায়ই প্রতিশ্রুতি দিতেন।কিন্তু এই আরিফ জেল থেকে জামিন নিয়েই তার সিন্ডিকেটের সদস্য সহ পরিবার নিয়ে এখন দুবাইতে আয়েশে জীবন যাবন করছে, সে মুলত প্রায় হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে সেখানে আর সেখানেও নতুন করে প্রতারনার ব্যবসা শুরু করেছে, যার টার্গেট অসহায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১ হাজার দের হাম জমা করলেই কিছুদিনের মধ্যে ২হাজার দের হাম পাবে এমন প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। অন্যদিকে দেশে প্রতি মাসেই টাকা দিবে এমন অপেক্ষায় থাকতে থাকতে ৩ বছর পেড়িয়ে গেলেও গ্রাহকদের বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। সরজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে উপজেলার কাশিমপুর এলাকায় আনজামের ভাড়া করা যে অফিস ছিল সেখানে গিয়ে দেখা যায় তিনতলা বিশিষ্ট বিল্ডিংটির প্রথমতলার পুরোটাই ফাঁকা। সেখানে এখন আনজামের কোনো অফিস নেই। পরে তাদের বিষয়ে জানতে বাড়ির মালিক জাকিরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রথম তলার পুরোটাই তিনি আনজাম গ্লোবাল লিমিটেড নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে মাসিক ভাড়ায় ভাড়া দিয়েছিলেন। আনজামের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে তাদের বনিবনা হচ্ছিল না। তারা বিভিন্নভাবে সমস্যা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছিল। এজন্য গতমাসের শেষের দিকে তারা অফিস ছেড়ে চলে গেছে। কোথায় চলে গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তার জানা নেই। তবে নবাবগঞ্জে আনজাম নতুন করে কোনো অফিস ভাড়া নেয়নি বলে নিশ্চিত করেন তিনি।নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আনজাম গ্লোবালের একজন টিম লিডার বলেন, নবাবগঞ্জে আমরা ২২জন টিম লিডার ২২টি টিম নিয়ে কাজ করেছি এবং এখনও করছি। ২২টি টিমে মোট গ্রাহক বা বিনিয়োগকারী হবে প্রায় ৫ হাজার। তাদের মোট বিনিয়োগ প্রায় ৯ কোটি টাকা। প্রতিটি বিনিয়োগকারীকে প্রতিদিন তাদের প্রতিটি অনলাইন আইডিতে ক্লিক করার মাধ্যমে আগের মতোই তাদের ওয়ালেটে মুনাফা জমা হচ্ছে। আর যারা আইডিতে ক্লিক না করে মুনাফা চাচ্ছে তারা সঠিক পথে নেই। ভুল বুঝে তারা বিভ্রান্তীর সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। এতে তারাসহ অন্যান্য বিনিয়োগকারীরাও সমস্যায় পরেছে। তবে কোম্পানির সিইও আরিফুল স্যার প্রায় প্রতিদিনই তাদের সঙ্গে জুম মিটিং করে যোগাযোগ মেনটেইন করছে এবং চলমান সমস্যার সমাধান খুব শীঘ্রই করবেন বলে সকলকে আশ্বস্ত করেছেন। পর্যায়ক্রমে সকল গ্রাহকের বিনিয়োগের টাকাই ইনশাআল্লাহ্ কোম্পানি ফেরত দিবে, কিন্তু ৩ বছর পার হলেও কোন খবর নেই,তাই সকল বিনিয়োগকারীর আইডিও কোম্পানির অনলাইন সাইডে সচল রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েক জন গ্রাহককে পেমেন্টও দেওয়া হবে বললেও তা করেনী প্রতারক আরিফ। নতুনদেরও যুক্ত করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।আনজাম গ্লোবাল লিমিটেডের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, টিম লিডার ও বিনিয়োগকারী উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের পুরাতন বান্দুরা এলাকার আদুরী গমেজ। মুঠোফোনে কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভালো নেই তবে মরি নাই বেঁচে আছি। আনজামে তার ও তার টিমের বিনিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঝুমুরি আমার লিডার। তার মাধ্যমে আমি আনজামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েছিলাম। আমিও বিনিয়োগ করেছি। আমার চেয়েও আমার টিমের অনেকের অনেক বেশি বিনিয়োগ আছে। যেমন একজনেরই আছে এক কোটি টাকা। তারা যেহেতু কিছু বলছে না তাই আমিও এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না। প্রয়োজন হলে আমিই আপনাদের জানাবো। এছাড়াও ম্যানেজমেন্ট থেকেও বলা হয়েছে কেউ যদি কোনো অভিযোগ করে তার বিনিয়োগের টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। তাই আমি এ বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না।একই উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের নবগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী শ্যামল শীল জানান, আনজাম গ্লোবাল লিমিটেডের নবাবগঞ্জের প্রধান কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন। এছাড়াও তার সঙ্গে বাসুদেব শীল ও তার বোন ঝুমুরি বিশ্বাসসহ আরও কয়েকজন রয়েছেন। আমার মতো হাজার হাজার বিনিয়োগকারী ভিন্ন ভিন্ন টিম লিডারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এখন বিনিয়োগের টাকা ফেরত না পেয়ে ভুগছে। আমি আমারটাসহ আমার সংগ্রহের কয়েকজন গ্রাহকের ৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা আমি ওই আনজাম অফিসে জালালের কাছে বাসুদেব ও ঝুমুরির মাধ্যমে বিনিয়োগ করেছি। দেড় বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমি কোনো টাকা ফেরত পাইনি। আমার ও আমার সংগ্রহের বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত পেতে আমি ও বিনিয়োগকারীরা প্রায়ই আনজামের নবাবগঞ্জের ওই অফিসে গেলে জালাল, বাসুদেব ও ঝুমুরিসহ আরও কয়েকজন আমাদের সকলকে ভুলভাল বুঝিয়ে বিনিয়োগের টাকা দেই দিচ্ছি বলে এখনও দিচ্ছে না। আর এখন তো তাদের অফিসই নেই।এছাড়াও জালাল আত্মগোপনে থাকায় প্রতিবেশী বাসুদেব শীল তাকে টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। নিজের টাকা গেছে তারমধ্যে আবার সংগৃহীত বিনিয়োগকারীরা আমাকে তাদের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন। তাই বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাবার জন্য আমি এক রকম বাধ্য হয়েই গত ছয়মাস আগে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। তাতে কোন লাভ হয়নি। পুলিশ সে রকম কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই এক সপ্তাহ আগে আমি পুনরায় থানায় আরও একটি অভিযোগ করেছি। এবার দেখি পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয় কিনা।মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার দক্ষিণ জামসা এলাকার দুর্জয় নামের এক ভুক্তভোগী জানান, কলেজ বন্ধুদের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি ৮০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে আইডি পেয়েছিলাম। আইডিতে ক্লিক করে প্রায় ছয়মাস পর আমি মাত্র ৫ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছিলাম। তারপর এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও অনেক চেষ্টা করেও আর বাকি ৭৫ হাজার টাকার কোনো টাকা ফেরত পাইনি। তাই বাকি টাকা ফেরত পাবার আশা আমি এক রকম ছেড়েই দিয়েছি। নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি ভাগ্যিস অন্য কাউকে বুঝিয়ে আনজামে বিনিয়োগ করাইনি।আনজাম গ্লোবাল লিমিটেডের নবাবগঞ্জের প্রধান জালাল উদ্দিন আহম্মেদকে সরজমিনে না পেয়ে বিনিয়োগকারী ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়ে তার ভিজিটিং কার্ডে দেওয়া ব্যক্তিগত দুটি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।এসআই মৃত্যুঞ্জয় জানান, আনজাম ই-কমার্স মেগাশপ বা ভেনডর (Vendor) অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারণা করার অভিযোগে সুরভী আক্তার নামের এক নারী বাদী হয়ে গত ১৫ নভেম্বর চারজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় এজাহার নামীয় এক আসামি উপজেলার যন্ত্রাইল এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন বাপ্পি (৪২)। তাকে উপজেলার কাশিমপুর এলাকার প্যারাগন হাসপাতালের সামনে থেকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ওই একই মামলার আরও এক এজাহার নামীয় আসামি উপজেলার কাশিমপুর এলাকার মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে তুষার আহমেদ (৫০)। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি মামলায় সে জেল হাজতে থাকায় তাকে এই মামলায় অর্ন্তভুক্ত করার জন্য ১৬ নভেম্বর আবেদন পাঠানো হয়েছে। এই মামলায় আরও আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।শ্যামলের দুইবার লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ থানার ওসি বলেন, আমরা একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। শুধু তো অভিযোগ করলেই হবে না। টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়ে তো অবশ্যই ডকুমেন্ট থাকতে হবে।অভিযোগকারী যদি বিনিয়োগের কোনো প্রমাণসহ থানায় অভিযোগ তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। কয়েক হাজার গ্রাহকের ৬০ কোটি টাকার উপরে নিয়ে নাকি প্রতিষ্ঠানটি উধাও হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। কয়েকদিন আগে সুরভী আক্তার নামের এক ভদ্র মহিলা অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। তার কাছ থেকেও টাকা নিয়ে অল্প কিছু টাকা ফেরত দিয়েছে বাকি টাকা ফেরত চাইলে তাকে নাকি ভয়ভীতি দেখায়। এগুলো শুনে আমি তাকে নবাবগঞ্জ থানায় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ইতোমধ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তারপরও আরও ভুক্তভোগীদের বক্তব্য নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ রয়েছে আরিফ উত্তরাতে অফিস খোলে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্টান করে প্রায় ৩ শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এর পরই সারাদেশে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠলে ডিভির হাতে গ্রেফতার হয়ে কয়েকদিন জেলে খেটে বের হয়ে বনানীতে অফিস নিয়ে শুরু করে নতুন ব্যবসা এখান থেকে নতুন করে নরসিংদি ও কক্সবাজারের হাজার হাজার গ্রাহককে ইন্ডাস্ট্রি করবে বলে আমানত সংগ্রহের নামে প্রায় ৪ শ কোটি টাকা সংগ্রহ করে তানিয়ে দুবাইতে চলে যায় আর এখান থেকেই আবার নতুন করে শুরু করেছে তার নতুন প্রতারনার ব্যবসা যা ভবিষৎতে বিদেশের মাটিতে আমাদের দেশের বদনাম ছড়ানো ছারা আর কিছুই আসবে না বলে মনে করেন একারনে সচেতন মহলের আবেদন এই সকল ই কমার্স প্রতিষ্টান সহ প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন এখনি সময়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম