স্টাফ রিপোর্টার॥
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল গ্রামে ঘুঙ্গুর নদীর ওপর নির্মিত একটি সেতু প্রায় দুই দশক ব্যবহারের অনুপযোগী অবস্থায় পড়ে আছে। ২০০৫ সালে তৎকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন স্বপন প্রভাব খাটিয়ে তার বাড়ির পাশেই সেতুটি নির্মাণ করেন। কিন্তু নির্মাণের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো যানবাহন এই সেতু দিয়ে চলাচল করেনি।
ফলে সরকারি প্রকল্পের বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও গ্রামীণ মানুষের কোনো উপকারে আসেনি সেতুটি। বরং সেতুটি এখন এলাকার মানুষের জন্য ভোগান্তি ও ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা থেকে প্রায় ১৫ ফুট উঁচুতে নির্মিত সেতুটির এক পাশে সিঁড়ি থাকলেও অন্য প্রান্তে ওঠানামার কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সেতুটি ব্যবহার করতে হলে স্থানীয়দের বস্তা বা অন্যান্য অস্থায়ী উপায় অবলম্বন করতে হয়। এজন্য স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন ‘অদ্ভুত সেতু’।
সেতুটি নির্মাণের সময় বলা হয়েছিল, এটি স্থানীয়দের নদী পারাপারে বড় সহায়ক হবে। কিন্তু ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও সেটি অকেজোই রয়ে গেছে। অকার্যকর এ সেতু নিয়ে স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।স্থানীয় কৃষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এই সেতু হলে বাজারে যাতায়াত সহজ হবে। ফসল মাঠ থেকে সরাসরি গাড়িতে তোলা যাবে; কিন্তু ২০ বছরেও কোনো গাড়ি চলল না। আমাদের কষ্ট যেমন ছিল, তেমনি রয়ে গেছে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হানিফ জানান, ‘এলাকায় শাকসবজি ও ফসল বাজারে নিতে অনেকটা ঘুরে যেতে হয়। এতে করে অনেক ঝামেলা হয়। সেতুটা যদি সংস্কার করে দুই পাশে সংযোগ সড়ক তৈরি করা যায়, তাহলে পুরো গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে।’ স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো সমীক্ষা বা সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। যার ফলে ২০ বছরেও এটির কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। বরং বর্তমানে এটি এখন অপচয় হওয়া সরকারি অর্থের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এখনো যদি দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়, তাহলে সেতুটি শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের জন্য বড় সুফল বয়ে আনতে পারে। এলাকাবাসীর দাবি, সরকারের উচিত দ্রুত সেতুটি সংস্কার ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া।
বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ অক্ষর জানান, সেতুটি নির্মাণের সময় স্থানীয়রা সংযোগ সড়কের জায়গা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে জায়গা না দেওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে স্থানীয়রা যদি জায়গা দেন, তাহলে নতুন করে সংযোগ সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে সেতুটি চালু করা সম্ভব। এতে এলাকাবাসীর উপকার হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.