ইসলামী ব্যাংকে অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্তদের বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন

ইসলামী ব্যাংকে অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্তদের বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন

ডেস্ক রিপোর্ট:

ইসলামী ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে সচেতন ব্যাংকার সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। একই সময়ে একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম।

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, পটিয়া বাহিনী ও এস আলমের অবৈধ দখলদার চক্রের কারণে ব্যাংকের সর্বত্র অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকে এসব নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ কর্মকর্তা ব্যাংকের স্থিতিশীল পরিবেশ নষ্ট করছে। এর ফলে ব্যাংকের সম্পদ ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে এবং গ্রাহক হয়রানির আশঙ্কা বাড়ছে।

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ দুবার হ্যাক হওয়ার ঘটনাও এসব দখলদার চক্রের ছত্রছায়ায় ঘটেছে। তারা বলেন, ‘আমরা আর কোনো অরাজকতা দেখতে চাই না, আর কোনো পটিয়া সন্ত্রাসী বা এস আলমের অদক্ষ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সহ্য করা হবে না। অবিলম্বে তাদের বহিষ্কার করতে হবে।’

বিক্ষোভে ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের নেতাকর্মী ও সাধারণ গ্রাহকরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা সতর্ক করে বলেন, ‘আর কালক্ষেপণ নয়। দখলদার ও অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের মাধ্যমে যেন ব্যাংকে আর কোনো অঘটন না ঘটে, সে জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। অদক্ষ কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় এস আলম গ্রুপসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বড় অঙ্কের অর্থলোপাট, অর্থপাচার ও সম্পদ বিদেশে পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

তারা আরও বলেন, ব্যাংকের আর্থিক দুরবস্থা এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিশেষত ডলারের সংকটের পেছনে এই অর্থপাচারের অংশীদারত্বকে দায়ী করা হয়েছে; ফলে আমদানি ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ভুয়া ঋণ ও স্বচ্ছতাহীন ঋণ প্রদানের ফলে বৃহৎ ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে।

এসময় গ্রাহক ফোরামের সদস্যরা জানান, যেসব ব্যক্তির মাধ্যমে অর্থপাচার ও ঋণলোপাট হয়েছে তাদের সম্পদ উদ্ধারের জন্য যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং পাচার অর্থ খুঁজে বের করে বাজেয়াপ্ত করা হোক। ব্যাংকের নিয়োগপ্রক্রিয়া, এমপ্লয় থেকে অডিট ও কোর গভার্নেন্স ব্যবস্থাসহ সার্বিক পুনর্গঠন করা হোক যাতে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম আর না হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আপরাধ তদন্ত সংস্থা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিসূচকভাবে এই ঘটনার তৎপর তদন্ত সম্পন্ন করুক এবং ফল জানতে জনসাধারণের কাছে প্রতিবেদন প্রকাশ করুক। আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি জানাই যে ওপরের অনিয়ম ও অভিযোগগুলো দ্রুত, স্বচ্ছ ও দৃষ্টান্তমূলকভাবে তদন্ত করা হোক এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হোক না হলে ব্যাংকের বিশ্বাসযোগ্যতা ও দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার॥
বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্যের দ্বার আমি বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। এটি তখনকার যুগে একটা সাহসী সিদ্ধান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।

শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, উৎপাদন খাত ছাড়াও এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাফল্যের পেছনে রয়েছে ব্যক্তি খাতে ভোগ বৃদ্ধি, যাকে প্রাথমিকভাবে সহায়তা করেছে মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ, শক্তিশালী গ্রামীণ অর্থনীতি, প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ ও জ্বালানি খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন। দেশের এই অভাবনীয় উন্নতির পেছনে রয়েছে প্রাথমিকভাবে বেসরকারি খাত। মূলত তাদের নেতৃত্বে রপ্তানি আয় ২০০৮ সালের ১৬ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতে যদি বেশি গুরুত্ব না দিই, তা হলে ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগে বেশি উন্নতি করা সম্ভব না। সে জন্যই এসব খাতের বিকাশে আমি সব কিছু উন্মুক্ত করে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি, বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনীতিক ব্যবস্থাপনা, অর্থনৈতিক উদারীকরণ এবং বাণিজ্য সংহিত করণের ওপর ভিত্তি করে আজকের এই অর্থনৈতিক টেকসই ও প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল একটি দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছি। একসময়কার বাংলাদেশ দারিদ্র্যপীড়িত বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলে পরিচিতি পেত। তবে এখন আর সেই অবস্থা নেই। এখন বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি আরও বলেন, অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে সবার সহযোগিতায় আমরা বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গত ১০ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হারে জিডিপি অর্জন করেছে। এমনকি যখন কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সারাবিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে, তখনো বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা আমরা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। কোভিডের পূর্বে ২০১৮ থেকে ২০১৯ অর্থবছর আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগে উন্নিত করতে সক্ষম হয়েছিলাম।

২০০৬ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সেটি কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। কোভিড মহামারি যদি না আসত, অর্থনৈতিক মন্দা যদি না হতো, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে অর্থনৈতিক মন্দা যদি না হতো, তা হলে আমরা আরও অন্তত ২-৩ ভাগ দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হতাম।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম