দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টারঃ

জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একটি কুচক্র মহল।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন ও ভাইস চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সহ একটি মহল, মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দিয়ে চাপে রেখেছেন সংস্থাটির গঠিত নির্বাচন কমিশনকে। এছাড়াও স্ব-স্ব কর্মস্থল থেকে বদলি করে বান্দরবনে পাঠিয়ে দিবেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। এমতো অবস্থায় এই কুচক্র মহলের চাপে বর্তমান নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে সংখ্যা প্রকাশ করেছেন জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিক ও মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার।

উল্লেখ্য, মিনহাজ উদ্দিন এবং হারুন অর রশিদ জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপের কারণে, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের আদেশ দেন। ওই আদেশের পর থেকেই তাদের সদস্য পদ চলে যায়। কিন্তু সমাজসেবা অধিদপ্তরে পুনরায় সদস্য পদ পাওয়ার প্রসঙ্গে গোপন সুএে জানা মৃত ব্যক্তির নাম সহ অধিকাংশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধির সাক্ষর জাল জালিয়াতি করে দরখাস্ত করেন মিনহাজ উদ্দিন সহ ১৬৮ জন। ওই দরখাস্তের ধারাবাহিকতায় গত ১২ জানুয়ারি সমাজ সেবা অধিদপ্তরের স্বেচ্ছাসেবী সমাজ কল্যাণ সংস্থা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক মোহাম্মদ সাব্বির ইমাম এর স্বাক্ষরিত এক স্মারকে যাহার নাম্বার ৪১.০২.০০০০.০৪৬.২৮.২৭৮.১৯.৫০ যাহাতে উল্লেখ আছে প্রাপ্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পত্রের মর্মালোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

এমত অবস্থায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের স্বাক্ষরিত স্মারকের সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে সংখ্যায় আছেন,জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার।তিনি সাংবাদিকদের জানান গত১০/০১/২২থেকে ৩০/০৬/২২ পর্যন্ত সদস্য নবায়ন ও ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জাতীয় দৈনিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল,তখন তো তারা কোন আপত্তি জানাননি। এই কুচক্র মহল নির্বাচন বানচাল করার লক্ষ্যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, এর আগেও ২০১৭ সালে নির্বাচন বানচাল করার লক্ষ্যে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন, যাহার নাম্বার ৪০০৬/১৭ এছাড়াও অনুরূপ নির্বাচন বানচাল করার লক্ষ্যে ২০২০ সনে মহামান্য হাইকোর্টে আরও তিনটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। যাহার নাম্বার ২৭১২/২২১৮/২৫৬৭/২০ এই মামলাগুলো মহামান্য হাইকোর্টে যাচাই-বাছাইয়ের পরে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর পক্ষে খারিজ করে দেন। অনুরূপ এই কুচক্র মহল ২০১৭ এবং ২০২০ এর মতো ২০২৩ সনের নির্বাচনকে ঘিরে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

নির্বাচনকে ঘিরে অপচেষ্টার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইয়ুব খান বলেন। আমি নির্বাচনী গঠনতন্ত্রের ১২.১(ক) আইন অনুযায়ী যেই ধারা আছে, আমি সে অনুপাতে নেয়-নীতিভাবে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবো।

সদস্য পদ মৃত ব্যক্তির নাম সহ জালিয়াতি করে আবেদনের বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক মো সাব্বির ইমাম বলেন, জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার প্রধান নির্বাচন কমিশন ও সংস্থার ইসি কমিটি যাচাই-বাছাই করে সদস্য পদ দিবেন, জাল জালিয়াতি নিয়ে তিনি বলেন বিধি অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এতিম শিক্ষার্থীসহ বসুন্ধরার কম্বল পেলেন ১০০০ অসহায়

অনলাইন ডেস্কঃ

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে এক হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। কালের কণ্ঠ শুভসংঘের সহযোগিতায় এক হাজার অসহায় শীতার্ত মানুষের হাতে এসব কম্বল তুলে দেওয়া হয়। এ নিয়ে চলতি শীত মৌসুমে দ্বিতীয় দফার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও নরসিংদী জেলায় তিন হাজার কম্বল বিতরণ করা হলো।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে মনোহরদী বাসস্ট্যান্ড চত্বরে অসহায় শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।

পরে শুকুন্দী ইউনিয়নের তাহফিজুল কোরআন ওয়াস সুন্নাহ এতিমখানা মাদরাসা এবং ভিটিপাড়া মুহাম্মদিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের হাতে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। মনোহরদী উপজেলা শুভসংঘের বন্ধুরা এসব কম্বল বিতরণ করেন।

কম্বল পেয়ে হাররদিয়া এলাকার আছিয়া বেগম (৪৫) বলেন, ‘ছোট্ট দুই বাচ্চা জারে (শীতে) কষ্ট পাইত। কম্বল পাওনে এহন ওরা একটু শান্তিতে রাইতে ঘুমাইতে পারবে। কম্বল পাওনে আমার অনেক উপকার অইছে। ’

দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে তিনজনের সংসার আছিয়ার। মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান তিনি।

কম্বল পেয়েছেন আরেক অসহায় আজিমুন বেগম। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে শীতের কষ্টের পর নতুন কম্বল ঈদের আনন্দের মতো লাগছে। আমরা সবাই খুশি। ’

ছেলেমেয়েদের থেকে আলাদা হয়ে এক খুপরিতে একা থাকেন সত্তরোর্ধ্ব আব্দুল মোতালিব। কম্বল পেয়ে তাঁর মুখেও হাসির ঝিলিক। তিনি বলেন, ‘পোলাপান সব দূরে গ্যাছে, আমি এলহা মানুষ ক্যামনে বাঁচি কেউ খোঁজ নেয় না। তোমরাই খোঁজ নিয়া কম্বল দিলা, মনডা খুশিতে ভইর্যা গ্যাছে। ’

নিঃসন্তান রোকেয়া খাতুনও কম্বল পেয়ে বলেন, ‘আমার মতো অসহায়দের খবর নেওয়ার কেউ নেই। কতজন?কে অনুরোধ করলাম একটা কম্বলের জন্য, কেউ দিল না, কিন্তু তোমরা আমা?কে কম্বল দিলে। ’ বয়োবৃদ্ধ জালাল উদ্দিন বলেন, ‘কদিন ধইরা শীতের ঠ্যালায় ঘুমাইতে পারি না। আজ কম্বল মুড়ি দিয়ে আরাম কইরে একটা ঘুম দিব। ’

মাদরাসাছাত্র হোসাইন আহমেদ বলে, ‘কম্বল পেয়ে আমরা আজ অনেক খুশি। আমরা যারা এখানে থাকি, শীতের রাতে আমাদের ঘুমাতে কষ্ট হতো। কম্বল পেয়েছি, আমরা এখন রাতে আরামে ঘুমাতে পারব। ’

মাদরাসার মুহতামিম মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আমাদের মাদরাসায় যারা পড়াশোনা করে তারা বেশির ভাগই এতিম ও দরিদ্র। আমরা চেষ্টা করছি তাদের সব চাহিদা পূরণ করে ইসলামী শিক্ষা দেওয়ার। বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় ইনশাআল্লাহ আমাদের ছেলেদের কিছুটা হলেও ঠাণ্ডাটা লাঘব হবে। আমরা দোয়া করি, আল্লাহ যেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের মঙ্গল করেন। ’

কম্বল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, নরসিংদী জেলা পরিষদের সদস্য এ কে এম জহিরুল হক, ইসরাত জাহান তামান্না, শুভসংঘের মনোহরদী শাখার সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, শুভসংঘের সাবেক সভাপতি মো. হারুন-অর-রশিদ, কালের কণ্ঠ’র মনোহরদী প্রতিনিধি মুহা. ইসমাইল হোসাইন খান, নিউজটোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি হৃদয় খান, মনোহরদী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি জে এম শাহজাহান মোল্লা প্রমুখ।

শুভসংঘের মনোহরদী উপজেলা শাখার সভাপতি মাসুদ রানা ব?লেন, ‘প্রতি শীত মৌসুমেই শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ ছাড়াও বিভিন্ন মানবিক কাজে ভূমিকা রেখে চলেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। ’

নরসিংদী জেলা পরিষদ সদস্য এ কে এম জহিরুল হক বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত অসহায়দের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ ও কালের কণ্ঠ শুভসংঘকে ধন্যবাদ জানাই। ’

কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, ‘শীতার্তদের মধ্যে শুভসংঘের মাধ্যমে শীতবস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যার। এর অংশ হিসেবে মনোহরদী উপজেলার এক হাজার মানুষের হাতে কম্বল তুলে দিয়েছি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম