মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড মাথায় পড়ে পথচারী নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পরপরই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, এখনো নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

দীর্ঘক্ষণ মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত তরুণের বয়স আনুমানিক ৩৫-৪০ বছর। নিহত ওই ব্যক্তি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। মেট্রোরেল চলার সময় হঠাৎ একটি বিয়ারিং প্যাড ওপর থেকে ওই পথচারীর মাথায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। ছিটকে পড়া স্প্রিংটির ওজন প্রায় ৪০-৫০ কেজি।

এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বর খামারবাড়ি এলাকায় মেট্রোর একটি পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে। এতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল।

মেট্রোরেলের লাইনের নিচে উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের এসব বিয়ারিং প্যাড বসানো থাকে। প্রতিটির ওজন আনুমানিক ১৪০–১৫০ কেজি। এগুলো ছাড়া ট্রেন চললে উড়ালপথ স্থানচ্যুত হওয়া বা দেবে যাওয়া হতে পারে। তাই এই দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার কারণে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে।

মেট্রোরেলের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘ফার্মগেটের খেজুরবাগান মোড়ের নির্মাণ নকশায় ত্রুটি রয়েছে। এর আগে এমন দুর্ঘটনা ঘটলেও জাপানিজ ঠিকাদার তা ঠিক করেনি।

বড় সেতু বা উড়াল পথ নির্মাণে ব্যবহার করা হয় বিয়ারিং প্যাড। নিচের পিলারের সঙ্গে উড়াল পথের সংযোগ স্থলে বসানো বিশেষ ধরনের রাবারের তৈরি এ উপাদান গাড়ির চাপ সরাসরি পিলারে না ফেলে মাটির দিকে নামিয়ে দেয়। এটি ব্যবহার হয়েছে বাংলাদেশের মেট্রোরেলেও।

ভেজাল কোম্পানীর ভেজাল বাণিজ্যে স্বাস্থ্যসেবায় হুমকি 

মোহাম্মদ মাসুদ:
সাভারের হেমায়েতপুরের রয়েল ল্যাবরেটরিজ আয়ু। প্রতিষ্ঠানটির আমলকি-প্লাস, এ্যাপেল-প্লাস ও পুদিনা-প্লাস বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। তাছাড়া মোটাতাজাকরণ ক্ষতিকারক উপাদানে তৈরি রয়েল-গোল্ড, ফেরাপ্লেক্স, ইরেকটন, কার্ডিওলেক্স, টাসফিট, হাইরেক্স, ডাইজাভিট, রয়েলভিট, রুচিরাজ, কারমোজিন, লিভারেক্স, মিকোভাস, গ্যাসরিলিফ, সিভিটন, ওরেঞ্জ-ই, সেপোভাক্স ও বেবিসিড স্বাস্থ্যসেবায় চরম হুমকি হলেও সাভারের ড্রাগ সুপারের নজরদারি শুন্যের কোটায়। ফলে হার্টব্লক, মেদভুড়ি ও ডায়াবেটিস নিরাময়ের শ্লোগান দিয়ে বিক্রি করছে ডিউরেটন নামের সিরাপ। বিগত দিনে আমলকি-প্লাস তৈরি ও বাজারজাত নিষিদ্ধ হওয়ার পরই ডিউরেটন সিরাপ বিক্রি শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি আমলকি-প্লাস বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সময় ড্রাগ প্রশাসন কর্তৃক পরিক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে আমলকি-প্লাস সিরাপে আমলকি নেই। শুধুমাত্র ক্ষতিকারক কেমিক্যাল আর ফ্লেভার দিয়ে তৈরি। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় শিরোনাম হওয়ার পরই ড্রাগ প্রশাসন ১৯/১১/২০১৫ইং তারিখ ভেজাল সিরাপটির উৎপাদন ও বাজারজাত নিষিদ্ধ করে। প্রাপ্ত ইনভয়েসের তথ্য মতে, ড্রাগ নীতিমালা পরিপন্থী সেই নিষিদ্ধ হওয়া আমলকি-প্লাস এখন মিটফোর্ড, সাভারের তমা ফার্মেসী, গাজীপুর, টাংগাইলের মধুপুর ফার্মেসী ও নোয়াখালীসহ সারাদেশে বিক্রি করছে। বিতর্কিত কোম্পানীর মালিক নিজেকে সাংবাদিক ও আওয়ামী কর্মী পরিচয়ে ড্রাগ প্রশাসনকে জিম্মি করে জেলা ড্রাগ সুপারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অবাধে আমলকি-প্লাস বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত কারমোজিন নিয়ে দেশ ল্যাবঃ আয়ু এবং রুচিরাজ নিয়ে দিলেটের ইস্টার্ন ল্যাবঃ ইউনানীর সাথে দ্বন্ধ হয়। বর্তমানে আমলকি-প্লাস নিয়ে গোপালগঞ্জের একটিভ ল্যাবঃ ইউনানীর সাথে দ্বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ প্রতিষ্ঠানটির অনুকুলে আমলকি-প্লাস অনুমোদিত প্রডাক্ট। তথ্য মতে, সুচতুর ব্যবসায়ী তার গাড়িতে সাংবাদিক স্টিকার লাগিয়ে দাপটের সাথে ড্রাগ প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে সব ক্ষেত্রেই পাড় পেয়ে যাচ্ছে। সেহেতু মানুষের জীবন নিয়ে কারসাজী ও প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির আমলকি-প্লাস ও ডিউরেটন পরিক্ষা করলেই নীরব ঘাতক বাণিজ্যের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
এদিকে সাভারের একরাম ল্যাবঃ আয়ুর বিরুদ্ধে অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রচার করে প্রডাক্ট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এক সময় আমলকি-প্লাস নিয়ে বিতর্কিত হলেও এখন এমিটন-প্লাস নিয়ে বিতর্ক চলছে। রাস্তাঘাটের ফুটপাতে হকার সমিতির নেতৃত্বে অবাধে বিক্রি হচ্ছে গরু মোটাতাজাকরণ উপাদানে তৈরি এমিটন-প্লাস।কোম্পানীর মালিক নিজ নামের আইডি দিয়ে অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বিক্রি করছে একরোফেন, একরোপ্লেক্স, হেলফিট, একরোভিট, কামিনী গোল্ড, একরোভাস, সাসটাজিম, এলভাসিম, ভেজিনেক্স, এমোনিড, এ-পাইলস, গনোনিল, লিকোফেন, মিমোটন, ডাইয়াবি কেয়ার, আরটি-ট্যাব, স্লিম-এ, রিউমিন, এরিটনা, ভিগো-৩০, এ্যামি-২০, এমআর-২৮, এ- কার্ড, এ-ডাইজেষ্ট, পেডিকেয়ার, স্কীনিটোন ও সুপ্রাডাইন নামের ঔষধ। তিনি শিল্প সমিতির প্রভাবশালী নেতার পরিচয়ে ড্রাগ প্রশাসনে ক্ষমতা প্রদর্শন করে নিজ স্বার্থ উদ্ধারে বরাবরই তৎপর । অথচ তার কোম্পানীর বিরুদ্ধে অনুমোদনহীন ভেজাল প্রডাক্ট বিক্রির অভিযোগ উঠলেই সংশ্লিষ্ট থানায় নকল হওয়ার অভিযোগ করে রক্ষা পাবার সিস্টেমে একজন অন্যতম কৌশলী। জনস্বার্থে কোম্পানীর শুধুমাত্র এমিটন-প্লাস পরিক্ষা করলেই নীরব ঘাতক বাণিজ্য বন্ধ হবে। বিপরীতে সাধারণ মানুষ লিভার ও কিডনি ড্যামেজের কবল থেকে রক্ষা পাবে।
উল্লেখ্য, বরিশালের জি.এস ল্যাবরেটরিজ আয়ুর নবায়ন এবং মালিকানা পরিবর্তন ছাড়াই লেবেল কার্টন পরিবর্তন করে প্রডাক্ট বিক্রির প্রকাশিত অভিযোগ ধামাচাপা দিতে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান দৌড়ঝাঁপ শুরু করে ড্রাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। যদি অর্থের বিনিময়ে অভিযোগ থেকে পাড় পেয়ে যায় তাহলে ধরে নিতে হবে সর্ষে ক্ষেতে ভূতের রামরাজত্ব। আর প্রশাসনের ছত্রছায়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল-ভেজাল ঔষধ ব্যবসায় উৎসাহী হচ্ছে। এদিকে মুন্সিগঞ্জের এমপেক্স ল্যাবরেটরিজ ইউনানীর নব্য মালিক মিটফোর্ডের বিতর্কিত ব্যবসায়ী ফয়সাল ও তার পার্টনার দ্বীন আমিন ড্রাগ প্রশাসনের ফাইলিং কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অনলাইনে সাসটোক্যাপ বিক্রির অভিযোগ থেকে রক্ষা পাবার কৌশল নিয়েছে। প্রশ্ন হলো অনলাইনে সাসটোক্যাপ বিক্রির বিজ্ঞাপন প্রচারের প্রাপ্ত স্কীন শর্ট তারা কিভাবে অস্বীকার করবে? এদের মতোই মানুষের সাথে প্রতারণা করে রাতারাতি কোটিপতি হচ্ছে ঢাকার এপসিস ইউনানী ল্যাবঃ, আশুলিয়ার চিত্রা ল্যাবঃ ইউনানী, সাভারের ফেমাস ল্যাবঃ ইউনানী, ঢাকা অর্গানিক ল্যাবঃ ইউনানী ও প্যাট্রন ল্যাবঃ ইউনানী, গাজীপুরের শান ল্যাবঃ আয়ু ও জেবিএল ল্যাবঃ ইউনানী, কেরানীগঞ্জের এডরন ফার্মাঃ ইউনানী, নারায়ণগঞ্জের রেনিক্স ল্যাবঃ ইউনানী ও সেফটি হেলথ ল্যাবঃ ইউনানী, বগুড়ার প্রিভেন্টিজ ল্যাবঃ ইউনানী, পাবনার সাফিয়া ল্যাবঃ ইউনানী, এ্যাপেক্স ল্যাবঃ ইউনানী ও ইউনিফিল ল্যাবঃ ইউনানী, নাটোরের গোপালপুরের আল-রাজী ল্যাবঃ ইউনানী, রাজশাহীর এস.এমজি ল্যাবঃ ইউনানী, রংপুরের এস.আর ল্যাবঃ আয়ু ও ইকো ল্যাবঃ ইউনানী, সিলেটের মাইসান ল্যাবঃ ইউনানী, যশোরের বায়োলাইফ ল্যাবঃ ইউনানী, নোয়াখালীর এমসিআই ল্যাবঃ ইউনানী। মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় বিষফোড়া ঔষধ কোম্পানীর বিরুদ্ধে ড্রাগ প্রশাসনের ব্যবস্থা উচিৎ।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম