স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অবহেলা ও অপচিকিৎসার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগকারি সোহেল মিয়া বলেন , গত (৫ মে,২০২৩) সোমবার আনুমানিক সকাল সাড়ে ছয়টায় আমাদের বাড়ির উঠান থেকে আমার মাকে ডান পায়ের পাতায় সাপে কাঁটে। আমি সাথে সাথে টাকনু বরাবর রসি দিয়ে বেঁধে দেই। তারপর আমি গরু বাছুর নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে আমার খালু ও ছোট বোনকে দিয়ে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ পাঠিয়ে দেই। তারা সকাল ৭টার দিকে হাসপাতালে উপস্থিত হয়। আমার বোন বলল জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার আমার মাকে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলে। ডাক্তার এটাও বলে, এটা কোনো বিষধর সাপে কাঁটেনি, আপনারা রোগীর পায়ের বাঁধন খুলে বাড়ি নিয়ে যান। ডাক্তারের কথামতো আমরা পায়ের বাঁধন খুলে ফেলি। অভিযোগকারি সোহেলের খালু ও তার ছোট বোন মোসা: মাহিনুর আক্তার জরুরী বিভাগে থাকা ডাক্তারের কাছে প্রেসক্রিপশন লিখে দেওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করে। কিন্তু তার অনুরোধ না রেখেই জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার প্রেসক্রিপশন না করে ঐখান থেকে বিদায় দেয়।
এদিকে রোগীর আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি দেখে সোহেল গরু বাছুর রেখে তার মাকে ছিনাইয়া এক দরবেশ বাড়িতে নিয়ে যান এক কবিরাজের কাছে। সেখানে কবিরাজ একটি পান খাইয়ে দেয়। কিন্তু পান খাওয়ানোর পরও মা বিষের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। সোহেল আর দেরি না করে তার মা’কে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানকার ডাক্তার ভ্যাক্সিন দিয়ে রোগীকে রেফার্ড করে দেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দ্রুত এম্বুলেন্স ডেকে সোহেল তার মাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় বিকাল সাড়ে পাঁচটায়। চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার সোহেলকে বলেন, আপনারা খুব দেরি করে ফেলছেন। পায়ের বাঁধন খোলাও ঠিক হয়নি। চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে হোসনে আরা আরও মুমূর্ষু অবস্থা হয়ে যায়। তারপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মরহুমা হোসনে আরা বেগম উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রী।
অন্যদিকে হাসনাবাদ গ্রামের ভাড়াটিয়া আজাহারের ছেলে মাহাবুব (৪ মে, ২০২৩) রবিবার বিকাল ৩টার দিকে আঙ্গুল কাটা নিয়ে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যায়। মাহাবুব বলেন, আমাকে চিকিৎসা না দিয়ে ঢাকা মেডিকেল রেফার্ড করে দেয়। কিন্তু আমি ঢাকা মেডিকেল না গিয়ে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে যাই। সেখানকার ডাক্তার আমাকে ড্রেসিং করে ঔষধ লিখে দিয়ে বলেন, এই ঔষধগুলো নিয়মিত খাবেন। আপনার কোনো সমস্যা নাই। এটা তো এলাকার কোনো ফার্মেসীতে গেলেও চিকিৎসা নিতে পারতেন। আপনি কষ্ট করে ঢাকা আসলেন কেন? আমি আর কিছু না বলে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে আসি।
এব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সায়মা রহমান বলেন, বিষয়টি সঠিক হলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
এ বিষয়ে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তারের সাথে কথা বললে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর যিনি হেড আমি তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
Leave a Reply