মাগুরার জগদল ইউপির চেয়ারম্যান রফিকের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ!

 

মাগুরা প্রতিনিধি:

স্থানীয় থানা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে এবং উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে প্রায় ৪০ বছরের ভোগদখলীয় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম রফিকের বিরুদ্ধে। তিনি বিরোধীয় জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে ১২/১৩ টি টংঘর দোকান উচ্ছেদ করে জমি নিজ দখলে নিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করছেন বলে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়াগেছে।
এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায, মাগুরা সদর উপজেলার ২০৯ নং ও ১৮২ নং জগদল মৌজার বর্তমান হাল রেকর্ডের আরএস দাগ নং ২৯৯ এর ২০ শতক এবং হাল আর এস দাগ নং ২৯৮ এর ৭১ শতকের মধ্যে ১১ শতক মোট ৩১ শতক জমি সিএস মালিক রূপবান নেছার নিকট থেকে কবলা দলিলমূলে মালেক বিশ^াস গং ক্রয় করেন। সেমুলে এসএ রেকর্ডও জারি হয়। কিন্তু হাল রেকর্ডে ভুল বশত উক্ত জমি জগদল ইউনিয়ন পরিষদের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। বিষয়যটি জানতে পেরে জমির প্রকৃত মালিক ও দখলদার গোলাম ছরোয়ার গং রেকর্ড সংশোধন চেয়ে মাগুরা যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে দেং ২২/০৫ নং মামলা দায়ের করেন। এই মামলার শুনানী শেষে গত ০৭/০৫/২০১২ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে বাদী গোলাম ছারোয়ার গং এর পক্ষে রায় বা ডিগ্রী প্রদান করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম রফিক ৯৩/১২নং টাইটেল আপীল মামলা দায়ের করেন। সেই টাইটেল আপীল মামলাটিতেও তিনি হেরে যান। গত ২৬/০৮/২০২১ ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালত দোতরফাসুত্রে আপীলটির রায় দেন । বর্তমান এসএ রেকর্ড মালিকগনের শরিকানা আপোষে উক্ত বিষয় নিয়ে এলএসটি মামলা নং ৭৮/২০১৮ দায়ের হয় যার বাদী ফছিয়ার বিবাদী জগদল ইউপি চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম রফিক। এই এলএসটি মামলাটিতেও গত ৩১/১০/২০১৮ইং তারিখে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়।
কিন্তু তিনি আইন আদালতকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরে নিজস্ব বাহিনী নিয়ে গত ২৫/০৪/২০২৩ ইং তারিখে বিকাল ৫ টার সময় অনধিকারে উক্ত জমিতে প্রবেশ করে রাত্র ২ টা পর্যন্ত অবস্থান করেন এবং জমিতে খাকা ১০/১২টি টং দোকান ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে মাটি ভরাট কাজ শুরু করেন। জমিতে থাকা একটি পুকুরও দখল করে মাটি ভরাট করেন। বাদী পক্ষ নিরীহ হওয়ায় এবং বাধা দিলে খুন জখমের সম্ভাবনা থাকায় তারা নিরব থাকেন এবং ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরদিন তারা এ বিষয়ে মাগুরা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে চেয়ারম্যান রফিকসহ ৭ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। যার নং পি- ৪০/২৩। মামলাটি বর্তমানে পিবিআইয়ের তদন্তাধীন আছে।
অন্য দিকে এ বিষয়ে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজি: মাগুরার আদালতে ২৫৭/২০২৩ নং পিটিশন মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত জমির স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার জন্য মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেন । ওই আদেশের প্রেক্ষিতে মাগুরা থানার এস আই মো: আলমগীর হোসেন বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে গত ২৬/০৫/২০২৩ইং তারিখে ২য়পক্ষকে নোটিশ প্রদান করেন যে, ১মপক্ষের নিন্ম তফশীলভূক্ত সম্পত্তিতে আপনারা ২য় পক্ষ লোভের বশবর্তী হয়ে জোরপুর্ব্বক নিজেদের দখলে নেওয়ার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করছেন….। অতএব আদালতের আদেশ মোতাবেক যে যে অবস্থায় আছেন সেই অবস্থায় শান্তি বজায় রাখবেন। অন্যথায় আপনাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এখানেই শেষ নয়, বিরোধী জমিতে বিবাদী চেয়ারম্যান গংদের বিরুদ্ধে ইংজাংশন বা চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে ১৫৮৩/২০২২ নং সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করা হলে বিজ্ঞ বিচারপতি মো: জাকির হোসেন গত ৩১/০৫/২০২৩ ইং তারিখে উক্ত জমির ওপর ইংজাংশন ( নিষেধাজ্ঞা) জারির আদেশ দিয়েছেন।
উচ্চ আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা আদেশের পরও সেটি ভংগ করে জগদল ইউপি চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম রফিক নালিশী জমি জবর দখলে রেখে পুকুর ও খালি জমিতে মাটি ভরাট করে সেখানে মাকের্ট নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে ৮/১০ লাখ টাকায় পজেশন বিক্রি করছেন মর্মে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
প্রশ্ন হচ্ছে ,আইন,আদালতকে তোয়াক্কা না করা এই ইউপি চেয়ারম্যানের ক্ষমতার উতস কোথায়? তিনি কি সকল আইন কানুনের উর্ধে ? ভুক্তভোগিরা এ বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মহামান্য প্রধান বিচারপতি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী,সচিব, বিভাগীয় কমিশনার খুলনা ও মাগুরা জেলা প্রশাসকের পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

পাটুরিয়া ঘাটে বাস চালকদের সিন্ডিকেট, যাত্রী হয়রানি চরমে !

মোঃ হাসানুজ্জামান:

দেশজুড়ে ঈদকে কেন্দ্র করে স্বস্তির যাত্রা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছিলেন অনেকেই। তবে বরাবরের মতো এবারও বাড়তি ভাড়া আদায় ও বাস সিন্ডিকেটের ভেলকিবাজিতে চরমভাবে ভুগতে হয়েছে পথযাত্রাীদের। বিশেষ করে ঈদের ছুটি শেষে ঢাকাগামী মানুষের স্রোতকে পুঁজি বানিয়ে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে চলছে হরিলুট। অন্যন্য দিনের তুলনায় আজ শনিবার (২২ জুন) পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দুপুর ২ টার সময় বাস যাত্রীদের এমনই হয়রানি, নাজেহালের চিত্র চোখে পড়ে।

মুখে যাত্রী সেবার বুলি আউড়ালেও বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। মূলত বাস চালকদের ভেলকিবাজি নাকি বাস মালিকদের সিন্ডিকেট, তা বুঝে ওঠা খুবই দুষ্কর। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে পরিবারের সাথে আননে ভাগাভাগি করতে অনেকেই ছুটে যান গ্রামে। তাই অবশ্যই তাদেরকে আবার ফিরতে হবে। ব্যস- এটাই সুযোগ।

ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় যেমন নেয়া হয়েছে বাড়তি ভাড়া। তেমনিভাবে ফেরার সময়ও কোনো ছাড় নেই। সামান্য পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে গাবতলী পৌঁছাতে প্রতিটি যাত্রীকে গুনতে হচ্ছে ৩০০ টাকা। এমনকি গাবতলীর আগে কোথাও নামলেও দিতে হবে সম্পূর্ণ ভাড়া।

হয়রানি এখানেই শেষ নয়। তারা মুখে সিটিং সার্ভিস বললেও বিভিন্ন যায়গা থেকে ওঠানো হচ্ছে অতিরিক্ত যাত্রী। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষিপ্ত সাধারণ যাত্রী। অবশ্য এতে বাস চালক, হেলপারদের কিছু আসে-যায় না। কিছু বলতে গেলেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জড়াচ্ছে বিবাদে।

সকল দুষ্টচক্রের মধ্যে কাউকে ভালো বলার উপায় নেই। একনামে পরিচিত গাবতলি সার্ভিস মানেই সেলফি পরিবহন। অথচ সেই সেলফির গন্তব্য নবীনগর, ভাড়া ২০০ টাকা। অনেক কষ্টে দু-একটা বাসকে রাজি করিয়ে যেতে হচ্ছে গাবতলি সহ দূর দূরান্তে।

মূলত বাসের কোনো ঘাটতি নেই। সেলফি, শুভ যাত্রা, ঠিকানা, নীলাচল সহ রয়েছে অসংখ্য বাস। কিন্তু তারা সিন্ডিকেট করে পাকিয়েছে কূটকৌশল। প্রত্যেকটা বাস যাচ্ছে সাভার, নবীনগর সহ আশপাশের এলাকায়। দ্রুত যাত্রী নামিয়ে আবারো ফিরছে ঘাটে। এভাবেই চলছে।

দীর্ঘক্ষণ পর যখন বাসের সিরিয়াল কমে যাচ্ছে, তখনই ঝোপ বুঝে কোপ মারা হচ্ছে। কারণ তখন ভাড়া যতোই চাওয়া হোক, বাধ্য হয়ে যাত্রী রাজি হবেই। অর্থ্যাৎ তাদের কুচক্রের হাতে যাত্রী সাধারণ নিরুপায় জিম্মি।

কথা হয় কয়েকজন বাস চালক, হেলপার, টিকিট কাউন্টারে। তবে তাদের প্রধান শর্ত ছবি তোলা যাবে না, ভিডিওতো বহু দূরের কথা। নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সেলফি পরিবহনের দুজন চালক ও হেলপার বলেন- “ভাই আমরা নিজেরা চাইলেই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা। ও-ই দেখেন মাঠের কোনায় বাস মালিক, কমিটির লোকজন বসে আছে। তাদের সিদ্ধান্তেই আমরা সব করি।” তবে তাদের সাথে কথা বলার জন্য এগিয়ে গেলেই তারা গায়েব হয়ে যান।

অন্যান্য বাসের মতোই নীলাচল পরিবহনেরও একই অবস্থা। কখনো বলছেন গাবতলী যাবেন, কখনো বলছেন চিটাগং রোড যাবেন, আবার কখনো বলছেন নবীনগর পার হবে না। বাসে তোলা হচ্ছে যাত্রী, আবার নামিয়েও দেয়া হচ্ছে। এভাবেই খামখেয়ালি করে চলছে তাদের সিন্ডিকেট।

কথা হয় বিভিন্ন পয়েন্টের যাত্রীদের সঙ্গে। বেজায় ক্ষিপ্ত যাত্রীদের অভিযোগের যেন অন্ত নেই। বিশেষ করে ঝিনাইদহ থেকে আসা রাশেদ নামে একজন যাত্রী বলেন- “ভাই আমরা পাটুরিয়া ঘাটে এসেছি প্রায় ৩০ মিনিট। এখানে এতোগুলা বাস, অথচ সবাই যুক্তি করে নবীনগর পর্যন্ত যাবে। সেখানে ভাড়া ২০০ টাকা। তাহলে রাজধানীর অন্যান্য গন্তব্যে কতো টাকা লাগবে হিসাব করেছেন ? মূলত এই বাস চালকেরা সিন্ডিকেট করে এভাবে যাত্রীদের হয়রানি করছে। কারণ এতোদিন যে বাসগুলো গাবতলী সহ অন্যান্য পয়েন্টে যেতো। সেগুলো আজ নবীনগর পর্যন্ত যেয়েই স্টপ। আমাদের এসব ভোগান্তি কে দেখবে ভাই ?”

মাঝ বয়সী আরেকজন যাত্রী বলেন- “সেলফি পরিবহন সারাজীবন গাবতলি, টেকনিক্যাল যায়। আজ তারা নবীনগর পর্যন্ত যাবে। নীলাচল, ঠিকানা সহ যে বাসগুলো রুট মেইনটেইন করতো। তারা এখন নিজেদের ইচ্ছামতো চলছে। একেতে বাড়তি ভাড়া, তার উপরে কয়েকবার গাড়ি বদলাতে হবে। এভাবে একটা সেক্টর চলতে পারে না। তারা নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাচ্ছে না। আবার অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। দেশটা কি মগের মুল্লুক নাকিরে বাবা…..?”

মূলত এভাবেই কথা হয় অনেক যাত্রীর সাথে। তাদের অভিযোগ, সরজমিন প্রত্যক্ষণ থেকে এটা স্পষ্ট যে, গাবতলী থেকে পাটুরিয়া রুটে নিয়মিতই বাড়তি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। সেই সাথে নতুন সিন্ডিকেটের কারণে যাত্রীদের নির্দিষ্ট গন্তব্য যেতে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান