বিভাগীয় তদন্তে দোষী প্রমানিত হলেও নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিজি‘র স্ত্রী ডা: হাসিনা নার্গিসের বিরুদ্ধে ৩৬ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদার এর স্ত্রী সাবেক শ্রীনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: হাসিনা নার্গিস এর বিরুদ্ধে কর্মচারিদের ৩৬ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দেবার অভিযোগ পাওয়াগেছে। তিনি ওই সময়ে একই উপজেলায় ভেটিরিনারী সার্জন হিসাবে কর্মরত ছিলেন। স্বামী- স্ত্রী একত্রে চাকুরী করাকালীন সময়ে শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্প হতে এবং রাজস্ব বাজেট হতে যে বরাদ্দ প্রদান ও ঔষধ/যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হতো তার ৮০% টাকা নিজেরা ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে আতœসাৎ করেছিলেন এবং ঐ উপজেলায় পশু চিকিৎসার জন্য যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তাদেরও প্রত্যেকের নিকট হতে দিনশেষে ৫০% টাকা আদায় করতেন বলে উক্ত উপজেলায় ঐ সময়ে কর্মরত ৮ জন কর্মচারী দুদুকের চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করেছিলেন এবং ডা: এমদাদুল হক তালুকদার পদোন্নতি পেয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ঢাকা, পদে যোগদান করার পর তার ন্ত্রী ডা: হাসিনা নার্গিসকে শ্রীনগর উপজেলার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পদে পোষ্টিং করান। ঐ সময়ে (২০১৬-২০১৭ ) অর্থ বছরে) তার স্ত্রী ও উপজেলায় কর্মরত ৮ জন কর্মচারীর বকেয়া বেতন ও জিপিএফ এর মোট ৩৬,৫৪,০০০/- টাকা ট্রেজারী হতে উত্তোলন করে আতœসাৎ করেন বলেও উক্ত আবেদন পত্রে উল্লেখ করা হয়।
কর্মচারীরা জিপিএফ ও বকেয়া বেতন ভাতাদির টাকা দেয়ার জন্য অনুরোধ করলে ডা: হাসিনা নার্গিস তার স্বামীর মাধ্যমে চাকুরীচ্যুতির ভয়ভীতি দেখাতেন। তখন কর্মচারীরা উপায় না পেয়ে তৎকালীন মহাপচিালকের নিকট আবেদন করেন। তৎকালীন মহাপরিচালক ডা: হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বিগত ২১/১/২০১৯ তারিখে ১৬৯ নং স্মারকে তৎকালীন পরিচালক (সম্প্রসারন) পরবর্তীতে মহাপরিচালক ডা: শেখ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। উক্ত কমিটি সরোজমিনে বিগত ৩০/০১/২০১৯ ইং তারিখে ( রোজ বুধবার, সকাল ১০ ঘটিকার সময়) তদন্ত করে বিগত ২৪/৩/২০১৯ ইং তারিখে একটি পূর্নাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: হাসিনা নার্গিস ও কর্মচারী মো: ইয়াসিন ফিরোজকে দায়ী করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। কিন্তু তৎকালীন কর্তৃপক্ষ ডা: মো: এমদাদুল হকের প্রভাবে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে কর্মচারী মো: ইয়াসিন ফিরোজের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন। কিন্তু টাকা আদায় না হওয়ায় কর্মচারীরা দুদুকে ঐ সময়ে আবার আবেদন করেন। সে প্রেক্ষিতে দুদুকের প্রধান কার্য্যালয় হতে জনাব উত্তম কুমার মন্ডল, পরিচালক, অভিযোগ সেল কর্তৃক স্বাক্ষরিত বিগত ১৬/৯/২০২১ ইং তারিখে ২২৪৪১ সংখ্যক পত্রে অভিযোগগুলি তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন ২০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রেরনের জন্য ডিজি , প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট অভিযোগপত্র সমূহ প্রেরন করেন। কিন্তু মহাপরিচালকের দপ্তর হতে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় কমিশন নিজেরাই তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ২৪/৩/২০২২ ইং তারিখে ০০.০১.২৬০০.৬১৩.০১.০২৩.২২.১১৯৭৫ সংখ্যক স্মারকে জেলা দূনীতি দমন অফিসার নারায়নগঞ্জ কে নির্দেশনা প্রদান করেন। সে প্রেক্ষিতে সমন্বিত জেলা কার্য্যালয়, নারায়নগঞ্জের সহকারী পরিচালক কর্তৃক ডা: মো: আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোটটি সংলগ্নিসহ প্রদানের জন্য বিগত ১১/৮/২০২২ ইং তারিখে ৪৪ সংখ্যক পত্রে, বিগত ১০/৫/২০২২ ইং তারিখে ৫৭৭ সংখ্যক পত্রে, বিগত ৭/৯/২২ ইং তারিখে ১১১ সংখ্যক স্মারকে এবং ১০/১০/২২ ইং তারিখে ৩০৩/১ সংখ্যক স্মারকে অনুরোধ করেন। কিন্তু অধিদপ্তর হতে উক্ত কাগজপত্রাদি সরবরাহ করা হয়নি কারন ঐ সময়ে ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদার পরিচালক প্রশাসনের দায়িত্বে ছিলেন। সর্বশেষ বিগত ৪/১/২০২৩ ইং তারিখে ০০.০১.৬৭০০.৭০৯.০১.০০১.২২.১৬ সংখ্যক স্মারকে পুনরায় পূর্বে চাহিত কাগজপত্রাদি সরবরাহ করার জন্য বর্তমান মহাপরিচালক ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদারকে অনুরোধ করেন এবং চাহিত কাগজপত্রাদি সরবরাহ না করা হলে দুদুক আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মেও অবগত করা হয়।
জানামতে, সর্বশেষ পত্রের প্রেক্ষিতে ডা: মো: আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রেরন না করে শুধুমাত্র মো: ইয়াসিন ফিরোজের সাময়িক বরখাস্তের রেকড সংক্রান্ত কাগজপত্রাদি দুদকে প্রেরন করা হয়। এখানে ডিজি সরাসরি দূনীতির ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে তার দূনীতিবাজ স্ত্রীকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। ডিজির সর্বশেষ সরবরাহকৃত তথ্যের প্রেক্ষিতে সমন্বিত জেলা কার্য্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক আলম মিয়া বিগত ১০/৭/২০২৩ ইং তারিখে ৩৬,৫৪,০০০/ টাকা আতœসাৎ করার অভিযোগে কর্মচারী জনাব মো: ইয়াসিন ফিরোজের বিরুদ্ধে দুদুকে মামলা করেছেন। অন্যদিকে ডিজি ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদার কর্মচারীদের বাসায় ডেকে নিয়ে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোন প্রকার মূখ না খোলার জন্য হুমকি ধুমকিসহ চাকুরীচ্যুতির ভয় দেখাচ্ছেন এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি গোপন রেখে পেনশন, গ্রাচুয়িটি মজ্ঞুরীসহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেয়ার সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে চিঠিপত্র দিয়েছেন বলে জানা যায়।
সুত্র মতে ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদারের বিরুদ্ধে একটি প্রকল্পের পিডি থাকা কালীন ২০ কোটি টাকার মালামাল ক্রয়ে অনিয়ম দূনীতির বিষয়টি বর্তমানে দুদুকে তদন্তানাধীন রয়েছে । সংশ্লিষ্ট ৮ জন কর্মচারী তাদের কষ্টের বেতন ভাতাদির টাকা ফেরত পাওয়াসহ দূনীতিবাজ ডিজি ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধানমন্ত্রী, প্রানিসম্পদ মন্ত্রী, সচিব ও দুদক চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আর্কষন করেছেন।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদার এর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি মিমাংশিত বিষয়। দুদকের তদন্তে আমার স্ত্রী দোষী প্রমাণিত হয়নি। যে কর্মচারি টাকা আত্মসাত করেছে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে রেটকোট ফাঁস করেছেন পিডি মঞ্জুরুল হক

ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে রেটকোট ফাঁস করেছেন পিডি মঞ্জুরুল হক

বিশেষ প্রতিবেদক:

প্রবাদ আছে যে, কয়লা শতবার ধুলেও তার ময়লা ছাড়ে না। ঠিক তেমনটিই পরিলক্ষিত হচ্ছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসির) একটি বৃহত্তর প্রকল্পের পিডির ক্ষেত্রে। এই প্রকল্প পরিচালক প্রায় এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি করে বারবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হলেও তিনি নিজেকে শুধরাচ্ছেন না। বরং দিনদিন তার দুর্নীতির মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব ও বিসিআইসি চেয়ারম্যানের নিরবতাও সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। এমন একজন আওয়ামী ঘরাণার পিডিকে কেন আজঅব্দি এই প্রকল্পের পিডি রাখা হয়েছে তারও কোন জবাব মিলছে না। এই পিডির নাম মো: মঞ্জুরুল হক। তিনি বাফার ৩৪ সার গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক।

সম্প্রতি এই পিডি বাফার ৩৪ সার গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের টেন্ডারে ভয়ংকর দুর্নীতি করেছেন মর্মে অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিশেষ চুক্তিতে ৪ টি ঠিকাদারী ফার্মকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ওই ৪ টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে রেটকোট ফাঁস করে দিয়েছেন । ফলে তার পছন্দের ঠিকাদারী ফার্মগুলো সর্বনিন্ম দরদাতা হিসাবে কাজগুলো পেতে যাচ্ছে। কাজগুলো হলো: ১ম প্যাকেজ,লট নং ০৩, কুমিল্লা সাইট। ৫ম প্যাকেজ, লট নং ০১, সাতক্ষীরা সাইট এবং খুলনা ও বাগেরহাট সাইট।

সুত্রমতে, ৩ নং লটের কুমিল্লা সাইটের কাজ পেতে যাচ্ছেন এমবিএল নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এই কাজে মোট ৫ টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করেছিল। ০১ নং লটের সাতক্ষীরা সাইটের কাজ পেতে যাচ্ছে এসএস রহমান নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এই দরপত্রে মোট ৬ টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করেছিল। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে বিশেষ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে পিডি মো: মঞ্জুরুল হক রেটকোট ফাঁস করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন অন্যান্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

আরো একটি গুরুতর তথ্য পাওয়াগেছে যে, অদ্য ১০/০৭/২০২৫ তারিখ বেলা ৩ টার সময় খুলনা ও বাগেরহাট জেলার টেন্ডার ওপেন করা হবে। এই টেন্ডারের ক্ষেত্রেও পিডি মো: মঞ্জুরুল হক দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে বিশেষ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে তাদের কাছেও রেটকোট ফাঁস করে দিয়েছেন। সেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দুটির নাম: এনডিই এবং এআইএল। ফলে খুলনার কাজটি পেতে যাচ্ছে এনডিই এবং বাগেরহাটের কাজটি পেতে যাচ্ছে এআইএল ঠিকাদারী ফার্ম।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকার আমলে প্রকল্প পরিচালক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় আওয়ামী সুবিধাভোগী প্রকৌশলী মনজুরুল হককে। তিনি একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বাফার গুদাম নির্মাণ করার মতো তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তিনি বিসিআইসি ভবনে আওয়ামী লীগ সরকারের একজন ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তার বাড়ি বরিশাল শহরে। মনজুরুল হক ৫ আগস্টের আগে নিজেকে শুধু ছাত্রলীগ করা নেতা হিসাবে পরিচিতই করেননি, হাসনাত আবদুল্লাহর আত্মীয়ও বলতেন। সাবেক মন্ত্রীর কমিশন বাণিজ্য নির্বিঘ করতে ‘দলীয় কর্মকর্তা’ বিবেচনায় তাকে প্রকল্প পরিচালক করা হয়। এর আগে মনজুরুল হক ২০২২ সালে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের জিএম থাকাবস্থায় যন্ত্রাংশ ক্রয়ের নামে ৪টি প্যাকেজে ২শ কোটি টাকা কাজের টেন্ডার করেন।

অভিযোগ আছে, এ ৪টি প্যাকেজ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুস নিয়ে মেসার্স সাইফ পাওয়ার টেককে কাজ পাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে এলে কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। এ নিয়ে প্রকল্প পরিচালক মঞ্জুরুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হয়। ভুয়া নথিপত্র তৈরি করে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আরএডিপি (রিভাইজড অ্যানুয়াল ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান বা সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পিডব্লিউডির রেট শিডিউল দিয়ে নির্মাণকাজের প্রাক্কলন করতে হবে। সেই শর্তে পিডব্লিউডি শিডিউল অনুযায়ী বাফার গুদাম নির্মাণে ২নং প্যাকেজে ৫নং লটে খুলনা সাইটের প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। অভিযোগ আছে, প্রকল্প পরিচালক মো. মনজুরুল হক ব্যক্তিগত সুবিধা আদায় করে দরপত্র প্রাক্কলনের নথিপত্রে দেখানো হয় ৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকা। এই টেন্ডারে ১২ কোটি টাকার বেশি দেখানো হয়েছে। কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারের সঙ্গে ওই ১২ কোটি টাকা ভাগাভাগি করতে টেন্ডারের নথিপত্র জালিয়াতি করা হয়।

এ ছাড়া ৩নং প্যাকেজের আওতায় সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, জয়পুরহাটসহ ৪টি সাইট মিলে অফিশিয়াল এস্টিমেট ২৬৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। মাজেদ সন্স কনস্ট্রাকশন লি. নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২৬৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় একমাত্র অংশগ্রহণকারী হিসাবে দরপত্র দাখিল করেন। এখানে অন্য কাউকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ম্যানুয়েল পদ্ধতির দরপত্রে প্রথমবার সিঙ্গেল টেন্ডারে কার্যাদেশ দেওয়া পিপিআর পরিপন্থি। গত বছরের ৯ জুন বড় অঙ্কের টাকা কমিশনের বিনিময়ে মাজেদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। সালাম কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের মালিক সালামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। শেখ সেলিমের আত্মীয় পরিচয়ে বিগত সরকারের আমলে প্রভাব দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রভাবে টেন্ডারবাজি করেছে মেসার্স এরোনাস ইন্টারন্যাশনাল লি. নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকও। এ দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেসামরিক বিমানবন্দর ঢাকা, সিলেট, কক্সবাজার নির্মাণকাজে শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকীসহ ৮১২ কোটি টাকা দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪টি মামলা দুদকে চলমান। প্রকল্প পরিচালক মো. মনজুরুল হক বিষয়টি জানার পরও ঘুসের বিনিময়ে ওই ২টি কোম্পানিকে মাগুরা-চাঁদপুর, যশোর-নড়াইল, ময়মনসিং-নেত্রকোনায় ৩টি লটে ৪শ কোটি টাকার গুদাম নির্মাণের কাজ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

এছাড়াও ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লি. (এনডিই) আওয়ামী আমলে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ করে। প্রথমে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় এনডিইকে ৪নং প্যাকেজের ১নং লটের আওতায় ভোলা-বরগুনা, ২নং লটের রাজশাহী-গাইবান্ধা, ৩নং লটের মেহেরপুরের দরপত্র বাতিল করা হয়। পরে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কমিশনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এনডিইকে মানিকগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জে ১২৮ কোটি টাকার কাজ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পিডি মঞ্জুরুল হককে তার সেল ফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

এমন একজন মহদুর্নীতিবাজ,আওয়ামী ঘরাণার প্রকৌশলীকে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমলেও কেন এতোবড় একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পদে রাখা হয়েছে এবং তার দ্বারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সেটাই কারো বেধগম্য নয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম