ওয়াসার পিপিআই প্রকল্প লুটপাটের মুলহোতা হাসিবুল হাসান নির্দোষ দাবি করেছেন!

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সমবায় অধিদপ্তর ২৪/৮/২০২৩ তারিখে ৪৯(১)(ঙ) ধারায় তদন্ত করে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: এর অর্থ লুটপাটে জড়িত ঢাকা ওয়াসার বর্তমানে ভান্ডার বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী হাসিবুল হাসান সহ ৪৬ জন কে অভিযুক্ত করে আত্মসাতকৃত অর্থ আদায়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের পরামর্শ দিয়েছেন। ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: পরিচালিত পিপিআই প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকারি ও সর্বোচ্চ সুবিধাভোগি হাসিবুল হাসানের বিরুদ্ধে ১১৪,৪৬৪,৩০৩.০৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ধারা নির্ধারন করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
এদিকে দায়ধারা থেকে রক্ষা পাবার অসদুদ্দেশ্যে ৪৬ জন অভিযুক্তদের মধ্যে হাসিবুল হাসান সহ ৩৯ জন ২৭/১২/২০২৩ তারিখে জেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর এক আবেদনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে;তদন্ত প্রতিবেদন বাতিলের বেআইনী দাবি তুলেছেন। তাদের উক্ত আবেদন ঢাকা ওয়াসায় হাস্যরস্যের সৃষ্টি করেছে।
সূত্রমতে, পিপিআই প্রকল্প’র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রথমে আফতাব আহমদ পরে হাফিজ উদ্দিন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর হাসিবুল হাসান আফতাব আহমদ ও হাফিজ উদ্দিন কমিটিতে দীর্ঘ সময়ে কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। হাসিবুল হাসান ব্যাংক একাউন্টের সিগনেটরী ছিলেন। হাফিজের কমিটির প্রথম দিকে কো-চেয়্রাম্যান পরে সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য অথবা পিপিআই উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুবাদে লুটপাট করেছেন।
জানাগেছে,৩১ অক্টোবর-২০১৮ বিলুপ্ত ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: পরিচালিত ঢাকা ওয়াসার সাতটি রাজস্ব জোনের (রাজস্ব জোন-৩,৪,৫,৬,৮,৯ ও ১০) সমন্বয়ে গঠিত পিপিআই প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে পিপিআই’র একাধিক্রমে কো-চেয়ারম্যান,উপদেষ্টা ও ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির অর্থ সম্পাদক হাসিবুল হাসান দীর্ঘ ২২ বছর পিপিআই প্রকল্পে লুটপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। পিপিআই বিলুপ্তের পর সংরক্ষিত ও উদ্বৃত্ত অর্থ তিনি অন্য দায়িত্বশীলদের সাথে যোগসাজস করে আত্মসাৎ করেছেন। ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: এর সদস্য (অর্থ) হাসিবুল হাসান পিপিআই’র কো-চেয়ারম্যান ছিলেন। পিপিআই’র বড় সুবিধাভোগী তিনি। দুর্নীতি করে ঢাকার গ্রীন রোডে গ্রীনস্টোন এ্যাপার্টমেন্টে বিলাসবহুল ফ্লাট, প্লট ও গাড়ির মালিক। ছেলে-মেয়েরা ব্যয় বহুল প্রাইভেট কলেজ ইউনিভার্সিটিতে লেখা পড়া করছেন। ময়মনসিং গ্রামের বাড়িতে প্রচুর সম্পদ গড়েছেন। যা তার বেতনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তিনি ঢাকা ওয়াসার সহকারী প্রকৌশলী। সামান্য বেতনের কর্মচারী হয়েও বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন। অর্থের উৎস হিসেবে কাজ করেছে পিপিআই প্রকল্পে রক্ষিত সাধারণ সদস্যদের অর্থ। তার পরিবারের সদস্য ও আত্বীয়জনদের সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করলেই সত্যতা মিলবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টগণ।
২২ বছর যাবত হাসিবুল হাসান গং পিপিআই প্রকল্পে লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। অথচ পিপিআই’র ঠিকাদার সমবায় সমিতির সাধারণ সদস্যগণ ঠিকমত লভ্যাংশ পর্যন্ত পায়নি। সমিতির একাউন্ট শূন্য। এমতাবস্থায় পিপিআই প্রকল্পের ২২ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রদান ও আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত হাসিবুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করে বেতন বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি. এর সদস্যগণ।
উল্লেখ্য, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ১০ মে-২০২৩ তারিখে তিন জন কর্মচারিকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছে । কিন্ত দুর্নীতির রাঘব বোয়ালরা থেকে গেছে মামলার বাইরে। যেকারনে দুদকের চলমান মামলায় ৪৯ ধারায় অভিযুক্ত ৪৬ জনকে মামলার আওতায় নিয়ে আসার জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেছেন;ঢাকা ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আনিসুজ্জামান খান শাহীন।

পূর্ব তেজতুরি বাজারে ডিম ব্যবসায়ীর নির্মাণাধীন অনুমোদনহীন ০৭ তলা ভবন

পূর্ব তেজতুরি বাজারে ডিম ব্যবসায়ীর নির্মাণাধীন অনুমোদনহীন ০৭ তলা ভবন

মাহতাবুর রহমান:
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর দুর্নীতিগ্রস্থ সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার এর চুক্তি বাতিলের পরে রাজউকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম। নতুন চেয়ারম্যান চেয়ারে বসেই রাজধানীর অপরিকল্পিত, রাজউক অনুমোদনহীন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে থাকলেও দীর্ঘদিনের অনিয়ম শুধরাতে বেগ পাচ্ছেন। সকল শ্রেণী পেশার মানুষই আইন ভঙ্গ করে যে যার মতো ভবন নির্মান করছেন।

রাজধানীর পূর্ব তেজতুরি বাজার রেলগেটে শফকত নামে এক ব্যাক্তি নির্মাণ করছেন রাজউক অনুমোদনহীন ০৭(সাত) তলা ভবন। শফকত পূর্ব তেজতুরি বাজারের একজন ডিম ব্যবসায়ী। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পাশে অপরিকল্পিত ভাবে নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই চলছে নির্মাণ কাজ। সাত তলা ভবন হলেও রাখেনি গাড়ি পার্কিং এর কোন ব্যবস্থা। ডেভিয়েশন করে আবাসিক ভবনের নীচতলা করা হয়েছে বাণিজ্যিক। এই ভবনের বিষয়ে গোলাম সরোয়ার নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এখনো।

এই বিষয়ে শফকত এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন কাগজপত্র আছে। দেখতে চাইলে পরের দিন দেখাবেন বলেন। এরপরে প্রতিবেদককে কল করেন এক ব্যক্তি। তিনি চ্যানেল ২৪ এ কর্মরত আছেন বলে পরিচয় দেন এবং শফকতের বিষয় নিয়ে কথা বলেন। কিছুক্ষন পরেই প্রতিবেদককে কল করেন এনটিভির এক প্রতিনিধি এবং তিনি শফকতকে মামা বলে পরিচয় দেন। এনটিভির প্রতিবেদক বলেন শফকতের সব কাগজ আছে তাকে ক্ষতি করার জন্য রাজউকের এক কর্মকর্তা তার পিছনে লেগেছে। শফকতের কাগজের বিষয়ে নিশ্চিত হতে এনটিভির এই প্রতিনিধির কাছে কাগজ দেখার অনুরোধ করলে তিনি দেখাবেন বললেও প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন রাজউক অনুমোদনের কাগজ পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে রাজউক জোন-৫/২ এর অথরাইজড অফিসার মোঃ ইলিয়াসের সাথে কথা বললে প্রথমে তিনি এটা রাজউক জোন-৫/১ এর অথরাইজড অফিসার হাসানুজ্জামানের বলে দাবি করেন। অথরাইজড অফিসার হাসানুজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন এটা অথরাইজড অফিসার মোঃ ইলিয়াসের এড়িয়ার মধ্যেই রয়েছে। এরপর তার সাথে অফিসে সাক্ষাৎ করলে তিনি ইমারত পরিদর্শক সাইফুলকে ডেকে নিশ্চত হন এটা তারই দায়িত্বাধীন এড়িয়া। এরপর প্রতিবেদকের সামনেই অথরাইজড অফিসার মোঃ ইলিয়াস ইমারত পরিদর্শককে দ্রুত অভিযুক্ত ভবনের বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

দায়িত্বাধীন এড়িয়া না চিনে কর্মকর্তারা যথাযথভাবে কাজই করেন কিভাবে? জনগনের ট্যাক্সের টাকায় যাদের বেতন হয় তারা কি কাজ না করে শুধু চেয়ারে বসে থেকেই বেতন নিচ্ছেন?

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম