মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার:

১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। উল্টো তারা বাঙালি বেসামরিক লোকদের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সব রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সব সচেতন নাগরিক। তবে অভিযানে নেমে তারা রিকশাওয়ালা থেকে নিয়ে সমাজের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে।
২৫ মার্চ মধ্যরাতে তথা ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তারের আগে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পাশাপাশি যেকোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মুহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এ ঘোষণার নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়ত আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছেন, যার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও। শেখ মুজিবুর রহমান। ২৬ মার্চ, ১৯৭১।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ ডকুমেন্টস-এ ওই ঘোষণার পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়েছিল। ঘোষণায় বলা হয়, ‘এই-ই হয়ত আপনাদের জন্য আমার শেষ বাণী হতে পারে। আজকে থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি, যে যেখানেই থাকুন, যে অবস্থাতেই থাকুন এবং হাতে যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ততদিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান-যতদিন না দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর শেষ সৈনিকটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হচ্ছে।
তৎকালীন ইপিআর-এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে ঘোষণাটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

টাকা দিলেই হুবহু নকল পদক পাবেন, বাটপার আর কে রিপন এর প্রতারণার গল্প

স্টাফ রিপোর্টার:

সমাজে সৎ ও সম্মানিত মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন অত্যন্ত জরুরি। আমরা যারা প্রকৃত সম্মান প্রাপ্ত, তাদের অবমূল্যায়ন করে কোনো সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়। দুঃখজনক হলেও, বর্তমানে কিছু অসৎ ব্যক্তি এই সুযোগ দান করে নকল পদক বা পুরস্কার বিক্রি করছেন, যা আসল সম্মানের মর্যাদাকে হেয় করে। কোন কাজ ছাড়াই ২/৩ হাজার টাকার বিনিময়ে এই পদক পাওয়া সম্ভব। সেরকমই একজন পদক বিক্রেতা আর কে রিপন। তার বিরুদ্ধে শুধু পদক বাণিজ্যের অভিযোগই নয়, বরং নকল পদক দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়াও আর কে রিপন দেহ ব্যবসা, মাদক বাণিজ্য, মানব পাচারের মতো ঘৃণিত কাজের সাথে জড়িত বলে জানা যায়।

আর কে রিপন এর জন্ম বরগুনা জেলায়। তিনি মো: হারুন মোল্লা ও সেলিনা বেগম এর সন্তান। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় তার কোন মনযোগ ছিল বলে এলাকাবাসী জানান। মারামারি ও ভয়ংকর সব কিশোর অপরাধে যুক্ত থাকায় পড়াশোনায় বেশিদূর এগোতে পারে নেই সে। তারপর গ্রামে টিকতে না পেরে চলে আসে ঢাকা শহরে। প্রতারণাকেই জীবিকার পেশা হিসেবে বেঁছে নেন তিনি। বড় বড় সংগঠনের সাথে নামের ২/১ টি শব্দের পরিবর্তন করে তৈরি করে নিজের মনগড়া হাজারো প্রতিষ্ঠান। সরকারি অনুমোদন তো দূরের কথা, তার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স পর্যন্ত নেই। জনপ্রিয় সংগঠনের সাথে নিজের মনগড়া সংগঠনের নামের মিল রেখে দাওয়াত দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের। ব্যস্ততার এই দুনিয়ায়, সেসব লোকেরাও কোনকিছু যাচাই-বাছাই ছাড়াই উপস্থিত হয়ে যায় সেসব অনুষ্ঠানে। আর তাতেই জমে উঠে এই প্রতারনার ব্যবসা। ১০০ টি এওয়ার্ড বিক্রি করলোই লাভ হয় ২/৩ লাখ টাকা। সংবাদপত্রগুলোকে ঘোলা জল খাইয়ে যাচ্ছে এই আর কে রিপন। প্রধান অতিথির চেহেরা বিক্রি করে নিয়ে নেন মিডিয়া কভারেজ।

পুলিশ-প্রশাসন ও আমাদের অনুসন্ধান দল একযোগে কাজ করছে ভুয়া, প্রতারক আর কে রিপন বিরুদ্ধে প্রমান খোঁজার। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতার প্রমান প্রশাসন ও আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। একজন আর কে রিপন কে ধরতে পারলেই বাকি সব প্রতারক অনায়াসে শায়েস্তা হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করি আমরা।

সমাজ বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের বাদপার আয়োজকদের জন্য দিনকে দিন কমে যাচ্ছে এওয়ার্ড এর মান। টাকার বিনিময়ে এরা যাকে তাকে সমাজসেবক বানিয়ে দিচ্ছে। সরকার শক্তহাতে এদের দমন না করলে অদূর ভবিষ্যতে সম্মানিত ব্যক্তিরা পেছনের সারিতে পড়ে যাবে আর সমাজে অন্ধকার ছড়িয়ে পড়বে।

এই ধরনের প্রতারণা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং এটি সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। মানুষের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে যায়, এবং প্রকৃত মানুষের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়। আমাদের উচিত সচেতন হওয়া এবং এই ধরনের প্রতারণা প্রতিরোধে একসাথে কাজ করা, যেন সম্মান ও সঠিকতা বজায় থাকে। সমাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে, এবং আমরা এই প্রতারণার বিরুদ্ধে একসাথে লড়াই করব। প্রতারকের চক্রান্ত আমাদের সমাজকে কলুষিত করতে পারে না। আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, যে এমন অসৎ কর্মকাণ্ডের মুখোমুখি হলে আমরা তা উদঘাটন করব এবং প্রতিকার করব। এই প্রতারকের বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলছে, এবং আমরা নিশ্চিত যে, সত্যের জয় হবেই। আসুন, আমরা সকলে মিলে একটি ন্যায়পরায়ণ সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে প্রতারক ও অসৎ ব্যক্তির স্থান নেই।

চলবে…..

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম