শার্শায় সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের উপর হামলা

 

শার্শা প্রতিনিধি (যশোর):

সংবাদ প্রকাশের জেরে যশোরের শার্শার সাংবাদিক ইকরামুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী আরিকুল ইসলাম । আহত সাংবাদিক ইকরামুল ইসলাম ও তার ভাই কবির হোসেনকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ইকরামুল ইসলাম বাদি হয়ে শার্শা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সোমবার (১৫ এপ্রিল)সন্ধায় শার্শা সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের সামনে এই হামলা চালায় সন্ত্রাসী আরিকুল। সে শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক।
আহত ইকরামুল ইসলাম দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও দৈনিক প্রজম্ম একাত্তরের শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি।

হামলার শিকার সাংবাদিক ইকরামুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় সন্ধা সাড়ে ৭ টার দিকে সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের সামনের অবস্থান করছিলেন তিনি। এমন সময় হঠাৎ করে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী আরিকুল ইসলাম পুর্ব শত্রুতার জেরে তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় তাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে সে তার উপর চড়াও হয়ে মারধোর করে আহত করে। এসময় ইকরামুলের ভাই ছুটে আসলে তাকেও মারধোরে জখম করে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় হামলাকারী আরিকুল।

হামলাকারী আরিকুল শার্শার চটকাপোতা গ্রামের শফিউর রহমানের ছেলে আরিকুল ইসলাম পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। মাদক ও অস্ত্রসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রলীগকর্মী পরিচয়ের আড়ালে আরিকুল ইসলাম দির্ঘদিন ধরে মাদক ও অস্ত্রের ব্যবসা করে আসছে। তাকে একাধিকবার আটক হওয়া নিয়ে ইতোপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে তার উপর ক্ষিপ্ত ছিলো মাদক ব্যবসায়ী আরিকুল ইসলাম।

এদিকে সর্বশেষ গত ২১ মার্চ রাতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আকিকুল ইসলামকে একটি বিদেশী পিস্তল ও একটি ম্যাগাজিন সহ আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। এর আগেও সংবাদ প্রকাশের জেরে তাকে কয়েকবার মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলো আকিকুল।
এ ঘটনায় শার্শা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান ইকরামুল ।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, সাংবাদিক আহতের ঘটনায় মামলা নিয়েছি এবং অপরাধীকে আটকের জন্য শার্শা থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি) চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন, শার্শা উপজেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা জামাল হোসেন, ইনামুল হক,আবুল হোসেন,আজিজুর রহমান। সভাপতি আজিজুল হক, সহসভাপতি আনিসুর রহমান,আবুল বাশার, সাধারন সম্পাদক আইয়ুব হোসেন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ওসমান গনি,সাংগঠনিক আরিফুজ্জামান, অর্থ সম্পাদক সেলিম আহম্মেদ,প্রচার সম্পাদক রাসেল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক শাজানেওয়াজ স্বপন,কার্যকারী সদস্য শাহিদুল ইসলামসহ সংগঠনের অনান্য সদস্যরা।

আফিলের দলীয় কোন্দলের খুন,সন্ত্রাসীর দূর্গ ভাঙতে চায় লিটন

আলী রেজা রাজু,ঢাকা:

যশোর-১ (শার্শা) সীমান্তবর্তী এ উপজেলার টানা তিনবারের আ.লীগের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে এবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে নেমেছেন।বিগত ১৫ বছরে উল্লেখ্য যে তার শাসনামলে বিরোধী দলের একাধিক নেতাকর্মী ছাড়াও দলীয় কোন্দলে ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের ও অঙ্গ সংগঠনের ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য,সাংবাদিকসহ ৬৩ জন খুন হয়েছেন।পুরো উপজেলা মৃত্যুপুরী হিসাবে পরিচিত পেয়েছেন। এসব আ.লীগের নেতাকর্মীদের খুনের আসামিদের ও অস্ত্র ব্যবসায়ী, মাদক ব্যবসায়ী,স্বর্ণ চোরাচালানকারী, একাধিক মামলার আসামী ও চিন্তিত সন্ত্রাসীসহ বহিরাগত তথা বিএনপি-জামায়াত থেকে আগতদেরকে দলীয় ও সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।তার নিজস্ব বাহনী দ্বারা নির্যাতনে একধিক সংখ্যালষু পরিবারকে ও দেশ বাধ্য করা হয়েছে।সাধারণ জণগণের জমি দখলের ও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।এসব নিয়ে মূলত দলীয় কোন্দল থেকে আ.লীগের ভিতর ফাটল ধরে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই আসন নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বড় দল এবং দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকায় এই জেলার প্রায় প্রতিটি আসনে এবার দলের মনোনয়ন চাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে অনেকেই মাঠে নেমেছেন।
তবে বর্তমান এমপিই দলের নমিনেশন পান।
আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে এলাকার বেনাপোল পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আ.লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন।

এদিকে, রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। আর কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাঠে আছে স্থানীয় বিএনপি। তবে দলটি নির্বাচনে যায়নি । সে কারনে কোথাও নির্বাচনমুখী প্রচার বা দলীয় কর্মকাণ্ড নেই তাদের।

অপরদিকে, জাতীয় পার্টিরও আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড তেমন চোখে পড়েনি। আর নিবন্ধন ও রাজনৈতিক জটিলতায় জামায়াতে ইসলামীর দলীয় অবস্থানও সেভাবে চিহ্নিত হয়নি।

এক সময়ে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল যশোর-১ (শার্শা) আসনটি। মাঝখানে সেটি বিএনপি-জামাতের দখলে ছিল।আফিল উদ্দিন টানা তিনবারের সংসদ সদস্য হওয়ায় ‘গৃহবিবাদ’ও আছে। ফলে নির্বাচনের মাঠে তার দলীয় একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বীও রয়েছে। আবার নির্বাচনের
মাঠে না নামলেও বিরোধের রেখা রয়েছে বিএনপিতেও। দলটি নির্বাচনে যদি যেতো তাহলে সেখানেও ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন একাধিক প্রার্থী।

যশোরের শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে যশোর-১ আসন গঠিত। এই আসনের মধ্যে রয়েছে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল। সবদলের জন্য এই আসনটি মর্যাদার। বিগত ১১টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছয় বার, বিএনপি তিন বার, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত একবার করে বিজয়ী হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এই আসনে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের তবিবর রহমান সরদার (তৎকালীন যশোর-৫), ১৯৭৯ সালে বিএনপির আলী তারেক, ১৯৮৬ সালে জামায়াতের নূর হুসাইন, ১৯৮৮ সালে স্বতন্ত্র কেএম নজরুল ইসলাম, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের তবিবর রহমান সরদার, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মফিকুল হাসান তৃপ্তি, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন আওয়ামী লীগের তবিবর রহমান সরদার, ২০০১ সালে বিএনপির আলী কদর, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের শেখ আফিল উদ্দিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে শেখ আফিল উদ্দিন পুনরায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে শেখ আফিল উদ্দিন তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন।

যশোর-১ (শার্শা) আসনের এবারও প্রার্থী টানা তিনবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের শেখ আফিল উদ্দিন। পাশাপাশি দলীয় বিভাজনের সূত্র ধরে মাঠে রয়েছেন বেনাপোলের সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনের মাঠে তিনি।

২০০১ সালে নৌকা মার্কা নিয়ে রাজনীতির মাঠে আসা শিল্পপতি শেখ আফিল উদ্দিন প্রথম নির্বাচনে পরাজিত হলেও পরে দল পুনর্গঠন ও সুসংহত করতে পারেননী তার নামে বিভিন্ন অপকর্মে সেল্টার দেযার অভিযোগ রযেছে । এ জন্য প্রথম দিকের এক দশক ধরে শার্শা ও বেনাপোলে আওয়ামী লীগের একক নেতৃত্ব দেন তিনি। ২০০৮ সালে তাই ঝামেলা ছাড়াই তিনি নৌকার মাঝি হয়েছিলেন। কিন্তু এরপরই দলে বিভক্তি শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আশরাফুল আলম লিটনের সাথে শেখ আফিল উদ্দিনের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়। বিগত নির্বাচনের তিনি আফিল উদ্দিনের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার চেষ্টা করেও পারেনি। এখনও এই দুই নেতাকে ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনেক প্রকাশ্য লড়াই চলে।

বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘শেখ আফিল উদ্দিন প্রতিবারই নমিনেশন পান, কিন্তু কি করেন আপনারাই খবর নেন। আওয়ামী লীগ অনেক বড় সংগঠন। সেখানে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার মতো অনেক যোগ্য নেতা ছিলো কিন্তু কাউকে না দিয়ে উনাকেই দিযেছেন। কেন্দ্র থেকে সুযোগ দেয়া হযেছে আমি স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে আছি।আমি ৩১ বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয়। বেনাপোলের মেয়র হিসেবে আমি অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমি নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলাম, এবারও চাইছি পাইনি ।

উল্লেখ্য, যশোর-১ (শার্শা) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩১ হাজার ৫০৯ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৫। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে যশোর-১ (শার্শা) আসনে দুই লাখ ৯ হাজার ৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি পেয়েছিলেন চার হাজার ৮০২ ভোট। এর আগে, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন ৯৪ হাজার ৫৫৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের আজিজুর রহমান পেয়েছিলেন ৮৮ হাজার ৭০০ ভোট।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের