মুজিব শতবর্ষ ও বিজয়ের সুবর্ন জয়ন্তীর সম্মাননা পেলেন (ডিসি ওয়ারী) শাহ ইফতেখার আহমেদ

জাহিদ হাসানঃ
মুজিব শতবর্ষ ও বিজয়ের সুবর্ন জয়ন্তী, ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে পুর্বাঞ্চল সাংবাদিক ইউনিটি”র উদ্যোগে মাদক, সন্ত্রাস,অপরাধ নির্মুলে সচেতনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরনকারী শহীদদের স্মরনে আলোচনা সভা,শীতবস্ত্র বিতরন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার ডেমরা মাতুয়াইল কোনাপাড়া ফার্মের মোড় ইউসিবি ব্যাংক সংলগ্ন স্থানে চলোযাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে–প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ এ শ্লোগানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি ওমর ফারুক জালাল এর সঅপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক সোহরাওয়ার্দীর সঞ্চালনায় আয়োজিত আলোচনা সভা,শীতবস্ত্র বিতরন,সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে
ডিএমপি ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ কে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।গুরুত্বপুর্ন কাজে ব্যাস্ত থাকায় তিনি স্ব-শরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেনি। রবিবার উপ-পুলিশ কমিশনার ওয়ারী বিভাগের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পুর্বাঞ্চল সাংবাদিক ইউনিটির সাধারন সম্পাদক সোহরাওয়ার্দী,অর্থ সম্পাদক নাজমুল হাসান,সহ-সভাপতি শফিক ঢালী ও দপ্তর সম্পাদক শরীফ আহমেদ শাহ ইফতেখার আহমেদের হাতে সম্মানা স্মারকটি তুলে দেন।এ সময় শাহ ইফতেখার আহমেদ পুর্বাঞ্চল সাংবাদিক ইউনিটির সাম্প্রতিক কার্যক্রমের ভুয়সী প্রশংসা করেন।উল্লেখ থাকে যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর, ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম মিঠু, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, এমজেএফ, সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এস.এম.মোর্শেদ,দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোটিং সেল এর সিনিয়র রিপোর্টার সাইদুর রহমান রিমন,যুগান্তর পত্রিকার সাংবাদিক খোরশেদ আলম শিকদার ,শরীফ আহমেদ, সরকার জামাল ,মোঃ ওমর ফারুক,এমজি কনস্ট্রাকশনের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গিয়াসউদ্দীন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুরুজ ইসলাম।

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক মুন্সি রোকন গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বুকে ধারণ করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন, কিন্তু রাষ্ট্রীয় আইন ও চাকরিবধিকে কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। শত কোটি টাকা পাচার করেছেন তার সেকেন্ড হোম অস্ট্রেলিয়ায়। দুর্নীতি দমন কমিশনে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। দেশের একাধিক পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে সংবাদ। তবুও তিনি নির্ভার, নিষ্পাপ, ধরাছোঁয়ার বাইরে। আঁকড়ে আছেন সরকারি দপ্তর আর নিজস্ব চেয়ার। তিনি দেশব্যাপী সমালোচিত জি কে শামীমের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাজন গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রোকনদ্দিন ওরফে মুন্সি রোকন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের এই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশল একসাথে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন। সেই সাথে নামে-বেনামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ফলে নিজ দপ্তরের ব্যবসা করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন তিনি। আইনকে থোড়াতোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে উপার্জিত কোটি কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠিয়েছেন বিদেশে। এমনটাই জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের একাধিক প্রকৌশলী।

সরকারি কর্মকর্তা হয়ে একাধারে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার দুটি পাসপোর্ট প্রায় নয় বছর ধরে ব্যবহার করে আসছেন প্রকৌশলী রোকন। বিষয়টি এতদিন সহকর্মীদের মুখে মুখে থাকলেও এবার এই প্রকৌশলীর স্ত্রীই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত প্রকৌশলীর বিষয়ে তদন্ত শুরু করে কর্তৃপক্ষ কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও সেই তদন্ত এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

প্রকৌশলী রোকন উদ্দিনের স্ত্রী-সন্তান থাকেন অস্টেলিয়ায়। তিনি সেখানে অস্বাভাবিক পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন কি না তাও একটি দায়িত্বশীল সংস্থা খোঁজ-খবর নিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছিল।

চাকুরী বিধি অনুসারে একজন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী একসাথে দুটি পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারবেন না। এমন গুরুত্বের অভিযোগের সাথে যোগ হয়েছে অর্থ পাচার ও আয় বহির্ভূত অর্জিত সম্পদের। প্রকৌশলী রোকন উদ্দিনের বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ছয় মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন কেন আলোর মুখ দেখল না তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধিদপ্তরের অন্যান্য প্রকৌশলীরা।

অধিদপ্তরের একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রকৌশলী রোকন উদ্দিনের স্ত্রী ও সন্তান বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। রোকন তার আয়-রোজগারের একটা বড় অংশ সেখানে জমা করেছেন বলে শোনা যায়। গত কয়েক বছর ধরে তার বর্তমান কর্মস্থল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীতে (ঢাকা সার্কেল-৩) কর্মরত থাকাকালীন অধীনস্থ একজন নারী সহকর্মীকে ঘিরে নানান সমালোচনার মুখে পড়েন এ প্রকৌশলী। একপর্যায়ে তার স্ত্রী এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের শরণাপন্ন হলেও খুব একটা কাজ হয়নি। সম্প্রতি রোকনের স্ত্রী গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেখানে নানা অনিয়মের সঙ্গে রোকন উদ্দিনের দুটি পাসপোর্ট ব্যবহারের বিষয়টিও আছে। বাংলাদেশি পাসপোর্টে এ প্রকৌশলীর নাম মো. রোকন উদ্দিন। পাসপোর্ট নম্বর ‘ওসি৪১৫৭১৪৮’। আর অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্টে তার নাম মুন্সি রোকন উদ্দিন, এর নম্বর ‘এন৮৩৭০২৭৬’।

জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রোকন উদ্দিনের স্ত্রীর দেওয়া অভিযোগ আমরা পেয়েছি। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অভিযোগের সত্যতা মিললে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

এ বিষয়ে প্রকৌশলী মো. রোকন উদ্দিনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। পরে এই প্রতিবেদক তার নিজের পরিচয় দিয়ে কী কারণে কথা বলতে চান তা জানিয়ে মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠান। বার্তা পাঠিয়ে আবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

গণপূর্তের একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি সার্কেল-৩-এ দায়িত্ব পান। এরপরও তিনি তার শ্যালক মমতা ট্রেডার্সের মালিক সাইফুল আলম ও ছোট ভাই নাজিম উদ্দিন মিঠুর মুন্সি ট্রেডার্সের নামে ঠিকাদারি কাজ শুরু করেন। এ কর্মস্থলে প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালনকালে শুধু মহাখালী ডিভিশন থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েকশ কোটি টাকার কাজ করেছেন। এর মধ্যে শেরেবাংলা নগরে দুটি প্যাকেজে ১৮ কোটি টাকা, তিনটি প্যাকেজে ৫ কোটি টাকা এবং আরও একটি প্যাকেজে ৮ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছেন। এ প্রকৌশলীর প্রাক্কলন তৈরির কাজে নিয়োজিত একজন নারী সহকর্মী তার শ্যালককে ঠিকাদারি কাজ পেতে সহযোগিতা না করায় এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা তৈরি হয়। একপর্যায়ে নারী সহকর্মীকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়। সেই বদলিও হয়েছিল প্রকৌশলী রোকনের অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী স্ত্রীর চাহিদা অনুযায়ী। পরে শেরেবাংলা নগরে কর্মরত নারী সহকর্মী নিজে ও তার পক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল সমিতির নেতারা বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে দেনদরবার করেন। এসব ঘটনার পর প্রকৌশলী রোকনের স্ত্রী ও শ্যালক মিলে ওই নারীর নানা বিষয় উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেন।

অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা বলছেন, রোকন উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ যতই গুরুতর হোক শেষ পর্যন্ত তার কিছুই হবে না। এর কারণ আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীম ক্যাসিনোকা-ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে রোকনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আসে। জি কে শামীমকে সবচেয়ে বেশি কাজ দিয়েছেন রোকন। এরপরও তার তেমন কিছুই হয়নি। এবারও প্রকৌশলী রোকন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ফেলবেন বলে মনে করছেন তারা।

একাধিক অভিযোগ ও দৃশ্যমান অপরাধের পরেও দুর্নীতিবাজ এমন সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তির মুখোমুখি না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকারকর্মী আবু সালেহ আহমদ বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও সমূহে থাকা কর্মকর্তাগণ পাহাড় সমান অপরাধ করেও স্বাস্থ্যের মুখোমুখি না হয়ে এমন নির্লজ্জ বহাল থাকাটা দেশ ও জনগণের দুর্ভাগ্য বটে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম