ভেজাল কোম্পানীর ভেজাল বাণিজ্যে স্বাস্থ্যসেবায় হুমকি 

মোহাম্মদ মাসুদ:
সাভারের হেমায়েতপুরের রয়েল ল্যাবরেটরিজ আয়ু। প্রতিষ্ঠানটির আমলকি-প্লাস, এ্যাপেল-প্লাস ও পুদিনা-প্লাস বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। তাছাড়া মোটাতাজাকরণ ক্ষতিকারক উপাদানে তৈরি রয়েল-গোল্ড, ফেরাপ্লেক্স, ইরেকটন, কার্ডিওলেক্স, টাসফিট, হাইরেক্স, ডাইজাভিট, রয়েলভিট, রুচিরাজ, কারমোজিন, লিভারেক্স, মিকোভাস, গ্যাসরিলিফ, সিভিটন, ওরেঞ্জ-ই, সেপোভাক্স ও বেবিসিড স্বাস্থ্যসেবায় চরম হুমকি হলেও সাভারের ড্রাগ সুপারের নজরদারি শুন্যের কোটায়। ফলে হার্টব্লক, মেদভুড়ি ও ডায়াবেটিস নিরাময়ের শ্লোগান দিয়ে বিক্রি করছে ডিউরেটন নামের সিরাপ। বিগত দিনে আমলকি-প্লাস তৈরি ও বাজারজাত নিষিদ্ধ হওয়ার পরই ডিউরেটন সিরাপ বিক্রি শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি আমলকি-প্লাস বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সময় ড্রাগ প্রশাসন কর্তৃক পরিক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে আমলকি-প্লাস সিরাপে আমলকি নেই। শুধুমাত্র ক্ষতিকারক কেমিক্যাল আর ফ্লেভার দিয়ে তৈরি। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় শিরোনাম হওয়ার পরই ড্রাগ প্রশাসন ১৯/১১/২০১৫ইং তারিখ ভেজাল সিরাপটির উৎপাদন ও বাজারজাত নিষিদ্ধ করে। প্রাপ্ত ইনভয়েসের তথ্য মতে, ড্রাগ নীতিমালা পরিপন্থী সেই নিষিদ্ধ হওয়া আমলকি-প্লাস এখন মিটফোর্ড, সাভারের তমা ফার্মেসী, গাজীপুর, টাংগাইলের মধুপুর ফার্মেসী ও নোয়াখালীসহ সারাদেশে বিক্রি করছে। বিতর্কিত কোম্পানীর মালিক নিজেকে সাংবাদিক ও আওয়ামী কর্মী পরিচয়ে ড্রাগ প্রশাসনকে জিম্মি করে জেলা ড্রাগ সুপারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অবাধে আমলকি-প্লাস বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত কারমোজিন নিয়ে দেশ ল্যাবঃ আয়ু এবং রুচিরাজ নিয়ে দিলেটের ইস্টার্ন ল্যাবঃ ইউনানীর সাথে দ্বন্ধ হয়। বর্তমানে আমলকি-প্লাস নিয়ে গোপালগঞ্জের একটিভ ল্যাবঃ ইউনানীর সাথে দ্বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ প্রতিষ্ঠানটির অনুকুলে আমলকি-প্লাস অনুমোদিত প্রডাক্ট। তথ্য মতে, সুচতুর ব্যবসায়ী তার গাড়িতে সাংবাদিক স্টিকার লাগিয়ে দাপটের সাথে ড্রাগ প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে সব ক্ষেত্রেই পাড় পেয়ে যাচ্ছে। সেহেতু মানুষের জীবন নিয়ে কারসাজী ও প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির আমলকি-প্লাস ও ডিউরেটন পরিক্ষা করলেই নীরব ঘাতক বাণিজ্যের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
এদিকে সাভারের একরাম ল্যাবঃ আয়ুর বিরুদ্ধে অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রচার করে প্রডাক্ট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এক সময় আমলকি-প্লাস নিয়ে বিতর্কিত হলেও এখন এমিটন-প্লাস নিয়ে বিতর্ক চলছে। রাস্তাঘাটের ফুটপাতে হকার সমিতির নেতৃত্বে অবাধে বিক্রি হচ্ছে গরু মোটাতাজাকরণ উপাদানে তৈরি এমিটন-প্লাস।কোম্পানীর মালিক নিজ নামের আইডি দিয়ে অনলাইনে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বিক্রি করছে একরোফেন, একরোপ্লেক্স, হেলফিট, একরোভিট, কামিনী গোল্ড, একরোভাস, সাসটাজিম, এলভাসিম, ভেজিনেক্স, এমোনিড, এ-পাইলস, গনোনিল, লিকোফেন, মিমোটন, ডাইয়াবি কেয়ার, আরটি-ট্যাব, স্লিম-এ, রিউমিন, এরিটনা, ভিগো-৩০, এ্যামি-২০, এমআর-২৮, এ- কার্ড, এ-ডাইজেষ্ট, পেডিকেয়ার, স্কীনিটোন ও সুপ্রাডাইন নামের ঔষধ। তিনি শিল্প সমিতির প্রভাবশালী নেতার পরিচয়ে ড্রাগ প্রশাসনে ক্ষমতা প্রদর্শন করে নিজ স্বার্থ উদ্ধারে বরাবরই তৎপর । অথচ তার কোম্পানীর বিরুদ্ধে অনুমোদনহীন ভেজাল প্রডাক্ট বিক্রির অভিযোগ উঠলেই সংশ্লিষ্ট থানায় নকল হওয়ার অভিযোগ করে রক্ষা পাবার সিস্টেমে একজন অন্যতম কৌশলী। জনস্বার্থে কোম্পানীর শুধুমাত্র এমিটন-প্লাস পরিক্ষা করলেই নীরব ঘাতক বাণিজ্য বন্ধ হবে। বিপরীতে সাধারণ মানুষ লিভার ও কিডনি ড্যামেজের কবল থেকে রক্ষা পাবে।
উল্লেখ্য, বরিশালের জি.এস ল্যাবরেটরিজ আয়ুর নবায়ন এবং মালিকানা পরিবর্তন ছাড়াই লেবেল কার্টন পরিবর্তন করে প্রডাক্ট বিক্রির প্রকাশিত অভিযোগ ধামাচাপা দিতে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান দৌড়ঝাঁপ শুরু করে ড্রাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। যদি অর্থের বিনিময়ে অভিযোগ থেকে পাড় পেয়ে যায় তাহলে ধরে নিতে হবে সর্ষে ক্ষেতে ভূতের রামরাজত্ব। আর প্রশাসনের ছত্রছায়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল-ভেজাল ঔষধ ব্যবসায় উৎসাহী হচ্ছে। এদিকে মুন্সিগঞ্জের এমপেক্স ল্যাবরেটরিজ ইউনানীর নব্য মালিক মিটফোর্ডের বিতর্কিত ব্যবসায়ী ফয়সাল ও তার পার্টনার দ্বীন আমিন ড্রাগ প্রশাসনের ফাইলিং কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অনলাইনে সাসটোক্যাপ বিক্রির অভিযোগ থেকে রক্ষা পাবার কৌশল নিয়েছে। প্রশ্ন হলো অনলাইনে সাসটোক্যাপ বিক্রির বিজ্ঞাপন প্রচারের প্রাপ্ত স্কীন শর্ট তারা কিভাবে অস্বীকার করবে? এদের মতোই মানুষের সাথে প্রতারণা করে রাতারাতি কোটিপতি হচ্ছে ঢাকার এপসিস ইউনানী ল্যাবঃ, আশুলিয়ার চিত্রা ল্যাবঃ ইউনানী, সাভারের ফেমাস ল্যাবঃ ইউনানী, ঢাকা অর্গানিক ল্যাবঃ ইউনানী ও প্যাট্রন ল্যাবঃ ইউনানী, গাজীপুরের শান ল্যাবঃ আয়ু ও জেবিএল ল্যাবঃ ইউনানী, কেরানীগঞ্জের এডরন ফার্মাঃ ইউনানী, নারায়ণগঞ্জের রেনিক্স ল্যাবঃ ইউনানী ও সেফটি হেলথ ল্যাবঃ ইউনানী, বগুড়ার প্রিভেন্টিজ ল্যাবঃ ইউনানী, পাবনার সাফিয়া ল্যাবঃ ইউনানী, এ্যাপেক্স ল্যাবঃ ইউনানী ও ইউনিফিল ল্যাবঃ ইউনানী, নাটোরের গোপালপুরের আল-রাজী ল্যাবঃ ইউনানী, রাজশাহীর এস.এমজি ল্যাবঃ ইউনানী, রংপুরের এস.আর ল্যাবঃ আয়ু ও ইকো ল্যাবঃ ইউনানী, সিলেটের মাইসান ল্যাবঃ ইউনানী, যশোরের বায়োলাইফ ল্যাবঃ ইউনানী, নোয়াখালীর এমসিআই ল্যাবঃ ইউনানী। মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় বিষফোড়া ঔষধ কোম্পানীর বিরুদ্ধে ড্রাগ প্রশাসনের ব্যবস্থা উচিৎ।

প্রয়াত উপাচার্যের স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে গবেষণাধর্মী প্রজেক্টে অনুদান লাভ

উম্মে রাহনুমা, জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ জার্মানী, ভারত ও বাংলাদেশের মোট ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় একত্রে ইরাসমুস প্লাস কেএ-১৭১ প্রজেক্টের জন্য তিন বছরের অনুদান পেয়েছে। প্রজেক্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহ- জার্মানীর টিএইচএম বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের আইআইটি এলাহাবাদ, বাংলাদেশের বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

গত বুধবার (১৫ নভেম্বর ২০২৩) এক কিক-অফ মিটিংযের মাধ্যমে সবাইকে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানানো হয়।

টিএইচএম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রহমতউল্লাহ খোন্দকার এর সঞ্চালনায় উক্ত সভায় টিএইচএম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. ম্যাথিয়াস উইলেমস, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ সহ সহযোগী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ শাজাহান, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প ফোকাল পয়েন্ট কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আবু লায়েক।

সভার শুরুতেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক উইলেমস বলেন, “বাংলাদেশ ভারতের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত”। এছাড়া একচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় বেশ কিছু মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষার্থীর দেখা পাওয়ার ব্যাপারেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ একসাথে কাজ করা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরদের জন্য সুযোগ সৃষ্টির এই প্রজেক্টে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য টিএইচএম প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন “এই প্রজেক্টের মাধ্যমে সহযোগী বিশ্ববিদ্যালসমূহ তাদের ল্যাব, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ট্রেনিং ইত্যাদির মাধ্যমে সহযোগিতামূলক গবেষণা/প্রকাশনা ইত্যাদির দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হবে।”

ইরাসমুস প্লাস কেএ-১৭১ অনুদানের আওতায় আগামী তিন বছরের জন্য আইসিটি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন – সিএসই, আইসিটি, আইটি, ইইই, এমই ইত্যাদি বিষয়ের ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি লেভেলের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা টিএইচএম গমণ করে যৌথ গবেষণা করতে পারবেন।

এখানে উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল ২০২২ তারিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যপ্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড মো ইমদাদুল হক এর আন্তরিকতায় টিএইচএম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা চূক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর টিএইচএম সহ ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ইরাসমুস প্লাস কেএ-১৭১ এর জন্য আবেদন করা হয়েছিল। যার ফল হিসেবে এখন বিশ্ববিদ্যালয় উপকৃত হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম