মিরপুর বিআরটিএ দালালদের পাশাপাশি অপকর্মে জরিত নিরপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা আনসার কমান্ডার মো: হাশেম

স্টাফ রিপোর্টার:

রাজধানীর মিরপুর বিআরটিএ অফিসে দালালদের পাশাপাশি অপকর্মে জরিত নিরপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা আনসার কমান্ডার হাসেম।
তার সদস্য বাহিনীরা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।সপ্তাহে দাললদের জন প্রতি ৫০০ টাকা করে নেয়।আরো জানা যায়, দালালদের নিয়ন্ত্রন করে দালালদের কাছ থেকে মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন পিসি হাসেম। এবং নিজস্ব আনসার সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনে গাড়ীর কাগজ – পত্র ঠিক করার মাধ্যমে সদস্যদের কাজ থেকে প্রতিদিন ১০ /১২ হাজার করে নিয়ে থাকেন বলে তাদের অভিযোগ। নাম না প্রকাশে শর্তে একজন দালাল বলেন, আমরা ৮০থেকে ৯০ জন মিলে এখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করি। এই কাজের বিনিময়ে আনসার কমান্ডারকে মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা দিতে হয়। এই টাকা গুলো আনসারের এপিসি শহিদুল এর কাছে দিতে হয়। এপিসি মো:শহিদুল আমাদেরকে বলেন আমি পরে কমান্ডার মো: হাশেম স্যারের কাছে টাকা গুলো পৌছিয়ে দেই । টাকা না দিলে আমাদেরকে ভেতরে ঢুকতে বা কাজ করতে দেয় না। টাকা দিলে আবার কাজ করতে দেয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাজের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও এইসব কাজে জড়িত। ৩০ জন আনসার সদস্য এখানে রয়েছে। এমনকি আনসার সদস্যরা প্রতিদিন কাজ করে। তারা হলেন, অন্তর, জাকিরুল,মো: আনিছ, জয়,আরিফ,তৌহিদ,রিপন, মো: মামিন, ইব্রাহীম,আমিনুল, সহ আরো অনেক সদস্যরা বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে একে পর এক কাজ করে যাচ্ছে। তাদের জন্য আমরা বেশী একটা কাজ করতে পারি না। তার পরও আনসার কমান্ডারকে সপ্তাহ হিসেবে বা মাস হিসেবে টাকা দিতে হচ্ছে। কাজ হক বা না হক টাকা পরিশোধ করতেই হবে।বিআরটিএ অফিসে সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়, বাধ্য হয়ে নিতে হয় দালাল বা আনসার সদস্যদের সহযোগিতা।বর্তমানে সাবেক অনসার সদস্য ৪০ থেকে ৫০ জন প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছে। এবং প্রতি সপ্তাহে জন প্রতি কমান্ডার কে দিচ্ছে ১০০০ হাজার টাকা করে। বুধবার সকালে মিরপুর বিআরটিএ অফিসের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কথা হয় অনেকের সঙ্গে। এ সময় ভুক্তভুগী মেহেদী হাসান, নয়ন, মাসুদ, ও জামান একই অভিযোগ করেন।ভুক্তভুগীদের অভিযোগ, একদিকে আসতে হয় অনেক দূর থেকে, রাস্তায় থাকে যানজট শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ হওয়ায় কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ডিজিটাল নম্বর প্লেট লাগাতে হচ্ছে মোটরসাইকেলে। বিআরটিএ অফিসে পর্যাপ্ত লোকবল থাকার পরেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।একদিকে থাকে পেটের চিন্তা অন্যদিকে ডিজিটাল নম্বর লাগাতে হবে, অন্যথায় ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্নভাবে হয়রানি করবে এবং মামলা দেবে। এক সপ্তাহ যদি এভাবেই সময় যায় তাহলে পেটের চিন্তা করব না ডিজিটাল নম্বর প্লেট লাগাব? এমন অনেক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডিজিটাল নম্বর প্লেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এবং ট্যাক্সটোকের নিতে পড়তে হয় বিভিন্ন ভোগান্তিতে। দালাল ধরলে এ সব আগেই সুন্দর মতো এবং সঠিক সময়ে পাওয়া যায়। নিয়ম অনুযায়ী এ সব সেবা নিতে গেলে সময় ও কর্ম দুইটোই নষ্ট হচ্ছে। বিআরটিএ অফিসে গেলে দালালের খপ্পরে পড়তে হয় এবং নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। পেশাদার ট্রাক চালক জাবেদুল ইসলাম বলেন, বিআরটিএ-এর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালাল এবং আনসারদের মধ্যে যোগসাজশের কারণে সেবাগ্রহীতাদের এ সব ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।ভোক্তভুগীরা বলছেন, দালাল ছাড়া লাইসেন্স পাওয়ার চেষ্টা করাটাও যেন এক ধরনের পাপ। বিআরটি এর সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়ে নিতে হয় দালালের সহযোগিতা। দালাল আর টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না।মোহাম্মদপুর থেকে বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডেলিভারি নিতে এসেছেন মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ। তিনি প্রায় তিন ৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স হাতে পান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনেকেই টাকা দিয়ে আগেই নিয়েছেন।তিনি বলেন, আর কত কষ্ট দেবে বিআরটিএ। আমাদের সেবামুখী মানুষদের। রাস্তার গাড়ির কাগজ পত্র ঠিক না থাকলে পুলিশ হয়রানি করে। আর বিআরটিএ কাগজ সঠিক সময়ে না দিয়ে আরেক ভোগান্তিতে ফেলে।এদিকে দালাল, টাউট ও প্রতারক হতে সাবধান’। এমন সতর্কবার্তা সম্বলিত সাইনবোর্ড চোখে পড়বে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ সড়ক পবিরবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) গেট দিয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই। শুধু প্রবেশ ফটকেই নয়, এমন সতর্কবার্তা লেখা আরও অনেকগুলো সাইনবোর্ড সাঁটানো আছে মিরপুর বিআরটিএ এর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে দেয়ালে। কিন্তু এই সতর্কবার্তাকে ছাপিয়ে, বলা যায় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দালালদের দৌরাত্ম্যই পুরো বিআরটিএ ঝুরেই।
চলবে।

এটিইউ প্রধান  অতিরিক্ত আইজিপি রেজাউল করিম

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি জনাব মো. রেজাউল করিম। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি দায়িত্ববার গ্রহণ করেছেন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. রেজাউল করিম ১৫তম বিসিএসে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তিনি তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে বিভিন্ন পদে বগুড়া, লালমনিরহাট, খাগড়াছড়ি, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, ঝিনাইদহ জেলা, কেএমপি, হাইওয়ে পুলিশ, সিআইডি, এসবি, পিটিসি নোয়াখালী, আরআরএফ ঢাকা, এটিইউ এবং সর্বশেষ সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সততা, মেধা ও দক্ষতার সঙ্গে স্বীয় দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি স্বরূপ পিপিএম পদক এবং ২ বার আইজিপি ব্যাজ পেয়েছেন।

তিনি জানান, মো. রেজাউল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পেশাগত উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে লাইবেরিয়া ও পূর্ব তিমুর—এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। মো. রেজাউল করিম কুষ্টিয়া জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের কৃতি সন্তান। যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই তিনি এটিইউ’র সর্বস্তরের পুলিশ সদস্যদের ভবিষ্যতে আরও দক্ষ, যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, নবনিযুক্ত এটিইউ প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণের পর একইদিন এটিইউ সদর দপ্তরে সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে ফরাসি দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুপুরে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ফরাসি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ফরাসি দূতাবাসের ডেপুটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাটাশে লেফটেন্যান্ট কর্নেল ক্রিস্টেল ফন্টেইন।

তিনি জানান, আলোচনার শুরুতে এটিইউ’র সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং দেওয়া হয়। এ সময় ফরাসি প্রতিনিধি দল সন্ত্রাসবাদ দমনে এটিইউর কর্মকৌশলের প্রশংসা করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে সাগ্রহে জানতে চান। হোলি আর্টিজান ঘটনার পর বাংলাদেশে বড় ধরনের কোনো সন্ত্রাসী হামলা হয়নি বলে এসময় তাদের জানানো হয়। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে সন্ত্রাসবাদ দমন কার্যক্রম পরিচালনা, দেশ ও বিদেশ থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্তি, নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রাখা, ইন্টারনেট ফোরাম, সোশ্যাল মিডিয়া এবং পাবলিক ডেটাবেস পর্যবেক্ষণের জন্য ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স (OSINT) টুলস্ ব্যবহার, জনবল বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করা হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষই সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং তথ্য বিনিময় অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত হন।

একইদিনে এটিইউ সদর দপ্তরে অতিরিক্ত আইজিপির কার্যালয়ে যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিকেল পর্যন্ত এটিইউ প্রধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ দমনে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি দলে ছিলেন– মিজ সাকিনা আলম, ডেপুটি হেড, কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট, ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস এবং মিস্টার মুলিন। এছাড়াও, এটিইউর বিভিন্ন পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি অনুসরণের বিষয়ে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করা হয়। অন্যদিকে এটিইউর বিভিন্ন কার্যক্রম এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উভয় পক্ষই নিজ নিজ দেশের অভিজ্ঞতা ও কৌশল বিনিময়ের পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় অব্যাহত রাখার বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম